আইনের খসড়ার ফাঁকফোকর
৩০ নভেম্বর ২০১৪সংগঠনের চীন বিষয়ক গবেষক মায়া ওয়াং ডয়চে ভেলেকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, প্রস্তাবিত খসড়ায় অবিবাহিতদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি৷ তবে তিনি মনে করেন, এই আইন গৃহ নির্যাতন সম্পর্কে নির্যাতিতা, আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্য ও সাধারণ মানুষদের সচেতন করবে৷
ডয়চে ভেলে: খসড়া আইনে আসলে কী বলা হয়েছে?
মায়া ওয়াং: এটা একটি নিরাপত্তামূলক আইন৷ এতে গৃহ নির্যাতন বন্ধে সরকারের বিভিন্ন সংস্থার কী দায়িত্ব তা বলা আছে৷ এছাড়া নির্যাতিতরা কী ধরনের সহায়তা পেতে পারে সেটাও খসড়ায় বলা আছে৷ তবে নির্যাতনকারীদের কী শাস্তি হবে সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানানো হয়নি৷
খসড়াটি যদি আইনে পরিণত হয় তবে সেটা কাদের জন্য প্রযোজ্য হবে?
বিবাহিত দম্পতি, বাবা-মা ও শিশু এবং আত্মীয় যারা একসঙ্গে বাস করে, তাদের জন্য এই আইন প্রযোজ্য হবে৷ ফলে সমলিঙ্গের দম্পতি, অবিবাহিত দম্পতি এবং তালাকপ্রাপ্তরা এই আইনের বাইরে থাকবে৷
এই খসড়া প্রণয়ন করতে চীনের কত সময় লেগেছে?
অনেক বছর৷ আসলেই অনেকদিন ধরেই এই আইনের অপেক্ষায় ছিল সবাই৷ চীন সহ আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলো এই আইনের দাবি জানিয়ে আসছিল৷ বর্তমানে চীনে এ বিষয়ক কোনো আইন নেই৷ ফলে কোনো নির্যাতিত নারী যখন পুলিশের কাছে অভিযোগ নিয়ে যায় তখন পুলিশ বলে এটা ঘরের ব্যাপার, কোনো অপরাধ নয়৷
চীনে পারিবারিক সহিংসতার বর্তমান পরিস্থিতি কেমন?
সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, চারজনের একজন নারী এই সহিংসতার শিকার হন৷ এছাড়া অনেক নারী নির্যাতনের বিষয়টি পরিবার কিংবা বন্ধুবান্ধব, আত্মীয়-স্বজনদের জানাতে চান না৷ চীনা সংস্কৃতিতে পারিবারিক ঐক্য ধরে রাখার একটি বিষয় রয়েছে৷ সেটা থেকে বেরিয়ে এসে কেউ যদি পুলিশ কিংবা ‘অল-চায়না ওমেনস ফেডারেশন'-এর কাছে অভিযোগ নিয়ে যায় তখন তাঁদের (নির্যাতিত) ও নির্যাতনকারীদের মধ্যে মধ্যস্থতার চেষ্টা করা হয়৷ এতে পরিস্থিতির উন্নতি না হয়ে বরং আরও খারাপ হয়৷
খসড়া সম্পর্কে আপনার ব্যক্তিগত মত কী?
এটা অবশ্যই একটা ইতিবাচক পদক্ষেপ৷ এর ফলে পারিবারিক সহিংসতা বিষয়ে সবার মধ্যে একটা সচেতনতা তৈরি হবে৷ পুলিশও এ ধরণের কোনো বিষয় তদন্ত করতে ফোর্স পাঠাতে উৎসাহী হবে৷ তবে এই খসড়ায় কিছু সীমাবদ্ধতা আছে৷ আগেই বলেছি যে, খসড়ায় অবিবাহিতদের বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি৷ এছাড়া অর্থনৈতিক সহিংসতার বিষয়েও কিছু বলা হয়নি৷ যেমন কোনো নারী চাকরি না করলে জীবনযাপনের জন্য তাঁকে অর্থ না দেয়ার বিষয়টি শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের মতোই একটা ব্যাপার৷