অপ্রতিরোধ্য ম্যার্কেল
২১ জুলাই ২০১৩সেপ্টেম্বর মাসে সাধারণ নির্বাচন৷ প্রতিদ্বন্দ্বীদের পেছনে ফেলে জনমত সমীক্ষায় অনেক এগিয়ে ছিলেন জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল৷ কোথাকার কোনো এক এডোয়ার্ড স্নোডেন সেই হিসাব গোলমাল করে দিয়েছেন৷ জার্মানির সংবিধান স্বীকৃত ব্যক্তিগত তথ্যের অধিকারকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা এনএসএ যোগাযোগ সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ করে চলেছে – এমন বিস্ফোরক অভিযোগকে কেন্দ্র করে প্রবল অস্বস্তিতে পড়েছে ম্যার্কেলের সরকার৷ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে ওয়াশিংটন পাঠিয়েও সমালোচকদের মুখ বন্ধ করা যায়নি৷ সরকারের নীরবতা বা দায়সারা উত্তর কারো পছন্দ হচ্ছে না৷ গ্রীষ্মকালীন বিরতির আগে চ্যান্সেলর ম্যার্কেলের সংবাদ সম্মেলনেও কোনো সদুত্তর মিললো না৷
‘‘জার্মান ভূখণ্ডে জার্মান আইন কার্যকর হয়'' – কথাটা ম্যার্কেল যে কতবার বললেন, তার হিসাব রাখছিলেন সাংবাদিকরা৷ একজন বললেন ‘আট'৷ পাশের জন বললেন, ‘‘না, নয় বার''৷ ম্যার্কেল অবশ্য শুরুতেই এনএসএ-কেলেঙ্কারি সম্পর্কে সরকারের স্পষ্ট অবস্থানের কোনো প্রত্যাশা না রাখার পরামর্শ দিয়েছিলেন৷
আঙ্গেলা ম্যার্কেল সাধারণত সংবাদ মাধ্যম থেকে দূরে থাকতেই পছন্দ করেন৷ বছরে একবার গ্রীষ্মকালীন বিরতির আগে একটি সংবাদ সম্মেলন ডাকেন তিনি৷ তখন বেশ খোলামেলা মেজাজে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন৷ বাকি সময়ে সরাসরি সাক্ষাৎকার সাধারণত এড়িয়ে চলেন৷ সাংবাদিকদের পক্ষেও ম্যার্কেলকে বেকায়দায় ফেলা কঠিন হয়৷ কারণ প্রায় সব সংকট থেকে সরকার বা দলকে যেভাবে উদ্ধার করে নিজের বিপুল জনপ্রিয়তা বজায় রাখতে পারেন তিনি, সেই ক্ষমতাকে সমীহ না করে থাকা কঠিন৷ এমনকি এডোয়ার্ড স্নোডেনের অভিযোগকেও হাতিয়ার করে সুবিধা করতে পারলেন না সাংবাদিকরা৷
ম্যার্কেল বুঝিয়ে দিয়েছেন, বিষয়টা খুবই জটিল৷ সময় নিয়ে সব কিছু খতিয়ে দেখতে হবে৷ দ্রুত প্রতিক্রিয়ার কোনো প্রয়োজন তিনি দেখছেন না৷ সাংবাদিকরা এমন উত্তরে সন্তুষ্ট না হলেও তাঁর পক্ষে কিছুই করার নেই৷ তিনি ইউরোপীয় স্তরে তথ্যের অধিকারের কাঠামো আরও মজবুত করতে চান বলে জানিয়েছেন৷ মার্কিন কর্তৃপক্ষের কাছে বেশ কিছু প্রশ্ন তোলা হয়েছে, উত্তরের জন্য অপেক্ষা করতে হবে৷
আসন্ন নির্বাচনের প্রচারে চ্যান্সেলর ম্যার্কেল কোন বিষয়গুলিকে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছেন, সেই প্রশ্নও সযত্নে এড়িয়ে গেলেন তিনি৷ বললেন, রাজনীতিকরা পছন্দ অনুযায়ী বিষয় বাছতে পারেন না, জনগণকে যে সব বিষয় ভাবাচ্ছে, সেগুলিকেই গুরুত্ব দিতে হয়৷ শুধু বললেন, ইউরো সংকট ধীরে ধীরে কেটে যাচ্ছে বলে তাঁর ধারণা৷