হুমায়রা জাকির নাবিলা ২০১৮ সালের ৫ এপ্রিল আটক হয়, জামিনে জেল থেকে বেরিয়ে আসে ১৩ জুন। ‘ব্যাটউইম্যান’ খ্যাত নাবিলা ছিলেন নব্য জেএমবির নারী শাখার প্রধান। ধনাঢ্য পরিবারের মেয়ে নাবিলা জঙ্গি কর্মকাণ্ডে অর্থও যোগান দেন।
প্রতীকী ছবিছবি: Fotolia/Oleg Zabielin
বিজ্ঞাপন
২০১৭ সালের ১৫ আগস্টের জাতীয় শোক দিবসের র্যালিতে সন্ত্রাসী হামলার পরিকল্পনায় জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ তাকে আটক করে। এছাড়াও নারী জঙ্গিদের রিক্রট করে জঙ্গিবাদে তাদের উদ্বুদ্ধ করার মত শক্ত অভিযোগ আনা হয় তার বিরুদ্ধে। অথচ মাত্র দুই মাস ৮ দিনের মধ্যে তাকে জামিনে দেয়া হয়।
২০১৪ সালে ২৪ সেপ্টেম্বর অবসরপ্রাপ্ত বিচারকের ছেলে আসিফ আদনান ও সরকারি এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার সন্তান ফজলে এলাহি তানজিলকে আটক করে ডিবি পুলিশ। তারা দুজন অনলাইনে আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের আধ্যাত্মিক নেতা জসীমুদ্দিন রাহমানিয়ার ফলোয়ার ছিল। সে সময় দুজনেই আল কায়েদার শীর্ষ নেতা আয়মান আল জাওয়াহিরির বক্তব্যে অনুপ্রাণিত হয়।
২৫ সেপ্টেম্বর ডিবি এক সংবাদ সম্মেলন করে জানায়, আইএসের পক্ষে যোদ্ধা সংগ্রহের জন্য লন্ডন থেকে ঢাকায় আসা বাংলাদেশি সামিউন ওরফে ইবনে হামদানের মাধ্যমে তারা তুরস্ক হয়ে সিরিয়ায় গিয়ে জিহাদে যোগ দিতে চেয়েছিলেন। সামিউন আটক হওয়ার আগে একাধিক বৈঠক করেছেন৷ আদনান ও তানজিলের সাথেও তার যোগাযোগ হয়।
অবশ্য মাস তিনেকের মধ্যেই আদনান জামিনে বেরিয়ে যায়। শুধু তাই না, পরবর্তীতে উচ্চ আদালত তাকে সকল অভিযোগ থেকে খালাস প্রদান করে। তানজিলও জামিনে বেরিয়ে লাপাত্তা হয়।
জিহাদি রিক্রুটার সামিউনও জেল থেকে বেরিয়ে বাংলাদেশের বাইরে চলে যায়। পরবর্তীতে সে ভারতে আটক হয়। তাকে কেন জামিন দেয়া হল এবং তিনি তার পাসপোর্ট কিভাবে ফেরত পেলেন সেটা নিয়ে সে সময় বেশ হইচই বাঁধে।
ইসলামিক স্টেটের শক্তি এখন কেমন?
২০১৯ সালের মার্চে সিরিয়া-ইরাক সীমান্তের বাঘুজে সংঘাতের পর ইসলামিক স্টেট তথা আইএস-এর পতন ঘটেছিল৷ এরপর সেটি এখন গেরিলা সংগঠনে পরিণত হয়েছে৷ বুধবার মার্কিন অভিযানে তাদের দ্বিতীয় শীর্ষ নেতা প্রাণ হারান৷
ছবি: Dabiq/Planet Pix via ZUMA Wire/ZUMAPRESS/picture alliance
পতন
২০১৯ সালের মার্চে সিরিয়া-ইরাক সীমান্তের বাঘুজে সংঘাতের পর ইসলামিক স্টেট তথা আইএস-এর পতন ঘটেছিল৷ এরপর ঐ বছরের অক্টোবরে আইএস-এর প্রতিষ্ঠাতা আবু বকর আল-বাগদাদি নিহত হন৷ একসময় ইরাক ও সিরিয়ার একটি বিশাল এলাকার লাখ লাখ মানুষের জীবন নিয়ন্ত্রণ করলেও বর্তমানে সংগঠনটি গেরিলা হামলা চালানোর মধ্যে সীমাবদ্ধ আছে৷
ছবি: Getty Images/AFP/G. Cacace
দুই শীর্ষ নেতার মৃত্যু
বাগদাদির মৃত্যুর পর আইএস এর প্রধান হন ইরাকের আবু ইব্রাহিম আল-হাশেমি আল-কুরেশি৷ একসময় তিনি যুক্তরাষ্ট্রে কারাবন্দি ছিলেন৷ গত বুধবার রাতে উত্তর-পশ্চিম সিরিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের সেনা অভিযানের সময় বিস্ফোরণ ঘটিয়ে তিনি নিহত হন৷ কুরেশি ছাড়া সংগঠনটির আর কোনো নেতা সম্পর্কে তথ্য পাওয়া যায় না, কারণ আইএস এখন গোপনভাবে কার্যক্রম পরিচালনা করছে৷
ছবি: Mohamed Aldaher/REUTERS
কত সদস্য আছে?
