1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

‘গ্রেপ্তার বাণিজ্যের’ অভিযোগ!

হারুন উর রশীদ স্বপন, ঢাকা১৪ জুন ২০১৬

বাংলাদেশে জঙ্গিবিরোধী অভিযানে প্রত্যাশা অনুযায়ী জঙ্গি ধরা পড়ছে না৷ যারা ধরা পড়েছে তাদের অধিকাংশই বিভিন্ন মামলার আসামি৷ বিশ্লেষকরা বলছেন, সুনির্দিষ্ট তথ্যের অভাব ও ঢাকঢোল পিটিয়ে অভিযান শুরু করায় এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে৷

Symbolbild - Islamist
ছবি: Colourbox/krbfss

এদিকে এই অভিযানে বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতা কর্মীদের দমন এবং পুলিশের বিরুদ্ধে ‘গ্রেপ্তার বাণিজ্যের' অভিযোগও উঠেছে৷

পুলিশ সদর দপ্তর জানায়, অভিযানের প্রথম চারদিনে মোট ১১ হাজার ৬৪৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে৷ তাদের মধ্যে জঙ্গি সন্দেহে গ্রেপ্তার করা হয়েছে ১৪৫ জনকে৷

গত ৫ জুন চট্টগামে পুলিশ কর্মকর্তার স্ত্রী মাহমুদা আক্তার মিতুকে হত্যার পর পুলিশ জঙ্গিবিরোধী অভিযান জোরদার করে৷ এরপর তিনদিনে মোট ছয় 'জঙ্গি' পুলিশের সঙ্গে 'বন্দুক যুদ্ধ' বা 'ক্রস ফায়ারে' নিহত হয়৷ ১০ জুন থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশে জঙ্গিবিরোধী অভিযান চলছে৷

পুলিশ সদর দপ্তরের জনসংযোগ কর্মকর্তা এ কে এম কামরুল আহছান জানান, প্রথম দিন ৩৭ জঙ্গিসহ গ্রেপ্তার করা হয় ৩ হাজার ১৫৫ জনকে৷ দ্বিতীয় দিনে ৪৮ জঙ্গিসহ ২ হাজার ১৩২ জন, তৃতীয় দিন ৩৪ জঙ্গিসহ ৩ হাজার ২৪৫ জন এবং চতুর্থ দিন, অর্থাৎ গত সোমবার ২৬ জঙ্গিসহ ৩ হাজার ১১৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়৷

আবদুর রশিদ

This browser does not support the audio element.

সন্দেহভাজন জঙ্গিদের বাইরে যারা আটক হয়েছেন, তাদের মধ্যে অস্ত্র, মাদক ও বিভিন্ন রকমের নিয়মিত মামলার আসামি রয়েছে বলে পুলিশ জানায়৷

তবে বিএনপি এরইমধ্যে এই অভিযানে বিরোধী নেতা-কর্মীদের আটক করা হচ্ছে বলে দাবি করেছে৷ আর সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী পুলিশ জঙ্গিবিরোধী অভিযানের নামে গ্রেপ্তার বাণিজ্যও চালাচ্ছে৷

চলমান এই জঙ্গিবিরোধী অভিযানের সমালোচনার জবাবে পুলিশের আইজি একেএম শহীদুল হক বলেন, ‘‘নীরবে কাজ করলে বলে, পুলিশ কোনো কাজই করে না, পুলিশ ব্যর্থ আবার পুলিশ যখন সরবে কাজ করে তখন বলে, ঢাকঢোল পিটিয়ে কাজ করছে, এগুলো আসলে কাজ করার জন্য করছে না৷ তাহলে আমরা যাব কোথায়? আমার কথা হলো, পুলিশ তো বিভিন্ন কৌশলে কাজ করবে৷ প্রকাশ্যে-গোপনে করবে৷ নানাভাবে করবে৷ এগুলো পুলিশের কর্মকৌশল৷''

পুলিশের বিরুদ্ধে ওঠা গ্রেপ্তার বাণিজ্যের অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ছাড়া একটা লোককেও গ্রেপ্তার করা হয়নি৷ পরিষ্কার নির্দেশ দেওয়া আছে, কোনো নির্দোষ ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা যাবে না৷ কোনো নিরপরাধ মানুষকে হয়রানি করা হলে আমাকে তথ্য দিন৷ আমি আমার অফিসারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব৷''

নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর জেনারেল (অব.) আব্দুর রশীদ ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘পুলিশের কাছে জঙ্গিদের ব্যাপারে পর্যাপ্ত তথ্য নেই বলেই খুবই কম জঙ্গি ধরা পড়ছে৷ কিছু চিহ্নিত জঙ্গির ব্যাপারে পুলিশের কাছে হয়তো তথ্য আছে, কিন্তু পুরো জঙ্গি নেটওয়ার্কের সঙ্গে জড়িতদের তথ্য নেই৷''

তিনি মনে করেন, ‘‘এই অভিযানে যেসব জঙ্গি ধরা পড়েছে বা পড়বে তাদের কাছ থেকে পুলিশ আরো তথ্য জানতে পারবে৷ সেই তথ্য ধরে তারা পরে আরো সুনির্দিষ্ট অভিযান চালাতে পারবে৷''

ঘোষণা দিয়ে জঙ্গিবিরোধী অভিযানের ব্যাপারে মেজর জেনারেল (অব.) আব্দুর রশীদ বলেন, ‘‘ঘোষণা না দিলে অস্বচ্ছতার প্রশ্ন উঠত৷ এত বড় অভিযান সাধারণ মানুষকে না জানিয়ে করার সুযোগ নেই৷ তবে এটা ঠিক যে ঘোষণা দিয়ে অভিযান শুরুর কারণে অনেক জঙ্গি গা ঢাকা দিয়েছে৷''

প্রসঙ্গত, গত বছরের জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত সারা দেশে একই কায়দায় ৪৬টি হামলার ঘটনা ঘটেছে৷ এ সব হামলায় ৪৮ জন নিহত হয়েছে৷ নিহতদের মধ্যে দু'জন পুলিশ সদস্য এবং একজন পুলিশ কর্মকর্তার স্ত্রীও আছেন৷ গত আড়াই মাসে হত্যা করা হয় ১১ জনকে৷ এসব হামলার অনেকগুলোরই দায় স্বীকার করেছে আইএস ও আল-কায়েদার ভারতীয় উপমহাদেশের কথিত বাংলাদেশ শাখা ‘আনসার আল ইসলাম'৷ যদিও সরকার বাংলাদেশে আইএস-এর অস্তিত্ব অস্বীকার করছে৷ সরকার বলছে, এগুলো নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন জেএমবি এবং আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের কাজ৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