চীনের কারাওকে বারগুলোতে জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি হতে পারে কিংবা ধর্মীয় চর্চায় বাধা দেয় বা মাদক গ্রহণে উৎসাহিত করে এমন গান বাজানো নিষিদ্ধ করা হচ্ছে৷
বিজ্ঞাপন
চীনের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা সিনহুয়া মঙ্গলবার জানিয়েছে, বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে ‘ক্ষতিকর গান' বাজানো বন্ধে এ উদ্যোগ নিয়েছে দেশটি৷ কোন গানগুলো বাজানো যাবে না তার তালিকা তৈরির কাজ শুরু করেছে চীনের সংস্কৃতি এবং পর্যটন মন্ত্রণালয়৷
হংকংয়ের শেষ গণতন্ত্রপন্থি সংবাদপত্র বন্ধ হয়ে গেল
হংকংয়ে বাকস্বাধীনতা খর্ব করতে সাম্প্রতিক সময়ে চীন ও হংকং কর্তৃপক্ষের নেয়া বিভিন্ন সিদ্ধান্তের কড়া সমালোচনা করেছিল অ্যাপল ডেইলি৷ সে কারণে সরকারের রোষানলে পড়ে পত্রিকাটি বন্ধ করে দিতে বাধ্য হন মালিকপক্ষ৷
ছবি: Lam Yik/REUTERS
গণতন্ত্রের সমর্থক শেষ সংবাদপত্র
গণতন্ত্র সমর্থন করে হংকংয়ে এমন কিছু অনলাইন মিডিয়া আছে৷ তবে এই ঘরানার একমাত্র দৈনিক ছিল ‘অ্যাপল ডেইলি’৷ বৃহস্পতিবার তার শেষ সংস্করণ বের হয়েছে৷
ছবি: Anthony Wallace/AFP
দশ লাখ কপি
সাধারণত দৈনিক ৮০ হাজার কপি পত্রিকা বের হত৷ কিন্তু শেষ দিন দশ লাখ কপি ছাপা হয়েছিল৷ সকাল সাড়ে আটটার মধ্যে সব বিক্রি হয়ে যায়৷ লাইন ধরে মানুষকে অ্যাপল ডেইলি কিনতে দেখা যায়৷
ছবি: Vincent Yu/AP Photo/picture alliance
২৬ বছরের ইতিহাস
১৯৯৫ সালে পত্রিকাটির যাত্রা শুরু হয়েছিল৷ হংকংয়ে বাকস্বাধীনতা খর্ব করতে সাম্প্রতিক সময়ে চীন ও হংকং কর্তৃপক্ষের নেয়া বিভিন্ন সিদ্ধান্তের কড়া সমালোচনা করেছিল অ্যাপল ডেইলি৷
ছবি: Kin Cheung/AP Photo/picture alliance
নতুন আইনের ব্যবহার
২০১৯ সালে হংকংয়ে গণতন্ত্রের সমর্থনে বিশাল বিক্ষোভ হয়েছিল৷ সে কারণে জাতীয় নিরাপত্তা আইন নামে একটি নতুন আইন করা হয়৷ সেই আইন ব্যবহার করে গত সপ্তাহে সম্পাদক ও কর্মকর্তাসহ অ্যাপল ডেইলির পাঁচ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল৷ এছাড়া প্রায় সাড়ে ১৯ কোটি টাকা মূল্যের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করে পুলিশ৷ সে কারণে পত্রিকাটি বন্ধ করে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়৷
ছবি: Vernon Yuen/NurPhoto/picture alliance
সমর্থন
বুধবার অ্যাপল ডেইলির শেষ দিন- এই খবর জানাজানি হওয়ার পর সন্ধ্যায় অফিসের সামনে প্রায় ১০০-র মতো মানুষ জড়ো হয়েছিলেন৷ ছবিতে অ্যাপল ডেইলির কর্মীদের জড়ো হওয়া সমর্থকদের ধন্যবাদ দিতে দেখা যাচ্ছে৷
ছবি: Tyrone Siu/REUTERS
শেষ কাজ
ছবিতে অ্যাপল ডেইলির এক কর্মীকে শেষ সংস্করণ নিয়ে কাজ করতে দেখা যাচ্ছে৷ এই সংস্করণে ছাপা হওয়া এক ছবিতে পত্রিকার এক সদস্যকে অফিসের বাইরে জড়ো হওয়া সমর্থকদের উদ্দেশ্য হাত নাড়তে দেখা গেছে৷ শিরোনাম দেয়া হয়েছে এমন- ‘হংকংয়ের বাসিন্দারা বৃষ্টিতে দাঁড়িয়ে ব্যথিত মনে বিদায় জানাচ্ছে, আমরা অ্যাপল ডেইলিকে সমর্থন করি৷’
ছবি: Tyrone Siu/REUTERS
6 ছবি1 | 6
এই ‘কালো তালিকায়' জাতীয় সংহতি, সার্বভৌমত্ব এবং আঞ্চলিক সম্প্রীতির জন্য হুমকি হতে পারে এমন গানের পাশাপাশি রাষ্ট্রের ধর্মীয় নীতির বিপক্ষে যায় এমন সংগীতও যোগ করা হবে৷
পাশাপাশি জুয়া খেলা বা মাদক গ্রহণের মতো অবৈধ কর্মকাণ্ডে উৎসাহ জোগায় এমন গানও কারাওকে বারে নিষিদ্ধ হবে বলে জানিয়েছে মন্ত্রণালয়৷
‘ভালো এবং উৎসাহব্যঞ্জক' গান বাজানো যাবে
কারাওকে বারগুলোতে সাধারণত কোনো একটি গানের সঙ্গে কণ্ঠ মিলিয়ে সেটি গাইতে পারেন সাধারণ মানুষ৷ পশ্চিমা দেশগুলোতেও এ ধরনের বার রয়েছে৷
চীনের সংস্কৃতি এবং পর্যটন মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, কারাওকে বারে যেসব প্রতিষ্ঠান গান সরবরাহ করছে, তাদের দায়িত্ব হবে কালোতালিকায় থাকা গানগুলো বাদ দেয়া৷ পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানগুলোকে বারে ‘ভালো এবং উৎসাহব্যঞ্জক' গান সরবরাহ করারও আহ্বান জানিয়েছে মন্ত্রণালয়৷
তিয়েনআনমেন আন্দোলনের ৩০ বছর
01:01
সিনহুয়াতে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, চীনে পঞ্চাশ হাজারের মতো বিনোদনকেন্দ্র রয়েছে, যেখানে এক লাখের মতো গান বাজানো হয়৷ গত বছর বেইজিং ১০০ গান নিষিদ্ধ করেছিল, যেগুলো সহিংসতাকে উস্কে দিচ্ছে বলে দাবি কমিউনিস্ট দেশটির৷
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সহিংসতা, পর্নগ্রাফি এবং রাজনৈতিকভাবে সংবেদনশীল মতামতের মতো কন্টেন্ট কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করে চীন৷ দেশটিতে বাক এবং গণমাধ্যমের স্বাধীনতা অত্যন্ত সীমিত৷