বাঘুজে লড়াই শেষে ২০১৯ সালের মাঝামাঝি আইএস-এর বিরুদ্ধে লড়াইরত মার্কিন নেতৃত্বাধীন জোট জানিয়েছিল, প্রায় তিন হাজার বিদেশিসহ সংগঠনে এখনও ১৪ থেকে ১৮ হাজার সদস্য আছে৷ তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, আইএস-এর অনেক স্থানীয় সদস্য হয়ত স্বাভাবিক জীবনে ফিরে গেছে৷ কিন্তু সুযোগ পেলেই তারা আবার আবির্ভূত হতে পারে৷
ছবি: Dabiq/Planet Pix via ZUMA Wire/ZUMAPRESS/picture alliance
তিনবছরের মধ্যে সবচেয়ে বড় হামলা
সপ্তাহ দুয়েক আগে সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলের হাসাকা শহরের একটি জেলখানায় হামলা চালায় আইএস৷ সেখানে তাদের সদস্যদের বন্দি রাখা হয়েছিল৷ ঐ এলাকা নিয়ন্ত্রণ করা কুর্দি নেতৃত্বাধীন সিরিয়ান ডেমোক্রেটিক ফোর্সেস জানিয়েছে, হামলায় তাদের ৪০ জন সদস্য, কারাগারের ৭৭ জন নিরাপত্তা প্রহরী ও চারজন সাধারণ মানুষ প্রাণ হারান৷ আর ইসলামিক স্টেটের ৩৭৪ জন হামলাকারী বা বন্দি ঐ হামলায় নিহত হন৷
মার্কিন সরকারের সবশেষ প্রতিবেদন বলছে, গত তিন মাসে আইএস ইরাকে ১৮২টি ও সিরিয়ায় ১৯টি হামলা চালিয়েছে৷ আইএস এখনও প্রাণঘাতী ও জটিল হামলা চালাতে সক্ষম৷
ছবি: HUSSEIN FALEH/AFP/Getty Images
ভবিষ্যৎ কৌশল?
ইসলামিক স্টেটের পূর্বসূরি সংগঠনের নাম ছিল ইসলামিক স্টেট ইন ইরাক৷ ২০০৭ থেকে ২০০৯ সালের মধ্যে স্থানীয়দের সঙ্গে মিলে যুক্তরাষ্ট্র ঐ সংগঠনকে ধ্বংস করে দিয়েছিল৷ এরপর ঐ সংগঠনের সদস্যরা গোপনে চলে গিয়েছিলেন৷ তারপর সুযোগ বুঝে সামনে এসেছিল তারা৷ এবারও কি সেই কৌশল নেবে তারা?
ছবি: SDF/AP photo/picture alliance
কী ছিল সেই কৌশল?
