1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

জটিলতা এড়িয়ে দেশের শীর্ষ ইউটিউবার ফারজানার সাফল্যগাঁথা

মর্তূজা রাশেদ ঢাকা
৩ মার্চ ২০২৩

মার্কিন সোশাল মিডিয়া অ্যানালিটিক্স ওয়েবসাইট ‘সোশ্যাল ব্লেড’-এর হিসেবে বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি সাবস্ক্রাইবার থাকা ইউটিউব চ্যানেলগুলোর মধ্যে দ্বিতীয় স্থানে আছে ‘ফারজানা ড্রয়িং অ্যাকাডেমি’৷

‘ফারজানা ড্রয়িং অ্যাকাডেমি’র ফারজানা আক্তার৷
‘ফারজানা ড্রয়িং অ্যাকাডেমি’র ফারজানা আক্তার৷ছবি: privat

চ্যানেলটি পরিচালনা করেন ফারজানা আক্তার৷ ডয়চে ভেলেকে দেয়া সাক্ষাৎকারে ‘ফারজানা ড্রয়িং অ্যাকাডেমি'-র আকাশছোঁয়া সাফল্যের পেছনের গল্প শুনিয়েছেন তিনি৷

ডয়চে ভেলে : শুরুতে ‘ফারজানা ড্রয়িং অ্যাকাডেমি’ সম্পর্কে সংক্ষেপে যদি কিছু বলেন...

ফারজানা আক্তার : আমার নাম ফারজানা আক্তার৷ আমার চ্যানেলের নাম ফারজানা ড্রয়িং একাডেমি৷ আমি মাস্টার্স পর্যন্ত পড়াশোনা করেছি৷ শুরুতে আমার ইচ্ছা ছিল মাস্টার্স শেষ করার পর একটা জব করার, তো সেক্ষেত্রে আমার হাজবেন্ডের পরামর্শেই আমি ফ্রিল্যান্সার থেকেই ইউটিউবার বা কন্টেন্ট ক্রিয়েটর হিসেবে কাজ শুরু করি৷

ড্রয়িং এবং ইউটিউবিং শুরুর পেছনের গল্প?

আঁকাআঁকিটা একদম ছোটবেলা থেকেই৷ আমার আব্বু একজন রিটায়ার্ড আর্মি পার্সন, উনি আর্মিতে জব করতেন৷ উনি যখনই অবসর সময় পেতেন, উনি দুইটা কাজ করতেন৷ এর মধ্যে একটা ছবি আঁকা এবং আরেকটা মেকানিকাল কাজ করতেন৷ এটা ওনার শখের কাজ ছিল৷ উনি ছবি যখন আঁকতেন, তখন আমি ক্লাস ওয়ানে পড়ি৷ আমি খেয়াল করলাম, ঐখান থেকে আমার আঁকাআঁকির শখ ও ভালোবাসা তৈরি হয়৷ তারপর থেকে নিজে নিজেই আঁকার প্র্যাক্টিস করতাম ড্রয়িংটা, নিজে নিজেই করতাম৷ প্রতিদিন কিছু না কিছু করতাম৷ এভাবেই দিন দিন আমার আঁকার ইম্প্রুভমেন্ট হয়৷ ২০১৭ সালের জানুয়ারির ২০ তারিখ থেকে আমি ভিডিও দেওয়া শুরু করি৷ প্রথম এক মাসেই আমি প্রচুর সাড়া পাই, ইউটিউব থেকে যে আমার অডিয়েন্সরা আমাকে খুব রিকোয়েস্ট করতে থাকে, আমি যেন প্রতিদিন ভিডিও পাবলিশ করি৷ ইউটিউব থেকে আয় হবে বা ইউটিউব আমার প্রফেশন হবে শুরুতে এরকমটা ধারণা ছিল না৷

‘ইউটিউব থেকে আয় হবে বা ইউটিউব আমার প্রফেশন হবে শুরুতে এরকম ধারণা ছিল না’

This browser does not support the audio element.

কী ধরনের ছবি আঁকতে ভালো লাগে?

আঁকাআঁকির সবকিছুর মধ্যেই আমি ভালো লাগা ফিল করি৷ তবে দেখা গেছে যে, পেইন্টিংয়ে আমার দক্ষতা একটু কম, তো আমি শুধু স্কেচ নিয়ে কাজ করেছি এতদিন৷ আপাতত চেষ্টা করছি পেইন্টিংয়ের উপরে দক্ষতা তৈরি করার৷ যতটা সম্ভব আমি রেগুলার প্র্যাকটিসের মাধ্যমে নিজেকে ইমপ্রুভ করার চেষ্টা করছি৷

কারা আপনার ভিডিও বেশি দেখেন?

সবাই চায় আমি মূলত স্কেচ নিয়েই কাজ করি৷ আর এটা বাহিরের কান্ট্রিতে বেশি চলে আরকি৷ ভিউজ বেশি আসে ইন্ডিয়া থেকে, ইন্ডিয়া থেকে ৪০% গ্রাহক আছে বর্তমানে৷ সেকেন্ড অপশনে আছে ইউনাইটেড স্টেটস৷ তারপরে আছে বাংলাদেশ, তারপর তুরস্ক, এরপরে আছে পাকিস্তান৷  

একা কনটেন্ট ক্রিয়েট করা কতটা চ্যালেঞ্জিং?

