ছাত্র রাজনীতি কী? পরিচিত যে রাজনৈতিক দলগুলো তাদের ছাত্র সংগঠনের সদস্য হওয়াই কি ছাত্র রাজনীতি? নাকি রাজনৈতিক সংগঠনগুলোর বাইরে থেকেও ছাত্ররাজনীতি করা যায়?
বিজ্ঞাপন
বুয়েটের ঘটনার পরে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধের দাবির প্রেক্ষাপটে গত কয়েকদিন ধরে প্রশ্নগুলো ঘুরপাক খাচ্ছিল মনে৷ পরিচিত রাজনৈতিক সংগঠনের সাথে ভিড়িনি, তাই আপাত দৃষ্টিতে শিক্ষাজীবনে ছাত্র রাজনীতি করিনি৷ কিন্তু প্রচলিত এই ধারণা মেনে নিতেও আপত্তি আছে৷ খুব জোর দিয়েই দাবি করতে পারি বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে রাজনীতি সচেতনতা অন্য ছাত্রদের চেয়ে কোনো অংশে কম ছিল না৷ একজন ছাত্রের বিশ্ববিদ্যালয়, রাষ্ট্রের ভাল মন্দ, অধিকারবোধ নিয়ে যতটুকু সংবেদনশীল থাকা প্রয়োজন, গড়পড়তা তারও কোনো কমতি ছিল না৷
ভালো-মন্দে ছাত্র রাজনীতি
গণতান্ত্রিক সব আন্দোলন, বাংলাদেশ সৃষ্টি, একটি স্বাধীন দেশের বাঁক বদলে ছাত্র রাজনীতির গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা রয়েছে৷ গৌরবের সেই ধারা কতটুকু ধরে রাখতে পেরেছে হালের ছাত্র সংগঠনগুলো? ছাত্র রাজনীতির ভালো-মন্দের বয়ান পড়ুন ছবিঘরে৷
ছবি: Journey/S.-M. Gorki
ভাষা আন্দোলন
১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন ছাত্ররা৷ এই আন্দোলন বাঙালি জাতির জীবনে এমনই এক ঘটনা, দাবি পূরণের পরেও যার রেশ থেকে যায়৷ ভাষা আন্দোলন বাঙালি জাতীয়তাবাদী চেতনার দীক্ষা দেয়; যা থেকে জন্ম নেয় স্বায়ত্তশাসন ও স্বাধিকার আন্দোলনের পথ৷
ছবি: Journey/R. Hoque
গণঅভ্যুত্থান
১৯৬৯ সালে সব ছাত্রসংগঠন মিলে সর্বদলীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ গঠন করে জাতীয় ও সমাজতান্ত্রিক ধারণাপুষ্ট ১১ দফা দাবি উপস্থাপন করে৷ এর ফলে আইয়ুব খানকে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা প্রত্যাহার ও শেখ মুজিবুর রহমানকে মুক্তি দিতে বাধ্য করা হয়৷ এরপর এক জনসমাবেশে ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ শেখ মুজিবকে ‘বঙ্গবন্ধু’ উপাধি দেয়৷
ছবি: Journey/R. Talukder
মুক্তিযুদ্ধ
১৯৭১ সালের ১ মার্চের পর ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ বাঙালি জাতীয়তাবাদ ও বাংলাদেশ জাতিসত্তার ধারণাগুলো বাস্তবায়নে অগ্রসর হয়৷ শেখ মুজিবের ৭ই মার্চের ভাষণ ছিল ছাত্রদের আকাঙ্ক্ষারই বহিঃপ্রকাশ৷ স্বাধীনতা অর্জনসহ প্রতিটি ঐতিহাসিক বিজয়ের প্রেক্ষাপট তৈরি ও আন্দোলন সফল করার ভ্যানগার্ড হিসেবে ছাত্র সংগঠন তথা শিক্ষার্থীদের ভূমিকা অপরিসীম৷