ইরাকে শিয়া নেতৃত্বাধীন সরকারের সময় সুন্নিদের মধ্যে অসন্তোষ এবং সিরিয়ায় গৃহযুদ্ধের সুযোগ কাজে লাগিয়ে সামনে আসা শুরু করেছিল আইএস৷ ২০১২ ও ২০১৩ সালে ইরাকের বিভিন্ন কারাগারে হামলা চালিয়ে অনেক সদস্যকে মুক্ত করে তারা৷ একই সময়ে মানুষজনকে ভয় দেখিয়ে এবং চুরি, ছিনতাই ইত্যাদি উপায় ব্যবহার করে অর্থ সংগ্রহ করেছিল৷ এরপর ২০১৪ সালে মসুল ও ইরাকের উত্তরাঞ্চলের এক বিশাল এলাকার নিয়ন্ত্রণ নিয়েছিল আইএস৷
ছবি: Dabiq/Planet Pix via ZUMA Wire/ZUMAPRESS/picture alliance
7 ছবি1 | 7
জামিন পাওয়ার, না পাওয়ার কারণ
শুধু প্রভাবশালী বা ধনাঢ্য পরিবারের অভিযুক্ত ব্যক্তিদের এভাবে জামিনে মুক্ত হন তা নয়, বরং জঙ্গি অভিযোগে আটক অধিকাংশ নারী-পুরুষের ক্ষেত্রেও এটা হতে পারে।
জঙ্গিবাদের অভিযোগে আটক ব্যক্তিদের নিম্ন আদালতে সাধারণত জামিন দেয়া হয় না। জামিন মূলত দেয়া হয় উচ্চ আদালতে। যেকোনো আটক ব্যক্তি উচ্চ আদালতে আপিল করলে অধিকংশ ক্ষেত্রেই তার জামিন মঞ্জুর হয়, তার বিরুদ্ধে অভিযোগ যাই হোক না কেন।
তবে ধনী ও প্রভাবশালী পরিবারের সদস্যদের দ্রুত জামিনে বেরিয়ে আসেন। এক্ষেত্রে তাদের পরিবার বড় ভূমিকা রাখে। অভিযোগ রয়েছে, পুলিশ ও আদালত কে "ম্যানেজ” করে তারা সহজেই জামিনের ব্যবস্থা করেন। যেমন ঘটেছে নাবিলা ও আদনানের ক্ষেত্রে।
তবে যারা উচ্চ আদালতে যেতে পারেন না, তারা জামিন না পেয়ে বছরের পর বছর জেলে বন্দি থাকেন। তৃষা মনি ও মাহমুদা খাতুনের বেলায় এটা ঘটেছে।
নাটোর ও কুষ্টিয়া জেলার দুটি জঙ্গিমামলায় মাহমুদাকে আটক করা হয় ২০১৭ সালের ১৩ জানুয়ারি। অন্যদিকে তৃষা ২০১৬ সালের ২৪শে ডিসেম্বর ঢাকার আশকোনায় এক জঙ্গিবিরোধী অভিযানের সময় আত্মসমর্পণ করে। নিম্ন আদালতে বার বার আবেদন করলেও তাদের জামিন নাকচ করে দেয় বিচারক। দরিদ্র পরিবারের পক্ষে উচ্চ আদালতে যাওয়া সম্ভব হয়নি।
আইএস প্রধানের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের অভিযানের কিছু দৃশ্য
বুধবার মাঝরাতে উত্তর-পশ্চিম সিরিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের সেনা অভিযানে জঙ্গি গোষ্ঠী আইএস-এর প্রধান আবু ইব্রাহিম আল-হাশেমি আল-কুরেশি মৃত্যুবরণ করেন৷ দেখুন অভিযানের কিছু মুহূর্ত...
