জরিপ: উগ্র-ডানপন্থি দল এএফডিকে নিষিদ্ধে সায় অর্ধেক জার্মানের
৪ মে ২০২৫
আইএনএস নামের একটি সংস্থার জরিপে উগ্র-ডানপন্থি রাজনৈতিক দল এএফডিকে নিষিদ্ধের পক্ষে অবস্থান জানিয়েছেন প্রায় অর্ধেক জার্মান৷ সম্প্রতি দলটিকে ‘ডানপন্থি চরমপন্থি' হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছে জার্মানির অভ্যন্তরীণ গোয়েন্দা সংস্থা৷
৩৫ শতাংশ উত্তরদাতা জানিয়েছেন এএফডিকে নিষিদ্ধ করার পদক্ষেপ নেয়া হলে তা গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করবেছবি: picture alliance / Pressefoto Ulmer
বিজ্ঞাপন
জরিপকারী সংস্থা আইএনএস-এর প্রতিনিধিত্বমূলক এক জরিপে ৬১ শতাংশ জার্মান এএফডিকে‘ডানপন্থি চরমপন্থি' হিসেবে তালিকাভুক্ত করার সিদ্ধান্তকে সমর্থন জানিয়েছেন৷ ৪৮ শতাংশ ক্রমশ জনপ্রিয় হয়ে ওঠা রাজনৈতিক দলটিকে নিষিদ্ধের পক্ষে মত দিয়েছেন৷ ৩৭ শতাংশ নিষিদ্ধের বিপক্ষে আর ১৫ শতাংশ এই বিষয়ে জানেন না বলে উল্লেখ করেছেন৷
জার্মানিতে উগ্র ডানপন্থার বিরুদ্ধে বাংলাদেশি তরুণের লড়াই
05:10
This browser does not support the video element.
এএফডিকে চরমপন্থি হিসেবে ঘোষণা দেয়ার পর দলটিকে নিষিদ্ধ করা নিয়েও বিতর্ক শুরু হয়েছে জার্মানির রাজনীতিতে৷ আইএনএস-এর জরিপে ৩৫ শতাংশ উত্তরদাতা জানিয়েছেন এএফডিকে নিষিদ্ধ করার পদক্ষেপ নেয়া হলে তা গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করবে৷ ৩৯ শতাংশ বলেছেন এতে গণতন্ত্রের ক্ষতি হবে৷ ১৬ শতাংশ মনে করেন এর কোনো প্রভাবই পড়বে না৷ ১০ শতাংশ জানেন না বলে মত দিয়েছেন৷
তবে জার্মানির মূল দলগুলোর রাজনীতিবিদদের অনেকেই এএফডিকে নিষিদ্ধের বিপক্ষে৷ এমনকি দলটিকে চরমপন্থি হিসেবে ঘোষণা দেয়াকেও সমর্থন করছেন না কেউ কেউ৷ নিজের নামে নতুন দল প্রতিষ্ঠাকারী আলোচিত রাজনীতিবিদ সাহরা ভাগেঙ্কনেশট শনিবার এই সিদ্ধান্তের বিপক্ষে নিজের অবস্থান ব্যক্ত করেছেন৷
জার্মানির গোয়েন্দা সংস্থার সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেছে ট্রাম্প প্রশাসনও৷ বলেছেন জার্মানি ‘বার্লিন দেয়াল পুনঃনির্মাণ' শুরু করেছে৷ এফডিকে চরমপন্থি সংগঠন হিসেবে ঘোষণাকে ‘ছদ্মবেশী স্বৈরাচার' বলে অভিহিত করেছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও৷ প্রতিক্রিয়ায় জার্মানির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, ‘‘আমাদের সংবিধান রক্ষার জন্য একটি পুঙ্খানুপুঙ্খ এবং স্বাধীন তদন্তের ফলাফল হলো এই সিদ্ধান্ত৷'' তবে এর বিপক্ষে আবেদন করা যাবে বলেও জানিয়েছে মন্ত্রণালয়৷
এফএস/এআই (ডিপিএ, এপি, এএফপি, রয়টার্স)
জার্মানির নতুন সরকারে যারা থাকছেন
জার্মানির নতুন মন্ত্রিসভায় সিডিইউ/সিএসইউ দল থেকে কারা থাকছেন সে বিষয়ে সোমবার জানিয়েছেন দলটির প্রধান ফ্রিডরিশ ম্যার্ৎস৷ জোটসঙ্গী এসপিডি-র প্রতিনিধিদের নাম এখনো ঘোষণা করা হয়নি৷