ছবি: Journey/R. Talukder
ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ
১৯৭১ সালের পঁচিশ মার্চ মধ্যরাতে জনগণের উপর পাকবাহিনীর আক্রমণ ৩ মার্চ ছাত্রদের স্বাধীনতা ঘোষণার যৌক্তিকতা প্রমাণ করে৷ ২৬ মার্চের স্বাধীনতা ঘোষণা ছিল বস্তুত ৩ মার্চ সর্বদলীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের স্বাধীনতা ঘোষণারই স্বীকৃতি৷
ছবি: Journey
স্বৈরাচার পতন
হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের শাসনের বিরুদ্ধে আন্দোলন এবং ১৯৯১ সালে তাঁর পতন ঘটানোর ক্ষেত্রে ছাত্রঐক্য ও শক্তির পরিচয় পাওয়া যায়৷ ১৯৯০ সালের ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে তৎকালীন ক্ষমতাসীন স্বৈরশাসক এরশাদ সরকারের পতন হয়, শুরু হয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার নবযাত্রা৷
ছবি: Journey/Y. Saad
ছাত্র বিক্ষোভ
সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমলে ২০০৭ সালের ২০ আগস্ট ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের খেলার মাঠে ফুটবল খেলা দেখাকে কেন্দ্র করে ছাত্রদের সঙ্গে সেনা সদস্যদের সংঘর্ষ হয়৷ দেশজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে ব্যাপক ছাত্র বিক্ষোভ৷ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চার শিক্ষক ও আট শিক্ষার্থী এবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালেয়র আট শিক্ষক ও এক কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার করা হলেও পরে এদের মুক্তি দেয়া হয়৷
ছবি: Journey/S.-M. Gorki
সেভেন মার্ডার
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ১৯৭৪ সালের ৪ এপ্রিল ছাত্রলীগের সাত নেতা খুন হন৷ ওই সময়কার ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শফিউল আলম প্রধান এই খুনের সঙ্গে সরাসরি জড়িত বলে পুলিশি তদন্তে বেরিয়ে আসে৷ বঙ্গবন্ধুর শাসনামলে শফিউলের মৃত্যুদণ্ডের রায় হলেও ’৭৫-এর পর জিয়াউর রহমান তাকে বিএনপিতে যোগদানের শর্তে ক্ষমা করে দিয়ে মুক্তি দেন৷
ছবি: Fotolia/Scanrail
সস্ত্রাসে ছাত্র নেতারা
জিয়াউর রহমান ক্ষমতা নেওয়ার পর ক্যাম্পাসগুলোতে অস্ত্রের ঝনঝনানি বাড়তে থাকে৷ ক্ষমতা ধরে রাখতে ছাত্রদের হাতে অস্ত্র তুলে দেন স্বৈরশাসক এরশাদও৷ এরপর আওয়ামী লীগ, বিএনপি যখন যে দলটি ক্ষমতায় ছিল ক্যাম্পাসগুলোতে তাদের ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মীদের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত থাকতে দেখা যায়৷
ছবি: bdnews24
