1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ছাত্র রাজনীতি বন্ধ হলে কী লাভ?

৯ অক্টোবর ২০১৯

আবরার ফাহাদ হত্যার ঘটনায় ছাত্র ও শিক্ষক রাজনীতি বন্ধের দাবি উঠেছে৷ বুয়েটের তিনশ' শিক্ষক এর পক্ষে মত দিয়েছেন৷ বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থীদের ১০ দফা দাবির মধ্যেও অন্যতম বুয়েটে ছাত্র ও শিক্ষক রাজনীতি নিষিদ্ধ করা৷

Bangladesch Historische Bilder
ফাইল ফটোছবি: Journey/Z. Islam

আবরার হত্যার পর থেকেই বিক্ষোভ করছেন বুয়েটের শিক্ষার্থীরা৷ তাদের একজন প্লাবন সাহা ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘আমরা শুধুমাত্র বুয়েটে ছাত্র রাজনীতি বন্ধের দাবি জানিয়েছি৷ এখানে কোনো দলীয় ছাত্র রাজনীতি থাকতে পারবে না৷ আবরার হত্যাসহ আরো অনেক ঘটনা ঘটেছে এই রাজনীতির কারণে৷ আমাদের শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে৷ অন্য কোথাও ছাত্র রাজনীতি চলবে কিনা সেটা তাদের ব্যাপার৷ আমাদের এখানে চলবে না৷''

বুয়েটের তিনশ' শিক্ষক এই দাবির সঙ্গে একমত হয়ে শিক্ষক রাজনীতিও নিষিদ্ধের আহ্বান জানিয়েছেন৷ বুয়েট শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক এ কে এ এম মানুদ রানা ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘বুয়েটের অর্ডিন্যান্সে ছাত্ররা ক্যাম্পাসে রাজনীতি করতে পারবে না বলা আছে৷ তাই সাম্প্রতিব ঘটনার প্রেক্ষিতে এখানে ছাত্র রাজনীতি বন্ধের দাবির সঙ্গে আমরা একাত্মতা প্রকাশ করেছি৷ একই কারণে শিক্ষক রাজনীতিও বন্ধের দাবি জানিয়েছি৷''

ডাকসু ভিপি নুরুল হক নুর মনে করেন, ‘‘ছাত্র রাজনীদি নয়, দলীয় লেজুড়বৃত্তির ছাত্র রাজনীতি বন্ধ করা প্রয়োজন৷ ছাত্ররা কোনো রাজনৈতিক সংগঠনের হয়ে কাজ করবেন না৷ তাদের নিজস্ব রাজনীতি থাকবে৷ ছাত্র সংসদ তার ভালো উদাহরণ৷ এখানে দলীয় ব্যানারে কোনো নির্বাচন করা যায় না৷ ছাত্ররা তাদের আদর্শের সংগঠন গড়ে তুলবেন, শিক্ষা ও দেশের কল্যাণে কাজ করবেন৷  ভাষা আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধ, স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে ছাত্রদের গৌরবময় ভূমিকা আছে৷  ২০০৭ সালে দুই নেত্রীকে বাদ দিয়ে বিরাজনীতিকরণের বিরুদ্ধে ভূমিকা রেখেছে ছাত্র রাজনীতি৷''

তবে তিনি মনে করেন, ‘‘শিক্ষকদের পুরোপুরিই রাজনীতির বাইরে থাকা উচিত, কারণ, তারা শিক্ষক৷ সবার অভিভাবক৷ তাদের কোনো ধরনের রাজনীতিতে থাকা উচিত নয়৷''

অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী

This browser does not support the audio element.

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর এমিরেটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ‘‘এখন আমরা যেটা দেখছি এটা ছাত্র রাজনীতি নয়৷ এটা অধঃপতিত ছাত্র রাজনীতি৷ ছাত্র রাজনীতির প্রধান দুইটি বৈশিষ্ট্য- একটা হলো মতাদর্শগত অবস্থান৷ যে আদর্শের তারা চর্চা করবে৷ আর দ্বিতীয়ত তাদের একটা অবস্থান ও আন্দোলন থাকবে ন্যায্যতা ও ন্যায়ের পক্ষে৷ কিন্তু এখন যা হচ্ছে তার চূড়ান্ত অধঃপতনের প্রকাশ আমরা দেখেছি বুয়েটে৷ এখানে কোনো আদর্শের ব্যাপার নেই৷ কোনো ন্যায় আন্দোলনের ব্যাপার নেই৷ এখানে সরকারি আনুগত্যে একচ্ছত্র আধিপত্য৷ আর এই আধিপত্যে কিছু মেধাবী তরুণ, যারা বুয়েটে ভর্তি হয়েছিল, তারাই দুর্বৃত্ত হয়ে গেছে৷ সরকারি আধিপত্যের কারণে ভিন্ন মতের অবস্থান নেই, থাকলেও তা রোধ করা হয়৷''

