ইউরোপীয় চ্যাম্পিয়নস লিগের ইতিহাসে এর আগে কখনও সেমিফাইনালে খেলা চার দলের মধ্যে তিনটি দলের কোচ একই দেশের নাগরিক হননি৷ এবার তা হতে যাচ্ছে৷
বিজ্ঞাপন
মঙ্গলবার প্রথম সেমিফাইনালে মুখোমুখি হওয়া লাইপজিগ ও পিএসজির কোচ যথাক্রমে ইউলিয়ান নাগেলসমান ও টোমাস টুখেল৷ পরদিন বুধবার হানসি ফ্লিকের অধীনে থাকা বায়ার্ন মিউনিখ খেলবে লিওঁর সঙ্গে৷
ফ্লিক, টুখেল, নাগেলসমান- তিনজনই জার্মান কোচ৷ তাদের মধ্যে আরও দুটি মিল রয়েছে৷ এক, আহত হওয়ার কারণে তাদের তিনজনেরই পেশাদার খেলোয়াড়ি জীবন সংক্ষিপ্ত করতে হয়েছে৷ দুই, তারা তিনজনই জার্মানির ফুটবল ফেডারেশনের দশ মাসব্যাপী ‘ফুটবল শিক্ষক’ কোর্স করেছেন৷
তিনজনের মধ্যে বায়ার্ন কোচ হানসি ফ্লিকের বয়স সবচেয়ে বেশি৷ এছাড়া তিনজনের মধ্যে তিনিই সবচেয়ে বেশি সময় ধরে পেশাদার ফুটবল খেলেছেন৷ ২৯ বছর বয়সে (বর্তমান বয়স ৫৫) ইনজুরির কারণে পেশাদার ফুটবল ছাড়তে বাধ্য হওয়ার আগে বুন্ডেসলিগায় প্রায় দুশটি ম্যাচে খেলেন ফ্লিক৷ এই সময় বায়ার্নের হয়ে চারবার লিগ শিরোপাও জেতেন৷
চ্যাম্পিয়ন্স লিগের কয়েকটি অবিশ্বাস্য ‘কামব্যাক’
২০১৮ সালে রোমাকে ছিটকে ফেলে চমক দেখিয়েছিল বার্সেলোনা৷ আর ২০১৯ সালে সেই বার্সেলোনাকে চমকে দিয়ে অবিশ্বাস্য এক কামব্যাকে মেসিবাহিনীকে শেষ চার থেকেই ঘরের পথ দেখালো লিভারপুল৷
ছবি: Reuters/Action Images/C. Recine
লিভারপুল-বার্সেলোনা, ২০১৯
নিজেদের মাঠ ন্যু ক্যাম্পে ৩-০ গোলে সেমিফাইনালের প্রথম লেগে এগিয়ে ছিল মেসি’র বার্সেলোনা৷ দ্বিতীয় লেগে লিভারপুলের মাঠ অ্যানফিল্ডে দলের দুই সেরা খেলোয়াড় সালাহ ও ফিরমিনিয়োকে ছাড়াই ৪-০ গোলের এক অবিশ্বাস্য জয় তুলে নিল অলরেডরা৷ অবিশ্বাস্য এই কামব্যাকটি অমর হয়ে থাকবে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ইতিহাসে৷
ছবি: Reuters/P. Noble
রোমা-বার্সেলোনা, ২০১৮
মঙ্গলবার রাতে রোমার কাছে ৩-০ গোলে হেরে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ থেকে ছিটকে পড়েছে বার্সেলোনা৷ অথচ প্রথম রাউন্ডে নিজেদের মাঠে ৪-১ গোলে জিতেছিল মেসির দল৷ কিন্তু ইটালির দলটি নিজেদের মাঠে বার্সাকে তাদের সামর্থ্যের প্রমাণ দেখিয়ে দিয়েছে৷
ছবি: Reuters/A. Bianchi
বার্সেলোনা-পিএসজি, ২০১৭
মঙ্গলবার বার্সা পরাজিতদের দিকে থাকলেও তারাই বছরখানেক আগে অবিশ্বাস্য এক লড়াই করে পিএসজিকে প্রতিযোগিতা থেকে বিদায় করে দিয়েছিল৷ শেষ ষোলোর প্রথম রাউন্ডে ৪-০ গোলে জিতেছিল পিএসজি৷ কিন্তু বার্সার মাঠে গিয়ে ৬-১ গোলে হেরে যায় তারা৷ বার্সার শেষ তিন গোলের প্রথমটি এসেছিল ৮৭ মিনিটে৷ আর শেষ গোলটি হয়েছিল অতিরিক্ত সময়ের শেষ মিনিটে৷ এখন পর্যন্ত বার্সা ছাড়া আর কোনো দল চার গোলের ব্যবধান অতিক্রম করতে সক্ষম হয়নি৷
