রাজতন্ত্রের আইন ফিরিয়ে এনে ছাত্রদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা হচ্ছে থাইল্যান্ডে। ছাত্ররা অবশ্য তাতেও দমতে রাজি নন।
বিজ্ঞাপন
আইন ছিল, কিন্তু তার ব্যবহার ছিল না। ছাত্র বিক্ষোভ থামাতে এ বার সেই শতাব্দীপ্রাচীন আগ্রাসী আইনের ব্যবহার শুরু করল থাইল্যান্ড সরকার। একের পর এক বিক্ষোভকারীকে শমন পাঠানো হচ্ছে। বলা হচ্ছে, রাজতন্ত্রের বিরুদ্ধে আন্দোলন করা আইনত দণ্ডনীয়। ছাত্ররা অবশ্য সরকারের এই নতুন আগ্রাসনে এতটুকু বিচলিত নয়। তারা জানিয়ে দিয়েছে, গ্রেপ্তার করেও তাদের আন্দোলন থামানো যাবে না।
গত প্রায় তিন বছর থাইল্যান্ডে আইনটির কোনো ব্যবহারই হয়নি। গত বেশ কিছু দশক ধরে এই আইনের কার্যত কোনো প্রয়োগ নেই থাইল্যান্ড। বহু যুগ আগে এই আইন তৈরি হয়েছিল। যাতে বলা হয়েছিল, রাজতন্ত্রের বিরুদ্ধে কেউ কথা বললে তাকে শাস্তি দেওয়া হবে। ১৫ বছর পর্যন্ত জেল হতে পারে। কিন্তু গণতান্ত্রিক সরকার কখনোই এই আইনের সে ভাবে ব্যবহার করেনি।
থাইল্যান্ডে সরকারবিরোধী ও সরকারসমর্থকরা মুখোমুখি
প্রধানমন্ত্রী প্রায়ুথ চান-ওচার পদত্যাগ এবং রাজার ক্ষমতা কমানোর দাবিতে এখনো চলছে আন্দোলন৷ সরকার কখনো কঠোর কখনো নমনীয়৷ ওদিকে রাজতন্ত্র এবং প্রধানমন্ত্রীর সমর্থকরাও নেমে আসছেন রাস্তায়৷ দেখুন ছবিঘরে...
ছবি: Soe Zeya Tun/Reuters
প্রধানমন্ত্রীকে তিনদিনের আলটিমেটাম, তারপর...
বুধবার প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ এবং রাজার ক্ষমতা কমানোর দাবি নিয়ে গভর্নমেন্ট হাউসের দিকে যাচ্ছিলো ‘গণতন্ত্রপন্থিদের’ মিছিল৷ এ সময় আন্দোলনরতদের এক নেত্রী তিন দিনের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীকে পদত্যাগের আহ্বান জানিয়ে বলেন, পদত্যাগ না করলে আন্দোলন আরো দীর্ঘ হবে৷ এর কিছুক্ষণ পরই তাকে গ্রেপ্তার করা হয়৷
ছবি: Athit Perawongmetha/Reuters
বিরোধী এবং সরকারপক্ষ মুাখোমুখি
এক পর্যায়ে রাজতন্ত্র এবং প্রধানমন্ত্রী সমর্থকদের একটা মিছিল বিরোধীদের মিছিলে বাধা দেয়৷ দু পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দিলে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনের চেষ্টা করে৷
ছবি: Soe Zeya Tun/Reuters
ভীত শিক্ষার্থীরা
বিরোধী এবং সরকার সমর্থকদের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দিলে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁকে দৌড়াতে শুরু করে৷
ছবি: Soe Zeya Tun/Reuters
আহত পুলিশ
সরকারবিরোধী এবং সরকার ও রাজতন্ত্রের সমর্থকদের সংঘাতের সময় এক পুলিশ সদস্য আহত হন৷ সহকর্মীরা নিয়ে যাচ্ছেন তাকে৷
ছবি: Jorge Silva/Reuters
গণতন্ত্রপন্থিদের সেই স্যালুট
গভর্নমেন্ট হাউসের দিকে যাওয়ার পথে গণতন্ত্রপন্থিদের তিন আঙুলের স্যালুট৷ থাইল্যান্ডের সরকারবিরোধী আন্দোলনে নিয়মিত দৃশ্য এটি৷
ছবি: Athit Perawongmetha/Reuters
সতর্ক পুলিশ
সরকারবিরোধী এবং সরকার সমর্থকদের মধ্যে উত্তেজনা যাতে বড় রকমের বিশৃঙ্খলার দিকে না গড়ায় সেদিকে সতর্ক দৃষ্টি রাখছে পুলিশ৷
ছবি: Athit Perawongmetha/Reuters
প্রধানমন্ত্রীর আশ্বাস
বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী প্রায়ুথ চান ওচা পদত্যাগের দাবির প্রসঙ্গে কিছু না বলে বিরোধীদের আন্দোলনের মুখে জারি করা নানা ধরণের বিধিনিষেধ প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন৷ তাতে অবশ্য বিরোধীদের আন্দোলন থামেনি৷ তারা বলছেন, আটক নেতা-কর্মীদের মুক্তি দিয়ে প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ না করলে তিন দিনের মধ্যেই আবার জোরদার আন্দোলন শুরু হবে৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/S. Lalit
7 ছবি1 | 7
গত কয়েক মাস ধরে তীব্র বিক্ষোভ চলছে ব্যাংককে। রাস্তায় নেমেছেন ছাত্ররা। তাঁদের দাবি, রাজতন্ত্রের ক্ষমতা কমাতে হবে। সংবিধান সংশোধন করতে হবে এবং বর্তমান প্রধানমন্ত্রীকে পদত্যাগ করতে হবে। গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে ভোটের মাধ্যমে নতুন প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনের কথাও তাঁরা বলছেন। এই দাবিগুলি নিয়ে গত কয়েক মাস ধরে রাজপথ দখল করেছেন ছাত্ররা। সরকার অবশ্য ছাত্রদের দাবি মানতে নারাজ। ছাত্র আন্দোলনের চাপে সংবিধান সংশোধনের সামান্য কিছু শর্ত মানলেও বিক্ষোভকারীদের সব কথা মানতে চাইছে না বর্তমান সরকার। ফলে প্রায় দিনই ব্যাংককের রাজপথে ছাত্র-পুলিশ সংঘর্ষ হচ্ছে। পুলিশের লাঠি এবং বুলেটের আঘাতে বহু ছাত্র আহত হয়েছেন। ছাত্রদের আক্রমণ করছেন রাজতন্ত্রপন্থীরাও।
এই পরিস্থিতিতে বিক্ষোভ থামাতে পুরনো আইনের প্রয়োগ শুরু করেছে প্রশাসন। বেশ কিছু ছাত্রের কাছে শমন গিয়েছে। যাতে বলা হয়েছে, রাজতন্ত্রের বিরুদ্ধে কথা বলার জন্য তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এক আইনজীবীর কাছেও শমন গিয়েছে বলে ছাত্ররা জানিয়েছেন। তবে ছাত্রদের দাবি, এই ভাবে গ্রেপ্তার করার ভয় দেখিয়ে আন্দোলন দমানো যাবে না। দাবি না মেটা পর্যন্ত তাঁদের আন্দোলন চলবে।