1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ছবি তুলে ইউক্রেন যুদ্ধের ভয়াবহতা দূরে রাখার চেষ্টা

১ মে ২০২৫

ইউক্রেনীয় আলোকচিত্রী নিকা রিতচেল ব্যালেরিনাদের ছবি তোলেন৷ এর মাধ্যমে তিনি যুদ্ধের ভয়াবহতাকে দূরে ঠেলে রাখার চেষ্টা করছেন৷ ইনস্টাগ্রামে তার তিন লাখেরও বেশি অনুসারী রয়েছে৷

নিকা রিতচেল
কিয়েভের এক স্টুডিওতে নিকা ব্যালেরিনাদের ছবি তোলেনছবি: DW

ইউক্রেনে রাশিয়ার যুদ্ধ শুরুর প্রায় তিন বছর পর সব জায়গায় যুদ্ধের চিহ্ন দেখা যাচ্ছে৷ আলোকচিত্রী নিকাকেও প্রতিদিন এমন বাস্তবতার সঙ্গে বাস করতে হয়েছে৷ নিজের তোলা ছবির মাধ্যমে তিনি রুখে দাঁড়িয়েছেন৷

নিকা বলেন, ‘‘আমার ছবিগুলো জীবনের সাথে সম্পর্কিত - তরুণ এবং সুন্দর মানুষদের সাথে৷ ছবিগুলো মজার বা দুঃখজনক হতে পারে, কিন্তু সেগুলো সবসময় জীবনের সাথে সম্পর্কিত৷''

কিয়েভের এক স্টুডিওতে নিকা ব্যালেরিনাদের ছবি তোলেন৷ যুদ্ধের আগেও তিনি এগুলিকে ছবি তোলার একটি বিষয় হিসেবে আবিষ্কার করেছিলেন৷ ২০১৮ সালে নিকা প্রথম একজন ব্যালেরিনার প্রতিকৃতি তৈরি করার পর মুগ্ধ হয়ে গিয়েছিলেন৷ সে কারণে যুদ্ধের মধ্যেও এটি নিয়ে কাজ করে গেছেন তিনি৷

নিকা বলেন, ‘‘এই ছবিগুলো প্রমাণ করছে যে, আমরা এখনও বেঁচে আছি৷ ২০২৩ সালের মে মাসে প্রায় প্রতিদিন প্রতি মুহূর্তে অনেক বোমাবর্ষণ হচ্ছিল৷ তার মধ্যেই আমরা এই স্টুডিওতে কাজ করতাম, আর জানালার বাইরে তাকিয়ে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা দেখতাম৷ কিন্তু আমরা কাজ চালিয়ে গিয়েছি - কারণ কেউ আমাদের পরাজিত করতে পারবে না৷''

যে ছবি বাঁচার কথা বলে

04:26

This browser does not support the video element.

যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর নিকা দেশ ছেড়ে পালানোর কোনো চিন্তা করেননি৷ তার বদলে তিনি ইউক্রেনের জাতীয় রংয়ে তৈরি পোশাক দিয়ে তার ‘নীল এবং হলুদ' সিরিজ শুরু করেছিলেন৷ নিকা ফটোগ্রাফি থেকে জীবিকা নির্বাহ করেন, তবে এই সিরিজ থেকে নয়৷

নিকা বলেন, ‘‘এই সিরিজের সব ছবিই ভালো উদ্দেশ্যের জন্য তোলা৷ আমি সম্ভাব্য ক্রেতাদের বলি, ক্রয়মূল্যের শতভাগই একটি অলাভজনক সংস্থার কাছে যাবে৷ কিন্তু আমি সিদ্ধান্ত নিই না যে কোনটি - ছবির মডেল তা নির্ধারণ করেন৷''

ক্ষেপণাস্ত্র বোমা হামলা থেকে কিয়েভ এখন তুলনামূলকভাবে সুরক্ষিত থাকায় ইউক্রেনের রাজধানীর মানুষ মোটামুটি নিরাপদে আছেন৷ তারপরও তারা কখনই সহজে শ্বাস নিতে পারেন না, কারণ, এখনও কিছু রুশ হামলা সফল হয়ে যায়৷

নিকা বলেন, ‘‘প্রায়ই রাতে খুব জোরে শব্দ হওয়ার কারণে আমরা ঘুমাতে পারি না৷ আমরা টেলিগ্রাম চ্যানেলগুলো পড়ি, দেখি কোনো ড্রোন বা মিসাইল আসছে কিনা, এবং আমরা সাধারণত মাথায় রাখি যে, যে-কোনো সময় যে-কোনো কিছু ঘটতে পারে৷ আমরা, আমাদের বন্ধুবান্ধব এবং পরিবারের সবাই সবসময় একটা ভয়ের অনুভূতির মধ্যে থাকি৷''

তিন বছরের যুদ্ধ মানে, তিন বছর ধরে মৃত্যু ও ধ্বংস- বেশিরভাগইপূর্ব ইউক্রেনের যুদ্ধবিধ্বস্ত অঞ্চলে হয়েছে৷ সামরিক ও বেসামরিক মৃত্যুর নির্ভরযোগ্য পরিসংখ্যান হয়ত নেই, কিন্তু তা কয়েক লাখ হবে৷

নিকা বলেন, ‘‘এটা আমাদের সবার জন্য একটা ট্র্যাজেডি৷ কিন্তু আপনি প্রতিদিন শোক পালন করতে পারেন না৷ এই হামলা তিন বছর ধরে চলে আসছে৷ কিন্তু আপনি সোফায় শুয়ে তিন বছর ধরে কাঁদতে পারেন না৷ এই জায়গাটি আমাদের সবাইকে এই যুদ্ধের মূল্যের কথা মনে করিয়ে দেয়৷''

তাই নিকা স্টুডিওতে ছবি তোলার কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন৷ যুদ্ধের মধ্যেও জীবন চলতে থাকে - আর এই আশাও থাকে যে, একদিন যুদ্ধ শেষ হবে৷

নিকা বলেন, ‘‘আমি সত্যিই বিশ্বাস করতে চাই যে, শেষ পর্যন্ত, আমরা একটি স্বাধীন ইউক্রেনে বাস করব - আমরা সবাই স্বাধীন হব: এগুলি শুধু খালি কথা হবে না... আমাদের প্রতিবেশী এবং তারা আমাদের উপর যে ছায়া ফেলেছে, তা থেকে মুক্ত হব৷''

নিকা তার ছবির মাধ্যমে নিজেকে এবং অন্যদের আশা দেওয়ার কাজ করছেন - একটি স্বাধীন ইউক্রেনের শান্তিপূর্ণ ভবিষ্যতের আশা করছেন৷

ভিক্টোরিয়া পোকাতিলোভা, ইয়েন্স ফন লার্শার/জেডএইচ

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