ছাত্র রাজনীতি
২৫ জুন ২০১২যুক্তরাজ্যের লন্ডন মেট্রোপলিটন বিশ্ববিদ্যালয়ে লোক প্রশাসন বিষয়ে উচ্চতর শিক্ষা গ্রহণ করছেন বাংলাদেশের ঊর্ধ্বতন তথ্য কর্মকর্তা আফরাজুর রহমান৷ ডয়চে ভেলের সাথে একান্ত সাক্ষাৎকারে যুক্তরাজ্যসহ পশ্চিমা দেশগুলোর শিক্ষা ব্যবস্থা সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘‘এদেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় তারা সৃজনশীলতাকে সবচেয়ে গুরুত্ব দেয়৷ নতুন নতুন উদ্ভাবনী শক্তিকে তারা বিশেষ গুরুত্ব দেয়৷ যেমন আমি এখানে দেখছি যে, আমাদের হয়তো একটা বিষয় ঠিক করে দিল৷ এরপর সেই নির্ধারিত বিষয়ে আমাদেরকে অন্যান্য ছাত্র-ছাত্রী ও শিক্ষকের সামনে দাঁড়িয়ে আলোচনা উপস্থাপন করতে হয়৷ ফলে এক্ষেত্রে আমাদের দেশের স্কুল-কলেজের মতো এখানে সবকিছু শুধু ঝেড়ে মুখস্থ করার দরকার পড়ে না৷ বরং ব্যাপক পড়াশোনার মধ্য দিয়ে বিষয়টিকে ভালোভাবে অনুধাবন করে তা অন্যের সামনে তুলে ধরার দক্ষতা ও সক্ষমতা অর্জন করতে হয়৷ এর মাধ্যমে ছাত্র-ছাত্রীদের মাঝে নেতৃত্ব বিকাশের একটি সুন্দর সুযোগ সৃষ্টি হয়৷''
সম্প্রতি বাংলাদেশ থেকে ইউরোপসহ বিশ্বের উন্নত দেশগুলোতে অধিক হারে শিক্ষার্থী যাচ্ছে - এটিকে ইতিবাচক বলে মনে করেন আফরাজুর রহমান৷ কিন্তু এসব ছাত্র-ছাত্রীর একটি বড় অংশ এসব উন্নত দেশে গিয়ে অর্থ উপার্জনের দিকে বেশি মনোযোগ দিয়ে নিজেদের শিক্ষাজীবন এবং সম্ভাবনাময় পেশাগত জীবনকেও ধ্বংস করছে বলে উদ্বেগের কথা জানান তিনি৷ তাই বিদেশে গিয়ে অন্যান্য সবকিছুর চেয়ে সঠিকভাবে শিক্ষা জীবন সম্পন্ন করার দৃঢ় মনোবল, ইচ্ছাশক্তি ও প্রস্তুতি নিয়েই এসব উন্নত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে লেখাপড়া করতে যাওয়ার পরামর্শ দেন তিনি৷
বাংলাদেশের ছাত্র রাজনীতির প্রচলিত ধারা অনেকাংশেই শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা ও গবেষণার সাথে সংশ্লিষ্ট বিষয়ের চেয়ে ব্যক্তি স্বার্থ কিংবা ক্ষমতার দ্বন্দ্বে পরিণত হচ্ছে৷ এক্ষেত্রে যুক্তরাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ছাত্র সংঘগুলোর উদাহরণ তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘‘ছাত্র রাজনীতির একমাত্র লক্ষ্য হওয়া উচিত ছাত্র-ছাত্রীদের শিক্ষা ও গবেষণার সাথে সংশ্লিষ্ট বিষয়াদি৷ বিশেষ করে পাঠাগারের সময়সীমা বাড়ানো, শিক্ষা ও গবেষণা খাতে বেশি করে অর্থ বরাদ্দ, শিক্ষা বৃত্তি প্রদান সংক্রান্ত বিষয়গুলো নিয়ে ছাত্র সংগঠনগুলো আন্দোলন করলে সেগুলো গোটা ছাত্র সমাজের জন্য বেশি কল্যাণ বয়ে আনবে এবং জাতিগঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে৷''
সাক্ষাৎকার: হোসাইন আব্দুল হাই
সম্পাদনা: জাহিদুল হক