কীভাবে করোনা ছড়ালো, তা নিয়ে তদন্ত কমিটি তৈরি করেছে ডাব্লিউএইচও। চীন সেই কমিটির কর্মকর্তাদের ঢুকতে দেয়নি দেশে।
বিজ্ঞাপন
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সঙ্গে এবার তীব্র বিতর্কে জড়ালো চীন। গত মঙ্গলবার ডাব্লিউএইচও দাবি করেছিল, তাদের দুই কর্মকর্তাকে চীনে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। করোনা ভাইরাসের উৎস খুঁজতে তাঁরা চীনে গিয়েছিলেন। বুধবার রাতে চীন সরকারের মুখপাত্র জানিয়েছেন, ডাব্লিউএইচও-র সঙ্গে দিন এবং তারিখ নিয়ে আলোচনা চলছে। তার আগে কী ভাবে তারা প্রতিনিধি পাঠিয়ে দিলেন, তা স্পষ্ট নয়। সে কারণেই ওই কর্মকর্তাদের ঢুকতে দেওয়া হয়নি।
এমন বর্ষবরণ আর দেখেনি বিশ্ব
গত কয়েক শতকের মধ্যে বিশ্বে সবচেয়ে অনাড়ম্বর আয়োজন ছিল এবারের বর্ষবরণে৷ করোনার কারণে বেশিরভাগ আয়োজনে ছিল না দর্শকের উপস্থিতি৷ ছবিঘরে বিস্তারিত৷
ছবি: David Dee Delgado/AFP/Getty Images
অস্ট্রেলিয়া
সিডনি হারবারে এবার নতুন বছরকে বরণ করতে ১২ মিনিট ধরে আতশবাজি পোড়ানো হয়৷ করোনার কারণে গুটি কয়েক দর্শক ছিল এই আয়োজনে৷
ছবি: Brook Mitchell/Getty Images
দক্ষিণ কোরিয়া
রাজধানী সৌলে নতুন বছরের কোনো আয়োজন চোখে পড়েনি৷ প্রশাসন সবধরনের বর্ষবরণ আয়োজন বাতিল করেছিল৷ অথচ সৌলে বর্ষ বরণের আয়োজনে রাস্তায় লাখো মানুষের ঢল নামে৷
ছবি: Chung Sung-Jun/Getty Images
সংযুক্ত আরব আমিরাত
দুবাইয়ের বুর্জ খলিফায় বরাবরের মতো ইংরেজি নতুন বছরকে বরণ করতে আতশবাজির আয়োজন ছিল৷ আট মিনিটের এই প্রদর্শনী দেখতে সেখানে উপস্থিত ছিল অল্প কয়েকজন দর্শক৷ স্থানীয় প্রশাসন করোনার কারণে শহরজুড়ে কড়াকড়ি জারি করেছে৷
ছবি: Ahmed Jadallah/REUTERS
রাশিয়া
রাজধানী মস্কোর রেড স্কয়ার একেবারে ফাঁকা ছিল৷ ক্রেমলিনের স্পাসকায়া টাওয়ারে আতশবাজির ঝলকানি দেখা গেছে৷ করোনার কারণে মধ্যরাত থেকে বার, রেস্তোরাঁ সব বন্ধ ছিল৷
ছবি: Pavel Golovkin/AP Photo/picture alliance
জার্মানি
বার্লিনের ব্রান্ডেনবুর্গ গেটে প্রতি বছর বর্ষবরণে লাখো মানুষ ভিড় করেন আতশবাজি দেখতে ও উদযাপন করতে৷ আর এবার আতশবাজি পোড়ানো হলেও কেবল পুলিশ আর সাংবাদিকের উপস্থিতি ছিল সেখানে৷ টিভিতে লাইভ দেখানো হয়েছে এখানকার আয়োজন৷
ছবি: Christoph Soeder/dpa/picture alliance
ফ্রান্স
রাজধানী প্যারিসে ৩১ ডিসেম্বর রাত ৮টা থেকে জারি হয়েছিল কারফিউ৷ রাস্তায় রাস্তায় টহল ছিল পুলিশের৷ নিউ ইয়ারের আয়োজনে যেখানে ক্যাম্পস এলিসি এভিনিউ লোকে লোকারণ্য হয়ে থাকতো, সেখানে ছিল না কোনো মানুষের উপস্থিতি৷
নিউ ইয়র্কের টাইমস স্কয়ারে জনসাধারণের প্রবেশ ছিল নিষিদ্ধ৷ তবে পিটবুল আর জেনিফার লোপেজের পারফর্মেন্স লাইভ দেখানো হয়েছে টিভিতে৷
ছবি: John Angelillo/newscom/picture alliance
হংকং