ছবি: Mohamed Aldaher/REUTERS
মার্কিন অভিযান
সিরিয়ার আতমেহতে বুধবার মার্কিন সেনারা এক অভিযান চালায়৷ সেই অভিযানে মৃত্যুবরণ করেন আইএস প্রধান আবু ইব্রাহিম আল-হাশেমি আল-কুরেশি৷
ছবি: Mohamed Aldaher/REUTERS
নজরদারি বাইডেনের
অভিযান চলার সময় হোয়াইট হাউসের সিচুয়েশন রুম থেকে নজর রাখছিলেন জো বাইডেন৷ কমলা হ্যারিস ও অন্য উচ্চপদস্থ নিরাপত্তা আধিকারিকরাও তার সঙ্গে ছিলেন৷
ছবি: The White House/REUTERS
বিস্ফোরণে ছারখার
তুরস্ক সীমান্তের কাছে আতমেহতে জঙ্গি নেতার লুকিয়ে থাকার খবর ছিল মার্কিন গোয়েন্দাদের কাছে৷ পরিকল্পনামাফিক অভিযান চালায় তারা৷ বিস্ফোরণের পর বাড়ির অন্দরের ছবি ধরা পড়েছে আলোকচিত্রীর ক্যামেরায়৷
ছবি: Mohamed Aldaher/REUTERS
আত্মঘাতী বোমা হামলা
যুক্তরাষ্ট্রের সেনারা বাড়ি ঘিরে ফেলার পর আত্মঘাতী বোমায় সপরিবারে নিজেকে উড়িয়ে দিয়েছেন আইএস প্রধান৷ সেই বিস্ফোরণে মৃত্যু হয়েছে ১৩ জনের৷ তাদের মধ্যে ছয়জন নারী এবং চারজন শিশুও রয়েছে৷ ভয়াবহ বিস্ফোরণে আশপাশের কিছু বাড়িরও ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে৷
ছবি: Mohamed Aldaher/REUTERS
হামলার ক্ষত
এলাকার একটি বাড়ির রান্নাঘর৷ মার্কিন সেনা অভিযানের পর তা একেবারে ভেঙেচুরে গিয়েছে৷
ছবি: Mohamed Aldaher/REUTERS
শাটারে গুলির দাগ
আতমেহ এলাকার একটি দোকানের শাটারের এই ছবি দেখেই বোঝা যাচ্ছে অভিযানের সময় কী পরিমাণ গোলাগুলি চলেছে৷
ছবি: Mohamed Aldaher/REUTERS
ডিসেম্বর থেকে নজরে কুরেশি
২০১৯ সালে সিরিয়াতে মার্কিন সেনাদের আরেক অভিযানে আইএস-এর সাবেক প্রধান আবু বকর আল-বাগদাদির মৃত্যুর পর কুরেশি দায়িত্ব পান৷ তার গতিবিধির উপর নজর রাখছিল যুক্তরাষ্টের সেনারা৷ গত ডিসেম্বরে অভিযানের পরিকল্পনা নেয় তারা৷ ছবিতে অভিযান শেষে ধ্বংসস্তূপ সরানোর কাজ করছেন জরুরি পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিরা৷
ছবি: Mohamed Aldaher/REUTERS
বিস্ফোরণে ধ্বংস
আতমেহ অঞ্চলের সেই এলাকার অনেক বাড়িই অভিযানের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত৷ জরুরি পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিরা সেখানে উদ্ধার তৎপরতায় ব্যস্ত৷ বাইডেন এই অভিযানের জন্য মার্কিন সেনাদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন৷ সেনারা নিরাপদে ফিরে আসায় স্বস্তিও প্রকাশ করেছেন তিনি৷
ছবি: Mohamed Aldaher/REUTERS
স্থানীয়দের সরিয়ে অভিযান
অভিযান শুরুর আগে স্থানীয়দের হাত তুলে দ্রুত নিরাপদ দূরত্বে চলে যেতে বলা হয়৷ ছবিতে প্রায় ধ্বংস হয়ে যাওয়া এক বাড়ির কিছু পোশাক৷
ছবি: Mohamed Aldaher/REUTERS
9 ছবি1 | 9
এভাবে জামিনের ক্ষেত্রে এক ধরনের অসমতা তৈরি হয়েছে। ফলে, একদিকে মারাত্মক অপরাধের অভিযোগে আটক ব্যক্তি ছাড়া পেয়ে যাচ্ছে, অন্যদিকে ছোটখাট অপরাধে অভিযুক্তরা জামিন পাচ্ছে না।
জঙ্গি মামলায় অর্ধেক জামিন পায়
