1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ছয় মাসে নারীসহ ৩৮ জঙ্গি নিহত

হারুন উর রশীদ স্বপন ঢাকা
৬ জানুয়ারি ২০১৭

গুলশান হামলার পর থেকে এ পর্যন্ত নারীসহ ৩৮ জঙ্গি নিহত হয়েছে৷ নিহতরা নব্য জেএমবির সদস্য৷ সর্বশেষ সংগঠনটির সামরিক কমান্ডার ও গুলশান হামলার মূল পরিকল্পনাকারী নুরুল ইসলাম মারজান ও তার সহযোগী সাদ্দামও ‘বন্দুক যুদ্ধে' নিহত হয়৷

Bangladesch IS-Anschlag in Dhaka
ছবি: picture-alliance/AP Photo

পুলিশ এখন নব্য জেএমবির শীর্ষ দুই নেতা মেজর জিয়া ও মুসাকে আটকের চেষ্টা করছে৷

কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের প্রধান এবং ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার মনিরুল ইসলাম সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, ‘মারজান ছিল নব্য জেএমবি'র সবচেয়ে কমবয়সি কমান্ডার৷ সাংগঠনিক কার্যক্রমে তার দক্ষতা, সদস্য সংগ্রহ এবং কাউন্সিলিং করে আত্মঘাতী হামলায় শিক্ষিত তরুণদের উদ্বুদ্ধ করার বিশেষ পারদর্শিতার কারণে সে এই কমান্ডিং পদবি পেয়েছে৷ গুলশান হামলার ঘটনায় মারজানের সম্পৃক্ততা পাওয়ার পর থেকেই তাকে খুঁজছিল গোয়েন্দারা৷''

পুলিশ জানায়, ২০১৩ সালের শেষ দিকে জঙ্গি দলের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ে মারজান৷ তার আপন বোনজামাই নব্য জেএমবির বোমা বিশেষজ্ঞ সাগরের মাধ্যমে সে জঙ্গি কর্মকান্ডে সম্পৃক্ত হয়৷ আগে তারা দুজনই পুরানো জেএমবির একটি অংশের হয়ে কাজ করতো৷ ২০১৫ সালে তারা তামিমের নেতৃত্বে নব্য জেএমবিতে যোগ দেয়৷ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে আরবী বিভাগে পড়াশুনা করলেও জঙ্গিবাদে জড়িয়ে পড়ার কারণে মারজান পড়াশুনার পাঠ চুকিয়ে ফেলে৷ তার বাড়ি পাবনায়৷ মারজানই হামলার জন্য ঢাকার গুলশানের হোলি আর্টিজান রেস্টুরেন্টকে বাছাই করে বলে পুলিশ জানায়৷

‘জঙ্গি রিক্রুটমেন্ট তৎপরতা বন্ধ করতে হবে’

This browser does not support the audio element.

অন্যদিকে মারজানের সহযোগী সাদ্দাম উত্তরবঙ্গে নব্য জেএমবির সংগঠক হিসেবে কাজ করত বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল৷ পুলিশ জানায়, ১০টি মামলার আসামি ছিল সাদ্দাম৷ এর মধ্যে রংপুরে জাপানি নাগরিক হোসি কুনিও, রহমত আলী খাদেম, বাহাই রুহুল আমিন, পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ মঠের অধ্যক্ষ যজ্ঞেশ্বর রায় এবং কুড়িগ্রামে হোসেন আলী হত্যা মামলা- এই পাঁচটি মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামি ছিল সে৷

ওই পাঁচটি মামলা ছাড়াও গাইবান্ধার ডাক্তার দীপ্তি, সাঘাটের রাব্বি হত্যা,  গোবিন্দগঞ্জের তরুণ দত্ত হত্যা,  নীলফামারির কারবালার খাদেম হত্যা চেষ্টা ও দিনাজপুরের চিরিরবন্দরের ডাক্তার বীরেন্দ্র হত্যাচেষ্টা মামলারও আসামি ছিল সাদ্দাম৷

আরো যেসব জঙ্গি নিহত:

গত বছরের ১ জুলাই গুলশানের হোলি আর্টিজান রেস্টুরেন্টে হামলায় দেশি-বিদেশি ২২  জন নাগরিক নিহত হন৷ তখন পাঁচ জঙ্গিও নিহত হয়৷ তারা হলো: রোহান ইবনে ইমতিয়াজ, নিব্রাস ইসলাম, মীর সাবিহ মোবাশ্বের, শফিকুল ইসলাম উজ্জ্বল ও খায়রুল ইসলাম পায়েল৷

