1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ছাত্র রাজনীতিতে ভয়?‌‌

শীর্ষ বন্দ্যোপাধ্যায় কলকাতা
২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮

কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় রাজনীতিমুক্ত থাকা উচিত৷ ছাত্র সংগঠনের অধিকার থাকা উচিত নয়৷ সম্প্রতি মতামত দিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল৷

Indien, Jadavpur, Protest auf dem Campus der Universität
ছবি: Sirsho Bandopadhyay

কলকাতার প্রেসিডেন্সি ও যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে লাগাতার ছাত্র আন্দোলনের জেরে তিতিবিরক্ত র রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠী৷ সম্প্রতি রাজভবনে রাজ্যের সাতটি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এবং শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চ্যাটার্জির সঙ্গে এক বৈঠকে রাজ্যপাল স্পষ্টই নিজের অসন্তোষ প্রকাশ করেন৷ বলেন, শিক্ষাঙ্গনে রাজনীতির অনুপ্রবেশ কাম্য নয়৷ ছাত্র সংগঠন গঠন এবং আন্দোলনের অধিকার থাকা উচিত নয়৷

এই প্রসঙ্গে উত্তর প্রদেশে চৌধুরি চরণ সিং মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন যে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, সেই ইতিহাস স্মরণ করিয়ে দেন রাজ্যপাল ত্রিপাঠী৷ যদিও প্রায় একই সঙ্গে তিনি বলেন, পশ্চিমবঙ্গের ক্ষেত্রে তিনি তেমন কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার সুপারিশ করছেন না৷ কিন্তু বলা বাহুল্য, যে রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধানের পদ থেকে এমন এক ইঙ্গিত আসা গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার পক্ষে আদৌ সুলক্ষণ নয়৷ বিশেষত যেখানে প্রবেশিকা পরীক্ষা থেকে শুরু করে হস্টেলে জায়গা পাওয়া, বা জীর্ণ হস্টেলের মেরামতি, সবেতেই শেষ পর্যন্ত আন্দোলনের পথে হাঁটতে হচ্ছে ছাত্রদের৷ রাজ্যপালের সর্বশেষ বিরক্তির কারণ, হিন্দু হস্টেলের সংস্কারের দাবিতে প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের আন্দোলন এবং তার জেরে এ বছর প্রেসিডেন্সির সমাবর্তন উৎসব কার্যত পণ্ড হওয়া৷

এবং এমনও মনে হতে পারে, যে রাজ্যপাল ত্রিপাঠী নেহাতই অভিভাবকসুলভ উদ্বেগ থেকে পড়ুয়াদের রাজনীতি থেকে দূরে রাখতে চাইছেন৷ কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে যাতে কেবল পড়াশোনাই হয়, সেটা নিশ্চিত করাই তাঁর মূল উদ্দেশ্য৷

‘আমার মনে হয় না ছাত্র রাজনীতি কোনোভাবে পড়াশোনাকে ক্ষতিগ্রস্ত করে’

This browser does not support the audio element.

কিন্তু ব্যাপারটা সম্ভবত অতটা সহজ-সরল নয়, বলছেন প্রেসিডেন্সি,যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান এবং প্রাক্তন ছাত্র-ছাত্রীরা৷ বরং তাঁরা এর মধ্যে গেরুয়া রাজনীতির দাপট কায়েম করার চেষ্টা দেখছেন, যার বিরুদ্ধে শক্ত প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে এই দুই বিশ্ববিদ্যালয়ের অরাজনৈতিক ছাত্র সংগঠনগুলো, যারা প্রবণতার বিচারে বামপন্থি৷ এবং ওঁদের বক্তব্য, ঠিক যে কারণে দিল্লির জওহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয় শাসক বিজেপির চক্ষুশূল, কারণ সেখানে বামপন্থার প্রভাব বেশি, ঠিক সেই কারণেই যাদবপুর এবং প্রেসিডেন্সি অপছন্দের৷ এবং রাজ্যপাল স্পষ্টতই বিজেপি তথা কেন্দ্র সরকারের নিযুক্ত লোক, যিনি ছাত্র রাজনীতির ওই বামপন্থি প্রবণতা আটকাতে চাইছেন ভাল পড়াশোনা হওয়ার দোহাই দিয়ে৷ যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র উদ্দালক ভট্টাচার্য সাম্প্রতিক অতীতে অনেক ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে সক্রিয়ভাবে যুক্ত থেকেছেন, নেতৃত্ব দিয়েছেন৷ তাঁর খুব সোজাসাপ্টা বক্তব্য, যে ‘‌‘‌এটা নতুন কিছু কথা নয়৷ এর আগেও বহু বার, বহু লোক একই কথা বলেছেন যে ছাত্র আন্দোলন করলে, ছাত্র রাজনীতি করলে পড়াশোনা নষ্ট হয়৷ কিন্তু দিনের পর দিন ধরে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় তার উৎকর্ষ ধরে রেখেছে৷ সেটা পড়াশোনার নিরিখে, এবং ‘‌ন্যাক'‌, ‘‌ইউজিসি' দিনের পর দিন ধরে‌ যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়কে উৎকর্ষের প্রশংসাপত্র দিয়েছে৷ সুতরাং ছাত্র রাজনীতি কোনোভাবে পড়াশোনাকে ক্ষতিগ্রস্ত করে, এটা আমার মনে হয় না৷''

প্রসঙ্গত সারা দেশ এমনকি বিশ্বেরও বহু দেশের উদাহরণ টেনেছেন উদ্দালক, যেখানে আজকের রাজনৈতিক নেতারা উঠে এসেছেন অতীতের ছাত্র আন্দোলন থেকে৷ হতে পারে, সেই সম্ভাবনাকেই ভয় পাচ্ছে ক্ষমতাসীন দল এবং তাদের নেতারা৷ ভয় পাচ্ছেন দেশের ক্রমশ বিদ্রোহী হয়ে ওঠা যুবশক্তিকে৷ যেভাবেজওহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয়বা জেএনইউ-র কানহাইয়া কুমার, বা গুজরাটে হার্দিক প্যাটেলের মতো নবীন নেতারা উঠে এসেছেন যুব আন্দোলন থেকে এবং কার্যত শাসকের ঘুম কেড়ে নিয়েছেন৷ কখনও আরবান নক্সাল, কখনও দেশদ্রোহী তকমা দিয়েও তাঁদের ঠেকিয়ে রাখা যায়নি৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