1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

জঙ্গি আটকের কৃতিত্ব সবার, ছিনতাইয়ের দায় কারো না

এম আবুল কালাম আজাদ
এম আবুল কালাম আজাদ
২২ নভেম্বর ২০২২

র‍্যাব ও পুলিশ নিয়মিত সন্দেহভাজন জঙ্গিদের আটক করে। দেশের বিভিন্ন স্থানে লুকিয়ে থাকা এসব ‘জঙ্গি' ধরে দাবি করা হয় যে তারা গোপনে সংগঠিত হচ্ছিল, ষড়যন্ত্র করছিল নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডের।

জঙ্গি সম্পর্কিত কোনো ‘অঘটন' ঘটলে তার দায়দায়িত্ব কেউ নিতে নারাজছবি: bdnews24.com

অবৈধ অস্ত্র, বিস্ফোরক ও জিহাদী বইপত্র উদ্ধার করা হয় তাদের হেফাজত থেকে।  

সাংবাদিকদের এসব তথ্য দিয়ে জঙ্গি আটকের কৃতিত্ব নেয় তারা। অনেকটা পাল্লা দিয়ে র‍্যাব-পুলিশ এটা করে চলেছে কয়েক বছর ধরে। সাফল্যের স্বীকৃতি হিসেবেও পাচ্ছেন প্রশংসা ও পুরস্কার।তবে জঙ্গি সম্পর্কিত কোনো ‘অঘটন' ঘটলে তার দায়দায়িত্ব কেউ নিতে নারাজ।সবার মধ্যে দায় এড়ানোর প্রবণতা দেখা যায়। যার যা দায়িত্ব ছিল তা তারা পালন করেছে বলে দাবি করে। অনেক সময় একে অপরকে দোষারোপ করতেও দেখা যায়। রবিবার আদালত থেকেফাঁসির আসামী দুই জঙ্গিকে পুলিশের হেফাজত কাছ থেকে ছিনিয়ে নেয়ার পর এর দায় না নেয়ার ও অন্যদের দোষারোপ করার ব্যাপারটা আবার দেখা যায়।

সেদিন আদালত প্রাঙ্গনে দাঁড়িয়ে গোয়েন্দা পুলিশের প্রধান হারুন অর রশীদ এটাকে ‘বিচ্ছিন্ন' ঘটনা বলে দাবি করেন। কারা ও আদালত কর্তৃপক্ষের অবহেলার কারণে এমনটি ঘটেছে বলে মনে করেন পুলিশের অনেক কর্মকর্তা। তাদের বক্তব্য, নিরাপত্তার জন্য অতিরিক্ত পুলিশ চাইলে পুলিশ বিভাগ অবশ্যই ব্যবস্থা করতো।

জঙ্গি ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনায় বাহিনীর কেউ দায়ী থাকলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে দাবি করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। এই ঘটনার জন্য পুলিশ, কারা কর্তৃপক্ষ ও আদালতে নিরাপত্তার দায়িত্ব যাদের ছিল কেউই দায় এড়াতে পারে না। কিন্তু স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর এমন গতানুগতিক বক্তব্য বিষয়টাকে হাল্কা করে দেখার প্রয়াস মাত্র। 

এম আবুল কালাম আজাদ, সাংবাদিক ডয়চে ভেলেছবি: Private

কারা কর্তৃপক্ষও এর দায় নিতে নারাজ 

"আমাদের দায়িত্ব হলো কারাগারের ভিতরে৷ আদলাতে আসামিদের নেয়া এবং কারাগারে ফেরত পাঠানোর দায়িত্ব কোর্ট পুলিশ ও থানা পুলিশের৷ আমরা তাদের কাছ থেকে তথ্য পেয়ে আসামিদের রেডি রাখি৷ তারা কীভাবে নেবেন, হ্যান্ডকাফ বা ডান্ডাবেড়ি পরাবেন কিনা তা তাদের দায়িত্ব,”জঙ্গি ছিনতাইয়ের ব্যাপারেজানতে চাইলে গতকাল ডয়েচে ভেলের কাছে এভাবেই দায় এড়িয়ে যান কাসিমপুর কারাগারের জেল সুপার তরিকুল ইসলাম। অথচ ঐ জঙ্গিদের ঢাকার আদালতে আনা হয়েছিল কাসিমপুর কারাগার থেকে। 

আদালতে আসামিদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দায়িত্ব আছেন প্রসিকিউশনের ডেপুটি পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. জসিম উদ্দিন। 

কারা কর্তৃপক্ষের উপর দোষ চাপিয়ে গতকাল তিনি ডয়েচে ভেলেকে বলেছেন যে, আসামিদের নিরাপত্তার কথা জেল কোডে বলা আছে৷ কাদের ডান্ডাবেড়ি পরানো হবে, কাদের শুধু হ্যান্ডকাফ-এটা জেলখানাই নির্ধারণ করে৷ আমরা কারাগারকে আগেই জানিয়ে দিই আসামি কী প্রকৃতির৷ আমরা এই জঙ্গিদের ব্যাপারেও জানিয়েছিলাম। ''

জনবলের অভাবে পর্যাপ্ত পুলিশ জঙ্গিদের সঙ্গে দেয়া যায়নি বলে তিনি দাবি করেন৷ দায়িত্বে অবহেলার দায় ঢাকতেই তিনি এমন স্থুল যুক্তি দিয়েছেন। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জঙ্গির নিরাপত্তার জন্য অতিরিক্ত পুলিশ চাইলে সেটা তিনি নিশ্চয়ই পেতেন। 

গোয়েন্দা ব্যর্থতা কেন? 

র‍্যাব ও পুলিশের গোয়েন্দা তৎপরতা বেশ শক্তিশালী। তারা আগাম অনেক তথ্য পেয়ে থাকে। মধ্য রাতে জঙ্গিদের গোপন বৈঠকের খবর পেয়ে যায়। সন্ত্রাসী ও নাশকতার পরিকল্পনা আগেভাগেই জেনে যায় আর তাই পরিকল্পনাকারীদের ধরেও ফেলতে পারে। 

জঙ্গিরা গোপনে নতুন দল গঠন করে সংগঠিত হওয়ার চেষ্টা করছে বা তারা কোথায় গোপন আস্তানা করে প্রশিক্ষণ নিচ্ছে, সেসব তথ্যও র‍্যাব ও পুলিশের কাছে চলে আসে। কিন্তু জঙ্গিদের ছিনতাইয়ের ব্যাপারটা অজানা থেকে যায়। 

জঙ্গিদের বা জঙ্গি সংগঠনগুলোর বিষয়ে এত কিছু জানতে পারলেও তারা যে পালিয়ে যাওয়ার পাঁয়তারা করছে সে ষড়যন্ত্রের খবর র‍্যাব-পুলিশ জানতে পারে না। ফলে ৯ বছরের ব্যবধানে জঙ্গি ছিনতাইয়ের ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটলো।

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