তাঁর মতে, ‘‘ছাত্র রজনীতি বন্ধ করলে পরিস্থিতি আরো খারাপ হবে৷ তখন ছাত্রেদের কোনো কন্ঠই থাকবে না৷ সরকার, প্রশাসনের একক আধিপত্য প্রতিষ্ঠা পাবে৷ অন্যায়ের বিরুদ্ধে কথা বলার কেউ থাকবে না৷ প্রয়োজন দলীয় লেজুড়বৃত্তির ছাত্র রাজনীতি বন্ধ করা৷ এটা শিক্ষকদের জন্যও প্রজোয্য৷ তারাও দলীয় রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন পদ বা সুবিধা পাওয়ার আশায়৷ দুই ক্ষেত্রেই দলীয় রাজনীতি বন্ধ করে আদর্শিক রাজনীতির চর্চা করতে হবে৷ যদি ছাত্র রাজনীতিই বন্ধ করে দেয়া হয় তাহলে অপশক্তিই সুবিধা পাবে৷ ছাত্র সংসদগুলোতে যদি নিয়মিত নির্বাচন হতো, কার্যকর থাকতো, তাহলে এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হতো না৷''

তাঁর মতে, ‘‘ছাত্র রাজনীতিকে তার গৌরবের ধারায় ফিরিয়ে আনতে দলীয় আধিপত্যের রাজনীতির বাইরে গিয়ে আদর্শিক ধারায় ফিরিয়ে আনতে হবে৷ ছাত্র সংসদগুলোকে কার্যকর করতে হবে৷ এখানে প্রধান দায়িত্ব সরকারের৷''

মোহাম্মদ কায়কোবাদ

This browser does not support the audio element.

শিক্ষাবিদ অধ্যাপক মোহাম্মদ কায়কোবাদ বলেন,  ‘‘ছাত্রদের যদি কোনো সংঘ না থাকে, যদি তারা সংগঠিত হতে না পারে, তাহলে তারা অপশক্তির বিরুদ্ধে দাঁড়াতে পারবে না৷ সমাজের নানা অব্যবস্থার বিরুদ্ধে দাঁড়াতে পারবে না৷ এটা ব্যক্তি নয়, সংগঠনের ব্যাপার৷ সংঘের প্রয়োজন, সংঘ ছাড়া শক্তি হয় না৷ তবে এখন যেটা আমরা দেখছি, এটা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়৷ আমরা চাই না ছাত্ররা রাজনীতির নামে এসব অপকর্মে যুক্ত হোক৷''

তিনি বলেন, ‘‘ছাত্ররা কোনো দলের লেজুড়বৃত্তি করবে না৷ তারা আদর্শিকভাবে দেশের উন্নয়নে ও দেশের কল্যাণে কাজ করবে৷ তাদের রাজনীতি হবে শিক্ষা ও দেশের উন্নয়নে৷ এখন যা হচ্ছে তা আসলে ছাত্র রাজনীতি নয়৷ এটাকে বন্ধ করতে হবে৷''

এদিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বুধবার গণভবনের সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে বলেছেন, ‘‘বুয়েট যদি ছাত্র রাজনীতি বন্ধ করে দিতে চায় করবে৷ কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান যদি ছাত্র রাজনীতি ব্যান করতে চায়, করবে৷ সেটা তাদের ব্যাপার৷ কিন্তু ছাত্র রাজনীতি বন্ধ করতে হবে কেন? আমি ছাত্র রাজনীতি থেকেই উঠে আসা৷ ছাত্র রাজনীতির মধ্য দিয়েই জাতীয় নেতৃত্ব উঠে আসে৷ বুয়েটের ছাত্র হত্যার মধ্যে রাজনীতি কোথায়? এটা তো অপরাধ৷ আর ছাত্রলীগ তো আওয়ামী লীগের কোনো অঙ্গ সংগঠন নয়৷ ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন৷''

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