ছাত্রলীগ আছে ছাত্রলীগেই
১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৯আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা ডয়চে ভেলের কনটেন্ট পার্টনার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলছেন, ছাত্রলীগের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক ও ডাকসুর এজিএস সাদ্দাম হোসেনের অনুসারীরাই ‘সাধারণ শিক্ষার্থীবৃন্দ' ব্যানারে এই হামলা চালিয়েছে৷ তারা নারী আন্দোলনকারীদের লাঞ্ছিতও করেছে৷ অবশ্য সাদ্দাম এ ঘটনায় ছাত্রলীগের সম্পৃক্ততার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন, তার দাবি, এটি ‘দুই দল শিক্ষার্থীর মধ্যে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা'৷
নিকট ও খানিক দূর অতীতের অভিজ্ঞতায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে আমাদের খুব বেশি কিছু চাওয়ার নেই৷ ছাত্রলীগের কেউ ‘অ্যাকশনে' গেলে যে তারা দাঁড়িয়ে থাকবেন এই সত্যের মধ্যে ইদানীং আর নতুনের নুন নেই, নেই সংবাদমূল্য৷ কিন্তু এত বড় চাঁদাবাজির কথা জানাজানির লজ্জার মধ্য দিয়ে ছাত্রলীগ যাচ্ছে, আমাদের আশা ছিল নিজেদের পাঁক থেকে টেনে তুলতে বা পুরনো মর্যাদা ফিরিয়ে আনতে তারা অনেক সিরিয়াস হবেন৷ কিন্তু মনে হচ্ছে, ছাত্রলীগ আছে ছাত্রলীগেই৷
মাঠের রাজনীতির জন্য ময়দানের দখল রাখার জন্য আওয়ামী লীগের হয়তো এখনও ছাত্রলীগের দরকার আছে৷ আন্দোলন করতে বা নস্যাৎ করে দিতে তরুণ কর্মীরা নিশ্চয়ই একটি প্রয়োজনীয় শক্তি৷ আবার মাথার উপর বড় দল থাকলে ছাত্রনেতাদের হয়তো উপাচার্য বা কর্তাব্যক্তিদের কাছ থেকে আট নয় অঙ্কের ঈদের সালামি মিলে৷
আমার কিন্তু মনে হয় দুই পক্ষেরই বিষয়টি বিবেচনা করা উচিত৷ প্রথমে ছাত্রদের কথায় আসি৷ ১০ বছরের বেশি সময় ধরে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় রয়েছে বলে ছাত্রলীগ এখন যত বড় আর যত জনাকীর্ণ, অল্প কয়েকজন বাদে অন্যদের দুয়েকটি পিঠ চাপড়ানি বা ঠান্ডা বিরিয়ানি ছাড়া আর কিছু পাওয়ার নেই৷ সামনের দুই এক বছরে ছাত্রলীগ করা তরুণ-তরুণী আরো বাড়বে, ফলে স্বাভাবিকভাবেই ঈদের সালামির অঙ্ক বড় হলেও ভাগ কমবে, বিরিয়ানির প্যাকেট আরও ছোট বা ঠান্ডা হয়ে আসবে৷ তাই সময়টা এভাবে ইনভেস্ট করবেন কিনা তরুণ বন্ধুরা ভেবে দেখতে পারেন৷
আর আওয়ামী লীগও আর কতদিন ছাত্রলীগের দায় নেবে? ছাত্রদের এই সংগঠন তৃতীয় মেয়াদের প্রথম বছরে আর কেন জরুরি? নিজেদের, দলের বা দেশের যেরকম উন্নয়নই করতে চাওয়া হোক না কেন, এতদিনে নিশ্চয়ই কর্তাব্যক্তিরা বুঝে গেছেন, ঘরের শত্রু কী ভীষণ!