কী ধরনের ভিডিও তৈরি করবো, এটা নিয়ে ধারণা, তারপর ভিডিওর যে শুটিং, এরপর এডিটিং, তারপর পাবলিশ করা৷ পরে আবার কী ধরনের ভিডিও পাবলিশ করবো, এই সব ধরনের কাজ প্রতিদিন আমি একা হাতে হ্যান্ডেল করি৷ আসলে কাউকে যে ভরসা করে দেবো, এই কাজটা তো আমার মতো করে অন্যজন বুঝতে পারবে না৷ তো দেখা যায় অনেক চ্যালেঞ্জ হয়ে যায় একা একা পুরো কাজ হ্যান্ডেল করা৷

পরিবার থেকে কেমন সাপোর্ট পাচ্ছেন?

আল্লাহর রহমতে আমি কোনোরকম সমস্যা ফেস করছি না৷ আর আমার হাজবেন্ড সম্পূর্ণভাবে আমাকে সাপোর্ট দেয়৷ এমনকি আমার শ্বশুরবাড়ির প্রত্যেকটা মানুষ এই বিষয়ে আমাকে খুব সাপোর্ট করে৷ এবং আমি যে এতদূর আসতে পেরেছি তা ভেবে তাারা অনেক গর্ব অনুভব করে এবং আমাকে নিয়ে সবার কাছে খুব প্রশংসা করে৷

মিডিয়া থেকে কী স্বেচ্ছায় আড়ালে থাকছেন?

অনেক টিভি চ্যানেল থেকে আমাকে ইন্টারভিউয়ের জন্য ডেকেছিল, কিন্তু আমি অ্যাভয়েড করেছি ৷ আমি আরো পাবলিসিটি পেলে সরকার বা আরো দূর পর্যন্ত আমার কথা মানুষ জানতো৷ আমি ইচ্ছা করেই এগুলো অনেক অ্যাভয়েড করে গেছি৷ কারণ, এগুলোর পেছনে সময় দিতে গেলে আমার যে মূল ফোকাস, আমার কাজের অনেক ক্ষতি হয়৷ তাছাড়া আমি একজন মেয়ে মানুষ, আমি চাই না আমাকে অনেক মানুষ দেখুক৷ আমি একটু পর্দার মধ্যেও থাকতে পছন্দ করি৷ তবে ইচ্ছে আছে যদি সরকারের পক্ষ থেকে আমাকে ডাকা হয়, আমি অবশ্যই সেখানে যাবো৷

দিনে কতটা সময় এর পিছনে ব্যয় করেন?

ইউটিউবে বর্তমানে শর্ট ভিডিও নিয়েও কাজ করছে মানুষ৷ শর্ট আসার পর থেকে আমাকে আরেকটু ঘন ঘন ভিডিও দিতে হচ্ছে, যেহেতু আমি বড় ভিডিওটাও মেইন্টেইন করছি সাথে শর্ট ভিডিওটাও৷ এমনিতে বলতে গেলে আমি অন্য কোনো কাজে নিজেকে ব্যস্ত রাখি না, সম্পূর্ণ এটার মধ্যেই...৷ এমনিতে ভিডিও শুটিংটাইমটা লাগে আমার দেড় থেকে দুই ঘণ্টা আর এডিটিং টাইম লাগে, যদি শর্ট ভিডিও হয় তাহলে এক থেকে দেড় ঘণ্টার মধ্যে আমি এডিটিংটা কমপ্লিট করে ফেলতে পারি মিউজিকসহ৷

এতকিছু সামলিয়ে পরিবারকে কতটুকু সময় দিতে পারেন?

যেহেতু আমার কাজটা ঘরোয়া, আমরা একসাথেই থাকি, একসাথেই খাওয়া-দাওয়া, একসাথেই সময় কাটানো৷ আমার ছেলের স্কুলের বই গুছিয়ে দেওয়া, তারপর তার পড়াশোনায় কোনো সমস্যা হলে আমি পড়ানোর ব্যাপারটাও দেখি৷ তারপর দেখা গেছে সে যদি কোনো কম্পিটিশন থাকে, যেমন ড্রয়িং অথবা অন্য কোনো প্র্যাকটিকেল থাকে, তখন আমি তাঁকে হেল্প করি৷ আমি ফ্যামিলিকেও সময় দেই, আমার হাজবেন্ডের সাথেও অনেক গল্প করি, একসাথে চা খাই, সবকিছু একসাথে৷ বলতে গেলে আমি শুটিং করা, ভিডিও এডিটিং করা, ফ্যামিলিকে সময় দেওয়া, এগুলো সবকিছুই এর মধ্যে করি৷

আপনার সাফল্যের মূলমন্ত্র কী?

আমার চ্যানেল শুরু করার আট মাসের মধ্যে আমি ১ লক্ষ সাবস্ক্রাইবার গেইন করি৷ আর দশ মিলিয়ন হয়েছে ২০২২ সালের অক্টোবরের ২৮ তারিখে৷ এই যে সহজভাবে উপস্থাপনটা, যেকোনো জিনিস, ড্রয়িং অথবা পেইন্টিং৷ আমি বেশি জটিল কিছু নিয়ে কাজ করি না, আমার মেইন টার্গেট থাকে বিগিনার্সদের প্রতি, যারা নতুন, কাজ করতে চায়, যারা শিখতে চায়, তাদেরকেই আমি টার্গেট করে কাজ করি৷ আমি মূলত এই দিকে ফোকাস করেই কাজ করি, যার কারণে আমার পপুলারিটি সবথেকে বেশি হয়৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