চীনের ৫৯টি সংস্থার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি বাইডেন প্রশাসনের। কড়া প্রতিক্রিয়া চীনের।
বিজ্ঞাপন
চীনের সঙ্গে অ্যামেরিকার সম্পর্ক আরো জটিল হলো। চীনের ৫৯টি সংস্থার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি করল জো বাইডেনের প্রশাসন। যা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ প্রকাশ করেছে চীন।
অ্যামেরিকার বড় শত্রু কারা?
ইরানের সঙ্গে অনেকটা যুদ্ধাবস্থা বিরাজ করছে অ্যামেরিকার৷ আর চীনের সঙ্গে চলছে বাণিজ্য যুদ্ধ৷ মার্কিনিদের বিবেচনায় তাঁদের শত্রুদের চিনে নিন ছবিঘরে৷
ছবি: Imago/UPI//Imago/Russian Look
উত্তর কোরিয়া
জরিপের মাধ্যমে অ্যামেরিকার শত্রুদের তালিকা প্রকাশ করে থাকে গ্যালাপ৷ প্রতিষ্ঠানের ২০১৮ সালের জরিপে দেখা যায়, গত কয়েক বছরের মতো এবারও অ্যামেরিকার শত্রু তালিকার শীর্ষ দেশ হিসেবে উত্তর কোরিয়ার নাম আছে৷ ২০১৬ সালে ১৬ ভাগ মানুষ উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক শক্তিকে হুমকি হিসাবে বিবেচনায় নিয়েছিলেন৷ ২০১৮ সালে এসে হুমকি বিশ্বাসকারীদের সংখ্যা ৫১ শতাংশে দাঁড়িয়েছে৷
ছবি: picture-alliance/dpa
রাশিয়া
অ্যামেরিকার সঙ্গে রাশিয়ার শত্রুতার সম্পর্ক দীর্ঘদিনের৷ এর মধ্যে উত্থান-পতনও দেখা গেছে বিভিন্ন সময়ে৷ ২০১৬ সালে ১৫ শতাংশ অ্যামেরিকান বলেছেন, রাশিয়া তাঁদের সবচেয়ে বড় শত্রু৷ ২০১৮ সালে গিয়ে এ সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৯ শতাংশে৷
চীনের সঙ্গে অ্যামেরিকার বাণিজ্য যুদ্ধ ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে বিশ্বের অন্যান্য দেশের অর্থনীতিকেও৷ যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে অর্থনৈতিক পরাশক্তি হওয়ার লক্ষ্যে কাজ করছে চীন৷ দুই দেশের সাম্প্রতিক কিছু সিদ্ধান্ত উভয়ের অর্থনীতিকে প্রভাবিত করছে৷ ২০১৬ সালে অ্যামেরিকার ১২ শতাংশ মানুষের বিবেচনায় চীন ছিল দেশটির সবচেয়ে বড় শত্রু৷ তবে, ২০১৮ সালে দেশটিকে বড় শত্রু হিসাবে চিহ্নিত করেছেন ১১ শতাংশ অ্যামেরিকান৷
ছবি: picture-alliance/dpa
ইরান
২০০৬ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত অ্যামেরিকানদের কাছে তাঁদের শত্রু তালিকায় শীর্ষে ছিল ইরান৷ পরের কয়েক বছর পরিস্থিতি ভালো হয় কিছুটা৷ তবে, ২০১৫ সালে ইরানকে নিজেদের সবচেয়ে বড় শত্রু হিসাবে চিহ্নিত করেছেন ৯ শতাংশ অ্যামেরিকান৷ ২০১৮ সালে এমন চিন্তার মানুষের সংখ্যা দাঁড়ায় ৭ শতাংশে৷
ছবি: Imago/UPI//Imago/Russian Look
সিরিয়া
গ্যালাপের পাশাপাশি অ্যামেরিকার শত্রুদের তালিকা প্রকাশ করে থাকে ক্যানাডাভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর রিসার্চ অন গ্লোবালাইজেশন বা সিআরজি৷ তাদের বিবেচনায় ইরান, রাশিয়া ও ফিলিস্তিনের সঙ্গে সিরিয়ায় ক্ষমতাসীনদের সখ্যের কারণে সিরিয়ার সঙ্গে অ্যামেরিকার বিরোধ হয়েছে৷ আবার অ্যামেরিকা-ইসরায়েল মৈত্রীর ক্ষেত্রে বিপরীত অবস্থানে আছে সিরিয়া৷ ভূ-রাজনৈতিক কারণে সিরিয়ার উপর আধিপত্য রাখতে চায় যুক্তরাষ্ট্র৷
