1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

চীনের সঙ্গে জার্মানির সম্পর্কের ছন্দপতন

১০ নভেম্বর ২০২২

চীনা বিনিয়োগকারীদের কাছে দু-দুটি জার্মান কোম্পানি বিক্রি বন্ধ করে দিলো চ্যান্সেলর শলৎসের সরকার৷ তথ্যপ্রযুক্তির ক্ষেত্রে চীনের হস্তক্ষেপ সম্পর্কে পশ্চিমা বিশ্বে সংশয় বাড়ছে৷

চীনের প্রতি আর সদয় হতে পারছে না জার্মানি
চীনের প্রতি আর সদয় হতে পারছে না জার্মানিছবি: Ute Grabowsky/photothek/picture alliance

সবে বিতর্কিত চীন সফর করে দেশে ফিরেছেন জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস৷তার আগে যাবতীয় বিরোধিতা উপেক্ষা করে হামবুর্গ বন্দরের একটি প্রকল্পে চীনের কোম্পানির অংশগ্রহণের ছাড়পত্র দিয়েছিলেন তিনি৷ এবার কিন্তু চীনের প্রতি আর সদয় হতে পারছে না জার্মানির সরকার৷ অর্থনীতি বিষয়ক মন্ত্রী রোব্যার্ট হাবেক জানিয়েছেন, চীনা বিনিয়োগকারীরা  দুটি জার্মান কোম্পানি কিনতে পারবেন না৷ নিরাপত্তাজনিত দুশ্চিন্তার কারণে মাইক্রোচিপ প্রস্তুতকারী কোম্পানি এলমোস বিক্রি সম্পর্কে তিনি আগেই সংশয় প্রকাশ করেছিলেন৷ ব্যবসাবাণিজ্য সংক্রান্ত গোপনীয়তার কারণে হাবেক দ্বিতীয় কোম্পানিটি সম্পর্কে কোনো মন্তব্য করেন নি৷ তবে জার্মানির ‘হান্ডেল্সব্লাট' পত্রিকার সূত্র অনুযায়ী বাভেরিয়া-ভিত্তিক ইআরএস ইলেকট্রনিক্স কোম্পানির বিক্রির ক্ষেত্রেও জার্মান সরকার অনুমোদন দেয় নি৷ এই কোম্পানি সেমিকন্ডাক্টর ইলেকট্রনিক্স উৎপাদন করে৷

জার্মান অর্থনীতি বিষয়ক মন্ত্রী হাবেক এই সিদ্ধান্তের ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বলেন,জার্মানি অবশ্যই মুক্ত বাজার অর্থনীতির দেশ৷ চীন বর্তমানে জার্মানির বাণিজ্য সহযোগী এবং ভবিষ্যতেও থাকা উচিত৷তবে তাঁর মতে, বাণিজ্যকে ‘পাওয়ার পলিটিক্স'-এর হাতিয়ার করা এবং সম্ভবত রাষ্ট্রের স্বার্থের বিরুদ্ধে কাজে লাগানো হতে পারে৷ বিশেষ করে কিছু জরুরি শিল্পক্ষেত্রে নির্ভরতা কমানো উচিত৷ হাবেক আরও বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাইরে থেকেও বিনিয়োগকে জার্মানি স্বাগত জানাচ্ছে৷ তবে মুক্ত বাজার অর্থনীতি মোটেই ‘নাইভ' বা ‘সরল' বাজার অর্থনীতি নয়৷

উল্লেখ্য, জার্মানির ডর্টমুন্ড শহরের এলমোক্স কোম্পানি মাইক্রোচিপ ওয়েফার উৎপাদন শাখা সুইডেনের প্রতিযোগী কোম্পানি সিলেক্স-কে বিক্রি করতে চেয়েছিল৷ সেই কোম্পানি আবার চীনের সাই গ্রুপের অধীনে রয়েছে৷ ডর্টমুন্ড শহরের মেয়র টোমাস ভেস্টফাল সরকারের এই সিদ্ধান্ত সম্পর্কে দুশ্চিন্তা প্রকাশ করে বলেন, এর ফলে এলমোক্স কোম্পানির কারখানায় ছাঁটাইয়ের ঝুঁকি দেখা দিতে পারে৷ চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র জার্মান সরকারের উদ্দেশ্যে চীনা কোম্পানিগুলিকে সমান মর্যাদা দেবার ডাক দেন৷ জাতীয় স্বার্থের দোহাই দিয়ে প্রোটেকশনিস্ট বা সংরক্ষণবাদী পদক্ষেপ সম্পর্কে তিনি সতর্ক করে দেন৷

ইউক্রেন যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে রাশিয়া ও চীনের মতো দেশের উপর নির্ভরতা নিয়ে জার্মানি তথা ইউরোপে জোরালো বিতর্ক চলছে৷ ইউরোপ এতকাল রাশিয়ার জ্বালানি ও চীনের সঙ্গে বাণিজ্যের উপর অনেকটাই নির্ভর করে এসেছে৷ কিন্তু সেই নীতির আমূল পরিবর্তনের জন্য প্রবল চাপ দেখা যাচ্ছে৷ অন্যদিকে বর্তমান সংকটের জের ধরে অর্থনৈতিক মন্দা ঘনিয়ে আসছে৷ এই অবস্থায় চীনের মতো গুরুত্বপূর্ণ দেশের সঙ্গে বাণিজ্যের মাত্রা কমানোর প্রবণতাও অর্থনীতির জন্য ঝুঁকিপূর্ণ বলে মনে করছে অনেক মহল৷ সেই বাস্তববাদী অবস্থান থেকেই জার্মানচ্যান্সেলর শলৎস সতর্কতার সঙ্গেই চীনের সঙ্গে অর্থনৈতিক সম্পর্ক মজবুত রাখার পক্ষে৷ অন্যদিকে তাঁর নেতৃত্বে জোট সরকারের মধ্যেই চীনের সঙ্গে সম্পর্কের প্রশ্নে প্রবল মতপার্থক্য স্পষ্ট হয়ে উঠছে৷ ফলে এলমোক্সের মতো কোম্পানির প্রযুক্তি তেমন গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে গণ্য করা না হলেও সামগ্রিকভাবে জার্মানির তথ্যপ্রযুক্তি উৎপাদন ক্ষেত্রের কোনো স্থাপনা চীনের হাতে তুলে দেবার বিষয়ে জোরালো বিরোধিতা দেখা যাচ্ছে৷ এর আগে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ একাধিক পশ্চিমা দেশের সরকার চীনের প্রযুক্তি কোম্পানিগুলির কার্যকলাপ খর্ব করতে একাধিক পদক্ষেপ নিয়েছে৷ সেই সংশয়ের জের ধরে হুয়াওয়েই কোম্পানিকে অনেক দেশে ফাইভজি মোবাইল নেটওয়ার্কের জন্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম সরবরাহ করতে দেওয়া হয় নি৷

এসবি/কেএম (ডিপিএ, এপি)

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