বৌদ্ধ সন্ন্যাসীরা ধর্মীয় প্রথা মেনে আয়োজন করেন বর্ষবরণের৷
ছবি: Anthony Kwan/Getty Images
চীন
চীনের উহানে বর্ষবরণের আয়োজন ছিল প্রতিবছরের মত স্বাভাবিক৷ কেবল জনগণের মুখে ছিল মাস্ক৷
ছবি: Tingshu Wang/REUTERS
নিউজিল্যান্ড
অকল্যান্ডের স্কাই টাওয়ারে প্রতি বছরের মতোই আতশবাজি পোড়ানো হয়েছে৷ সেখানে করোনা পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হওয়ার মাস্ক পরে উপস্থিত ছিলেন অনেকে৷
ছবি: Michael Craig/NZ Herald/AP/picture alliance
মিসর
তাহিয়া মিসর সেতুতে বর্ষবরণ উপলক্ষ্যে আলোকসজ্জা৷
ছবি: Ahmed Gomaa/Xinhua/picture alliance
উত্তর কোরিয়া
রাজধানী পিয়ং ইয়ং-এর বর্ষবরণ আয়োজন দেখলে মনে হবে না বিশ্বে কোনো মহামারী দেখা দিয়েছে৷ নাচে গানে ভরপুর আয়োজনে উপস্থিত ছিল হাজারো দর্শক৷ তাদের মুখে মাস্ক থাকলেও ছিল না সামাজিক দূরত্ব৷
ছবি: Jon Chol Jin/AP Photo/picture alliance
13 ছবি1 | 13
২০১৯ সালের ডিসেম্বর মাসে করোনা ভাইরাসের প্রথম চিহ্ন পাওয়া যায় চীনে। দেশের উহানে প্রথম এই ভাইরাসে সাধারণ মানুষ আক্রান্ত হতে শুরু করেন। পরবর্তীকালে প্রশ্ন ওঠে, ভাইরাসটি কি প্রাকৃতিক, না কি ল্যাবরেটরিতে তৈরি? অ্যামেরিকা সহ বেশ কয়েকটি দেশ দাবি করে, চীন পরীক্ষাগারে ওই ভাইরাস তৈরি করেছে। উহানের একটি ল্যাবরেটরি থেকে কী ভাবে ভাইরাসটি বাইরে চলে আসে, সে বিষয়েও নানা বিতর্কিত তথ্য সামনে আসতে থাকে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা অবশ্য বরাবরই চীনের পাশে দাঁড়িয়েছে। ভাইরাসটিকে প্রকৃতিজাত বলেও দাবি করেছে তারা। বস্তুত, এ নিয়ে অ্যামেরিকার প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে ডাব্লিউএইচও-র বিতর্কও হয়। ট্রাম্প তাদের ফান্ডিং বন্ধ করে দেন।
এবার সেই ডাব্লিউএইচও-র সঙ্গেই বিতর্কে জড়িয়েছে চীন। ১০ জনের একটি দল তৈরি করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। এই দলটি চীনে গিয়ে করোনার উৎসের সন্ধান করবে। অর্থাৎ, প্রথম কী ভাবে করোনা ছড়ালো, তা বের করার চেষ্টা করবে। এ বিষয়ে চীনের সঙ্গে ডাব্লিউএইচও-র আলোচনাও চলছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দাবি, সেই কাজেই দুই কর্মকর্তা চীনে গিয়েছিলেন। কিন্তু ভিসায় সমস্যা আছে বলে তাঁদের ফেরত পাঠানো হয়েছে। চীন দাবি করেছে, বিষয়টি নিয়ে ডাব্লিউএইচও-র সঙ্গে এখনো কথা চলছে। তদন্তের দিনক্ষণ নিয়ে এখনো কোনো নির্দিষ্ট তারিখ সাব্যস্ত হয়নি। এই পরিস্থিতিতেই দুইজন কর্মকর্তা চলে আসেন। ফলে তাঁদের বাধ্য হয়েই ফেরত পাঠাতে হয়েছে।
উহানের যে পরীক্ষাগারটির নাম বার বার উঠে আসছে, সেখানে এর আগেও কাউকে ঢুকতে দেয়নি চীন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কর্মকর্তাদেরও কি সেখানে তারা ঢুকতে দিতে চাইছে না? বিভিন্ন মহলে এ প্রশ্ন উঠছে।