জঙ্গি কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে নিয়মিত নারী ও পুরুষদের আটক করা হয়। আটকের সময় তাদের কাছ থেকে পুলিশ জঙ্গিবাদে সংশ্লিষ্টার তথ্যপ্রমাণ যেমন জিহাদি বই, ইলেক্ট্রনিক্স ডিভাইস, অস্ত্র ও বিস্ফোরক উদ্ধার করে থাকে। প্রযুক্তি ব্যবহার করে অনেক কর্মকাণ্ড করা হয় তাই পুলিশ তাদের ডিজিটাল ফুটপ্রিন্টও সংরক্ষণ করে এবং সকল নথিপত্র আদালতে জমা দেয়। এসব নথিপত্র, তথ্যপ্রমাণ ও সাক্ষীদের সাক্ষীর ভিত্তিতে বিচারক সে সকল ব্যক্তি জঙ্গি কর্মকাণ্ডে জড়িত কি না তার বিচার করে। তবে আটক এসব ব্যক্তিদের বড় অংশ জামিনে বেরিয়ে যায়।
পুলিশের বিভিন্ন পরিসংখান অনুযায়ী, জঙ্গিবাদে যুক্ত থাকার অভিযোগে ১৯৯৬ সাল থেকে প্রায় সাড়ে তিন হাজার জনকে আটক করা হয়েছে। এদের অধিকংশই নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন জামায়াতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশ (জেএমবি), হরকাতুল জিহাদ বাংলাদেশ (হুজিবি) এবং নব্য জেএমবি আনসারুল্লাহ বাংলা টিম (পরবর্তীতে আনসার আল ইসলাম) সাথে জড়িত।
কাদের হাতে আফগান মন্ত্রিসভা
কেউ ছিলেন মোস্ট ওয়ান্টেড। জাতিসংঘের তালিকায় এখনো কেউ কেউ 'জঙ্গি'। এক নজরে তালেবান সরকার।
ছবি: Gulabuddin Amiri/AP/picture alliance
হাইবাতুল্লাহ আখুন্দজাদা
তালেবানের সুপ্রিম নেতা আখুন্দাজা। ২০১৬ সাল থেকে তালেবানের ধর্ম, রাজনীতি সহ সমস্ত বিষয়ে তিনি সর্বোচ্চ সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকারী। তার নেতৃত্বেই সরকার গঠন করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী সহ সমস্ত মন্ত্রী তার কাছে জবাবদিহি করবেন। তালেবান আফগানিস্তান দখল করার পরে এখনো পর্যন্ত আখুন্দজাদা ক্যামেরার সামনে আসেননি। তবে সরকার গঠনের কথা বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছেন তিনি।
ছবি: Imago/Xinhua
প্রধানমন্ত্রী মোল্লাহ হাসান আখুন্দ
প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়েছেন মোল্লাহ হাসান আখুন্দ। এর আগে ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত তালেবান সরকারে আখুন্দ ডেপুটি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব সামলেছেন। তালেবানের সর্বোচ্চ নেতৃত্বের অন্যতম তিনি। তবে এখনো জাতিসংঘের সন্ত্রাসী তালিকায় তার নাম আছে।
ছবি: SAEED KHAN/AFP
ডেপুটি প্রধানমন্ত্রী মোল্লাহ আব্দুল গনি বারাদার
ডেপুটি প্রধানমন্ত্রী নিযুক্ত হয়েছেন বারাদার। অনেকে মনে করেছিলেন বারাদারকেই প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হবে। কোনো কোনো সূত্রের দাবি, মন্ত্রিসভার গঠন নিয়ে তালেবানের ভিতরে যথেষ্ট বিতর্ক হয়েছে। সেখানে পাকিস্তানের আইএসআই-য়েরও হাত ছিল। হাসান আখুন্দকে সে জন্যই প্রধানমন্ত্রী করা হয়েছে। পিছিয়ে পড়েছেন বারাদার।
ছবি: Alexander Zemlianichenko/REUTERS
ডেপুটি প্রধানমন্ত্রী মৌলভি আদুল সালাম হানাফি
হানাফিও ডেপুটি প্রধানমন্ত্রীর পদ পেয়েছেন। তালেবানের গুরুত্বপূর্ণ নেতা তিনি। কাতারে তালেবানের রাজনৈতিক সদর দফতরে বিশেষ পদে ছিলেন হানাফি। অ্যামেরিকা এবং আফগান সরকারের সঙ্গে আলোচনার দায়িত্বেও ছিলেন। তবে তিনি ডেপুটি প্রধানমন্ত্রী হবেন, এমনটা আশা করেননি অনেকেই। (ছবিতে ডানদিক থেকে দ্বিতীয়)
