1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে একসঙ্গে লড়াইয়ের অঙ্গীকার

হারুন উর রশীদ স্বপন, ঢাকা২৯ আগস্ট ২০১৬

একদিনের ঢাকা সফরে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি জঙ্গি ও সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের ঐক্যবদ্ধ লড়াইয়ের কথা বলেছেন৷ তিনি বলেন, বাংলাদেশ সঠিক পথেই এগোচ্ছে৷ আর বাংলাদেশের এই লড়াইয়ে পাশে আছে অ্যামেরিকা৷

USA Bangladesch Kerry bei Hasina
ছবি: Getty Images/AFP

ঢাকা এসে সোমবার দুপুরে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠক করেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী৷ এক ঘণ্টার বৈঠকের পর প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের জানান, ‘‘বৈঠকে জন কেরি বলেছেন যে জঙ্গি ও সন্ত্রাসবাদের ব্যাপারে তথ্যের আদান-প্রদান করতে আগ্রহী যুক্তরাষ্ট্র৷''

কেরির কথায়, ‘‘বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্র জঙ্গি এবং সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে একসঙ্গে লড়াই করবে৷'' তাই এ ব্যাপারে ‘‘বাংলাদেশের গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গে কাজ করতে চায় যুক্তরাষ্ট্র'', জানান প্রেস সচিব৷

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী কেরিকে বলেন, ‘‘সন্ত্রাসবাদ একটি বৈশ্বিক সমস্যা৷ জঙ্গি ও সন্ত্রাসবাদ মোকাবেলায় আমরা মানুষের মধ্যে সচেতনতা তৈরির চেষ্টা করছি৷ মানুষ আমাদের সহায়তা করছে৷ তবে ধনী পরিবারের সন্তানরা জঙ্গি ও সন্ত্রাসবাদের পথে যাচ্ছে, এটা আশ্চর্যজনক৷''

বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্রে পালিয়ে থাকা বঙ্গবন্ধুর খুনিদের ফেরত আনা নিয়েও কেরির কাছে প্রস্তাব দেন শেখ হাসিনা৷ এ ব্যাপারে কেরি বলেন, ‘‘আমি আপনার স্বজন হারানোর কষ্ট বুঝি৷ বিষয়টি যুক্তরাষ্ট্র সরকারের পর্যালোচনার মধ্যে রয়েছে৷''

মেজর জেনারেল আব্দুর রশিদ (অব.)

This browser does not support the audio element.

জঙ্গি ও সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলা ছাড়াও বিভিন্ন বিষয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে একত্রে কাজ করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্র৷ ইহসানুল করিম জানান, ‘‘জন কেরি জলবায়ু পরিবর্তন, স্বাস্থ্য, জ্বালানিসহ অন্য অনেকক্ষেত্রেই একসঙ্গে কাজ করার আগ্রহের কথা প্রধানমন্ত্রীকে জানিয়েছেন৷''

এছাড়াও অস্ত্র ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশি সব পণ্যের ডিউটি ও কোটা-ফ্রি প্রবেশের সুযোগ চেয়েছেন শেখ হাসিনা৷

প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের পর, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলীর সঙ্গে বৈঠক হয় কেরির৷ বৈঠক শেষে মাহমুদ আলী জানান, ‘‘তাঁকে আমরা জানিয়েছি যে জঙ্গিবাদ বিষয়ে আমাদের অবস্থান ‘জিরো টলারেন্স'৷''

বঙ্গবন্ধুর খুনি রাশেদ চৌধুরীকে ফেরত পাঠানোর বিষয় নিয়ে তিনি বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘‘আমরা জন কেরিকে রাশেদ চৌধুরীর বিষয়ে জানিয়েছি৷ উত্তরে তিনি বলেছেন, ‘‘যুক্তরাষ্ট্র ফিরে বিষয়টি তিনি দেখবেন৷''

জন কেরি সোমবার সকাল সোয়া ১০ টার দিকে বিশেষ বিমানে করে ঢাকায় পৌঁছান৷ তারপর তিনি বিমানবন্দর থেকেই সরাসরি ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্মৃতি জাদুঘরে যান৷

সেখানে বঙ্গবন্ধুর প্রকিৃতিতে শ্রদ্ধার্ঘ্য অর্পণের পর কেরি পরিদর্শন বইতে লেখেন, ‘সহিংস ও কাপুরুষোচিতভাবে বাংলাদেশের জনগণের মাঝ থেকে এমন প্রতিভাবান ও সাহসী নেতৃত্বকে সরিয়ে দেওয়া কী যে মর্মান্তিক ঘটনা...৷ তারপরও বাংলাদেশ এখন বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়নে এগিয়ে যাচ্ছে, তাঁরই কন্যার নেতৃত্বে৷ যুক্তরাষ্ট্র তাঁর সেই স্বপ্নপূরণে বন্ধু ও সমর্থক হতে পেরে গর্ববোধ করে৷ আমরা এখন এ সম্পর্ককে আরও এগিয়ে নিতে চাই এবং শান্তি ও সমৃদ্ধির লক্ষ্যে যৌথভাবে কাজ করছি আমরা৷''

বিকেলে বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গেও বৈঠক করেন কেরি৷ বৈঠক করেন সংসদে বিরোধী দলীয় নেতা রওশন এরশাদের সঙ্গেও৷

কেরির টুইট বার্তা

ঢাকা সফরে এসে দু'টি টুইট বার্তায় বাংলাদেশের উন্নয়নের প্রশংসা করেছেন মার্কিন পরারাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি৷ সোমবার দুপুরে শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাতের ছবি পোস্ট করে জন কেরি লিখেছেন, ‘বাংলাদেশের অসাধারণ অগ্রগতির ইতিহাস রয়েছে৷ আজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সঙ্গে সাক্ষাৎ করে আনন্দিত৷'

এই টুইটের কয়েক মিনিট পরে কেরি আরেকটি টুইট করেন৷ এই টুইটে তিনি লেখেন, ‘নিরাপত্তা ইস্যু ও চরমপন্থি সহিংসতার বিরুদ্ধে আমাদের দৃঢ় সহযোগিতা নিয়ে আজ গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা হয়েছে৷'

সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ দমনই মূল ইস্যু

বাংলাদেশের নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর জেনারেল আব্দুর রশিদ (অব.) ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘এক দিনের এই সফরে এটা স্পষ্ট যে যুক্তরাষ্ট্রের মূল ইস্যু জঙ্গি ও সন্ত্রাসবাদ৷ এক্ষেত্রে যা মনে হয়েছে তা হলো, দুই দেশ কেরির সফরের মধ্য দিয়ে জঙ্গি ও সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে আরো ঘনিষ্ট হলো৷''

তিনি বলেন, ‘‘বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্র জঙ্গিবাদ দমনে গোয়েন্দা তথ্য বিনিময় করতে পারে৷ আর বাংলাদেশ আরো সক্ষমতা অর্জনে সহায়তা নিতে পারে৷ এর সঙ্গে বাংলাদেশে যে প্রবাসী জঙ্গি প্রবণতা দেখা দিচ্ছে, সেক্ষেত্রেও যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতা নেয়ার আছে৷''

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