রগ কাটা শিবির
ইসলামী ছাত্র শিবিরের নেতাকর্মীরা রাজশাহী, চট্টগ্রাম, কুষ্টিয়া বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের নামি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে বছরের পর বছর রাজত্ব কায়েম করে রেখেছিল৷ ধর্মকে হাতিয়ার করে রাজনীতি করা এই সংগঠনটির নেতারা প্রতিপক্ষের কর্মীদের হাত-পায়ের রগ কেটে দিত, এজন্য এটিকে রগকাটা সংগঠন হিসেবে মনে করেন অনেকেই৷
ছবি: STR/AFP/Getty Images
ছাত্রদলে অছাত্র
বিএনিপির শাসনামলে দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে নিজ সংগঠনের নেতাকর্মীদের সঙ্গে বার বার দ্বন্দ্ব-সংঘাতে জড়ায় ছাত্রদলের নেতারা৷ ভাতৃপ্রতীম ছাত্র শিবিরের সঙ্গেও তাদের সংঘাত-সংঘর্ষ ছিল নিয়মিত ঘটনা৷ ক্ষমতাসীন ছাত্র সংগঠন হিসেবে ছাত্রদল টেন্ডারবাজি, ছাত্রী নিপীড়নসহ হাজারো অভিযোগে বিদ্ধ ছিল প্রায় সময়ই৷ অছাত্রদের এই সংগঠনের নেতৃত্বে রাখা এক সময় অঘোষিত রেওয়াজে পরিণত হয়েছিল৷
ছবি: Reuters
নিয়ন্ত্রণহীন ছাত্রলীগ
টানা তৃতীয় দফায় ক্ষমতায় আছে আওয়ামী লীগ৷ এই সময়ে ছাত্রলীগ সারা দেশে তাদের আধিপত্য পুরো প্রতিষ্ঠা করে ফেলেছে৷ প্রতিপক্ষ দূর্বল হয়ে যাওয়ায় নিজেদের মধ্যে বার বার সংঘাতে জড়িয়ে রক্ত ঝরিয়েছেন সংগঠনটির নেতাকর্মীরা৷ সাধারণ ছাত্ররাও এদের হাতে বলি হয়েছেন অনেকবার৷ সংগঠনটির নেতাকর্মীদের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড নানা সময়ে শিরোনাম হয়েছে৷ এ বছর চাঁদাবাজীর অভিযোগে ছাত্রলীগের শীর্ষ দুই নেতাকে পদ থেকে সরিয়ে দেয়া হয়েছে৷
ছবি: Bdnews24.com
প্রতিবাদী বাম
এক সময় ক্ষমতা, শক্তি, প্রভাব, প্রতিপত্তি আর দাপুটে বাম ছাত্র সংগঠনগুলো কালের পরিক্রমায় এখন টিকে থাকার লড়াইয়ে ব্যস্ত৷ জাতীয় কোনো ইস্যুতে ভয়ে অনেকে চুপ থাকলেও এখনো বেশকিছু বাম সংগঠনের নেতাকর্মীদের অন্তত রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ জানাতে দেখা যায়৷
ছবি: picture-alliance/Pacific Press/M. Asad
ক্যাম্পাসে যত খুন
স্বাধীনতার পর বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে দেড় শতাধিক শিক্ষার্থী খুন হয়েছেন৷ ঢাবিতে ৭৪, রাবিতে ২৯, চবিতে ১৯, জাবিতে সাত, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৯ শিক্ষার্থী খুন হয়েছেন৷ আওয়ামী লীগের গত ১০ বছরে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে খুন হয়েছে ২৪ জন শিক্ষার্থী৷ নিজ সংগঠনের নেতাকর্মী বা প্রতিপক্ষ ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মীদের হাতে এসব খুনের ঘটনা ঘটছে৷
