1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

চীনা প্রেসিডেন্টের বাংলাদেশ সফর

১৪ অক্টোবর ২০১৬

চীনের রাষ্ট্রপতি শি জিনপিং দু' দিনের সফরের প্রথম দিনেই  দু'দেশের মধ্যে ২৬টি চুক্তি এবং সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে৷ চীনা প্রেসিডেন্টের এ সফর কি বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কে কোনো প্রভাব ফেলবে?

চীনের রাষ্ট্রপতি শি জিনপিংকে ফুল দিয়ে স্বাগত জানান বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট আব্দুল হামিদ
চীনের রাষ্ট্রপতি শি জিনপিংকে ফুল দিয়ে স্বাগত জানান বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট আব্দুল হামিদছবি: Getty Images/AFP

দু'দিনের বাংলাদেশ সফরের প্রথমদিনে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠক করেন শি জিনপিং৷ বৈঠকের পর দু'দেশের মধ্যে ২৬টি চুক্তি এবং সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়৷ চুক্তিগুলোর মধ্যে ১২টি ঋণ চুক্তি এবং এবং বাকিগুলো সহযোগিতামূলক৷

পরাষ্ট্রসচিব এম শহীদুল হক জানান, চুক্তি সই অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘‘আমাদের মধ্যে দ্বিপক্ষীয়, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সহযোগিতা এগিয়ে নিতে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে৷'' অন্যদিকে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং বলেছেন,‘‘আমরা আমাদের সম্পর্ককে ঘনিষ্ঠ সহযোগিতা ও অংশীদারিত্বের মধ্য দিয়ে আরো এগিয়ে নেয়ার ব্যাপারে একমত হয়েছি৷''

চুক্তি সইয়ের পর এক ব্রিফিংয়ে শহীদুল হক আরো বলেন, ‘‘দুই পক্ষের আলোচনার মধ্য দিয়ে পারষ্পারিক সম্পর্কে নতুন দিগন্তের সূচনা হয়েছে৷ আমাদের সম্পর্ক এখন কৌশলগত সম্পর্কে পরিণত হয়েছে৷ এখন দুই দেশের সম্পর্ক আরো গভীর হবে এবং এর ব্যাপ্তি বাড়বে৷''

‘‘ভারত এটাকে স্বাভাবিকভাবেই নিচ্ছে’’

This browser does not support the audio element.

দুই নেতার উপস্থিতিতে দুই দেশের মধ্যে ২৬টি চুক্তি ও সমঝতো স্মারক সই হয়েছে- এই তথ্য জানিয়ে তিনি আরো বলেন, ‘‘এর মধ্য দিয়ে ওয়ান বেল্ট-ওয়ান রোড উদ্যোগ, অবকাঠামো, সড়ক, রেল, জলপথ, আইসিটি, তথ্য, মেরিটাইম সহযোগিতা ইত্যাদিসহ নতুন কয়েকটি ক্ষেত্রে সহযোগিতার নতুন দিক উন্মোচিত হয়েছে৷'' এছাড়া চীন পাট এবং তৈরি পোশাক শিল্পে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী বলেও জানিয়েছেন তিনি৷

পররাষ্ট্র সচিব বলেন, ‘‘কৌশলগত সম্পর্কে উত্তীর্ণ হওয়ার ফলে বাংলাদেশ ও চীনের আর্থ-সামাজিক, অর্থনৈতিক ও অন্যান্য বিষয়াদির ব্যাপ্তি আরও বাড়বে৷''

