1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

চেক প্রজাতন্ত্রের স্পা শহরের কথা

ডানকো হান্ড্রিক/এসি১৩ নভেম্বর ২০১৪

কার্লোভি ভারি: গত পঁচিশ বছর ধরে চেক প্রজাতন্ত্রের এই স্পা শহরটির আসল সমঝদার হলেন রুশ টুরিস্টরা – ইউক্রেন সংঘাতের পরিপ্রেক্ষিতে যারা আপাতত সেখানে যেতে ভয় পাচ্ছেন: যদি তাঁদের ক্রেডিট কার্ড আটকে দেওয়া হয়?

Tschechien Illegaler Alkohol
ছবি: picture-alliance/dpa

বিশ্ব রাজনীতিতে কী ঘটছে না ঘটছে, তাতে কাটেরিনা প্লাচকোভা-র কিছু আসে যায় না৷ কিন্তু সেই বিশ্ব রাজনীতিই এ বছর কাটেরিনা-র ব্যবসা মাটি করতে চলেছে! চেক প্রজাতন্ত্র, এককালে চেকোস্লোভাকিয়া-র পৃথিবী-বিখ্যাত ‘স্পা' বা স্বাস্থ্য ফেরানোর জায়গা ছিল এই কার্লোভি ভারি, জার্মানরা যাকে বলেন কার্লসবাড৷ এখানে গরম কালটাই আসল টুরিস্ট সিজন৷ কাটেরিনা-কে এই টুরিস্ট সিজনে তাঁর দুই চতুষ্পদ সহচরী ফিনা আর লোনা-কে নিয়ে সারা বছরের কামাইটা করে নিতে হবে৷ অথচ এ বছর শহরটা যেন খাঁ-খাঁ করছে৷ কাটেরিনা বললেন, ‘‘কার্লসবাড-কে আমি আর কখনো এমন খালি দেখিনি৷ আগে অবস্থা এর চাইতে অনেক ভালো ছিল; আর এখন যেন চরমে পৌঁছেছে৷ প্রায় কোনো খদ্দেরই নেই৷ রুশরাও আর আসে না৷ হয় তারা কোনো ভিসা পায় না – নয়তো জানি না, কী ঘটে থাকতে পারে৷''

‘রাশিয়ার সবচেয়ে পশ্চিমের শহর'

এই সেদিনও কার্লোভি ভারি-কে বলা হতো রাশিয়ার সবচেয়ে পশ্চিমের শহর৷ রুশিদের কার্লসবাড-প্রীতি শুরু হয় জার পিটার দ্য গ্রেট-এর আমলে৷ ১৭১১ সালে মহান পিটার এসেছিলেন কার্লসবাডে তাঁর শরীর সারাতে৷ ১৯৮৯ সালের পর রুশরা কোটি কোটি ডলার খরচ করে ভাঙাচোরা স্পা-শহরটিতে আবার পুরনো দিনের মতো ঝলমলে, চকচকে করে তোলে৷ কিন্তু ইউক্রেন সংকটের ফলে কার্লসবাডের ‘রুশ' দ্যুতি অনেকটা ম্লান হয়ে এসেছে – সেটা নগর প্রশাসনে গেলেও বোঝা যায়৷ নগর প্রশাসনের মুখপাত্র ইয়ান কোপাল শোনালেন, ‘‘১৯৬৮ সালে ‘প্রাগ বসন্তের' সময় রুশ ট্যাংক আর সৈন্যরা যখন চেকোশ্লাভাকিয়ায় ঢোকে, তখন থেকেই এ দেশে রুশদের সম্পর্কে মনোভাব খুব ভালো নয়৷ অনেকেই রুশদের সহ্য করতে পারত না৷ কিন্তু কার্লসবাডে তার কোনো রেশ ছিল না৷ ইউক্রেন সংকটের ফলে চেকদের রুশ ভীতি আবার ফিরে এসেছে, তারা আবার রুশদের ব্যাপারে সন্দিগ্ধ৷''

‘কিন্তু আমার ক্রেডিট কার্ড?'

সংকট সত্ত্বেও যে সব রুশরা কার্লসবাডে এসেছেন, তাঁরা কিন্তু চেকদের আতিথেয়তায় মুগ্ধ৷ অপরদিকে স্পষ্ট যে, ইউক্রেন সংকট যাবৎ রুশিরা দৃশ্যত ইউরোপে আসতে দ্বিধা করছে৷ কার্লসবাড-এর বহু সুদৃশ্য ফ্ল্যাট এখন ‘ফর সেল'৷ কোচোয়ান কাটেরিনা-র গাড়ির যাত্রী কমে গেছে৷ কাটেরিনা যে সব নামিদামি দোকানপাটের পাশ দিয়ে গাড়ি চালান, তাদেরও শাঁসালো খদ্দেরের সংখ্যা কমে গেছে৷ কাটেরিনা'র মন্তব্য: ‘‘এখানে মরসুম শুরু হয় মে মাসে – অক্টোবর অবধি সবকিছু ভর্তি থাকে৷ কিন্তু অবস্থা দেখলে মনে হবে, যেন এখনই হেমন্ত এসে গেছে৷''

কার্লসবাডের সেন্ট পিটার্সবার্গ হোটেলে এ বছর ৫০ শতাংশ কম অতিথি৷ রুশিদের ভয় হলো, ইউরোপে তাদের ক্রেডিট কার্ড আটকে দেওয়া হতে পারে৷ কার্লসবাড থেকে ইউক্রেন-রুশ সীমান্তের দূরত্ব তেইশ'শো কিলোমিটার – তা সত্ত্বেও সেই সংঘাতের অর্থনৈতিক ফলশ্রুতি কার্লোভি ভারি-তে দৃশ্যমান৷ হয়তো সংশ্লিষ্ট রাজনীতিকদের এই কার্লসবাডে কনফারেন্স করা উচিত – ঠাট্টা করে বলেন টুরিস্টরা৷

আদতে কার্লসবাড ছিল জার্মানদের স্পা, জার্মানদের স্বাস্থ্য ফেরানোর জায়গা৷ রুশদের আসা বন্ধ করলে হয়ত জার্মানরা আবার এখানে আসতে শুরু করবে – কাটেরিনা ও তাঁর পেশাগত সতীর্থদের সেটাই একমাত্র আশা৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

বাংলাদেশ