ছবি: Getty Images/AFP/R. Asad
13 ছবি1 | 13
তখন ক্লাস এইটে৷ ইংরেজি ক্লাসের শিক্ষক হোমওয়ার্ক দিলেন, ‘এইম ইন লাইফ' রচনা লিখতে হবে৷ কী মনে করে যেন লিখেছিলাম ‘আই ওয়ান্ট টু বি এ লিডার'৷ যদ্দুর মনে করতে পারি শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হককে নিয়ে লেখা কোনো একটি প্রবন্ধ পড়েই এই বাসনা হয়েছিল৷ শিক্ষক ক্লাসে সেই রচনা পড়লেন৷ খাতা ফেরৎ দেয়ার সময় চশমার উপর দিয়ে তাকালেন৷ দুই দিকে ঘাড় নেড়ে বললেন, ‘‘তোকে দিয়ে হবে না৷'' শিক্ষকের এই উপলব্ধির কারণ ঠিক বোধগম্য হয়নি তখন৷
স্কুল শেষে মফস্বল থেকে ঢাকায় আসা৷ উচ্চ মাধ্যমিকে ভর্তি হতে হলো একটি সরকারি কলেজে, যেটি তখন রেজাল্টের বিবেচনায় দেশের প্রথম ৫টি কলেজের মধ্যে পড়ে৷ ছাত্র রাজনীতির সঙ্গে চাক্ষুস পরিচয়টা হয় ঠিক তখনই৷ লাল অক্ষরের দেয়াল লিখন পড়ে হৃদয়ে কম্পন বোধ করেছি৷ আবার একই সাথে ছাত্র রাজনীতির কালো চেহারার সাথে পরিচিত হয়েছি৷ দেখেছি কাছের বন্ধুদের রাতারাতি বদলে যেতে৷ এসএসসির ফলাফলের বিবেচনায় এরা প্রত্যেকেই মেধাবী, অথচ তারাই তখন জড়িয়ে পড়ল ছিনতাই-চাঁদাবাজির মত ঘটনাতে৷ মহানগরীর সাথে খাপ খাওয়াতে না পারা আমি যথেষ্ট সাহসের অভাবে তখন কোনো পক্ষেই ভিড়তে পারিনি৷ মনে মনে প্রবোধ দিচ্ছি রাজনীতির পাঠটা না হয় তোলা থাক বিশ্ববিদ্যালয় পর্বের জন্যেই৷
বাসনা হাতের মুঠোয় নেয়ার পালা আসল বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাওয়ার পর৷ রাজনীতি দিয়ে দিন বদলের স্বপ্নও পেয়ে বসেছে ততদিনে৷ ক্ষমতায় তখন বিএনপি৷ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিশ্বর এখনকার ছাত্রলীগের মতো ছাত্রদল৷ হলে মাথা গুঁজবার জায়গা পাওয়ার জন্য বাধ্য হয়ে তাদের মিছিল, শোডাউনে যোগ দেয় বন্ধুরা৷ হলে না থাকায় তার প্রয়োজন হয়নি আমার৷
ছাত্রদল যখন হাজারো ছাত্র নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সড়কে নিজেদের শক্তিমত্তার প্রদর্শনী দিয়ে চলে, তখন বাম ধারার সংগঠনগুলো হাতে গোনা কয়েকজনকে নিয়ে মিছিল করছে৷ গলার সবটুকু জোর দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বেতন বৃদ্ধি, বাণিজ্যিকীকরণ কর্পোরেট আগ্রাসন, সন্ত্রাসমুক্ত শিক্ষাঙ্গনের দাবিতে স্লোগান দেয়৷ এই ছাত্ররাই আমার কাছে তখন নায়ক৷ বাম রাজনৈতিক সংগঠনগুলোর সাথে উঠা-বসার শুরু৷ বুঝেছি রাজনীতি করতে হলে এমন কোন না কোন সংগঠন করতেই হবে৷ কিন্তু সেটিও ঠিক হয়ে উঠলো না৷ মত, দ্বন্দ্ব আর তত্ত্বের জটিলতায় ততদিনে বুঝে গেছি সরাসরি বাম রাজনীতি করা ছাত্র সংগঠনেও ঠিক ভেড়া হবে না৷ শেষ পর্যন্ত বাম ধারারই একটি সাংস্কৃতিক সংগঠনের সাথে যুক্ত হওয়া৷
