চুমু শুধু চুমু নয়, তাহলে কি? শিরোনাম দেখে এই প্রশ্নটাই হয়তো মনে জাগবে৷ শুনে রাখুন, চুমু আপনার শরীর-মন ভালো রাখে৷ কী, বিশ্বাস হলোনা? আসলেই সত্যি, নিয়মিত চুম্বন আপনার হৃৎপিণ্ডের জন্য ভালো, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের সহায়ক৷
বিজ্ঞাপন
পাশ্চাত্যের তরুণ-তরুণীরা মাঝে মাঝেই এক খেলায় মেতে ওঠে৷ স্বল্প আলোয় একটি টেবিলে সবাই গোল হয়ে বসে৷ এরপর ঠিক টেবিলের মাঝে বোতল ঘোরানো হয়৷ ঘুরতে ঘুরতে বোতলটি যার দিকে তাক হয়ে থেমে যাবে, সে অন্য কাউকে চুম্বন করবে৷ খেলাটা বেশ উদ্দীপক, তবে চুম্বন কিন্তু মোটেই সহজ কাজ নয়৷ বিশেষত, চুম্বনও এক আর্ট৷ যা সবার দখলে নেই৷
চুমু খাওয়ার মজাই আলাদা
ফুটবল মানে বাঁধভাঙা আনন্দ, উচ্ছ্বাস দুঃখ, হতাশা বা কান্না৷ গত বিশ্বকাপের সময় আবেগ, অনুভূতি প্রকাশে রাখঢাক রাখেননি অনেকেই৷ এমনকি প্রকাশ্যে চুমু খেতেও আপত্তি ছিল না তাঁদের৷ ফুটবল ভক্তদের কিছু অন্তরঙ্গ ছবি পাবেন এখানে৷
ছবি: Behrouz Mehri/AFP/Getty Images
প্রেমিক যুগল
১৭ই জুন ২০১৪৷ ব্রাজিলের সালভাদোরে খেলা হচ্ছিলো ব্রাজিল বনাম মেক্সিকোর৷ খেলা দেখার সময় ব্রাজিল দলের ভক্ত যুগল এভাবেই অনুভূতি প্রকাশ করেন৷
ছবি: Getty Images
জার্মান দলের ভক্ত
২০১০ সালের ৭ই জুলাই দক্ষিণ আফ্রিকার ডারবানে বিশ্বকাপ ফুটবল খেলা চলছিল৷ জার্মানি বনাম স্পেনের সেমি ফাইনাল খেলা৷ বার্লিনের ‘ফ্যান মাইল পাবলিক ভিউয়িং’-এ খেলা দেখার সময় জার্মান জাতীয় দলের দুই ভক্তের চুম্বনের দৃশ্য এটি৷
ছবি: AFP/Getty Images
ব্রাজিল দলের ভক্ত যুগল
খেলা হচ্ছে ব্রাজিল দলের সাথে মেক্সিকো দলের৷ দেশের মাটিতে প্রিয় দলের খেলা হচ্ছে, কাজেই আনন্দ কিছুটা বেশিই! অন্যান্যদের মাঝে বসে নিজেরা চুম্বনে ব্যস্ত৷
ছবি: Dimitar Dilkoff/AFP/Getty Images
ফ্রেঞ্চ কিস!
এ বছর ১৫ই জুন, পর্তো আলেগ্রের বাইরা – রিও স্টেডিয়ামে ই-গ্রুপের প্রাথমিক খেলা৷ খেলছিল ফ্রান্স বনাম হন্ডুরাস৷ খেলা চলাকালে এই বিশেষ মুহূর্ত ক্যামেরাবন্দি করেন এক আলোকচিত্রী৷
ছবি: picture-alliance/dpa
চিলির ভক্তদের চুম্বন
বিশ্বকাপ ফুটবল ২০১৪, চিলির সাথে স্পেনের বি-রাউন্ডের প্রাথমিক খেলা৷ চিলির ভক্তরা ব্রাজিলের রিও ডি জানেরোর মারাকানা স্টেডিয়ামে খেলা দেখতে দেখতে চুমু খাচ্ছিলেন৷
ছবি: picture-alliance/dpa
দুই ‘অন্ধ ভক্তের’ কাণ্ড
স্প্যানিশ দলের দুই ‘অন্ধ ভক্ত’ চুম্বন করছেন স্পেন বনাম হল্যান্ডের খেলা দেখার সময়৷ খেলাটি হয় গত ১৩ই জুন সালভাদোরের অ্যারেনা ফন্টে নোভা স্টেডিয়ামে৷
ছবি: Getty Images
কলোম্বিয়া বনাম গ্রিসের খেলা