ছবি: AFP/Getty Images/K. Jaafar
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সিরাজুদ্দীন হাক্কানি
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়েছেন হাক্কানি নেটওয়ার্কের প্রধান সিরাজুদ্দীন হাক্কানি। এফবিআইয়ের জঙ্গি তালিকায় তার নাম আছে। ২০১৭ সালে কাবুলে ট্রাক বোমা বিস্ফোরণে তিনিই মূল চক্রী বলে মনে করা হয়। যেখানে ১৫০ মানুষের মৃত্যু হয়েছিল। হাক্কানি নেটওয়ার্কের সঙ্গে আল কায়দারও যোগাযোগ আছে বলে মার্কিন গোয়েন্দা দফতর মনে করে। অ্যামেরিকার তালিকায় হাক্কানি নেটওয়ার্ক নিষিদ্ধ সন্ত্রাসী গোষ্ঠী।
ছবি: FBI/REUTERS
প্রতিরক্ষামন্ত্রী মোল্লাহ মোহাম্মদ ইয়াকুব মুজাহিদ
প্রতিরক্ষামন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়েছেন ইয়াকুব মুজাহিদ। তালেবান প্রতিষ্ঠাতা মোল্লা ওমরের ছেলে তিনি। তালেবান সরকারে তিনি গুরুত্বপূর্ণ পদ পাবেন বলেই বিশেষজ্ঞরা মনে করেছিলেন। ইয়াকুবের নামও জাতিসংঘের কালো তালিকায় অন্তর্ভুক্ত।
ছবি: IRNA
গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সামলাবেন মৌলভি আমির খান মুতাক্কি। অর্থ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে মোল্লাহ হিদায়েত বাদরি। বিচারবিভাগ দেখবেন আব্দুল হাকিম ইশাকজাই। তথ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থাকবেন খইরুল্লাহ সায়িদ ওয়ালি খায়েরখা।
ছবি: REUTERS
কথা রাখেনি
বিশেষজ্ঞদের দাবি, তালেবান একটি বিষয় বুঝিয়ে দিয়েছে, তারা তাদের মূল নীতি থেকে সরছে না। তারা জানিয়েছে, শরিয়ত আইনেই ইসলামিক আমিরাত আফগানিস্তান শাসিত হবে। তারা কোনো নারীকে মন্ত্রিসভায় রাখেনি। আফগানিস্তান দখলের পরে তালেবানের কথা শুনে অনেকে মনে করেছিলেন, এবারের সরকার মধ্যপন্থা নিয়ে চলবে। তালেবান ছাড়াও অন্য গোষ্ঠীর নেতাদের সরকারে নেয়া হবে। কিন্তু মন্ত্রিসভা দেখে অনেকেই বলছেন, তালেবান কথা রাখেনি।
ছবি: Alexander Zemlianichenko/AFP
8 ছবি1 | 8
তবে এদের অর্ধেকেরও বেশি জামিন পায়।
সব চেয়ে বেশি সংখ্যক প্রায় ১৫০০ জনকে জেএমবির নেতাকর্মী হিসাবে আটক করা হয়, যার মধ্যে প্রায় ৭০০ জন জামিন পায়।
সব চেয়ে বেশি জামিন পায় নব্য জেএমবির সাথে জড়িতরা। আটক ১০০০ ব্যক্তির মধ্যে ৯০০ জন জামিন লাভ করে।
অন্যদিকে পুরাতন জঙ্গি সংগঠন হুজিবির প্রায় ২৩০ জনকে আটক করা হয়, যার মধ্যে জামিনে বেরিয়ে যায় ২০০ জন।
এবিটি বা আনসার আল ইসলামের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে আটক করা হয় প্রায় ৪০০ ব্যক্তিকে। এদের প্রায় অর্ধেক জামিন পায়।
জামিন কোন আটক ব্যক্তির আইনগত অধিকার। তবে জঙ্গিবাদের অভিযোগে আটক ব্যক্তিদের জামিনের ক্ষেত্রে আইনের চেয়ে বেশি গুরুত্ব পায় আটক ব্যক্তির পারিবারিক ও আর্থিক অবস্থা। জঙ্গি মামলার জামিন ও বিচারের বেলাতেও প্রভাব সামাজিক ও রাজনৈতিক প্রতিপত্তি বড় ব্যাপার।
জঙ্গি কর্মকাণ্ড গুরুতর অপরাধ বলে নিম্ন আদালতে "জঙ্গিরা” জামিন পায় না। অথচ সেসব জঙ্গিরাই উচ্চ আদালতে সহজেই জামিন পেয়ে যায়।