1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররাও জঙ্গি!

হারুন উর রশীদ স্বপন, ঢাকা৪ জুলাই ২০১৬

ধর্মের নামে সন্ত্রাস বা জঙ্গিবাদের বিস্তার যে শুধু মাদ্রাসাকে ঘিরে হচ্ছে না, তার প্রমাণ অতীতেও দেখা গেছে৷ গুলশানের রেস্তোরাঁয় হামলার ঘটনা তারপরও বিস্ময় জাগিয়েছে৷ বিশ্লেষকরা বলছেন, বিস্তার রোধে এখনি পদক্ষেপ নেয়া দরকার৷

ছবি: picture-alliance/AP Photo

গুলশানের রেস্তোরাঁর যে পাঁচ হামলাকারীর ছবি তথাকথিত ইসলামিক স্টেট বা আইএস-এর বরাত দিয়ে সাইট ইন্টেলিজেন্স প্রকাশ করেছে, তাদের মধ্যে চারজনের পরিচয় জেনে অনেকেই বিস্মিত৷ তারা সবাই ইংরেজি মাধ্যমের স্কুল এবং বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছিল৷ বেশ কিছুদিন ধরে পরিবার থেকে বিচ্ছিন্নও ছিল তারা৷

চার হামলাকারীর একজন রোহান ইমতিয়াজ ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ নেতা ও বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের উপ-মহাসচিব এস এম ইমতিয়াজ খানের ছেলে৷ সে গত জানুয়ারি থেকে নিখোঁজ ছিল৷ রোহান ইমতিয়াজ ঢাকার স্কলাসটিকা স্কুলের সাবেক ছাত্র৷

আরেক হামলাকারী নিবরাস ইসলাম নর্থ-সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্র৷ তার তিন চাচার মধ্যে একজন সরকারের উপ-সচিব, একজন পুলিশ কর্মকর্তা, আরেকজন গবেষক৷


মীর সামেহ মুবাশ্বেরের বাবা মীর হায়াত কবির অ্যালকাটেল-লুসেন্ট বাংলাদেশের কর্মকর্তা৷ মা খালেদা পারভীন সরকারি কলেজের শিক্ষক৷ বড় ভাই পড়ছেন কানাডার টরন্টো বিশ্ববিদ্যালয়ে৷ মুবাশ্বের ‘এ লেভেল' পরীক্ষার আগে গত মার্চে নিখোঁজ হন বলে থানায় জিডি করা হয়েছিল৷

হাফিজুর রহমান

This browser does not support the audio element.

আকেজন হলো খাইরুল৷ তার বাড়ি বগুড়ায় ৷ গণমাধ্যমে ছবি দেখেই বাবা-মা ও প্রতিবেশীরা খায়রুলকে চিনতে পারেন৷ পুলিশ খায়রুলের মা-বাবাকে আটক করেছে৷ তবে তার ঢাকার বন্ধুরা তাকে তাসিন রওনক নামে চেনে৷ সে-ও ঢাকায় একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করত৷

আইএস-এর প্রকাশ করা ছবিতে পাচঁজনের মধ্যে একজনের পরিচয় সম্পর্কে এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি৷

ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের উপ-কমিশনার মাহবুবুল আলম ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে চার হামলাকারীর যে পরিচয় প্রকাশ পেয়েছে, তা ঠিক আছে৷ আমরা তাদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করছি৷''

এদিকে উচ্চবিত্ত পরিবারের সন্তান এ সব ইংরেজি মাধ্যম স্কুল ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের এই জঙ্গি তত্‍পরতায় নড়ে চড়ে বসেছে পুলিশ প্রশাসন৷ তারা বিস্মিত হচ্ছেন৷ বাংলাদেশে হরকাতুল জিহাদ, জেএমবি, হিযবুত তাহরির ও ‘আনসারুল্লাহ বাংলা টিম' নামের জঙ্গি সংগঠনগুলোর ধারাবাহিক উত্থান ঘটেছে৷ এর মধ্যে হিযবুত তাহরির বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের মধ্যেই প্রধানত সক্রিয়৷ প্রাইভেট ও পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষকও এর সঙ্গে জড়িত বলে অভিযোগ রয়েছে৷ হিযবুত তাহরিরের প্রধান অধ্যাপক মহিউদ্দিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইবিএ-র শিক্ষক৷ তিনি ২০১০ সালে একবার গ্রেপ্তার হওয়ার পর জামিনে মুক্ত হয়ে এখন পলাতক আছেন৷

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন ও অপরাধ বিজ্ঞানের অধ্যাপক শেখ হাফিজুর রহমান কার্জন ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘আধুনিক এই তরুণদের জঙ্গিবাদে জড়িয়ে পড়ার ঘটনা দুঃখজনক৷ তবে তাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, আশেপাশের পরিবেশ এবং হয়ত পরিবারও এর জন্য দায়ী৷ তাদেরকে নানা কৌশলে জিহাদের প্রতি আকৃষ্ট করা হয়৷ আর উন্নত যোগাযোগ প্রযুক্তির কারণেও তারা এ সবে জড়িয়ে পড়ছে৷ এর মাধ্যমে তারা জঙ্গিদের সংস্পর্শে আসছে৷''

তিনি আরো বলেন, ‘‘বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের কতিপয় শিক্ষকও এই জঙ্গি মোটিভেশন কাজে জড়িত বলে অভিয়োগ আছে৷''

প্রসঙ্গত, গুলশান হামলার ঘটনায় ৬ জঙ্গি ও দুই পুলিশ কর্মকর্তাসহ মোট ২৮ জন নিহত হয়েছে৷ তবে পুলিশ নিহতদের মধ্যে একজনের নাম ‘আকাশ' বলে জঙ্গি হিসেবে সংবাদ মাধ্যমে ছবি পাঠিয়েছিল৷ কিন্তু প্রকৃতপক্ষে সে জঙ্গি নয়৷ সে আর্টিজান রেস্টুরেন্টের শেফ সাইফুল তালুকদার৷ রেস্টুরেন্টের মালিক সাদাত মেহেদি তা নিশ্চিত করেছেন৷

ধর্মের নামে সন্ত্রাস বা জঙ্গিবাদের বিস্তার বাংলাদেশকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছে? আপনার মতামত জানতে চাই আমরা৷ লিখুন নীচের ঘরে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