1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ছবির মাধ্যমে গরিব মানুষের সংগ্রাম তুলে ধরেন ভারতের শক্তিভেল

২৫ জুলাই ২০২৪

ভারতের চেন্নাইয়ে সম্প্রতি একটি আলোকচিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছিল৷ সেখানে উত্তর চেন্নাইয়ের দরিদ্র মানুষদের জীবন তুলে ধরা হয়৷

Eco India Sendung
ছবি: DW

ঐ জনগোষ্ঠীর যুবকেরাই ছবিগুলো তুলেছিলেন৷ এক আলোকচিত্রীর ছবিতে আবর্জনার স্তূপের পাশে বাস করা মানুষদের জীবন উঠে এসেছিল৷

প্রদর্শনীর আয়োজন করেছিল ব্যাসাই তোলাড়গাল নামের একটি সংগঠন৷ উত্তর চেন্নাইয়ের ব্যাসারপাডি এলাকার স্বেচ্ছাসেবী যুবকেরা এটি গড়ে তোলেন৷ এই সংগঠনের আট আলোকচিত্রীর একজন শক্তিভেল৷

তিনি বলেন, ‘‘এই গল্পগুলো আমাদের বলা উচিত, কারণ আমরাই এর দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি৷''

আলোকচিত্রীদের তত্ত্বাবধান করেছেন পালানি কুমার৷ তিনি বলেন, ‘‘ক্ষমতায় যারা আছেন তারা আমাদের সবসময় একই গল্প বলেন, তাই না? আর সাধারণ মানুষের ক্ষমতা নেই, কণ্ঠও নেই৷ এই উদ্যোগটা একটা প্রশ্নের শুরু: যখন মানুষ তার নিজের ভাষায় গল্প বলা শুরু করবে তখন বিষয়টা দেখতে কেমন হবে?''

আলোকচিত্রীদের লক্ষ্য ছিল: নিজস্ব অভিজ্ঞতার আলোকে উত্তর চেন্নাইয়ের দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জীবন তুলে ধরা৷

শক্তিভেল তার জীবনে প্রভাব ফেলা একটি ঘটনার কথা স্মরণ করেন৷ ‘‘আমি অটোরিকশায় ছিলাম৷ একজন যাত্রী হঠাৎ জিজ্ঞেস করলেন, ‘গন্ধটা কীসের'? এরপর তিনি জানলেন যে, তারা আমার এলাকা ব্যাসারপাডিতে আছেন৷ তখন তিনি বললেন, ‘ও আচ্ছা, সেজন্য৷' আরও বললেন, এখানকার মশারা যদি মানুষকে কামড়ায় তাহলে মানুষ নয়, মশারাই মরে যাবে৷ তিনি বোঝাতে চাইলেন, আমরা নোংরা ও বিষাক্ত৷ এই কথায় আমার খুব আঘাত লেগেছিল৷ কারণ, আমরাওতো মানুষ৷ কিন্তু তিনি এমন ভাব করেছিলেন যেন আমরা অন্যরকম,'' বলেন তিনি৷

শক্তিভেল : দরিদ্রের জীবন-সংগ্রামের ‘ক্যানভাস’

03:53

This browser does not support the video element.

এই ঘটনার পর শক্তিভেল কোডুনগায়ুর আবর্জনার স্তূপ নিয়ে ফটো সিরিজ করার কথা ভাবেন৷ তিনি যেখানে থাকেন সেই ব্যাসারপাডি থেকে স্তূপটির দূরত্ব মাত্র এক কিলোমিটার৷

শহরের দুটি আবর্জনা স্তূপের একটি কোডুনগায়ুর৷ প্রায় ১৯০টি ফুটবল মাঠের সমান জায়গা নিয়ে অবস্থিত ঐ স্তূপে ৪০ বছরের বেশি সময় ধরে ময়লা ফেলা হচ্ছে৷ শক্তিভেল বলেন, ‘‘আমার ঘটনা স্পষ্ট মনে আছে৷ ট্রাকে করে ময়লা ফেলা হচ্ছিল৷ সেখানে একটা অর্ধেক ভরা পানির বোতল ছিল৷ একজন ময়লাকুড়ানি বোতলটা খুলে পানি পান করেছিল! আমি যখন তাকে জিজ্ঞেস করেছিলাম যে, তিনি কেন সেখান থেকে পানি পান করলেন, তখন তিনি বলেছিলেন, ‘ময়লাটা বাইরে, কিন্তু ভেতরের পানিটা ভালো৷' মানুষ বলে, সময় বদলে গেছে৷ কিন্তু সত্যিটা হচ্ছে, এখনও ঐ ময়লাকুড়ানির মতো মানুষেরা আছেন যাদের বেঁচে থাকার জন্য সংগ্রাম করতে হয়৷''

পালানি কুমার বলেন, ‘‘আমার মনে হয় কোডুনগায়ুর আবর্জনার স্তূপ নিয়ে শক্তিভেলের কাজটা গুরুত্বপূর্ণ৷ কোনো বিদেশি এসে সেখানকার ছবি তুললেও তিনি কখনও মানুষের গল্পটা জানতে পারবেন না৷ ঐ এলাকার মানুষের জীবন কেমন? তারা কীভাবে বাঁচেন? কয়টা প্রজন্ম ধরে তারা সেখানে আছেন? বিদেশিরা শুধু ছবি তুলে চলে যাবেন৷ কিন্তু শক্তিভেল এরপরেও ঐ মানুষদের সহায়তা করবেন- যেমন বন্যার সময় তাদের জন্য ত্রাণের ব্যবস্থা করবেন৷ আমার মনে হয়, এই যে বেশি কিছু করাটা সেটা, এই প্রক্রিয়ার জন্য গুরুত্বপূর্ণ৷''

আবর্জনার স্তূপের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া পরিবারগুলোর ছবি তুলে শক্তিভেল পরিবেশ ও সামাজিক অবিচার- এই দুটো বিষয়ই তুলে ধরেছেন৷ উত্তর চেন্নাইয়ে কয়েক প্রজন্ম ধরে যে বৈষম্য হচ্ছে, তাও প্রকাশ করেছেন৷

সোশ্যাল অ্যাক্টিভিস্ট বেনিশা উত্তর চেন্নাইয়ে বায়ুদূষণের মাত্রা নিয়ে কাজ করেছেন৷ তিনি বলেন, শহরের এই অংশটায় দরিদ্র মানুষের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি৷ এছাড়া সেখানে এমন সব কারখানা অবস্থিত যেগুলো থেকে অনেক বেশি দূষণ ছড়ায়৷ দক্ষিণ চেন্নাইয়ে এ ধরনের কারখানা নেই৷ বেনিশা বলেন, ‘‘প্রকৃত সত্যটা হলো, আমরা উত্তর চেন্নাইয়ের সম্পদ শোষণ করছি এবং আমাদের সমৃদ্ধির জন্য তাদের সম্পদ আহরণ করছি৷ আমাদের যা কিছু দরকার, আমরা সেখান থেকে পাই৷ তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ ও পেট্রোলিয়াম পণ্য৷ এমনকি দক্ষ শ্রমিকরাও উত্তর চেন্নাইয়ের৷''

শক্তিভেলের মতো দরিদ্র জনগোষ্ঠীর যুবকদের হাতে প্রয়োজনীয় উপকরণ তুলে দেওয়ার মাধ্যমে সামাজিক ও পরিবেশের নানা ইস্যু তুলে ধরা সম্ভব৷

অপর্ণা গণেশন/জেডএইচ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