1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ছোবল হানছে ডেঙ্গু, প্রয়োজন সতর্কতা

৯ জুলাই ২০১৯

চলতি মৌসুমে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্তের সংখ্যা দুই হাজার ছাড়িয়ে গেছে৷ অন্তত তিন জনের মারা যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে৷ পরিসংখ্যান বলছে, আগের বছরগুলোর তুলনায় এবার ডেঙ্গুর প্রকোপ বেড়েছে৷

Global Ideas Brasilien Kampf gegen das Dengue-Fieber
ছবি: R. Richter

রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) পরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদি সাবরিনা ফ্লোরা বলেন, ২০০০ সালের পর থেকে দেশে ডেঙ্গু আছে৷ তবে অন্যবছরের তুলনায় এবার আক্রান্তের সংখ্যা বেশি বলেও স্বীকার করেন তিনি৷

অবশ্য এতে খুব একটা উদ্বিগ্ন নন আইইডিসিআর পরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদি সাবরিনা ফ্লোরা৷ কারণ এই রোগ মোকাবেলার চিকিৎসা সক্ষমতা দেশে আছে বলে মনে করেন তিনি৷

মীরজাদি সাবরিনা ফ্লোরা জানান, ডেঙ্গুর জন্য একটি চিকিৎসা সহায়িকা তৈরি করা আছে৷ তা প্রতিনিয়ত হালনাগাদ করা হয় বলেও জানান তিনি৷ বলেন, চিকিৎসকদেরও এ বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে৷

‘‘ডেঙ্গুর কোনো চিকিৎসা নেই‘‘ জানিয়ে আইইডিসিআর পরিচালক বলেন, ‘‘এটা একটা ভাইরাল ফিভার৷ যদি প্রপার সাপোর্টিভ থেরাপি দিতে পারেন, পুষ্টি, বিশ্রাম, প্রচুর পরিমাণে তরল জাতীয় খাবার দেয়া যায় রোগী সুস্থ হবে৷'' 

মুষলধারে বৃষ্টি না হয়ে থেমে থেমে হলে মশার প্রজননে অনুকূল পরিবেশ তৈরি করে:মীরজাদি সাবরিনা ফ্লোরা

This browser does not support the audio element.

তিনি জানান, ‘‘ডেঙ্গু সেলফ লিমিটিং ডিজিজ৷ একটা সার্টেন পিরিয়ড পরে এটা কন্ট্রোল হয়ে যাবে৷‘‘

আইইডিসিআর-এর ওয়েবসাইটে দেয়া তথ্যে দেখা যায়, গেল পাঁচ বছরের তুলনায় এবার ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি৷ জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহে এসে আক্রান্তের সংখ্যা কিছুটা কমলেও, রোগীর সংখ্যা আবারও বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে৷

ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাবের কারণ ব্যাখ্যায় মীরজাদি সাবরিনা ফ্লোরা বলেন, বাংলাদেশের মতো গ্রীষ্মপ্রধান দেশগুলোতে ডেঙ্গুর প্রভাব সবচেয়ে বেশি৷ এতে জলবায়ু পরিবর্তনেরও একটা বড় ভূমিকা আছে বলে মনে করেন তিনি৷

তিনি বলেন, দেশে এখন মুষলধারে বৃষ্টি হচ্ছে না৷ বৃষ্টি হচ্ছে থেমে থেমে৷ যা মশার প্রজননে অনুকূল পরিবেশ তৈরি করে৷

ডেঙ্গু মোকাবেলায় সচেতনতাকে গুরুত্ব দিচ্ছেন আইইডিসিআর পরিচালক৷ যেখানে পানি জমে সেখানে বিশেষ দৃষ্টি রাখার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি৷ ছাদে, ফ্রিজের নিচে, ফুলের টবে, এসিতে--কোথাও যেন জমে থাকা পানি পাঁচদিনের বেশি না থাকে সেই পরামর্শ দিয়েছেন তিনি৷ বলেন, মশার কামড় থেকে নিজেকে রক্ষা করে চলাটা হবে নিজেকে নিরাপদ রাখার সবচেয়ে বড় কৌশল৷

আইইডিসিআর বলছে, দ্বিতীয় দফায় ডেঙ্গু আক্রান্তরা সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে থাকে৷ তাই জ্বর হলে সঙ্গে সঙ্গেই হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি৷

সংস্থাটির পরিচালক আরো বলেন, যেসব রোগীরা  কিডনি, হার্ট, ডায়াবেটিস বা ক্যান্সারের মতো রোগে ভুগছেন কিংবা ছোটো বাচ্চা, বয়স্ক মানুষ, গর্ভবতী নারীরা ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হলে জটিলতা তৈরি হতে পারে৷ 

চিকিৎসকরা বলছেন, এডিস মশার মাধ্যমে ভাইরাসজনিত এ রোগটি ছড়ায়৷ এপ্রিল থেকে জুন মাসে রোগটির প্রকোপ বাড়ে৷ আর সেপ্টেম্বর থেকে অক্টোবর–এই দুই মাসে আক্রান্ত হবার ঝুঁকি আরো বেড়ে যায়৷

চিকিৎসকদের দাবি, রাজধানী জুড়ে চলছে নির্মাণকাজ৷ এসব স্থানে জমে থাকা পানিতে মশা ডিম পাড়ে। এসব এলাকাগুলোতে এডিস মশার প্রকোপ বেশি৷

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, গত এপ্রিলে দুজন ডেঙ্গু রোগী মারা যান। তাঁদের একজন গত ২৫ এপ্রিল রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে এবং অপরজন তার তিন দিনের ব্যবধানে ২৮ এপ্রিল মারা যান। সবশেষ, ২ জুলাই ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে আইসিইউতে মারা যান এক চিকিৎসক৷

সাধারণ মানুষকে সচেতন করতে ডেঙ্গুর লক্ষণ ও করণীয় ঠিক করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর৷ সংস্থাটির মতে, আক্রান্তের শরীরে ১০৪-১০৫ ফারেনহাইট জ্বর আসতে পারে৷ মাথা, মাংসপেশী, চোখের পেছনে ও হাড়ে প্রচণ্ড ব্যথা অনুভূত হবে৷ এছাড়াও চামড়ায় লালচে ছোপ হতে পারে৷ এসময় রোগীকে প্রচুর তরল খাওয়াতে হবে, মশারির ভেতরে বিশ্রামে রাখতে হবে৷ জ্বর থাকলে প্যারাসিটামল ছাড়া অন্য কোনো ওষুধ না খাওয়ানোর পরামর্শও দিয়েছে তারা৷

তবে হেমোরোজিক ডেঙ্গুজ্বর কিংবা শক সিনড্রোম হলে দাঁতের মাড়ি, নাক, মুখ ও পায়ুপথে রক্ত আসতে পারে৷ তখন আর দেরি না করে রোগীকে হাসপাতালে নেয়ার পরামর্শ দিয়েছে সরকারের এই প্রতিষ্ঠানটি৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