চীনের সঙ্গে বাণিজ্যযুদ্ধে নেমেছেন ডনাল্ড ট্রাম্প৷ তার প্রভাব যুক্তরাষ্ট্রের পর্যটনেও পড়েছে৷ যুক্তরাষ্ট্রের দিক থেকে মুখ ফেরাতে শুরু করেছেন চীনের পর্যটকরা৷
বিজ্ঞাপন
চীনের পর্যটকদের কাছ থেকে বছরে মোট ৩৬.২ বিলিয়ন ডলার (৩২ বিলিয়ন ইউরো) আয় হতো যুক্তরাষ্ট্রের৷ বিশ শতকের শুরু থেকে চীনের পর্যটকেরা ব্যাপক হারে যেতে শুরু করে যুক্তরাষ্ট্রে৷ ২০০৩ সাল থেকে যুক্তরাষ্ট্রের আরো দ্রুত বাড়তে থাকে চীনা পর্যটক৷ গত বছর যুক্তরাষ্ট্র-চীন বাণিজ্যযুদ্ধ শুরুর পরও জারি ছিল এই ধারা৷ যুক্তরাষ্টের পর্যটন বিভাগের প্রধান আশা করেছিলেন ২০২২ সাল পর্যন্ত এমনই চলবে৷ কিন্তু এ বছর কমতে শুরু করেছে চীনের পর্যটক৷সে দেশের ভ্রমণ ও পর্যটন কর্তৃপক্ষের প্রতিবেদন অনুযায়ী, এ বছর গত বছরের তুলনায় চীনা পর্যটক শতকরা সাড়ে পাঁচভাগ কমেছে৷
অ্যামেরিকার বড় শত্রু কারা?
ইরানের সঙ্গে অনেকটা যুদ্ধাবস্থা বিরাজ করছে অ্যামেরিকার৷ আর চীনের সঙ্গে চলছে বাণিজ্য যুদ্ধ৷ মার্কিনিদের বিবেচনায় তাঁদের শত্রুদের চিনে নিন ছবিঘরে৷
ছবি: Imago/UPI//Imago/Russian Look
উত্তর কোরিয়া
জরিপের মাধ্যমে অ্যামেরিকার শত্রুদের তালিকা প্রকাশ করে থাকে গ্যালাপ৷ প্রতিষ্ঠানের ২০১৮ সালের জরিপে দেখা যায়, গত কয়েক বছরের মতো এবারও অ্যামেরিকার শত্রু তালিকার শীর্ষ দেশ হিসেবে উত্তর কোরিয়ার নাম আছে৷ ২০১৬ সালে ১৬ ভাগ মানুষ উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক শক্তিকে হুমকি হিসাবে বিবেচনায় নিয়েছিলেন৷ ২০১৮ সালে এসে হুমকি বিশ্বাসকারীদের সংখ্যা ৫১ শতাংশে দাঁড়িয়েছে৷
ছবি: picture-alliance/dpa
রাশিয়া
অ্যামেরিকার সঙ্গে রাশিয়ার শত্রুতার সম্পর্ক দীর্ঘদিনের৷ এর মধ্যে উত্থান-পতনও দেখা গেছে বিভিন্ন সময়ে৷ ২০১৬ সালে ১৫ শতাংশ অ্যামেরিকান বলেছেন, রাশিয়া তাঁদের সবচেয়ে বড় শত্রু৷ ২০১৮ সালে গিয়ে এ সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৯ শতাংশে৷
চীনের সঙ্গে অ্যামেরিকার বাণিজ্য যুদ্ধ ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে বিশ্বের অন্যান্য দেশের অর্থনীতিকেও৷ যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে অর্থনৈতিক পরাশক্তি হওয়ার লক্ষ্যে কাজ করছে চীন৷ দুই দেশের সাম্প্রতিক কিছু সিদ্ধান্ত উভয়ের অর্থনীতিকে প্রভাবিত করছে৷ ২০১৬ সালে অ্যামেরিকার ১২ শতাংশ মানুষের বিবেচনায় চীন ছিল দেশটির সবচেয়ে বড় শত্রু৷ তবে, ২০১৮ সালে দেশটিকে বড় শত্রু হিসাবে চিহ্নিত করেছেন ১১ শতাংশ অ্যামেরিকান৷
