উত্তর প্রদেশের মিরাটে এক ধর্মসভায় বিজেপি সাংসদ সাক্ষী মহারাজ জনসংখ্যা বৃদ্ধি প্রসঙ্গে পরোক্ষভাবে মুসলিম সম্প্রদায়কে কটাক্ষ করেন৷ তাঁর এই উসকানিমূলক মন্তব্যের কারণ জানতে চেয়ে ‘নোটিস' পাঠিয়েছে নির্বাচন কমিশন৷
বিজ্ঞাপন
গৈরিক পার্টি তথা মৌলবাদী সংঘ পরিবারের অসহিষ্ণুতার আরেক চেহারা৷ গত সপ্তাহে উত্তর প্রদেশের মিরাটে বিজেপি সাংসদ সাক্ষী মহারাজ অঘোরনাথ মন্দিরে একটি সন্ত সভায় ভারতের জনসংখ্যা বৃদ্ধি প্রসঙ্গে একটি সাম্প্রদায়িক মন্তব্য করেন৷ তাঁর এই মন্তব্যকে ঘিরে বিতর্কের ঝড় ওঠে৷ ঐ ধরনের মন্তব্য সুপ্রিম কোর্টের সাম্প্রতিক রায়ের খেলাপ এবং সাম্প্রদায়িক সংঘাতে উসকানিমূলক৷ উত্তর প্রদেশসহ ভারতের পাঁচটি রাজ্যে বিধানসভা ভোটের নির্ঘণ্ট ঘোষণার পর, এই ধরনের মন্তব্য নির্বাচনি আচরণবিধি লঙ্ঘন করারই নামান্তর৷ এতে করে মধ্যপ্রদেশের উন্নাও-এর সাংসদ সাক্ষী মহারাজকে তিরস্কার করে নির্বাচন কমিশন বলে, ভবিষ্যতে কোনোরকম সাম্প্রদায়িক, জাতপাত নিয়ে মন্তব্য করলে তাঁর বিরুদ্ধে কড়া আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে৷ সেটা নির্বাচন প্রচার হোক বা অন্য সভা হোক৷ আদর্শ নির্বাচনি বিধি বলবত রয়েছে ৪ঠা জানুয়রি থেকে৷ এর আগে, নোটিস পাঠিয়ে দু'দিনের মধ্যে সাক্ষী মহারাজকে জবাবদিহি করতে বলে নির্বাচন কমিশন৷ উত্তর প্রদেশে প্রথম দফার ভোট আগামী ১১ই ফেব্রুয়ারি৷ সুপ্রিম কোর্ট তার রায়ে ধর্ম, জাতপাত, ভাষা বা সম্প্রদায়ের নামে ভোট চাইতে পারবে না, চাইলে প্রার্থীর নির্বাচন হবে অবৈধ৷
শাহরুখকে ‘পাকিস্তানের দালাল’ বলল হিন্দু মৌলবাদীরা
হিন্দু মৌলবাদীরা ভারতে যে অসহিষ্ণুতা ছড়াচ্ছে – এ নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন হিন্দি ছবির সুপারস্টার শাহরুখ খান৷ তাতেই খেপে গেছেন বিজেপিসহ হিন্দু মৌলবাদী অন্যান্য দলের কতিপয় নেতা৷ শাহরুখকে বলছেন ‘পাকিস্তানের দালাল’!
