ছারপোকারা কীটনাশকের পরোয়া করে না
২০ জানুয়ারি ২০১১ওহাইও স্টেট ইউনিভার্সিটির এন্টোমোলজিস্ট বা পতঙ্গবিশারদরা অনেক খেটেছেন৷ ছারপোকার জেনোম বা জিন মানচিত্র তো আছেই৷ সেই সঙ্গে গবেষণাগারে ছারপোকার চাষ, আবার ওহাইও রাজ্যের রাজধানী কলাম্বাস শহরের একটি অ্যাপার্টমেন্ট থেকে ছারপোকা ধরে আনা, দু'দল ছারপোকার মধ্যে তুলনা করা৷
এবার বিজ্ঞানীরা তাঁদের গবেষণার ফলাফল পাবলিক লাইব্রেরি অফ সায়েন্স'এর অনলাইন সংস্করণে প্রকাশ করেছেন৷ ছারপোকাদের নাকি এমন কয়েকটি জিন আছে, যেগুলি সম্ভবত তাদের কীটনাশক প্রতিরোধের ক্ষমতা দেয়৷ বিজ্ঞানীরা বলছেন, ঐ জিনগুলোর সূত্র ধরেই এবার ছারপোকাদের ঝাড়ে-বংশে লোপ করার পন্থা আবিষ্কৃত হবে৷
ওদিকে মার্কিন মুলুকে ছারপোকারা ধীরে ধীরে একটা বড় সমস্যা হয়ে উঠছে৷ ইউরোপ এবং অস্ট্রেলিয়ারও ঐ দশা৷ এশিয়ার পূর্বাঞ্চলও বাদ পড়েনি৷ সব মিলিয়ে এ'সব জায়গায় ছারপোকারা বছরে তাদের সংখ্যা দ্বিগুণ কিংবা পাঁচগুণ করছে৷ এবং এই বংশবৃদ্ধির একটা মূল অংশ ঘটছে বহুতল ফ্ল্যটবাড়িগুলিতে৷
এখন সিমেক্স লেক্টুলারিয়ুস বা ছারপোকাদের এই ছছল-বছল কেন, তা নিয়েও মাথা ঘামিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা৷ কারণও বেরিয়েছে অনেক, যেমন আন্তর্জাতিক ভ্রমণ বৃদ্ধি; পুরনো আসবাবের ঘন ঘন হাত এবং বাড়ি বদল; আগেকার ডিডিটি'র মতো ‘ব্রড স্পেকট্রাম' কীটনাশকগুলির ব্যবহার বন্ধ হওয়া - এবং অবশ্যই সি. লেক্টুলারিয়ুসের কীটনাশক প্রতিরোধের ক্ষমতা৷
আমাদের সুপরিচিত ছয় ঠ্যাঙের লেক্টুলারিয়ুস সম্পর্কে একমাত্র ভালো কথা যেটা বলা যায়, সেটা হল এই যে, সে কোনো রোগ ছড়ায় না৷ সে কামড়ালে গা কুট কুট করে এবং চুলকোতে হয়, কিন্তু তার বেশি কিছু নয়৷ যদি না বিনিদ্র রাত্রিগুলোকে ধর্তব্যের মধ্যে না নেওয়া হয়৷ আপাতত আমাদের এই নিয়েই খুশি থাকতে হচ্ছে যে, ছারপোকার জেনোম যখন আবিষ্কৃত হয়েছে, তখন তাকে বধের পন্থাও নিশ্চয় আবিষ্কৃত হবে৷ আর মনে পড়বে, কালি সিংঘি'তে আছে, পুরনো কলকাতায় নাকি গিন্নীরা বলতেন, চড়কের কাঁটা বিছানায় রাখলে জীবনে কোনোদিন ছারপোকা হবে না!
প্রতিবেদন: অরুণ শঙ্কর চৌধুরী
সম্পাদনা: সুপ্রিয় বন্দোপাধ্যায়