পশ্চিমা দেশগুলোকে সতর্ক করে ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রোহানি বলেছেন, আগামী রবিবারের পর থেকে তাঁর দেশ আর ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের বিষয়ে স্বাক্ষরিত চুক্তি মানবে না৷
বিজ্ঞাপন
রোহানিকে উদ্ধৃত করে দেশটির সংবাদ সংস্থা আইআরআইবি জানায়, চুক্তিতে অংশগ্রহনকারী দেশগুলো কোনো সুনির্দিষ্ট পথ বের করতে না পারলে ইরান নিজের ‘ইচ্ছামতো ও প্রয়োজনমতো' ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করবে৷
জয়েন্ট কম্প্রিহেনসিভ প্ল্যান অব অ্যাকশন (জেসিপিওএ) নামে ২০১৫ সালে স্বাক্ষরিত চুক্তির আওতায় ইরানকে তিন দশমিক ৬৭ মাত্রার তিন'শ কিলোগ্রাম পর্যন্ত ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করার অনুমতি দেয়া হয়েছিল৷ নিরাপত্তা পরিষদের পাঁচ সদস্য রাষ্ট্র ও জার্মানিসহ মোট ছয়টি দেশের সাথে স্বাক্ষরিত এ চুক্তি থেকে গত বছর ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রকে সরিয়ে নেয়৷ চুক্তিতে ত্রুটি আছে দাবি করে ট্রাম্প ইরানের ওপর কঠোর অর্থনৈতিক অবরোধ আরোপ করে, যা ইরানের অর্থনীতিকে টালমাটাল অবস্থায় ফেলে দেয়৷ এর প্রতিক্রিয়ায় ইরান জানায়, চুক্তিতে অংশগ্রহনকারী বাকি দেশগুলো যদি যুক্তরাষ্ট্রের আরোপ করা অবরোধের ক্ষতিপূরণের সঠিক পথ দেখাতে ব্যর্থ হয় তাহলে দেশটি পূনরায় ‘উন্নতমানের ইউরেনিয়াম' উৎপাদন শুরু করবে৷ আগামী রোববার, অর্থাৎ ৭ জুলাই ইরানের বেঁধে দেয়া ৬০ দিন শেষ হচ্ছে৷
রোহানি জানান ‘‘তিন দশমিক ৬৭ মাত্রার ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের যে চুক্তি ছিল আমরা আর সেটি মানবো না৷ আমরা আমাদের প্রয়োজনমতো ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করব৷''
এ সময় তিনি আরো জানান, তাঁর দেশ ‘‘ চুক্তির শর্ত শতভাগ মেনে চলবে, যদি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ স্বাক্ষরকারী অন্য দেশগুলো চুক্তিটি শতভাগ মেনে চলে৷''
ফ্রান্সের প্রতিক্রিয়া
ইরানের এ সিদ্ধান্তের প্রতিক্রিয়ায় ফ্রান্সের পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয় বলেছে, চুক্তি ভঙ্গ করে ইরান খুব বেশি কিছু অর্জন করতে পারবে না৷ চুক্তিটিকে প্রশ্নের মুখে ফেলে দেওয়া হলে তা শুধুমাত্র চলমান অস্থিরতাকেই বাড়াবে বলে মন্তব্য করেন ফ্রান্সের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র৷
ইরানের কয়েকটি দর্শনীয় স্থান
হাজার বছরের পুরনো ইতিহাস ও সংস্কৃতি, আকর্ষণীয় ভবন আর অসাধারণ প্রকৃতির দেখা পেতে চাইলে চলে যান ইরানে৷ সঙ্গে পাবেন মনে রাখার মতো আতিথেয়তা৷