ছবি: Johannes Eisele/AFP/Getty Images
কিং খানের ‘হাফ সেঞ্চুরি’
গত ২ নভেম্বর ছিল ‘বলিউড কিং’ শাহরুখ খানের ৫০তম জন্মদিন৷ জীবনের অর্ধ শতাব্দী পূরণ বলে কথা! বিশ্বের কোটি কোটি ভক্ত এ উপলক্ষ্যে অভিনন্দন এবং শুভকামনায় সিক্ত করেন শাহরুখকে৷
ছবি: Getty Images/AFP/Stringer
শাহরুখের সত্যি বয়ান
জন্মদিনে একটি টেলিভিশন চ্যানেলকে দেয়া সাক্ষাৎকারে দেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন শাহরুখ৷ সাম্প্রতিক সময়ে গরুর মাংস নিয়ে হিন্দু মৌলবাদীরা যে দেশব্যাপী অসহিষ্ণুতা ছড়িয়েছে সেই বিষয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে শাহরুখ বলেছিলেন, ‘‘ধর্মীয় সহিষ্ণুতার চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ কিছু আর হয়না৷ ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি দেশকে অন্ধকার যুগের দিকে ঠেলে দিচ্ছে৷’’
ছবি: picture alliance/ZUMA Press/F. Shamim
বিজেপিতে তীব্র প্রতিক্রিয়া
সাক্ষাৎকারটি প্রচারের পরই বিজেপির সাধারণ সম্পাদক কৈলাস বিজয়ভার্গব টুইটারে লিখে দেন,‘শাহরুখের হৃদয় পড়ে আছে পাকিস্তানে’৷ সেই টুইট পরে প্রত্যাহার করে নিলেও বুধবার তিনি বলেছেন, ভারত অসহিষ্ণু হলে শাহরুখের মতো এক মুসলমান অমিতাভ বচ্চনের পরই দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় তারকা হতে পারতেন না৷’’ বিজেপির কয়েকজন নেতা শাহরুখকে ‘মুখ সামলে কথা বলা’র অনুরোধ জানিয়ে বলেছেন, মুখ না সামলালে শাহরুখের ছবি বয়কট করা হবে৷
ছবি: Johannes Eisele/AFP/Getty Images
জঙ্গি নেতার সঙ্গে তুলনা
শাহরুখের সমালোচনা করতে গিয়ে বিজেপির আরেক সাংসদ যোগী আদিত্যনাথ বলেন, ‘‘শাহরুখ এখন হাফিজ সাঈদের ভাষায় কথা বলছেন৷’’ বলিউড ইতিহাসের অন্যতম সেরা সুপারস্টারের সঙ্গে পাকিস্তানের জঙ্গি সংগঠন লশকর-ই তৈয়বার শীর্ষ নেতা হাফিজ সাঈদের তুলনা ভারতের সাধারণ মানুষ এবং শাহরুখ ভক্তদের আহত করেছে৷ সংবাদ এবং সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমের তেমন প্রতিক্রিয়াই জানাচ্ছেন সবাই৷
ছবি: AP
শাহরুখের ধর্মনিরপেক্ষতা
ধর্মীয় সহিষ্ণুতার ক্ষেত্রে ব্যক্তিগত জীবনে শাহরুখ খুবই উদার৷ তাঁর স্ত্রী গৌরির জন্ম হিন্দু পরিবারে৷ প্রেম করে বিয়ে করার পরেও শাহরুখ কখনো গৌরির ধর্ম বিশ্বাস বা ধর্ম চর্চায় হস্তক্ষেপ করেননি৷ ভক্তদের কাছে ‘এসআরকে’ নামেও পরিচিত মুম্বই মহাতারকা বিভিন্ন সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, তাঁর বাড়িতে নামাজ পড়া এবং পূজা করার ব্যবস্থা রয়েছে৷ ছবিতে স্ত্রী গৌরির সঙ্গে শাহরুখ৷
ছবি: Strdel/AFP/Getty Images
5 ছবি1 | 5
এর ভিত্তিতে কংগ্রেস নেতা নালিশ করেছেন এই বলে যে, ভোটের আগে বিজেপি সাংসদের মন্তব্য, ধর্ম ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করবে৷ নির্বাচন কমিশন জেলা প্রশাসনের কাছে ঐ ঘটনার রিপোর্ট তলব করেছে৷ এতে তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে অন্য সব বিরোধী রাজনৈতিক দল৷ রাজনৈতিক দলগুলির অভিযোগের ভিত্তিতে স্থানীয় পুলিশ সাক্ষী মহারাজের বিরুদ্ধে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেবার অভিযোগে ভারতীয় দণ্ডবিধির ২৯৮ ধারা অনুযায়ী এফআইআর দায়ের করেছে৷ বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের তরফে অবশ্য মন্ত্রী ও নেতা মুখতার আব্বাস নাখভি জানান, এটা বিজেপির দলীয় অবস্থান নয়৷ এটা সংশ্লিষ্ট সাংসদের ব্যক্তিগত মত৷ সংযুক্ত জনতা দল এর নিন্দা করে বলে, ধর্ম বা সম্প্রদায় নিয়ে রাজনীতি করাটা সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশিকার খেলাপ৷ আদালতের রায়ের পর এই প্রথম এই ধরনের ঘটনা ঘটেছে৷ আঙুল উঠেছে সুশীল সমাজ থেকেও৷ তাদের প্রশ্ন, সুপ্রিম কোর্টে স্পষ্ট রায়দানের পর একজন সাংসদের তা অগ্রাহ্য করার সাহস হয় কী করে?
