সাধারণ ছুটি আর না বাড়িয়ে আগামী ৩১মে থেকে ১৫জুন পর্যন্ত নির্দিষ্ট কিছু স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত পরিসরে অফিস খোলা রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার৷
বিজ্ঞাপন
জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেনের বরাত দিয়ে বাংলাদেশে ডয়চে ভেলের কনটেন্ট পার্টনার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম বুধবার এ তথ্য জানায়৷
প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ বলেন, নতুন করে ছুটির মেয়াদ না বাড়িয়ে ৩১মে থেকে ১৫জুন পর্যন্ত স্বাস্থ্যবিধিসহ বেশ কয়েকটি শর্ত মেনে সীমিত পরিসরে অফিস চালুর বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী অনুমোদন দিয়েছেন৷
ওই সময় পর্যন্ত সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত এবং বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো নিজ নিজ ব্যবস্থাপনায় সীমিত আকারে চলবে৷ তবে বয়স্ক, অসুস্থ এবং সন্তানসম্ভবাদের এ সময় অফিসে আসা যাবে না৷
এই সময়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং গণপরিবহণও বন্ধ থাকবে৷ গত ১৭ মার্চ থেকে দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও কোচিং সেন্টার বন্ধ রাখা হয়েছে৷ গত ১ এপ্রিল নির্ধারিত এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষাও করোনা মহামারির কারণে স্থগিত হয়ে যায়৷
এ বিষয়ে প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ বলেন, ‘‘শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ১৫ জুন পর্যন্ত বন্ধ থাকবে, তবে অনলাইন বা ভার্চুয়াল ক্লাস চলবে৷’’
৩১মে থেকে ১৫জুন পর্যন্ত গণপরিবহন, যাত্রীবাহী নৌযান ও রেল চলাচলও বন্ধ থাকবে৷ তবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে কর্মস্থলে যাতায়াতের জন্য যানবাহন ও ব্যক্তিগত যানবাহন চালু থাকবে বলে জানান তিনি৷
বলেন, ‘‘স্বাস্থ্যবিধি অনুযায়ী বিমান কর্তৃপক্ষ নিজ ব্যবস্থাপনায় বিমানও চালাতে পারবে৷’’
করোনা ভাইরাস সংক্রমণ বিস্তার রোধে গত ২৬ মার্চ থেকে দেশে টানা সাধারণ ছুটি চলছে৷
টানা ৬৬ দিনের সাধারণ ছুটির পর অফিস খোলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হলেও এই সময় সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কর্মস্থল ত্যাগ করা যাবে না বলে জানান জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ৷ নাগরিকদের চলাফেরায়ও আগের মতোই বিধি-নিষেধ থাকবে৷
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘‘আগের মতোই রাত ৮টা থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত সবাইকে ঘরে থাকতে হবে৷ এই সময় জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে বের হওয়া যাবে না৷
‘‘হাট-বাজার এবং দোকানপাটগুলোতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত বেচাবিক্রি চলবে৷’’
এক জেলা থেকে অন্য জেলায় চলাচল কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হবে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘‘প্রতিটি জেলার প্রবেশ ও বের হওয়ার পথে চেক পোস্টের ব্যবস্থা থাকবে৷ জেলা প্রশাসন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তায় এটা বাস্তবায়ন করবে৷’’
সভা-সমাবেশ, গণজমায়েত ও অনুষ্ঠান বন্ধ থাকবে৷ তবে মসজিদ ও ধর্মীয় উপসনালয়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে প্রার্থনা চলবে৷
এসএনএল/জেডএইচ (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)
২৫ মে’র ছবিঘরটি দেখুন....
