আবার চীনে দ্রুত ছড়াচ্ছে করোনা। প্রতিদিন ২৪ হাজার মানুষ আক্রান্ত। মে মাসের পর আবার করোনায় মৃত্যু চীনে।
বিজ্ঞাপন
বেজিংয়ে করোনায় আক্রান্ত হয়ে ৮৭ বছর বয়সির মৃত্যু হয়েছে। এই মৃত্যু ও রোজ যেভাবে চীনে করোনা ছড়াচ্ছে, তা থেকে স্পষ্ট যে, আবার করোনার গ্রাসে পড়েছে চীন। বেজিং-সহ দেশজুড়েই করোনার প্রসার রুখতে কড়াকড়ি করেছে তারা।
চীনের জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশন রোববার ওই বৃদ্ধের মৃত্যুর কথা জানিয়ে বলেছে, ২৫ মে-র পর আবার করোনায় আক্রান্ত হয়ে কেউ মারা গেলেন। ছয় মাস আগে সাংহাইতে একজন মারা গেছিলেন।
বিশ্বে এখন করোনার প্রকোপ আগের থেকে অনেক কম। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ এখন করোনাকে সঙ্গী করে বাঁচার নীতি নিয়েছে। কিন্তু চীন আগের মতোই 'জিরো টলারেন্স' নীতি নিয়ে চলেছে। তারা করোনা দেখা দিলেই নিভৃতবাসের ব্যবস্থা করছে। অসুস্থ মানুষের সঙ্গে কে কে সংস্পর্শে এসেছিলেন, তা খুঁজে বের করে তাদেরও কাোয়ারান্টিনে রাখছে। তারপরেও এতজন প্রতিদিন করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন।
মেট্রো স্টেশন, বাস রুট বন্ধ করলো বেইজিং
চীনের বেইজিংয়ে লকডাউন এড়াতে বিভিন্ন সিদ্ধান্ত নেয়া হচ্ছে৷ বুধবার সেখানে ৪০টি মেট্রো স্টেশন ও ১৫৮টি বাস রুট বন্ধ করা হয়েছে৷
ছবি: Yomiuri Shimbun/AP/picture alliance
করোনা পরীক্ষা
চীনের বেইজিংয়ে প্রায় দুই কোটি ২০ লাখ মানুষ বাস করেন৷ সেখানে করোনা ঠেকাতে গণহারে করোনা পরীক্ষা করা হচ্ছে৷
ছবি: Yomiuri Shimbun/AP/picture alliance
স্কুল বন্ধ
সংক্রমণ বেশি থাকা এলাকায় স্কুলসহ কিছু আবাসিক ভবন ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেয়া হয়েছে৷ ছবিতে একটি আবাসিক এলাকায় ব্যারিকেড দেখা যাচ্ছে৷
ছবি: CARLOS GARCIA RAWLINS/REUTERS
বন্ধ হলো মেট্রো, বাস
বুধবার বেইজিংয়ে ৪০টি মেট্রো স্টেশন ও ১৫৮টি বাস রুট বন্ধ করে দেয়া হয়েছে৷
ছবি: Andy Wong/AP/picture alliance
লকডাউন এড়াতে
চীনের সবচেয়ে বড় শহর সাংহাইতে এক মাসের বেশি সময় ধরে লকডাউন চলছে৷ লকডাউন দেয়ার আগে কিছু ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে সংক্রমণ ঠেকানোর চেষ্টা করা হয়েছিল৷ কিন্তু সফল না হওয়ায় লকডাউন দেয়া হয়৷ বেইজিংও সাংহাইয়ের মতো লকডাউন এড়ানোর চেষ্টা করছে৷ লকডাউন হতে পারে এই আশঙ্কায় বেইজিংবাসী নিত্যপণ্য কিনে ঘরে জমা করছেন৷
ছবি: Kevin Frayer/Getty Images
সাংহাইয়ে লকডাউন
সাংহাইয়ের জনসংখ্যা প্রায় আড়াই কোটি৷ লকডাউনের কারণে সেখানকার অধিকাংশ মানুষ ঘর থেকে বের হতে পারছেন না৷ তবে রোববার থেকে কিছু এলাকায় এক পরিবারের মাত্র একজনকে কিছুক্ষণের জন্য বাইরে বের হতে ও সুপারমার্কেটে যাওয়ার অনুমতি দেয়া হচ্ছে৷
ছবি: Aly Song/REUTERS
ক্ষতিগ্রস্ত অর্থনীতি
করোনা ঠেকাতে সাংহাইয়ে লকডাউন ও বেইজিংয়ে কড়াকড়ির কারণে স্থানীয় ও বিশ্ব অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে৷ গবেষণা প্রতিষ্ঠান ক্যাপিটাল ইকোনমিকস জানিয়েছে, চীনের মোট রপ্তানির প্রায় ৮০ শতাংশের সঙ্গে জড়িত এলাকা করোনা বিধিনিষেধের আওতায় পড়েছে৷ ক্রেডিট রেটিং সংস্থা ফিচ রেটিংস চীনের প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস ৪.৮ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৪.৩ শতাংশ করেছে৷ চীনের অফিসিয়াল লক্ষ্য ৫.৫ শতাংশ৷
ছবি: AFP/Getty Images
কয়েক ডজন শহরে বিধিনিষেধ
বর্তমানে চীনের কয়েক ডজন বড় শহরে পুরোপুরি বা আংশিক লকডাউন চলছে৷ অ্যাপলের আইফোন তৈরি করা চীনা কোম্পানি ফক্সকনের শহর জেংজৌতে মঙ্গলবার থেকে আগামী কয়েক সপ্তাহের জন্য ঘরে-বসে-অফিস ও অন্যান্য বিধিনিষেধ জারি করা হয়েছে৷ জেংজৌর জনসংখ্যা প্রায় এক কোটি ২৬ লাখ৷
ছবি: Alessandro Diviggiano/REUTERS
7 ছবি1 | 7
চীনের পরিস্থিতি
এই মাসের গোড়ায় চীন বিদেশ থেকে যাত্রীরা আসলে বিমানবন্দরে কড়াকড়ি কম করে দেয়। নিভৃতবাসে থাকার সময়ও কমিয়ে দেয়া হয়।
তবে তারা 'জিরো কোভিড' নীতি থেকে সরে আসেনি। রোববার বেজিংয়ে ৬২১ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। বেজিংয়ের মানুষকে অন্য জেলায় না যাওয়ার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
প্রচুর রেস্তোরাঁ, দোকান, শপিং মল, অফিস ও অ্যাপার্টমেন্ট ব্লক বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। অনেক পার্ক, জিম, স্পোর্টস হল বন্ধ।
দক্ষিণের শহর গুয়ানঝাউ এখন করোনার হট স্পট। রোববার সেখানে আট হাজার জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। সেখানে ও হাইঝু জেলায় সকলের করোনা পরীক্ষা হচ্ছে। নানান কড়াকড়ি চালু করা হয়েছে। লকডজাউনও ঘোষণা করা হয়েছে। এর প্রতিবাদে মানুষ রাস্তায় নেমেছেন।