আসলে কী বলেছিলেন বিজেপি সাংসদ সাক্ষী মহারাজ যা নিয়ে এত হৈ চৈ? বলেছিলেন, ভারতের সমস্যা দিনকে দিন বেড়েই চলেছে৷ এর অন্যতম কারণ দেশের জনসংখ্যা বৃদ্ধি৷ এতে লাগাম টানতে মুসলিম সম্প্রদায়ের নাম না করে পরোক্ষে কটাক্ষ করে তিনি বলেন, ‘‘যাঁরা চারটে করে বিয়ে করে এবং গোটা ৪০ বাচ্চার জন্ম দেয়, তিন তালাক প্রথার পক্ষে ওকালতি করে, মহিলাদের মান মর্যাদার পরোয়া না করে তাঁদের সন্তান জন্মদানের মেশিনে পরিণত করে, তাঁরাই এ জন্য দায়ী৷ এটা চলতে দেওয়া যায় না৷ সরকারের উচিত এর বিহিত করা৷' তিনি বলেন, এর জন্য কড়া আইন প্রণয়ন করা জরুরি৷ তাই রাজনীতির ঊর্ধে উঠে সব দলকে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে৷ ভারতের ভৌগলিক আয়তন বাড়েনি অথচ জনসংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৩০ কোটির বেশি৷ এ জন্য হিন্দু সম্প্রদায় দায়ী নয়, দায়ী ঐ সম্প্রদায়৷ আগেও অন্য এক প্রসঙ্গে উনি বলেছিলেন, কোনো মুসলিম ছেলে হিন্দু মেয়েকে বিয়ে করলে হিন্দু ছেলেও মুসলিম মেয়েকে নিকা করবে৷
বাবরি মসজিদের প্রতিষ্ঠা থেকে ভাঙচুরের ইতিহাস
হিন্দু দেবতা রামচন্দ্রের জন্মস্থান, রাম মন্দির, নাকি মোগল সম্রাট বাবরের আমলে নির্মিত একটি মসজিদ? বিষয়টি নিয়ে ১৮৫৩ সাল থেকে হিন্দু-মুসলমান বিরোধ চলেছে, যা চরমে ওঠে ১৯৯২ সালের ৬ই ডিসেম্বরে৷
ছবি: dpa - Bildarchiv
১৫২৮ সালে নির্মাণ
রামায়ণ-খ্যাত অযোধ্যা শহর ভারতের উত্তর প্রদেশ রাজ্যের ফৈজাবাদ জেলায় অবস্থিত৷ তারই কাছে রামকোট পর্বত৷ ১৫২৮ সালে সেখানে সম্রাট বাবরের আদেশে একটি মসজিদ নির্মাণ করা হয়, যে কারণে জনমুখে মসজিদটির নামও হয়ে যায় বাবরি মসজিদ৷ আবার এ-ও শোনা যায়, গত শতাব্দীর চল্লিশের দশকের আগে এই মসজিদ ‘মসজিদ-ই-জন্মস্থান' বলেও পরিচিত ছিল৷
ছবি: DW/S. Waheed
সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি
বাবরি মসজিদ নিয়ে সংঘাত ঘটেছে বার বার৷ অথচ ফৈজাবাদ জেলার ১৯০৫ সালের গ্যাজেটিয়ার অনুযায়ী, ১৮৫২ সাল পর্যন্ত হিন্দু এবং মুসলমান, দুই সম্প্রদায়ই সংশ্লিষ্ট ভবনটিতে প্রার্থনা ও পূজা করেছে৷
ছবি: Getty Images/AFP/D. E. Curran
সংঘাতের সূত্রপাত
প্রথমবারের মতো হিন্দু মুসলমানের মধ্যে সংঘাতের সূত্রপাত৷১৮৫৯ সালে ব্রিটিশ সরকার দেয়াল দিয়ে হিন্দু আর মুসলমানদের প্রার্থনার স্থান আলাদা করে দেয়৷
ছবি: Getty Images/AFP/D .E. Curran
হিন্দুদের দাবি
আওয়াধ অঞ্চলের বাবর-নিযুক্ত প্রশাসক ছিলেন মির বকশি৷ তিনি একটি প্রাচীনতর রাম মন্দির বিনষ্ট করে তার জায়গায় মসজিদটি নির্মাণ করেন বলে হিন্দুদের দাবি৷