গণপরিবহণ বন্ধ, তবুও থেমে নেই বাড়ি ফেরা
বাস চলছে না, ছাড়ছে না ট্রেন কিংবা লঞ্চও৷ গণপরিবহণ বন্ধ, তবুও অনেক মানুষ ঢাকা থেকে ছুটছেন বাড়িতে৷ প্রিয়জনের সঙ্গে ঈদ উদযাপন কিংবা প্রয়োজনের তাগিদে নানা উপায়ে তারা শহর ছাড়ছেন৷
ছবি: DW/S. Hossain
অলস কমলাপুর
এই সময়টায় ঢাকার কমলাপুর রেল স্টেশন ঘরমুখো মানুষের ভিড়ে কোলাহলমুখর থাকার কথা৷ সেখানে এখন যাত্রীদের ব্যস্ততা নেই৷ অলস পড়ে আছে শুধু ট্রেনগুলো৷
ছবি: DW/S. Hossain
নীরব সদরঘাট
এখন হয়তো সদরঘাটে পা রাখাটাই দায় হত যদি সময়টা ভিন্ন হত৷ অথচ ঈদের একদিন আগেও সেখানে মানুষের ছুটোছুটি নেই, ঘাট ছাড়ার জন্য লঞ্চের তাড়া নেই৷
ছবি: DW/S. Hossain
বাস আছে, যাত্রী নেই
ঈদের সময় মহাসড়কে জ্যামের কারণে টার্মিনালগুলোতে বাস সংকট আর যাত্রীদের অপেক্ষার দৃশ্যই চিরচেনা৷ কিন্তু গাবতলীতে এখন হাজারো বাস থাকলেও যাত্রীরা অপেক্ষায় নেই৷
ছবি: DW/S. Hossain
ফাঁকা টিকেট ঘর
ঢাকায় দূরপাল্লার বাসের টিকেট কাউন্টারগুলো ঈদের আগে এমন ফাঁকা কি কল্পনা করা যায়! বাস যেহেতু ছাড়ছে না, তাই টিকেট ঘর খোলার প্রশ্নও আসছে না৷
ছবি: DW/S. Hossain
ডাবলডেকার যাবে না
সাধারণত রাজধানীতে চলাচল করলেও ঈদের সময় যাত্রী নিয়ে দূরপাল্লায় পাড়ি দিতে দেখা যায় বিআরটিসির দ্বিতল বাসগুলোকে৷ সেগুলো এখন অকেজো পড়ে আছে ডিপোতে৷
ছবি: DW/S. Hossain
ট্যাক্সিক্যাবের কল নেই
মানুষকে বাস, ট্রেন বা লঞ্চ স্টেশনে কিংবা স্বল্পদূরত্বে পৌঁছে দিতে পারে টেক্সিক্যাবগুলোও৷ ব্যক্তিগত যান ছাড়া সব গণপরিবহন বন্ধ এমন ঘোষণায় তাদেরও গ্যারেজ ছেড়ে বেরুনোর উপায় নেই৷
ছবি: DW/S. Hossain
তবুও আশা
এরপরও অনেকে ঘর থেকে বেরিয়েছেন ঢাকা ছাড়ার পথগুলোর উদ্দেশ্যে৷ সেখান থেকে যদি কোনো বাহন মিলে৷
ছবি: DW/S. Hossain
পায়ে হাঁটা
গাবতলীতে কোন বাহন মিলেনি৷ পায়ে হেঁটেই তাই যাত্রা শুরু করেছে এই পরিবার৷
ছবি: DW/S. Hossain
রোগী নন যাত্রী
রাস্তায় অ্যাম্বুলেন্স চলাচলে বাধা নেই৷ কাজেই রোগীর বাহনটিও অনেকের জন্য এখন বাড়ি ফেরার অবলম্বন৷
ছবি: DW/S. Hossain
পুলিশের চেকপোস্ট
শুরুতে ঢাকায় ঢোকা এবং বাহির হওয়ার ক্ষেত্রে অনেক জায়গায় পুলিশের চেকপোস্ট ছিল৷ তবে এখন তা অনেকটাই শিথীল৷
ছবি: DW/S. Hossain
ব্যক্তিগত যান
গণপরিবহণ বন্ধ থাকলেও ব্যক্তিগত যানে ঢাকা ছাড়তে কোন বাধা নেই৷ এমন সিদ্ধান্তের পরে রাস্তায় কার, মাইক্রোবাসের সংখ্যা বেড়েছে৷
ছবি: DW/S. Hossain
ভাড়ায় প্রাইভেট কার
কিন্তু প্রাইভেট কারে শুধু মালিকরা যাচ্ছেন না৷ অনেক রেন্ট এ কার বা ভাড়ায় খাটা প্রাইভেট কার এই সুযোগে নেমে পড়েছে যাত্রী পরিবহনে৷
ছবি: DW/S. Hossain
জনপ্রতি ৫০০ টাকা
মাইক্রোবাস বা কারে গাবতলী থেকে যাওয়া যাচ্ছে পাটুরিয়া ঘাটে৷ তবে গুণতে হবে জনপ্রতি ৫০০ টাকা৷
ছবি: DW/S. Hossain
মোটরসাইকেলও ভরসা
প্রাইভেট কার না হলে মোটরসাইকেলও আছে৷ রাইড শেয়ারিংয়ে চালানো বাইকাররা স্বল্প দূরত্বে যাত্রীদের পৌঁছে দিচ্ছে৷
ছবি: DW/S. Hossain
সিএনজি অটোরিক্সা
কেউ কেউ সেএনজি চালিত অটোরিক্সাতেও রওনা হয়েছেন৷ তবে কতটুকুই আর যেতে পারবেন!
ছবি: DW/S. Hossain
লোকারণ্য ফেরিঘাট
যারা কষ্ট করে পৌঁছাতে পেরেছেন মাওয়া ফেরিঘাটে তাদের চিত্রটা ছিল এমন৷ হাজারো মানুষের এই ভিড়ে সামাজিক বা শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখার কোন তাড়না বা উপায় নেই৷
ছবি: DW/S. Hossain
ফাঁকা রাজধানী
তবে ঢাকার রাস্তাগুলো ঠিকই ঈদের পুরনো রূপই ফিরে পেয়েছে৷