সোলার প্যানেলের ব্যবহার বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে চুরিও বাড়ছে৷ জার্মানিতে প্যানেল চুরি উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে৷ আশার কথা, ইঞ্জিনিয়ারদের একটি দল আধুনিক সমাধানও বের করেছেন৷ তবে সোলার প্যানেলের মালিকরা খুঁজছেন চোর ধরার সস্তা উপায়৷
বিজ্ঞাপন
জার্মানিতে বছরে গড়ে দশ মিলিয়ন ইউরো মূল্যমানের সোলার প্যানেল চুরি হচ্ছে৷ পুলিশ সন্দেহ করছে, এর পেছনে সংঘবদ্ধ অপরাধী দল রয়েছে৷ আর চোরদের অন্যতম লক্ষ্য হচ্ছে বাভেরিয়া রাজ্য৷ গত বছর লোয়ার বাভারিয়া অঞ্চলে ১৭টি চুরির ঘটনা নথিভুক্ত হয়েছে৷
জার্মানির পশ্চিমাঞ্চলের শহর কাইজার্সলাউটার্ন-ভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ভিয়ামন সোলার প্যানেলের নিরাপত্তার আধুনিক পদ্ধতি উদ্ভাবন করেছে৷ ইঞ্জিনিয়ার অলিভার স্ট্রেকে এবং তাঁর সহকর্মীরা চুরি যাওয়া সোলার প্যানেল সহজে শনাক্ত করতে পারেন৷ তিনি বলেন, ‘‘আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে চুরি যাওয়া সোলার প্যানেল যত দ্রুত সম্ভব শনাক্ত করে আর্থিক ক্ষতি কমানো৷ সিস্টেম বন্ধ থাকলে আর্থিক ক্ষতি হয়৷ এটা অনেকটা, ‘চুরি করলেও আমরা তোমাকে দ্রুত ধরবো' নীতি৷ আর এটা জানলে চোর আর চুরির চেষ্টাই করবে না৷''
সৌরশক্তি চালিত বিমানে দুনিয়া ঘোরা
সৌরশক্তি চালিত বিমানে করে দুনিয়ার চারপাশটা ঘুরতে চায় সুইজারল্যান্ডের ব্যারত্রঁ পিকার ও তাঁর সহযোগীরা৷
ছবি: Creative Commons/Solar Impulse
বেলুনের পর বিমান
সুইজারল্যান্ডের ব্যারত্রঁ পিকার এর আগে গরম বায়ুর বেলুনে করে সারা দুনিয়া ঘুরেছেন৷ এবার তাঁর ইচ্ছা সৌরশক্তি চালিত বিমানে করে সেই কাজটা করা৷
ছবি: AP
ছোট ও হালকা
যে প্লেনে করে পিকার আপাতত পরীক্ষামূলক উড্ডয়ন করছেন তার ওজন ১,৬০০ কেজি৷ এতে শুধু পাইলট বসতে পারেন৷ আর এর রয়েছে দুটো বড় ডানা৷ উল্লেখ্য, একটি ‘এয়ারবাস ৩৪০’ বিমানের ওজন ১২৫ টন৷
ছবি: Reuters
লম্বা ডানাই ভরসা
হালকা এই বিমানে বড় দুটো ডানা থাকার কারণ তাতে অনেকগুলো সৌরকোষ বসানো যায়, প্রায় ১২ হাজার৷ এর ফলে যে সৌরশক্তি উৎপন্ন হয় তা দিয়ে প্লেনটি চারটি মোটর আর প্রপেলার কাজে লাগিয়ে ঘণ্টায় ৭০ কিলোমিটার বেগে চলতে পারে৷
ছবি: AP
সম্মিলিত প্রচেষ্টা
পিকার তাঁর স্বপ্ন পূরণে ‘সোলার ইমপালস’ নামের একটি প্রকল্পের কাজ শুরু করেন ২০০৩ সালে৷ সেই থেকে প্রায় ৫০ জন বিশেষজ্ঞ আর ১০০ জন উপদেষ্টার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় প্রকল্পটি এগিয়ে চলেছে৷ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান এতে আর্থিক সহায়তা দিচ্ছে৷ পিকারের সঙ্গে সহযোগী পাইলট হিসেবে রয়েছেন অঁদ্রে বর্শব্যার্গ (ডানে)৷
