ইউটিউবে ‘ডয়চে ভেলে খালেদ মুহিউদ্দীন জানতে চায়' টকশো-তে আলোচক হিসেবে ছিলেন আমাদের নতুন সময় পত্রিকার প্রধান সম্পাদক নাঈমুল ইসলাম খান এবং সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম মাওলা রনি৷
বিজ্ঞাপন
জাতীয় পার্টির থেকে কী চায় আওয়ামী লীগ? শোয়ের সঞ্চালক খালেদ মুহিউদ্দীনের এই প্রশ্নের উত্তরে নাঈমুল ইসলাম খান বলেন, ''জাতীয় পার্টির রাজনীতি চিন্তাচেতনায় বিএনপির কাছাকাছি। তবে আওয়ামী লীগের কাছে গেলে জাতীয় পার্টি বি টিম হিসেবে থাকবে। বিএনপির কাছে গেলে তারা হবে সি টিম।''
বাংলাদেশের আসন্ন নির্বাচনে কেউ হারলে সে নিশ্চিহ্ন হবে, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদেরের এই মন্তব্যের কথা উল্লেখ করেন ডয়চে ভেলে বাংলা বিভাগের প্রধান খালেদ মুহিউদ্দীন।
সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম মাওলা রনি বলেন, ''পক্ষসমূহের মধ্যে অবিশ্বাস, ঘৃণা, ক্রোধ রয়েছে। জিএম কাদের নির্মোহ বাস্তবের কথা বলেছেন। বিজয়ী পক্ষ পরাজিতকে সমূলে বিনাশ করবে।''
তার কথায়, ''জাতীয় পার্টিকে বিএনপি নেতৃবৃন্দ ডি টিম হিসেবেও নেবে না। জাতীয় পার্টির বহুমুখী সমস্যা রয়েছে। তারা এক মিনিট কোথাও দাঁড়াতে পারবে না।''
নাঈমুল ইসলাম খান যদিও বলেন, ''শেখ হাসিনা আগামী টার্মে জিতলে মূলত রাজনৈতিক লিগ্যাসি পরিবর্তন করে, সংশোধন করে একটা আকার দিতে চাইবেন।''
তার দাবি, আগামী সংসদ নির্বাচন ইন্টারেস্টিং হতে পারে। নির্বাচনে সকলে অংশ নেবে।
তবে, সাবেক সংসদ সদস্য রনির বক্তব্য, ‘‘রাজনৈতিক সমাধান এই মুহূর্তে অসম্ভব। তাই সেরকম নির্বাচন হবে না। সেটাকে হয়তো ক্ষমতায় যাওয়ার প্রক্রিয়া, হাসিনার ক্ষমতায় আসার কলাকৌশল বলা যেতে পারে। নির্বাচন বলা যাবে না।''
তিনি বলেন, ''আওয়ামী লীগের মূল রাজনৈতিক শক্তি বাঙালির জাতীয়তাবাদ৷ কিন্তু তাদের পক্ষে কথা বলার জন্য রাজনৈতিকভাবে ম্যাচিওর লোক নেই।''
কয়েকবছর আগে বিএনপিতে যোগ দেয়া সাবেক এই সংসদ সদস্যের কথায়, ‘‘বাংলাদেশের রাজনীতিতে বিদেশি রাষ্ট্রশক্তিদের অংশগ্রহণ অস্বীকার করা যায় না। অর্থনৈতিক এবং কৌশলগত পার্টনার যদি আওয়ামী লীগের সঙ্গে থাকে। তাহলে তারা ক্ষমতায় আসবে।''
ইমেজ বাড়াতে সরকারের কলাম লেখক খোঁজার প্রসঙ্গ তোলেন খালেদ মুহিউদ্দীন। এই প্রসঙ্গে রনি বলেন, ‘‘২০১৪ থেকে অগণতান্ত্রিক পরিবেশ রয়েছে। জনগণ আওয়ামী লীগের কাছে ভীতিকর বিষয়।''
তাই কলাম লেখক খোঁজা চিন্তাজগতে দৈন্যতার প্রকাশ বলে মনে করেন তিনি।
নাঈমুল ইসলাম অবশ্য মনে করেন, ''কলাম লেখকতো লিখবে। আপনি পড়বেন অথবা পড়বেন না।''
গত নির্বাচনে ভোটগ্রহণের আগের রাতে পুলিশ কর্মকর্তারা ব্যালট বাক্স ভরা সংক্রান্ত জাপানি রাষ্ট্রদূতের মন্তব্যের প্রসঙ্গ ওঠে টকশোয়ে। নাঈমুল ইসলাম খান এই প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিক্রিয়া বোকামো। মন্ত্রী এটি ব্যাখ্যা করতে পারবেন।''
গোলাম মওলা রনি বলেন, ‘‘বাংলাদেশের উন্নয়নের অংশীদার হিসাবে জাপান হতাশ। হাজারো বিলিয়ন বিনিয়োগের পর তারা দেখছে পরিস্থিতি খারাপ হচ্ছে। পিঠ বাঁচাতে সত্যি কথা বলেছে তারা।''
আরকেসি/এআই
উন্নত দেশগুলোতে ভোটের হার কত?