ছবি: picture-alliance/dpa
ইরান
২০০৬ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত অ্যামেরিকানদের কাছে তাঁদের শত্রু তালিকায় শীর্ষে ছিল ইরান৷ পরের কয়েক বছর পরিস্থিতি ভালো হয় কিছুটা৷ তবে, ২০১৫ সালে ইরানকে নিজেদের সবচেয়ে বড় শত্রু হিসাবে চিহ্নিত করেছেন ৯ শতাংশ অ্যামেরিকান৷ ২০১৮ সালে এমন চিন্তার মানুষের সংখ্যা দাঁড়ায় ৭ শতাংশে৷
ছবি: Imago/UPI//Imago/Russian Look
সিরিয়া
গ্যালাপের পাশাপাশি অ্যামেরিকার শত্রুদের তালিকা প্রকাশ করে থাকে ক্যানাডাভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর রিসার্চ অন গ্লোবালাইজেশন বা সিআরজি৷ তাদের বিবেচনায় ইরান, রাশিয়া ও ফিলিস্তিনের সঙ্গে সিরিয়ায় ক্ষমতাসীনদের সখ্যের কারণে সিরিয়ার সঙ্গে অ্যামেরিকার বিরোধ হয়েছে৷ আবার অ্যামেরিকা-ইসরায়েল মৈত্রীর ক্ষেত্রে বিপরীত অবস্থানে আছে সিরিয়া৷ ভূ-রাজনৈতিক কারণে সিরিয়ার উপর আধিপত্য রাখতে চায় যুক্তরাষ্ট্র৷
ছবি: picture-alliance/dpa/K. Elfiqi
ভেনেজুয়েলা
সিআরজি বলছে, ভেনেজুয়েলার তেলের মজুদ ও সামাজিক-রাজনৈতিক কারণে অ্যামেরিকার সঙ্গে তাঁদের বিরোধ দীর্ঘদিনের৷ যদিও বর্তমানে মূল্যস্ফীতি ও অর্থনৈতিক সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে ভেনেজুয়েলা, তবুও সেই বিরোধ কমেনি মোটেও৷ দেশটির ক্ষমতাসীন মাদুরো সরকারকে হটাতে তৎপর অ্যামেরিকা৷ সম্প্রতি অ্যামেরিকার সঙ্গে সব ধরনের কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করেছে দক্ষিণ অ্যামেরিকার দেশটি৷
ছবি: picture-alliance/dpa/P. Miraflores
6 ছবি1 | 6
দুই দেশের মধ্যে চলমান বাণিজ্যযুদ্ধের কারণেই এমনটি হচ্ছে বলে বিশ্লেষকদের ধারণা৷ পর্যটনখাতে এক রকমের ধস নামিয়ে দেয়া এই প্রবণতা রুখতে চীনাদের জন্য যুক্তরাষ্ট্রে নেয়া হচ্ছে বিশেষ উদ্যোগ৷ ম্যাকাউ বিশ্ববিদ্যালয়ের পর্যটন অনুষদের অধ্যাপক গ্লেন ম্যাককার্টনি জানান, ডিজাইনার ব্র্যান্ডগুলোর দোকান এবং হোটেলে মান্ডারিন ভাষা জানা কর্মীদের নিয়োগ দেয়া হচ্ছে৷ গ্রিন টি রাখা হচ্ছে চীনা ক্রেতাদের কথা মাথায় রেখে৷কিন্তু এত করেও বিশেষ লাভ হচ্ছে না৷ যুক্তরাষ্ট্র বাদ দিয়ে এখন ইউরোপ বা এশিয়ার দেশগুলোতে যাচ্ছেন চীনের নাগরিকরা৷ যুক্তরাষ্ট্রে চীনের প্রত্যেক পর্যটক গড়ে পাঁচ হাজার নয়শো ইউরো ব্যয় করতেন৷ যুক্তরাষ্ট্র-চীন বাণিজ্যযুদ্ধের কারণে তা চলে যাচ্ছে অন্য দেশে৷