ছবি: picture alliance/Prisma
কাশান
শহরের কেন্দ্রে আছে ঐতিহ্যবাহী ঘরবাড়ি, মসজিদ আর বাজার৷ আর শহরের বাইরে গেলে দেখা যাবে লবণাক্ত পানির হ্রদ৷ এছাড়া মেরেনযব মরুভূমিতে বেড়াতে গিয়ে সূর্যোদয় দেখার বিষয়টিও অনেকদিন মনে রাখার মতো একটি বিষয়৷
ছবি: DW/F. Schlagwein
ইসফাহান
ইরানের প্রায় সব জায়গাতেই আর্টের দেখা পাওয়া যায়৷ যেমন ছবিতে ইসফাহান শহরে অবস্থিত শেখ লুৎফুল্লাহ মসজিদের গম্বুজের ভেতরের কারুকাজ দেখতে পাচ্ছেন৷ এছাড়া স্ট্রিট আর্ট, রংবেরংয়ের বাড়িঘর ইত্যাদিরও দেখা পাওয়া যাবে ইসফাহানে৷
ছবি: DW/F. Schlagwein
আবিয়ানেহ
কাশান আর ইসফাহানের মাঝে ছোট্ট একটি গ্রাম আবিয়ানেহ৷ মাত্র ৩০০ লোক বাস করেন সেখানে৷ কিন্তু ইরানের অনেকেই এই গ্রামকে চেনেন৷ কারণ প্রায় ২০০০ বছরের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি এখনও ধরে রেখেছেন গ্রামবাসীরা৷ সেখানকার ঘরবাড়ি তৈরি হয়েছে লাল-বাদামি রংয়ের মাটি দিয়ে৷ ২০০৭ সালে এই গ্রামের নাম ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকায় ঠাঁই পায়৷
ছবি: DW/F. Schlagwein
লুট মরুভূমি
মঙ্গলগ্রহ দেখতে কেমন হতে পারে তা বোঝার জন্য অনেকে লুট মরুভূমির ছবি দেখে থাকেন৷ দাশত-ই-লুট, যা কালুট নামেও পরিচিত, মরুভূমিতে প্রাণের চিহ্ন নেই৷ থাকবেই বা কীভাবে? ২০০৫ সালে নাসা সেখানে ৭০.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা মেপেছিল৷
ছবি: DW/F. Schlagwein
ইয়াজদ
ইরানের সবচেয়ে বড় দুই মরুভূমির মাঝে অবস্থিত শহর এটি৷ দেশটির অন্যতম সুন্দর এই শহরে গেলে প্রাচীনকালের ঘরবাড়ির দেখা পাওয়া যাবে৷ আর সন্ধ্যাবেলার চায়ের দোকানের ছাদে উঠে আলোকিত শহর দেখাও এক দারুণ অভিজ্ঞতা৷
ছবি: picture alliance/Prisma
গোলেস্তান প্রদেশ
কেমন লাগছে ছবিটি? দারুণ না! ছোট্ট যে ঘরটি দেখছেন সেটি আসলে নবি খালেদ ইবনে সেনান (আঃ)-এর মাজার৷ সেখান থেকে সারি সারি পাহাড়ের দৃশ্য সত্যিই অপূর্ব৷ এলাকাটি উত্তরপূর্ব ইরানে অবস্থিত৷
ছবি: DW/F. Schlagwein
সিরাজ
বেশিরভাগ ইরানির ভালোলাগার শহর সিরাজ৷ সেখানে দেখার অনেক কিছু থাকলেও সবচেয়ে জনপ্রিয় হচ্ছে মহাকবি হাফিজের কবর৷ এছাড়া নাসির-উল-মুল্ক মসজিদও দেখে আসতে পারেন৷
ছবি: DW/F. Schlagwein
পেরজেপোলিস
আকেমেনুদ সাম্রাজ্যের, যা প্রথম পারস্য সাম্রাজ্য নামেও পরিচিত, রাজধানী ছিল পেরজেপোলিস৷ এখনও শহরটিতে সেই সময়কার কিছু স্থাপত্যের দেখা পাওয়া যায়৷ ফলে ইউনেস্কোর তালিকায় এই শহরের নামও রয়েছে৷