চৈতির একটি পা কমেছে, এখন দৌড়াতে পারবে
২৮ এপ্রিল ২০১৭গত বছর চৈতিকে ঢাকা থেকে মেলবোর্ন নেয়া হয়৷ তখন তার অবস্থা দেখে খুব একটা আশাবাদী ছিলেন না সেখানকার চিকিৎসকরা৷ বিরল এক সমস্যায় ভুগছিলেন তিনি৷ তাঁর পা ছিল তিনটি, যা বাইরে থেকেই দেখা যাচ্ছিল৷ আর শরীরের অভ্যন্তরে কিছু অঙ্গ ছিল, দু'টি করে যা আসলে থাকার কথা একটি৷ তা সত্ত্বেও অবশ্য আশা ছাড়েনি দাতব্য সংস্থা চিলড্রেন ফার্স্ট ফাউন্ডেশন৷
মেলবোর্নের মনাশ শিশু হাসপাতালের শল্যচিকিৎসকরাও ব্যাপারটি চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছিলেন৷ এজন্য তারা দীর্ঘসময় গবেষণা করেছেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপের বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলোচনা করেছেন৷ শিশু হাসপাতালটির সার্জারি হেড ক্রিস কিম্বার এই বিষয়ে জানান যে, গর্ভে থাকাকালীন চৈতি আসলে জমজ হিসেবে কিছুটা বেড়েছিল৷ কিন্তু সেটা পূর্ণতা পায়নি৷ ফলে চৈতির দেহে একটি বাড়তি পা যুক্ত হয়৷ এছাড়া তার পায়ুপথ, জননেন্দ্রীয়ও একাধিক ছিল৷
আশার কথা হচ্ছে, শল্যচিকিৎসকরা এক বিরল অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে চৈতির দেহ থেকে একটি পা আলাদা করতে সক্ষম হয়েছেন৷ গত নভেম্বরে সেই অস্ত্রোপচার করা হয়৷ পাশাপাশি তার দেহের অন্যান্য জটিলতাও নিরসন করা হয়েছে৷ দীর্ঘ সময় অস্ত্রোপচারের সময় উপস্থিত ছিলেন আটজন চিকিৎসক৷
চৈতি অবশ্য কিছুটা দৃষ্টি প্রতিবন্ধীও৷ চিকিৎসকরা পরীক্ষা করে দেখেছেন যে সেটার উন্নয়ন সম্ভব নয়৷ তবে হাঁটা বা দৌড়ানোর মতো দৃষ্টিশক্তি তার রয়েছে৷ কিম্বার জানিয়েছেন, চৈতি আগে মলমূত্রের বেগ ধারণে অক্ষম ছিল৷ চিকিৎসার মাধ্যমে সেটার সমাধান করা গেছে, যা এক অভাবনীয় ব্যাপার৷
চৈতির সঙ্গে অস্ট্রেলিয়ায় তার মা-ও ছিলেন৷ তিনি সে দেশের ব্রডকাস্টার চ্যানেল নাইনকে বলেন, ‘‘এখন সবকিছু ভালো আছে৷ সে অন্য সব বাচ্চার মতোই খেলতে পারে৷''
উল্লেখ্য, এর আগে জোড়া লেগে থাকা বাংলাদেশি দুই জমজ বোনকে আলাদা করতে সক্ষম হয়েছিলেন অস্ট্রেলিয়ার চিকিৎসকরা৷ এছাড়া গুলিতে আহত এক বাংলাদেশি শিশুর সফল চিকিৎসার খবরও আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল৷
এআই/এসিবি (এএফপি)