ছবি: picture-alliance/dpa/K. Elfiqi
ভেনেজুয়েলা
সিআরজি বলছে, ভেনেজুয়েলার তেলের মজুদ ও সামাজিক-রাজনৈতিক কারণে অ্যামেরিকার সঙ্গে তাঁদের বিরোধ দীর্ঘদিনের৷ যদিও বর্তমানে মূল্যস্ফীতি ও অর্থনৈতিক সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে ভেনেজুয়েলা, তবুও সেই বিরোধ কমেনি মোটেও৷ দেশটির ক্ষমতাসীন মাদুরো সরকারকে হটাতে তৎপর অ্যামেরিকা৷ সম্প্রতি অ্যামেরিকার সঙ্গে সব ধরনের কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করেছে দক্ষিণ অ্যামেরিকার দেশটি৷
ছবি: picture-alliance/dpa/P. Miraflores
6 ছবি1 | 6
সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প ৩১টি চীনা সংস্থার বিরুদ্ধে আগেই নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিলেন। মার্কিন প্রশাসন জানিয়েছিল, মার্কিন সামরিক বাহিনীর সঙ্গে আলোচনার সাপেক্ষেই ওই সংস্থাগুলির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল। বৃহস্পতিবার জো বাইডেন প্রশাসন সেই তালিকা নিয়েই ফের আলোচনায় বসেছিল। সেখানে একদিকে বেশ কয়েকটি সংস্থার উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছে, আবার নতুন করে কয়েকটি সংস্থার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। সব মিলিয়ে ৫৯টি সংস্থার উপর নতুন করে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
আগামী ২ অগাস্ট থেকে এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হবে বলে মার্কিন প্রশাসন সূত্রে জানানো হয়েছে। হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, যে সংস্থাগুলির বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে, তারা সকলেই কোনো না কোনো ভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে। বিশেষত, উইঘুর মুসলিমদের সঙ্গে অন্যায় আচরণ করেছে।
নিষেধাজ্ঞার অর্থ, কোনো মার্কিন সংস্থা ওই সংস্থাগুলির সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক রাখতে পারবে না। ওই সংস্থাগুলি অ্যামেরিকায় কোনো রকম ব্যবসা করতে পারবে না।
ট্রাম্প আমলে চীনের সঙ্গে অ্যামেরিকার সম্পর্ক একেবারে তলানিতে গিয়ে ঠেকেছিল। ডনাল্ড ট্রাম্প করোনা থেকে শুরু করে উইঘুর মুসলিমদের সঙ্গে চিনের ব্যবহার-- একাধিক বিষয় নিয়ে চীনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছিলেন। অনেকেই মনে করেছিলেন, জো বাইডেন ক্ষমতায় এসে চীনের সঙ্গে সম্পর্ক খানিকটা উন্নত করবেন। কিন্তু বাস্তবে বাইডেন প্রশাসন সে পথে হাঁটছে না। চীনের ৫৯টি সংস্থার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি সে কথাই স্পষ্ট করল।
চীন জানিয়েছে, সম্পূর্ণ ভুল তথ্যের উপর ভিত্তি করে অ্যামেরিকা ওই সংস্থাগুলির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে। এর ফলে চীনকেও কঠিন পদক্ষেপের কথা ভাবতে হবে। একই সঙ্গে চীন জানিয়েছে, অ্যামেরিকা যে কাজ করেছে, তা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য আইনের পরিপন্থী।