এরপর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে যত আন্দোলন হয়েছে, প্রতিবাদ হয়েছে তার প্রায় সবগুলোর সাথেই যুক্ত হওয়ার সুযোগ হয়েছে৷ কখনও সংগঠনের হয়ে, কখনও স্বাধীনভাবে৷ ক্ষমতাসীন ছাত্র সংগঠনগুলো বরাবরই সরকারের বিরুদ্ধে যায় এমন কর্মকাণ্ডে বাধা দেয়ার চেষ্টা করেছে৷ পেশিশক্তি, দুর্বৃত্তপনা দিয়ে ছাত্ররাজনীতির এক ভিন্ন সংজ্ঞা তারা দাড় করিয়েছে৷ সেই সংজ্ঞায় বিভ্রান্ত হয়ে শিক্ষার্থীদের একটি অংশ বরাবরই রাজনীতি বিমুখ থেকেছে৷ অন্যদিকে বাম ছাত্র সংগঠনগুলো তার বিপরীত দাঁড়িয়ে একটি ভিন্ন ধারা দাড় করানোর চেষ্টা চালিয়ে গেছে৷ কিন্তু ব্যাপক মাত্রায় সাধারণ ছাত্রদের কাছে পৌছাতে তারাও ব্যর্থ হয়েছে৷
ছাত্র সংগঠন, হোক ডান বা বাম তাদের সবচেয়ে বড় সমস্যা মূল রাজনৈতিক দলগুলোর ছত্রছায়া৷ এই সংগঠনগুলো কোনো না কোনো অর্থে প্রত্যেকেই তাদের মাতৃ রাজনৈতিক সংগঠনের আদর্শের ধারক-বাহক৷ ছাত্রদল বা ছাত্রলীগের নেতৃত্ব কারা দিবেন সেটি যখন তাদের মূল দল বিএনপি আওয়ামী লীগ ঠিক করে দেয় তখন সেই দলের ছাত্ররা সত্যিকারের রাজনীতির চর্চা করবে সেই আশা কোনোভাবেই করা যায় না৷ আবার বাম ধারার কিছু ছাত্র সংগঠন কাউন্সিলের মাধ্যমে তাদের নেতৃত্ব বেছে নিলেও তারাও চূড়ান্ত অর্থে স্বাধীন এমনটা মনে হয় না৷ আদর্শগত দিক থেকে তারাও কোনো না কোনোভাবে মূল সংগঠনেরই লেজুড়বৃত্তি করে৷ সত্যিকার ছাত্ররাজনীতি চর্চায় এটি একটি বড় বাধা৷ আমার কাছে মনে হয়েছে ছাত্রদের যে নিজস্ব রাজনৈতিক ভাবনা থাকে, তাদের চিন্তার যে স্বাধীনতা থাকে সেটি সংগঠনগুলো অঙ্কুরেই বিনষ্ট করে দেয়৷ ছাত্ররা তাই একটা পর্যায়ে নিজেদের মতো করে ভাবতে ভুলে যায়৷ যার মধ্য দিয়ে বছরের পর বছর দেশের রাজনীতিতেও একই ধারা আর ব্যবস্থা টিকে থাকে৷
সেই সিস্টেমটিকেই ছাত্রদের ভাঙতে হবে৷ আমার কাছে ছাত্র রাজনীতির মানেটাও সেখানে৷ ছাত্ররা নিজেরাই তাদের ভাল-মন্দ বুঝে নিবে৷ এজন্য সংগঠন করবার কোনো বিকল্প নেই৷ তবে সেগুলো কোন রাজনৈতিক দলের ছায়া হবে না৷ বরং ছাত্রদের চর্চা দেখে রাজনৈতিক দলগুলোই উল্টো তাদের কাছ থেকে শিখতে বাধ্য হবে৷ আর এমন একটি ব্যবস্থা চালু করা গেলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে সব ছাত্রই সাংগঠনিক রাজনীতিতে যুক্ত হবে৷ শিক্ষার্থীদের ছাত্র রাজনীতি করা বা না করার অপবাদটাও নিতে হবে না পরবর্তীতে৷
প্রিয় পাঠক, আপনার কি কিছু বলার আছে? লিখুন নীচের মন্তব্যের ঘরে৷