ছবি: AP
বেআইনিভাবে মূর্তি স্থাপন
১৯৪৯ সালের ২৩শে ডিসেম্বর – বেআইনিভাবে বাবরি মসজিদের অভ্যন্তরে রাম-সীতার মূর্তি স্থাপন করা হয়৷
ছবি: DW/S. Waheed
নেহরুর ঐতিহাসিক পদক্ষেপ
রাম-সীতার মূর্তি স্থাপনের পর ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী গোবিন্দ বল্লভ পন্থকে চিঠি লিখে হিন্দু দেব-দেবীদের মূর্তি অপসারণ করার নির্দেশ দেন, তিনি বলেন ‘‘ওখানে একটি বিপজ্জনক দৃষ্টান্ত সৃষ্টি করা হচ্ছে’’৷
ছবি: Getty Images
মসজিদের তালা খোলার আন্দোলন
১৯৮৪ সালে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ মসজিদের তালা খুলে দেওয়ার দাবিতে ব্যাপক আন্দোলন শুরু করে৷ ১৯৮৫ সালে রাজীব গান্ধীর সরকার ঠিক সেই নির্দেশই দেন৷
ছবি: AFP/Getty Images
দুই সম্প্রদায় মুখোমুখি অবস্থানে
বিশ্ব হিন্দু পরিষদ রাম মন্দির নির্মাণের জন্য একটি কমিটি গঠন করে৷ ১৯৮৬ সালে মসজিদের তালা খুলে সেখানে পূজা করার অনুমতি প্রার্থনা করে হিন্দু পরিষদ৷ অন্যদিকে, মুসলমানরা বাবরি মসজিদ অ্যাকশন কমিটি গঠন করেন৷
ছবি: AP
‘রাম রথযাত্রা'’
১৯৮৯ সালের নভেম্বরের সাধারণ নির্বাচনের আগে ভিএইচপি বিতর্কিত স্থলটিতে (মন্দিরের) ‘শিলান্যাস'-এর অনুমতি পায়৷ ভারতীয় জনতা পার্টির প্রবীণ নেতা লাল কৃষ্ণ আডভানি ভারতের দক্ষিণতম প্রান্ত থেকে দশ হাজার কিলোমিটার দূরত্বের ‘রাম রথযাত্রা'’ শুরু করেন৷
ছবি: AP
১৯৯২
১৯৯২ সালের ৬ই ডিসেম্বর এল কে আডভানি, মুরলি মনোহর যোশি, বিনয় কাটিয়াসহ অন্যান্য হিন্দুবাদী নেতারা মসজিদ প্রাঙ্গনে পৌঁছান৷ ভারতীয় জনতা পার্টি বিজেপি, শিব সেনা আর বিজেপি নেতাদের আহ্বানে প্রায় দেড় লাখ মানুষ বাবারি মসজিদে হামলা চালায়৷ ছড়িয়ে পড়ে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা৷
ছবি: AFP/Getty Images
সমঝোতার উদ্যোগ
২০০২ সালে ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারী বাজপেয়ী দু’পক্ষের সমঝোতার জন্য বিশেষ সেল গঠন করেন৷ বলিউডের সাবেক অভিনেতা শত্রুঘ্ন সিনহাকে হিন্দু ও মুসলমানদের নেতাদের সঙ্গে আলাপ আলোচনা করার দায়িত্ব দেয়া হয়৷
ছবি: AP
শিলালিপি কী বলে
পুরাতাতত্বিক বিভাগ জানায়, মসজিদের ধ্বংসাবশেষে যে সব শিলালিপি আবিষ্কৃত হয়, তা থেকে ধারণা করা হয়, মসজিদের নীচে একটি হিন্দু মন্দির ছিল৷ আবার ‘জৈন সমতা বাহিনী'-র মতে ধ্বংসপ্রাপ্ত বাবরি মসজিদের নীচে যে মন্দিরটির ধ্বংসাবশেষ আবিষ্কৃত হয়েছে, সেটি ষষ্ঠ শতাব্দীর একটি জৈন মন্দির৷