ছবি: Reuters/A. Gea
ডেপোর্টিভো লা কোরুনা-এসি মিলান, ২০০৪
কোয়ার্টার ফাইনালের প্রথম রাউন্ডে ৪-১ গোলে হারের পর স্পেনের ক্লাব ডেপোর্টিভো লা কোরুনা দ্বিতীয় রাউন্ডে ইটালির এসি মিলানকে ৪-০ গোলে হারিয়েছিল৷
ছবি: Imago/PanoramiC
লিভারপুল-এসি মিলান, ২০০৫
আগের বছর কোয়ার্টার ফাইনালে ডেপোর্টিভো লা কোরুনার কাছে অবিশ্বাস্য হারের পরের বছরই আবারও কপাল পোড়ে এসি মিলানের৷ তবে এবার ফাইনালে তাদের হারায় লিভারপুল৷ ম্যাচের প্রথমার্ধে ৩-০ গোলে এগিয়েছিল ইটালীয় ক্লাবটি৷ পরে গোলগুলো পরিশোধ করে ফেলে লিভারপুল৷ শেষমেষ টাইব্রেকারে গিয়ে ৩-২ গোলে হেরে যায় পাওলো মালদিনির এসি মিলান৷
ছবি: Imago/Buzzi
ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড-বায়ার্ন মিউনিখ, ১৯৯৯
সম্ভবত চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ইতিহাসের সবচেয়ে নাটকীয় শেষ দুই মিনিট দেখেছে এই ম্যাচ৷ খেলার পুরো সময়টা এক গোলে এগিয়ে ছিল জার্মানির বায়ার্ন৷ ৯১ মিনিটের সময় সেই গোল পরিশোধ করে অ্যালেক্স ফার্গুসনের ম্যান ইউ৷ পরের মিনিটেই আরেকটি গোল করে বায়ার্নের কাছ থেকে একরকম মুকুটটি কেড়েই নেয় ইংলিশ ক্লাবটি৷
ছবি: Getty Images/Phil Cole /Allsport
মোনাকো-রেয়াল মাদ্রিদ, ২০০৪
কোয়ার্টার ফাইনালের প্রথম রাউন্ডে ৪-২ গোলে হেরেছিল মোনাকো৷ ফলে দ্বিতীয় রাউন্ডের আগে অনেকে ধরেই নিয়েছিলেন হয়ত রেয়াল মাদ্রিদই যাচ্ছে সেমিফাইনালে৷ এরপর খেলা শুরু হওয়ার পর ৩৬ মিনিটে যখন রেয়ালের রাউল গোল করেন, তখন তো সেই বিশ্বাস আরও সুদৃঢ় হয়৷ কিন্তু হিসাব যদি এত সরলই হবে, তাহলে সমর্থকরা আর ফুটবল দেখবেন কেন? তাইতো পরপর তিন গোল করে রেয়ালকে প্রতিযোগিতা থেকে ছিটকে ফেলেছিল মোনাকো৷
ছবি: Imago/Ulmer
বার্সেলোনা-চেলসি, ২০০০
প্রথম পর্বে ৩-১ গোলের হার ছিল বার্সার৷ পরের পর্বের শুরুতে দুই গোল করে বার্সা ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্ন দেখিয়েছিল৷ কিন্তু ৬০ মিনিটের সময় বার্সার মাঠে চেলসি একটি গোল করে বসলে বার্সা সমর্থকদের মধ্যে স্বপ্ন ভেঙে যাওয়ার আশংকা জেগেছিল৷ এরপর খেলা শেষের সাত মিনিট আগে গোল করে সমতায় ফেরে কাটালানরা৷ পরে অতিরিক্ত সময়ের খেলায় দুটো গোল করে উতরে যায় বার্সা৷
ছবি: picture-alliance/dpa/A. Dalmau
8 ছবি1 | 8
পিএসজি কোচ টোমাস টুখেল (৪৬) পেশাদার ফুটবল খেলতে পেরেছেন ২৫ বছর বয়স পর্যন্ত৷ এরপর হাঁটুর ইনজুরির কারণে খেলা ছাড়তে বাধ্য হন৷
টুখেলের মতোই হাঁটুর ইনজুরি ভুগিয়েছে লাইপজিগ কোচ নাগেলসমানকেও৷ ফলে অনূর্ধ্ব-১৯ পর্যায়ের বেশি খেলতে পারেননি তিনি৷