ছবি: Odd Andersen/AFP/Getty Images
চ্যান্সেলর: ফ্রিডরিশ ম্যার্ৎস
৬৯ বছর বয়সি এই আইনজীবী জার্মানির নতুন চ্যান্সেলর হতে যাচ্ছেন৷ জাতীয় অর্থনীতির দোলাচল, ডানপন্থিদের উত্থান, আন্তর্জাতিক রাজনীতির নয়া সমীকরণ ইত্যাদি মিলিয়ে হয়তো কঠিন এক সময় পার করতে হতে পারে নতুন চ্যান্সেলরকে৷
ছবি: Uwe Koch/HMB-Media/IMAGO
চ্যান্সেলরের দপ্তর: টর্স্টেন ফ্রাই
সিডিইউর রাজনীতিবিদ ও আইনজীবী টর্স্টেন ফ্রাইকে ফ্রিডরিশ ম্যার্ৎসের সবচেয়ে কাছের ও বিশ্বস্ত সহযোগী হিসেবে বিবেচনা করা হয়৷ ২০১৩ সাল থেকে তিনি সাংসদ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন৷ দপ্তরের প্রধান হিসেবে তার কাজ হবে, সমস্যা এবং জটিলতাগুলো চিহ্নিত করে চ্যান্সেলর হিসেবে ম্যার্ৎসের পথ সুগম করা৷
ছবি: Bernd Elmenthaler/IMAGO
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়: ইয়োহান ভাডেফুল
২০০৯ সাল থেকে সাংসদ হিসেবে দায়িত্ব পালন করা সিডিইউর ইয়োহান ভাডেফুল পররাষ্ট্রনীতি বিষয় দক্ষ বলে জানা যায়৷ ৬২ বছরের এই সাবেক সেনাসদস্যের আন্তর্জাতিক পর্যায়েও ভাল যোগাযোগ রয়েছে৷ বাস্তবধর্মী কূটনীতিক হিসেবে খ্যাত ইয়োহান ভাডেফুলের সাথে দৃষ্টিভঙ্গির দিক থেকে ম্যার্ৎসের অনেক মিল রয়েছে৷
ছবি: Political-Moments/IMAGO
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়: আলেক্সান্ডার ডোব্রিন্ট
ডোব্রিন্টের মন্ত্রণায়ল চালানোর পূর্ব অভিজ্ঞতা রয়েছে৷ সাবেক চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেলের আমলে পরিবহণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করেছিলেন তিনি৷ এবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেতে যাচ্ছেন এই রাজনীতিবিদ৷ বলা হচ্ছে, দায়িত্ব পেয়ে অভিবাসন বিষয়ে কঠোর হতে পারেন তিনি৷ তাছাড়া জার্মানিতে দ্বৈত নাগরিকত্বের বিধান এবং সমলিঙ্গের বিয়েরও বিরোধী তিনি৷
ছবি: Bernd Elmenthaler/IMAGO
অর্থ মন্ত্রণালয়: কাটেরিনা রাইশে
দীর্ঘদিন রাজনীতির বাইরে থাকা সিডিইউর কাটেরিনা রাইশে আসছেন দেশটির অর্থনীতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে৷ মাত্র ২৫ বছর বয়সে প্রথম সাংসদ নিবাচিত হয়ে সংসদের স্টেট সেক্রেটারি হয়েছিলেন রাইশে৷ এরপর ২০১৫ সালে রাজনীতি থেকে দূরে সরে গিয়েছিলেন তিনি৷ পুরো মনোযোগ দিয়েছিলেন ব্যবসায়৷
ছবি: Kay Nietfeld/dpa/picture alliance
গবেষণা, প্রযুক্তি এবং মহাকাশ বিষয়ক মন্ত্রণালয়: ডোরোটে ব্যার