ছবি: CC-BY-SA-Shaid Khan
বিজেপি দোষী
বিশেষ কমিশন ১৭ বছরের তদন্তের পর ২০০৯ সালে বাবরি মসজিদ ধ্বংসের ঘটনায় প্রতিবেদন জমা দেয়৷ প্রতিবেদনে ভারতীয় জনতা পার্টি বিজেপিকে দোষী দাবি করা হয়৷
ছবি: AP
এলাহাবাদ হাইকোর্টের রায়
২০১০ সালে এলাহাবাদ হাইকোর্ট তার রায়ে জানান, যে স্থান নিয়ে বিবাদ তা হিন্দু ও মুসলমানদের মধ্যে ভাগ করে দেয়া উচিত৷ এক তৃতীয়াংশ হিন্দু, এক তৃতীয়াংশ মুসলমান এবং বাকি অংশ নির্মোহী আখড়ায় দেওয়ার রায় দেন৷ রায়ে আরো বলা হয়, মূল যে অংশ নিয়ে বিবাদ তা হিন্দুদের দেয়া হোক৷
ছবি: picture-alliance/dpa
হিন্দু ও মুসলমানদের আবেদন
হিন্দু ও মুসলমানদের আবেদনের প্রেক্ষিতে ২০১১ সালে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট হাইকোর্টের সেই রায় বাতিল করে৷ দুই বিচারপতির বেঞ্চ বলেন, বাদী বিবাদী কোনো পক্ষই জমিটি ভাগ করতে চান না৷
ছবি: AP
ইতিহাসের কলঙ্কিত অধ্যায়
ভারতে হিন্দু-মুসলিম সম্পর্কের কণ্টকিত ইতিহাসে বাবরি মসজিদে হামলা একটি ‘কলঙ্কিত অধ্যায়’৷ গুটি কয়েক হিন্দু সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী দিনটিকে সূর্য দিবস বলে আখ্যায়িত করলেও বেশিরভাগ ভারতীয় দিনটিকে ‘কালো দিন’ বলে উল্লেখ করেন৷ অনেকেই বলেন, এই ঘটনায় দেশের অসাম্প্রদায়িক ভাবমূর্তি একেবারে ভূলুন্ঠিত হয়েছিল৷
ছবি: AP
16 ছবি1 | 16
নির্বাচন কমিশনের ‘শো কজ নোটিস'-এর জবাব দিতে বিজেপি সাংসদ সাক্ষী মহারাজ নিজের সাফাই দিয়ে বলেন, প্রথমত তিনি কোনো রাজনৈতিক বা নির্বাচনি সভায় ভাষণ দেননি৷ দিয়েছেন অঘোরনাথ মন্দিরে সাধু সন্তের সভায়৷ দ্বিতীয়ত কোনো সম্প্রদায়ের নাম তিনি উল্লেখ করেননি৷ সাক্ষী মহারাজ নামে পরিচিত শচিদানন্দ হরি হামেশাই বিতর্কিত বিবৃতি দিয়ে থাকেন৷ তা সত্ত্বেও তিনি পাঁচবার বিজেপি প্রার্থী হিসেবে সাংসদ নির্বাচিত হন৷
উল্লেখ্য, বিজেপি ক্ষমতায় আসার পর বজরং দল, শ্রীরাম সেনা, বিশ্ব হিন্দু পরিষদের মতো উগ্র দক্ষিণপন্থি সংগঠনগুলির দাপট মাত্রা ছাড়িয়ে যায়৷ উত্তর প্রদেশে গোমাংস রাখা নিয়ে মহম্মদ আখলাকের গণপিটুনি, অপমানে জর্জরিত হয়ে হায়দ্রাবাদের কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের দলিত ছাত্র রোহিত ভেলমুলার আত্মঘাতী হওয়া, খ্রিষ্টান চার্চ এবং অন্য প্রতিষ্ঠানে ভাঙচুর করা, জোর করে খ্রিষ্টানদের ধর্মান্তরিত করা, নানদের যৌন হেনস্থা করার মতো নানা অভিযোগ উঠেছে গৈরিক দলের বিরুদ্ধে৷ এর নামই কি লাভ জেহাদ?
