1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

জঞ্জাল যখন নির্মাণের উপকরণ হয়ে ওঠে

১৬ ডিসেম্বর ২০২০

আজকের যুগে অপ্রয়োজনীয় সব কিছুই ফেলে দেওয়া হয়৷ পৃথিবীর সীমিত সম্পদ ও পরিবেশ সংরক্ষণের প্রেক্ষাপটে এমনটা চিরকাল চলতে পারে না৷ ইউরোপের কিছু মানুষ নির্মাণের উপকরণ পুনর্ব্যহারের পথ দেখাচ্ছেন৷

ছবি: picture-alliance/blickwinkel/S. Ziese

বাড়িঘর ভাঙার কারণে গোটা বিশ্বে কয়েক কোটি টন জঞ্জাল সৃষ্টি হয়৷ কিন্তু সেই জঞ্জাল থেকে নির্মাণের নতুন উপকরণ তৈরি করা সম্ভব৷ যেমন একটি ফ্ল্যাটের দেওয়াল ও ইনসুলেশনের উপকরণ হিসেবে প্লাস্টিকের বোতল, টেট্রাপ্যাক, জিনস প্যান্ট ও আলুর খোসা ব্যবহার করা হয়েছে৷ শুধু তাই নয়, পরীক্ষামূলক এই ফ্ল্যাটে আরও অনেক উপাদান পুনর্ব্যবহার করা হয়েছে৷ সেখানে মানুষ বসবাস করে বলে উপকরণগুলির কার্যকারিতাও বোঝা সম্ভব৷ কয়েক মাসের জন্য সেখানে ছাত্রছাত্রীরা ডেরা বাঁধেন৷

দেমেত্রিস এংলেসোস তাদেরই একজন৷ তিনি বলেন, ‘‘ভবিষ্যতধর্মী এমন পরিবেশে থাকতে ভালোই লাগে৷ কারণ এখানে জঞ্জাল আবার কাঁচামাল হয়ে উঠছে৷ এই ফ্ল্যাটে কোনোকিছুর অভাব নেই, বরং বাড়তি অনেক সুবিধা পাওয়া যায়৷''

এখানে জঞ্জাল নির্মাণের দামী উপাদান হয়ে উঠছে৷ বিশেষজ্ঞ হিসেবে এনরিকো মার্কেসি এই প্রক্রিয়াকে ‘আর্বান মাইনিং' হিসেবে বর্ণনা করেন৷ এই ফ্ল্যাটে প্রায় সবকিছু রিসাইক্লিং-এর ফসল৷ ভবিষ্যতেও সেগুলি আবার রিসাইকেল করা সম্ভব৷ ইনোভেশন ম্যানেজার হিসেবে এনরিকো মার্কেসি মনে করিয়ে দেন, ‘‘মনে রাখতে হবে, পৃথিবীর সম্পদ সীমিত৷ উত্তোলনযোগ্য তামা, বালু ইত্যাদি খুব বেশি নেই৷ এটা ঘটনা৷ আমরা এমন এক পরিস্থিতির দিকে এগোচ্ছি, যেখানে খুব বেশি সম্পদ অবশিষ্ট থাকবে না৷ তাই আমাদের এক সমাধানসূত্রের প্রয়োজন রয়েছে৷ একমাত্র রিসাইক্লিং-ভিত্তিক অর্থনীতির মাধ্যমে সেটা সম্ভব৷ যেমন ঘরের কার্পেট প্রক্রিয়াজাত করে একেবারে নতুন কার্পেট তৈরি করা৷ ফলে কেনার বদলে সেটি ভাড়া নিতে হবে, কারণ নির্মাতা সেটি আবার ফেরত চায়৷ এভাবে বেশিরভাগ উপকরণের ক্ষেত্রেও নবায়নের সুযোগ রয়েছে, যাতে সংস্কার অথবা সেগুলি দিয়ে নতুন কিছু তৈরি করা সম্ভব হয়৷''

তবে উপকরণের পুনর্ব্যবহার চালু রাখতে হলে নির্মাণের পদ্ধতির কেন্দ্রীয় ভূমিকা থাকতে হবে৷ এনরিকো মার্কেসি বলেন, ‘‘একটি ভবন এমনভাবে গড়ে তোলার লক্ষ্য স্থির করতে হবে, যাতে ব্যবহৃত উপকরণগুলি আবার আলাদা করা যায়৷ অর্থাৎ পাকাপাকিভাবে জোড়া দেবার বদলে অংশগুলি স্ক্রু দিয়ে লাগানো অথবা বসানো থাকবে৷ আমি একটু বাড়িয়ে বলি, যে মাত্র দুই জন মানুষ যেন একটি কর্ডলেস স্ক্রুড্রাইভার দিয়ে একটা গোটা বাড়ি খুলে নিতে পারে৷''

ব্রোঞ্জের তৈরি একটি ক্ষুদ্র বস্তুটি একসময়ে একটি ব্যাংকের শোভা বাড়িয়েছে৷ নষ্ট হয়ে গেলে অন্য অনেক মূল্যবান উপকরণের মতো এটিও আবর্জনার স্তূপে পড়ে থাকতো৷ সুইজারল্যান্ডের এক অনলাইন বিপণি ভাঙা ভবনের অংশ বিক্রি করে৷ স্থপতি হিসেবে ওলিভিয়ে দে পেরো সেই প্ল্যাটফর্মের প্রতিষ্ঠাতা৷ তিনি বলেন, ‘‘সুইজারল্যান্ডে বছরে তিন থেকে চার হাজার ভবন ভাঙার সরকারি অনুমতি দেওয়া হয়৷ অর্থাৎ প্রত্যেকটি কাজের দিনে দেশে দশটিরও বেশি বাড়িঘর ভাঙা হয়৷ ভাঙা অংশগুলি স্পষ্ট দেখা যায়৷ কখনো মাত্র দশ বছর আগে পুরোপুরি সংস্কার করা ভবনও ভাঙার ঘোষণা করা হয়৷ মাঝে মাছে মনে প্রশ্ন জাগে, এমনটাই কি স্বাভাবিক? এভাবে অগ্রসর হওয়া কতটা সমর্থনযোগ্য?''

এ ক্ষেত্রে বিপুল সম্ভাবনা লুকিয়ে রয়েছে৷ সুইজারল্যান্ডের এক ব্রিউয়ারিতে ইন্টারনেট প্ল্যাটফর্মে কেনা নির্মাণের উপকরণ ব্যবহার করা হয়েছে৷ ফলে স্থপতি হিসেবে বাস্টিয়েন টোরেল খুব খুশি৷ তিনি বলেন, ‘‘জানালার খোঁজ করতে গিয়ে আমি এটা পেয়েছিলাম৷ এগুলি মূল ভবনের ছবি৷ সেখানে কাঠের ফ্রেমসহ এই জানালা কিনে নিয়েছি৷ নামমাত্র দামে ২৫টি এমন জানালা কিনতে পেরেছি৷ না কিনলে সেগুলি ফেলে দেওয়া হতো৷ মাঝের দেওয়ালে সেগুলি ব্যবহার করতে পেরেছি৷''

কিন্তু এখনো হাতে গোনা কিছু নির্মাণের উপকরণ পুনর্ব্যবহার করা হয়৷ স্টোরেজের সমস্যা ছাড়াও নির্মাণ শিল্পের কাছে এই সমাধানসূত্র গ্রহণযোগ্য করে তুলতে হবে৷

মেলি জেন/এসবি

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