৪৭ বছর বয়সি এই রাজনীতিবিদ নতুন সরকারের গবেষণা, প্রযুক্তি এবং মহাকাশ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেতে যাচ্ছেন৷ দীর্ঘদিন ধরে রাজনীতিতে সক্রিয় থাকা ব্যার এরইমধ্যে সিডিইউ/সিএসইউ-এর পার্লামেন্টারি গ্রুপের দায়িত্ব পালন করেছেন৷ তাছাড়া ২০১৮ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত তিনি ম্যার্কেল সরকারের ডিজিটালাইজেশন কমিশনার হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন৷
ছবি: Emmanuele Contini/IMAGO
ডিজিটালাইজেশন এবং মডার্নাইজেশন মন্ত্রণালয় : কার্স্টেন ভিল্ডবেয়ার্গার
ডিজিটাল ট্রান্সফরমেশন বিষয়ে দক্ষ ভিল্ডব্যার্গার নতুন সরকারের ডিজিটালাইজেশন এবং মডার্নাইজেশন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেতে যাচ্ছেন৷ পদার্থবিদ্যায় ডক্টরেট ডিগ্রিধারী এই রাজনীতিবিদ টি-মোবাইল, বস্টন কনসাল্টিং, ইডটওএন-এ অবদান রেখে এই খাতে নিজেকে সমৃদ্ধ করেছেন৷ সম্প্রতি তিনি ইউরোপের বৃহত্তম ইলেক্ট্রনিক স্টোর মিডিয়ামার্কটজাটুর্নের সিইও হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন৷
ছবি: Malte Ossowski/SvenSimon/picture alliance
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়: নিনা ভার্কেন
২০১৩ সাল থেকে সাংসদ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন নিনা ভার্কেন৷ অভ্যন্তরীণ নীতি ইস্যু নিয়ে কাজ করা ভার্কেন এবার স্বাস্থ্য নিয়ে কাজ করবেন৷
ছবি: Arnulf Hettrich/IMAGO
শিক্ষা ও পরিবার বিষয়ক মন্ত্রণালয়: কারিন প্রিন
কারিন প্রিনকে সিডিইউ দলের হাই-প্রোফাইল শিক্ষাবিদ হিসেবে বিবেচনা করা হয়৷ নেদারল্যান্ডসে জন্ম নেওয়া এই রাজনীতিবিদ এরইমধ্যে জার্মানির উত্তরাঞ্চলের শ্লেসভিগ-হলস্টাইন রাজ্যের শিক্ষা মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন৷ এবার জাতীয় পর্যায়ে দায়িত্ব পালন করতে যাচ্ছেন তিনি৷
ছবি: Jens Schicke/IMAGO
কৃষি মন্ত্রণালয়: আলোইস রাইনার
কৃষি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নিতে যাচ্ছেন সিএসইউর রাজনীতিবিদ রাইনার৷ কসাইয়ের কাজের প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত রাইনার পারিবারিক ব্যবসা দেখাশোনা করেন৷ ২০২৩ সালে তিনি প্রথম সাংসদ নির্বাচিত হয়েছিলেন৷
ছবি: Christoph Hardt/Geisler-Fotopress/picture alliance
পরিবহন: পাট্রিক স্নাইডার
স্নাইডারকে দেশের পরিবহণব্যবস্থা দেখভালের দায়িত্ব দিতে যাচ্ছেন ম্যার্ৎস৷ ৫৬ বছরের পাট্রিক ২০০৯ সালে প্রথম সাংসদ নির্বাচিত হন৷ পরিবহণ ব্যবস্থা সামলাতে তার হাতে থাকবে মোটা অংকের অর্থ৷
ছবি: dts Nachrichtenagentur/IMAGO
ফেডারেল কমিশনার ফর দ্য কালচার অ্যান্ড দ্য মিডিয়া: ভলফ্রাম ভাইমার
প্রকাশক, ইতিহাসবিদ এবং সাংবাদিক ভলফ্রাম ভাইমারকে রক্ষণশীল রাজনীতিবিদ হিসেবে মনে করা হয়৷ ‘দ্য কনজারভেটিব মেনিফেস্টো’, ‘লঙ্গিং ফর গড’ নামে বই লিখেছেন তিনি৷ রক্ষণশীল দৈনিক ফ্রাঙ্কফুর্টার আলগেমাইনে সাইটুং এবং ডি ভেল্ট-এ কাজের অভিজ্ঞতা আছে তার৷