লিওনেল মেসির চেয়ে বয়সে ২৯ দিনের ছোট নাগেলসমান৷ অর্থাৎ লাইপজিগ কোচের বয়স এখন মাত্র ৩৩! ফলে চ্যাম্পিয়নস লিগের সেমিফাইনালে খেলা কোনো দলের সবচেয়ে কমবয়সি কোচ হতে যাচ্ছেন তিনি৷
মাত্র ১৯ বছর বয়সে ইনজুরির কারণে খেলা ছাড়তে বাধ্য হওয়ায় মন খারাপ হয়েছিল নাগেলসমানের৷ ‘‘মনে হয়েছিল আমি আমার পুরো বাল্যকালটা অপচয় করে ফেলেছি৷ খুবই খারাপ লেগেছিল৷’’
খেলা ছেড়ে ব্যবসায় প্রশাসন আর ক্রীড়াবিজ্ঞানে পড়ালেখা করেন নাগেলসমান৷ এরপর ২০০৭ সালে তাকে আবার খেলায় ফিরিয়ে আনেন টোমাস টুখেল, যার বিরুদ্ধে মঙ্গলবার মাঠে নামবেন নাগেলসমান৷ ২০০৭ সালে জার্মানির আউগসবুর্গের রিজার্ভ দলের কোচ ছিলেন টুখেল৷ তখন স্কাউটিংয়ের দায়িত্বে নাগেলসমানকে নিয়ে এসেছিলেন তিনি৷
‘ফুটবল শিক্ষক' কোর্স
ফ্লিক, টুখেল, নাগেলসমান- তিনজনই জার্মান ফুটবল ফেডারেশনের দশ মাসব্যাপী ‘ফুসবাল লেরার' বা ফুটবল শিক্ষক কোর্সটি করেছেন৷ জার্মানির শীর্ষ তিন বিভাগে কাজ করতে আগ্রহীদের এই কোর্সটি করা থাকতে হয়৷ অংশগ্রহণকারীদের লিখিত, প্র্যাকটিক্যাল পরীক্ষা, মক ট্রেনিং সেশনসহ আটশর বেশি কোর্স-ঘণ্টায় অংশ নিতে হয়৷ উল্লেখ্য, উয়েফার কোচিং লাইসেন্স পেতে প্রয়োজন ২৪০ কোর্স-ঘণ্টা৷
বায়ার্ন মিউনিখে ১০-এর ইতিহাস
বার্সেলোনায় লিওনেল মেসি আর পিএসজি-তে নেইমার যা পরেন, বায়ার্ন মিউনিখে আগামী মৌসুমে কার গায়ে উঠবে সেই ১০ নম্বর জার্সি? এতদিনই বা কোন কোন খেলোয়াড় পরেছেন? দেখুন ছবিঘরে...
ছবি: picture-alliance/dpa/A. Gebert
লেরয় সানে
ম্যানচেস্টার সিটি থেকে ৫০ মিলিয়ন ডলারের বিনিময়ে লেরয় সানেকে নিয়ে এসেই হাতে ১০ নম্বর জার্সি তুলে দিয়েছে বায়ার্ন মিউনিখ৷ তার আগে এই সুযোগ পেয়েছিলেন বার্সেলোনা থেকে এক বছরের জন্য ধারে খেলতে আসা ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড কুটিনিয়ো৷
ছবি: imago images/Chai v.d. Laage
উলি হ্যোনেস
জার্মানির সবচেয়ে সফল ক্লাব বায়ার্ন মিউনিখে প্রথম ১০ নাম্বার জার্সি পরেছিলেন উলি হ্যোনেস৷ সে আমলে লেফট উইংয়ে যিনি খেলতেন তাকে দেয়া হতো এই জার্সি৷ সত্তরের দশকে মূলত লেফট উইংয়েই খেলা হ্যোনেসের ক্যারিয়ার ইনজুরির জন্য অবশ্য বেশি দীর্ঘ হয়নি৷
ছবি: imago sportfotodienst
মিশায়েল রুমেনিগে
দুই রুমেনিগে ভাই-ই খেলেছেন বায়ার্নের হয়ে৷ তবে লেফট উইংয়ে খেলতেন বলে ১০ নম্বর জার্সিটা পেয়েছিলেন ছোট ভাই মিশায়েল রুমেনিগে৷ জার্মানিকে ১৯৮২ ও ১৯৮৬-র বিশ্বকাপ ফাইনালে তোলা বড় ভাই কার্ল হাইঞ্জ রুমেনিগে খেলতেন ১১ নম্বর জার্সি গায়ে দিয়ে৷বায়ার্ন ছেড়ে যাওয়ার পর বোরুসিয়া ডর্টমুন্ডেও ১৯৮৮ থেকে ১৯৯৩ পর্যন্ত ১০ নম্বর জার্সি গায়েই খেলেছিলেন মিশায়েল রুমেনিগে৷
ছবি: imago images/Pressefoto Baumann