এদিকে গোড়া থেকেই যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতসহ বৃহৎ শক্তিগুলো চীনের প্রেসিডেন্টের এই সফরকে গুরুত্বের সঙ্গে পর্যবেক্ষণ করছে৷ বিশেষ করে ভারত এই সফরকে কিভাবে নেবে তা নিয়ে ইতিমধ্যে জোর আলোচনা শুরু হয়েছে৷ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্কের বিশ্লেষক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘আমার মনে হয়, ভারত এটাকে স্বাভাবিকভাবেই নিচ্ছে৷ আর ভারতওতো চীনের সঙ্গে সম্পর্ক বাড়াচ্ছে৷'' তিনি বলেন, ‘‘এই সফরে যা হচ্ছে তা হলো, কানেটিভিটি, ব্যবসা-বাণিজ্য, অবকাঠামোগত উন্নয়নসহ সহযোগিতামূলক চুক্তি৷ এখানে নিরাপত্তা সংক্রান্ত কোনো বিষয় আসছেনা৷ তাই ভারতের আপত্তির তেমন কোনো জায়গা নেই৷''

অধ্যাপক ইমতিয়াজ আরো বলেন, ‘‘আরেকটি বিষয় হলো, চীন বাংলাদেশকে অকাঠামো, প্রযুক্তি, বাণিজ্য , ঋণের ক্ষেত্রে যতটা সহায়তা করতে পারবে ততটা আর কেউ পারবেনা৷ আর এতে বাংলাদেশের মানুষের অবস্থার যদি উন্নতি হয়, তাদের ভোগ এবং ক্রয় ক্ষমতা যদি বাড়ে, তাতে ভারতেরও লাভ৷ বাংলাদেশের বর্তমান সরকারের সঙ্গে ভারতের যে সম্পর্ক তাতে আস্থার জায়গা বেশ দৃঢ়৷ চীনের সঙ্গে বাংলাদেশ যেসব চুক্তি করছে তা ভারতের কাছে গোপন করবেনা বাংলাদেশ৷''

‘‘১৯৭১ সালের চীন আর এই চীন এক নয়’’

This browser does not support the audio element.

আর ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা প্রসঙ্গে ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির নির্বাহী সভাপতি শাহরিয়ার কবির ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘১৯৭১ সালের চীন আর এই চীন এক নয়৷ তাদের অবস্থানের পরিবর্তণ হয়েছে৷ বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর তারা ৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতার জন্য দু:খ প্রকাশ করেছে৷ এখন তারা সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে৷''

ভারত প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘ভারতের সঙ্গে আমাদের রক্তের সম্পর্ক৷ আর চীনের সঙ্গে কৌশলগত সহযোগিতার সম্পর্ক৷ ভারতের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার কোনো কারণ নাই৷ এখন চীন শুধু পাকিস্তানের বন্ধু নয় বাংলাদেশ ও ভারতেরও বন্ধু৷ বাংলাদেশ এখন তিন পরাশক্তি যুক্তরাষ্ট্র, চীন ও ভারতের সঙ্গে যে ভারসাম্যমূলক সম্পর্কের দিকে যাচ্ছে, তা পররাষ্ট্রনীতির ইতিবাচক দিক৷''

শাহরিয়ার কবির আরো বলেন, ‘‘২০১৪ সালে বাংলাদেশের নির্বাচনের পক্ষে ভারত ও রাশিয়ার সঙ্গে চীনও অবস্থান নিয়েছিল৷''

প্রসঙ্গত, গত ৩০ বছরে এটিই চীনের কোনো প্রেসিডেন্টের প্রথম ঢাকা সফর৷ এর আগে ১৯৮৬ সালে চীনের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট লি শিয়াননিয়ান ঢাকা সফর করেন৷ ২০১৪ সালে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চীন সফর যান৷ সেই সফরের সময়ে যৌথবিবৃতিতে বলা হয়, দু'দেশের অংশীদারিত্ব এবং সহযোগিতার সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাওয়া হবে৷

শি জিনপিং দু'দিনের সফরে শুক্রবার কম্বোডিয়া থেকে ঢাকা আসেন৷ শনিবার তিনি ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে ভারতে যাবেন৷

প্রতিবেদন: হারুন উর রশীদ স্বপন, ঢাকা

সম্পাদনা: আশীষ চক্রবর্ত্তী

প্রিয় পাঠক, আপনার কী কিছু বলার আছে? জানান নীচে মন্তব্যের ঘরে...

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