ঢাকা সিটি নির্বাচনের সময় উত্তর ঢাকার মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেছিলেন, বাংলাদেশ উন্নত দেশে পরিণত হতে যাচ্ছে৷ তার প্রমাণ ভোটারের উপস্থিতি৷ ছবিঘরে শিল্পোন্নত সাত দেশের সবশেষ সাধারণ নির্বাচনে ভোটারদের উপস্থিতির তথ্য থাকছে৷
ছবি: Reuters/K. Pfaffenbach
চট্টগ্রাম সিটি নির্বাচন ভোটের হার
নির্বাচন কমিশন যে হিসাব দিয়েছে, তাতে চট্টগ্রামের সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ভোটের হার ছিল মাত্র সাড়ে ২২ শতাংশ৷ ঘটেছে সহিংসতার ঘটনাও৷ ভোটের হার নিয়ে হতাশা প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার বলেন, ‘‘এত অল্প সংখ্যক ভোট গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার নিয়ামক হতে পারে না। এই পরিস্থিতি নির্বাচনের প্রতি জনগণের আস্থাহীনতার পরিচায়ক, যা গণতন্ত্রের জন্য এক অশনিসংকেত৷’’
ছবি: bdnews24.com
ঢাকা সিটি নির্বাচনে ভোটের হার
এর আগে সবশেষ ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনে ২৯ শতাংশ ভোটার ভোট দিয়েছেন৷ আর উত্তরে ভোটার উপস্থিতি ছিল মাত্র ২৫ দশমিক ৩ শতাংশ৷ আর ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত একাদশ সংসদ নির্বাচনে ভোটের হার ছিল ৪০ শতাংশ, যদিও তা নিয়ে রয়েছে অনেক অভিযোগ৷
ছবি: Sazzad Hossain
আতিকের মন্তব্য
ভোটার উপস্থিতি কম প্রসঙ্গে ঢাকা উত্তর সিটি নির্বাচনে বিজয়ী আতিকুল ইসলাম তখন বলেছিলেন, ‘‘... আরও ভোটার আসলে অবশ্যই আরও ভালো লাগতো৷ কিন্তু আমি মনে করি যে, একটি দেশ কিন্তু উন্নতির দিকে যাচ্ছে৷ উন্নত দেশ হিসেবে বাংলাদেশ কিন্তু পরিণত হতে যাচ্ছে৷ তার প্রমাণ কিন্তু ভোটারের উপস্থিতি৷ কারণ, বিদেশে কিন্তু দেখা যাচ্ছে ভোটারের উপস্থিতি কিন্তু অনেক কম থাকে৷’’
ছবি: Bangla Tribune/Nasirul Islam
ক্যানাডা
গত বছরের অক্টোবরে অনুষ্ঠিত সাধারণ নির্বাচনে নিবন্ধিত ভোটারের মধ্যে ৬৫ দশমিক ৯৫ শতাংশ ভোটার ভোট দিয়েছেন৷
ছবি: picture-alliance/AP/The Canadian Press/J. Franson
জাপান
২০১৭ সালে জাপানে সবশেষ সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়৷ সে সময় ৫৩ দশমিক ৬৮ শতাংশ ভোটার ভোট দিয়েছিলেন৷ শিল্পোন্নত সাত দেশে অনুষ্ঠিত সবশেষ সাধারণ নির্বাচনগুলোর মধ্যে জাপানে ভোটার উপস্থিতি সবচেয়ে কম ছিল৷
ছবি: Reuters/Issei Kato
ফ্রান্স
২০১৭ সালে ৭৪ দশমিক ৫৬ শতাংশ ভোটার ভোট দিয়েছেন৷
ছবি: picture alliance/AP Photo/B.Edme
জার্মানি
২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে ৭৬ দশমিক ১৫ শতাংশ ভোটার তাঁদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন৷
ছবি: Reuters/F. Bensch
ইটালি
২০১৮ সালের মার্চে অনুষ্ঠিত সাধারণ নির্বাচনে ৭৩ দশমিক ০৫ শতাংশ ভোটার ভোট দেন৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/A. Medichini
যুক্তরাজ্য
২০১৯ সালের ১২ ডিসেম্বর যুক্তরাজ্যে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়৷ এতে ভোটারের উপস্থিতি ছিল ৬৭ দশমিক ৩০ শতাংশ৷
ছবি: picture-alliance/empics/J. Brady
যুক্তরাষ্ট্র
২০১৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে নিবন্ধিত ভোটারদের ৮৬ দশমিক ৮০ শতাংশ ভোটকেন্দ্রে হাজির হয়েছিলেন৷ তবে ভোট দেয়ার বয়সে পৌঁছানো মার্কিনিদের হিসেবে ভোট পড়েছে ৫৫ দশমিক ৭০ শতাংশ৷ পিউ রিসার্চ সেন্টারের প্রতিবেদনটি পড়তে উপরে (+) চিহ্নে ক্লিক করুন৷