ওলাফ থন
মিশায়েল রুমেনিগের পর টানা চার বছর ১০ নম্বর জার্সি পরে বায়ার্নে খেলেছেন ওলাফ থন৷ ওই পজিশনে খেলে ৩৭টি গোলও করেছিলেন তিনি৷ তবে ১৯৯২ সালে লোথার ম্যাথাউস ইন্টার মিলান থেকে ফিরে আসার পর তার হাতে তুলে দেয়া হয় ১০ নম্বর জার্সি৷
ছবি: imago sportfotodienst
লোথার ম্যাথাউস
জার্মানিকে ১৯৯০ বিশ্বকাপ জেতানো ম্যাথাউস দু’ দফা খেলেছেন বায়ার্নে৷ ১৯৮৪ থেকে ১৯৮৮ পর্যন্ত প্রথম দফায় পুরো চার মৌসুমই খেলেছেন আট নম্বর জার্সি গায়ে দিয়ে৷পরের দু মৌসুম ইন্টার মিলানের হয়ে ইটালিয়ান লিগ খেলার পর আবার বায়ার্নে ফিরে আসেন সাবেক ফিফা বিশ্বসেরা ফুটবলার (১৯৯১) ম্যাথাউস৷ সেই দফা সুইপার পজিশনে ১০ নম্বর নিয়েই খেলেছেন তিনি৷
ছবি: Imago Images
সিরিয়াসো স্ফর্সা
সুইস এই মিডফিল্ডারও ১৯৯৫-৯৬ এবং ২০০০ থেকে ২০০২, অর্থাৎ দুই দফা খেলেছেন বায়ার্নে৷তবে ১০ নম্বর জার্সিটা পেয়েছিলেন ম্যাথাউস ২০০০ সালে মেট্রোস্টার্সে চলে যাওয়ার পর৷
ছবি: Imago Images
রয় ম্যাকে
সাবেক ডাচ ফুটবলার ও কোচ রয় ম্যাকে ২০০৩ থেকে ২০০৭ পর্যন্ত ৪ মৌসুম ১০ নম্বর জার্সিটা পরে বায়ার্নে খেলেছেন৷ চার মৌসুমে ১০৩ গোল করেছিলেন তিনি৷
ছবি: Imago Images
আরিয়েন রবেন
রয় ম্যাকে ফেইনুর্দে চলে যাওয়ার পরের দু’ বছর ১০ নম্বর জার্সি কাউকেই দেয়নি বায়ার্ন৷২০০৯ সালে রেয়াল মাদ্রিদ থেকে আরেক ডাচ আরিয়েন রবেন এলে তার হাতেই তুলে দেয়া হয় নাম্বার টেন৷গত মৌসুমে নিজের দেশের ক্লাব গ্র্যোনিঙেনে চলে যান বায়ার্নের অনেক সাফল্যের নায়ক রবেন৷ সেই সুবাদেই ১০ নম্বর জার্সিটা এখন লেরয় সানের৷
ছবি: picture-alliance/dpa/A. Gebert
8 ছবি1 | 8
সহমর্মিতা
লাইপজিগ কোচ নাগেলসমান একবার বলেছিলেন, ভালো কোচ হতে হলে খেলোয়াড়দের আবেগ-অনুভূতির সঙ্গে একাত্ম হওয়ার ক্ষমতা আপনার থাকতে হবে৷ যারা সেরা একাদশে খেলার সুযোগ পায় না তাদেরকেও গুরুত্ব দিতে হবে৷
বায়ার্ন কোচ ফ্লিকের মধ্যে এই বৈশিষ্ট্যের দেখা পেয়েছেন বায়ার্ন ডিফেন্ডার জেরোম বোয়াটেং৷ বায়ার্নের সাবেক কোচ নিকো কোভাচের অধীনে প্রায় মলিন হয়ে গিয়েছিলেন তিনি ও টোমাস ম্যুলার৷ এরপর গত নভেম্বরে ফ্লিক দায়িত্ব নেয়ার পর দুজনই আবার আগের দক্ষতায় ফিরে গেছেন৷
বোয়াটেং বলেন, ‘‘যারা খেলার সুযোগ পায়, আর যারা পায় না, সবার সঙ্গেই সম্মানজনক আচরণ করেন হানসি (ফ্লিক)৷ তিনি তার ব্যবহার দিয়ে সবাইকে এমন একটা অনুভূতি দেন যেন সবাই দলের জন্য সমান গুরুত্বপূর্ণ৷’’
পিএসজি কোচ টোমাস টুখেলও এমন আচরণের জন্য পরিচিত৷ ২০১৭ সালে ডর্টমুন্ডের বাসে বোমার হামলার সময় কোচ ছিলেন টুখেল৷ সেই সময় খেলোয়াড়রা কোচের ‘এমপ্যাথি' গুনের সঙ্গে পরিচিত হয়েছিলেন৷