১৪ই জুন ২০১৪, কলোম্বিয়া বনাম গ্রিসের খেলা৷ খেলাটি হয় ব্রাজিলের বেলো হরিসন্ট-এর মিনাইরাও অ্যারেনাতে৷ কলোম্বিয়া দলের ভক্তদের এই চুম্বনটি খেলা শুরু হওয়ার ঠিক আগ মুহূর্তে তোলা৷
ছবি: AFP/Getty Images
মাঠের শত্রু যখন বন্ধু
মানাউসের অ্যামাজন অ্যারেনা স্টেডিয়ামে ১৪ই জুন ইংল্যান্ডের সাথে ইটালির গ্রুপ ‘ডি’-এর ফুটবল ম্যাচ৷ ইটালি দলের ভক্ত চুম্বন করেছেন ইংল্যান্ড দলের ভক্তকে৷
ছবি: Fabrice Coffrini/AFP/Getty Images
উরুগুয়ের ভক্তদের চুমু
উরুগুয়ের ভক্ত একে অপরকে চুমু দিচ্ছে৷ ২০১০ সালের বিশ্বকাপ ফুটবলের কোয়ালিফাই খেলার সময়৷ খেলাটি ছিল কোস্টারিকা বনাম মন্টেভিডিও৷
ছবি: AP
স্পেনের সমর্থক যুগল
স্পেনিশ দলের সাপোর্টার দু’জন এভাবেই চুমু খাচ্ছেন রিও ডি জানেরোর মারাকানা স্টেডিয়ামে, যখন চিলির জাতীয় দলের সাথে স্পেনের জাতীয় দলের খেলা চলছিল ১৮ই জুন ২০১৪ সালে৷
ছবি: LLUIS GENE/AFP/Getty Images
ইরানি যুগল
১৬ই জুন ছিল বিশ্বকাপ ফুটবলের ইরান বনাম নাইজেরিয়ার খেলা৷ খেলা শুরুর ঠিক আগে ইরানের ভক্ত প্রেমিক-প্রেমিকার চুমুর দৃশ্য এটি৷ রক্ষণশীল দেশ হিসেবে বিবেচিত ইরানের নাগরিকদের এ রকম প্রকাশ্য চুমুর ছবি সত্যিই বিরল৷
ছবি: Behrouz Mehri/AFP/Getty Images
11 ছবি1 | 11
তাছাড়া, শুধু এমন খেলাতেই যে চুমুর আধিক্য তা কিন্তু নয়৷ সেই প্রাচীন কাল থেকেই চুমু এক আলাদা গুরুত্ব বহন করে চলেছে৷ লেখক লানা সিট্রন তাঁর ‘এ কম্পেনডিয়াম অফ কিসেস' বই'এ চুমুর বিশাল ইতিহাস তুলে ধরেছেন৷ তিনি উল্লেখ করেছেন, এই কর্মটি শুধু ভালোবাসা পেতে বা দিতে নয়, বরং আজও অবধি বহু কঠিন লক্ষ্য হাসিলের এক মোক্ষম অস্ত্র৷
প্রাচীন রোমানরা যে কোন চুক্তির আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করত চুমুর মাধ্যমে৷ আর ধর্মীয় গ্রন্থ থেকে শুরু করে ক্রুশে, পায়ে, হাতে, আংটিতে - কোথায় নেই চুমু৷ তবে মানতেই হবে, এখনো বহু রক্ষণশীল সমাজে চুমু খুব একটা জায়গা করে নিতে পারেনি৷
তাতে কি? মানুষের সবচেয়ে কাছের প্রজাতি মানে গরিলারা কিন্তু তাদের সমাজে পুরোদস্তুর চালু করেছে চুম্বন সংস্কৃতি৷ শিম্পাঞ্জিরা ফ্রেঞ্চ চুমুতে বেশ পারদর্শী৷ তাদের যৌন জীবনেও চুম্বন অপরিহার্য৷
যাইহোক, শেষ করার আগে চুমুর কিছু শারীরিক হিসাবনিকাশ করা যাক৷ যারা নিয়মিত চুম্বন করেন তাদের নাকি পেটের অসুখ কম হয়৷ এমনকি তাদের শরীরে সংক্রমণের মাত্রাও কম৷ আর শুরুতেই যেটা বললাম, চুমু হৃৎপিণ্ডের জন্য ভালো, রক্তচাপ কমাতে সহায়ক৷ আরো যে মজার তথ্যটা বিজ্ঞানীরা দিচ্ছেন, তা হলো একেকটি চুম্বনে খরচ হয় ছয় ক্যালোরি৷ ও হ্যাঁ, একটি চুমুর জন্য মুখের ত্রিশটি পেশি ব্যবহার করতে হয়৷