বিষয়টি নিয়ে আপনি কি কিছু বলতে চান? তাহলে লিখুন নীচের ঘরে৷
ভারতে রমজান
ভারতে বহু ধর্মের মানুষ আছেন৷ মুসলমান অধ্যুষিত পুরনো দিল্লিতে রমজান ও ঈদ একটি আন্তঃ-ধর্মীয় উৎসব হয়ে ওঠে৷
ছবি: Reuters/P.Rossignol
ইফতারের আগে জুতো খুলতে ভুলবেন না
জামা মসজিদের পিছনের গলিতে থাকে পাঁচ বছর বয়সের ইসমাইল৷ সে-ও আসে তার বাবার সঙ্গে ইফতার করতে৷
ছবি: DW/C. Gill
মাগরিবের নামাজ
পুরনো দিল্লিতে সূর্যাস্ত সন্ধ্যা সাতটার কিছু পরে৷ মাগরিবের নামাজ পড়েন সকলে৷ তারপর খাওয়া৷ রোজা চলে একমাস৷
ছবি: DW/C. Gill
হিন্দুরাও আছেন
মুকেশ কুমার নিজে হিন্দু, কিন্তু প্রতিবছর তিনি রমজানের সময় হিন্দু-মুসলমানদের এক যৌথ ইফতারের আয়োজন করেন৷ ‘‘ভয়ভীতি দূর করার ওটাই শ্রেষ্ঠ পথ’’, বলেন ৬৩ বছর বয়সি মুকেশ৷
ছবি: DW/C. Gill
জামা মসজিদ সব কিছুর কেন্দ্রে
ভারতের বৃহত্তম মসজিদটির স্রষ্টা আবার তাজ মহলের স্রষ্টাও বটে, মোগল সম্রাট শাহ জাহান৷ সূর্যাস্তের পর বহু পরিবার মসজিদের চত্বরেই ইফতার করেন৷
ছবি: DW/C. Gill
ঈদের সাজ
রোজার মাসের শেষে আসে ঈদ-উল-ফিতর৷ ঈদের আগে সবাই পায় নতুন জামাকাপড়৷ কাজেই সন্ধ্যায় পুরনো দিল্লির কাপড়ের দোকানগুলোতে থাকে ক্রেতাদের ভিড়৷
ছবি: DW/C. Gill
বিক্রিবাটা
রমজানের মাসে বহু মুসলমান ব্যবসায়ীর বিক্রিবাটা খুব ভালো হয়৷ তবে বৃষ্টি নামলে খদ্দেরদের সংখ্যা কমে৷
ছবি: DW/C. Gill
ইফতার
স্কুলের ছাত্রী ১৫ বছরের আনুশা রোজার মাসে প্রতিদিন কোরান শরিফ পড়ে; সেই সঙ্গে দিনে পাঁচবার নামাজ৷ তবে সবচেয়ে মজা স্বভাবতই ইফতারের ভুরিভোজ৷