গুলশানের ঘটনার সাত দিনের মাথায়, অর্থাৎ ৮ জুলাই কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ায় ঈদের দিন পুলিশের ওপর হামলা চালায় নব্য জেএমবির একটি গ্রুপ৷ এ সময় পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয় আবীর রহমান নামে নব্য জেএমবির এক সদস্য৷ পরে ৫ আগস্ট র‌্যাবের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে ওই ঘটনায় আটক শফিউল ও তার সহযোগী আবু মোকাতিল নিহত হয়৷

এরপর গত ২৬ জুলাই ঢাকার কল্যাণপুরের তাজ মঞ্জিলের জঙ্গি আস্তানায় কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের অভিযানে নিহত হয় ৯ জঙ্গি৷ যাদের মধ্যে ৮ জনের পরিচয় মিললেও একজনের পরিচয় এখনো জানা যায়নি৷ পরিচয় পাওয়া ৮ জন হলো: দিনাজপুরের আব্দুল্লাহ, টাঙ্গাইলের আবু হাকিম নাইম, ঢাকার ধানমণ্ডির তাজ-উল-হক রাশিক, ঢাকার গুলশানের আকিফুজ্জামান খান, ঢাকার বসুন্ধরার সেজাদ রউফ অর্ক, সাতক্ষীরার মতিউর রহমান, রংপুরের রায়হান কবির ওরফে তারেক এবং নোয়াখালীর জোবায়ের হোসেন৷

২৭ আগস্ট নারায়ণগঞ্জের পাইকপাড়ায় কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের আরেক অভিযানে নিহত হয় নব্য জেএমবির ‘মাস্টারমাইন্ড' বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত কানাডিয়ান নাগরিক তামিম আহম্মেদ চৌধুরী৷ তামিমের সঙ্গে তার আরো দুই সহযোগীও সেদিন নিহত হয়৷ তাদের একজন ধানমণ্ডির তওসিফ হোসেন ও যশোরের ফজলে রাব্বী৷

২ সেপ্টেম্বর মিরপুরের রূপনগরে পুলিশের সঙ্গে গোলাগুলিতে নিহত হয় জাহিদুল ইসলাম নামে অবসরপ্রাপ্ত এক মেজর৷ সে জেএমবির সামরিক প্রশিক্ষণের দায়িত্বে ছিল৷

১০ সেপ্টেম্বর আজিমপুরের একটি বাড়িতে চালানো অভিযানে নব্য জেএমবির অন্যতম শীর্ষ নেতা তানভীর কাদেরী নিহত হয়৷ সেখান থেকে আটক করা হয় তিন নারী জঙ্গি ও তানভীরের ১৪ বছর বয়সী ছেলেকে৷

৮ অক্টোবর গাজীপুরে পৃথক দুই অভিযানে ৯ জঙ্গি ও টাঙ্গাইলে দুই জঙ্গি নিহত হয়৷  একই রাতে সাভারের আশুলিয়ায় র‌্যাবের অভিযানের সময় পালাতে গিয়ে বাড়ির ছাদ থেকে পড়ে গুরুতর আহত হয় জেএমবি'র অর্থদাতা আবদুর রহমান ওরফে নাজমুল ওরফে সারওয়ার জাহান৷ পরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সে মারা যায়৷ ২৪ ডিসেম্বর আশকোনার জঙ্গি আস্তানায় অভিযানের সময় সারিকা নামে এক নারী জঙ্গি আত্মঘাতী হন৷ এবং কিশোর আফিফ কাদেরি নিহত হয়৷ আফিফ আজিমপুর অভিযানে নিহত তানভীর কাদেরির ছলে৷

আর সর্বশেষ ৬ জানুয়ারি শুক্রবার নিহত হলো জঙ্গি মারজান ও সাদ্দাম৷

হোলি আর্টিজানে হামলার পর থেকে গত ছয় মাসে জঙ্গিবিরোধী অভিযান প্রসঙ্গে নিরাপত্তা বিশ্লেষক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শাহেদুল আনাম খান ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘জঙ্গিবিরোধী অভিযানের দু'টি দিক আছে৷ একটি এন্টি টেররিজম এবং আরেকটি কাউন্টার টেররিজম৷ এখন যেটা হচ্ছে সেটা এন্টি টেররিজম৷ কিন্তু এরসঙ্গে সমানতালে কাউন্টার টেররিজমের কাজও চালাতে হবে৷''

তিনি বলেন, ‘‘জঙ্গিদের রিক্রুটমেন্ট,  তাদের অর্থের উৎস, তাদের মোটিভেশন তৎপরতাও বন্ধ করতে হবে৷ হয়তো সেটা নিয়েও কাউন্টার টেররিজমের কাজ হচ্ছে৷ এটা আরো জোরদার করা প্রয়োজন৷''

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