ছবি: Reuters
বর্তমান অবস্থা
পুরো দুনিয়া ঘোরার আগে ধাপে ধাপে এগোচ্ছে প্রকল্পটি৷ বর্তমানে বিমানটি অ্যামেরিকার সান ফ্রান্সিসকো থেকে নিউ ইয়র্ক যাচ্ছে৷ প্রায় ৫ হাজার কিলোমিটারের এই পথ পাড়ি দিতে বিমানটি চারটি শহরে থামবে৷ মে মাসের ৩ তারিখে যাত্রা শুরু করা প্লেনটি জুলাইয়ের কোনো এক সময় নিউ ইয়র্কে পৌঁছাবে৷
নতুন রেকর্ড
যুক্তরাষ্ট্র পাড়ি দেয়ার দ্বিতীয় ধাপে বিমানটি রেকর্ড গড়েছে৷ ফিনিক্স থেকে ডালাস যেতে প্লেনটি ১,৫৪১ কিলোমিটার পথ পাড়ি দেয় - যেটা একসঙ্গে এতো দীর্ঘ পথ পাড়ি দেয়ার একটি রেকর্ড৷ এতে সময় লাগে প্রায় ২০ ঘণ্টা৷ পুরো সময়টা জেগে ছিলেন পাইলট বর্শব্যার্গ৷
ছবি: Solar Impulse/Jean Revillard/Rezo.ch
লক্ষ্য ২০১৫
যুক্তরাষ্ট্র পর্ব শেষ হওয়ার পর পিকার ও তাঁর সহযোগীদের লক্ষ্য ২০১৫ সালে বিশ্বভ্রমণ শুরু করা৷ তবে তার আগে বর্তমান প্লেনটিতে পরিবর্তন আনতে হবে বলে মনে করেন বর্শব্যার্গ৷ কেননা এখনকার বিমানে পাইলটের বসার স্থানটি খুবই ছোট৷
ছবি: Solar Impulse/Fred Merz
জ্বালানি সাশ্রয়
আপাতত বিশেষ এই বিমানের যাত্রী বলতে শুধু একজন পাইলট হলেও ভবিষ্যতে যেন সৌরচালিত বিমান যাত্রী বহন করতে পারে সেই স্বপ্ন দেখেন পিকার৷ তিনি বলেন, বর্তমানে মাত্র এক ঘণ্টায় এক বিলিয়ন টন তেল ব্যবহৃত হচ্ছে৷ এভাবে চলতে থাকলে একদিন সমস্ত জ্বালানি ফুরিয়ে যাবে৷
ছবি: Creative Commons/Solar Impulse
8 ছবি1 | 8
ডিভাইসটি রক্ষায় সেটির চারপাশে গলানো প্লাস্টিক দিয়ে দেয়া হয়৷ এরপর সেটি সোলার প্যানেলে জুড়ে দেয়া হয়৷ এই সিস্টেম জিপিএস সিগন্যাল পাঠাতে সক্ষম৷ ফলে মালিকের অনুমতি ছাড়া কেউ যদি প্যানেল নির্ধারিত স্থান থেকে সরায় তাহলে এটি সিগন্যাল পাঠাবে৷
বিশেষ করে যাঁদের বিমা নেই, তাঁদের জন্য এই পদ্ধতি বিশেষভাবে সহায়ক৷ জার্মানির টি-মোবাইলের জন্যও এই উদ্ভাবন গুরুত্বপূর্ণ৷ কেননা সোলার প্যানেলের মধ্যে এই সেবাদাতার সিম বসিয়ে দেয়া হয়৷
বাভেরিয়ার সোলার পার্কের ম্যানেজার পেটার ম্যুলারের মতো ব্যক্তিরা এমন সিস্টেমের সম্ভাব্য ক্রেতা৷ তবে তাঁর কাছে খরচের ব্যাপারটা গুরুত্বপূর্ণ৷ ভাবতে হয়, এর থেকে বিমা সস্তা হবে কিনা৷ তিনি বলেন, ‘‘এটা আমাদের জন্য সাশ্রয়ী কিনা দেখতে হবে৷ যদি এমন নিরাপত্তা ব্যবস্থার খরচ পুরো পার্ক থেকে আয় করা লাভের চেয়ে বেশি হয়, তাহলে তা ব্যবহারের কোনো অর্থ নেই৷''
অলিভার স্ট্রেকও বিষয়টি বোঝেন৷ তাঁর এই প্রযুক্তি ব্যবহারের ক্ষেত্রে প্যানেল-প্রতি খরচ ৩৫০ ইউরো৷ তবে একটি পার্কের প্রতিটি প্যানেলে এই ব্যবস্থার দরকার নেই৷ প্রতি ৫০টির মধ্যে একটিতে থাকলেই চলবে৷