1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বিপন্ন উপমহাদেশের জনজীবন

Debarati Guha১০ আগস্ট ২০১২

জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত লাঘবে আন্তর্জাতিক শীর্ষ বৈঠকগুলি কোনো সিদ্ধান্তে আসতে না পারলেও এর নেতিবাচক প্রভাব থেমে থাকেনি, বরং তা বাড়ছে ধারাবাহিকভাবে৷ জনজীবন বিপন্ন হয়ে পড়ছে, বিশেষ করে উপমহাদেশে৷

ছবি: AP

পরিবেশ সমঝোতায় বিশ্ব যখন জলবায়ু পরিবর্তনের প্রতিকূল প্রভাব এবং তার প্রতিকার নিয়ে এক অনিশ্চয়তার মুখে, তখন তৃতীয় বিশ্বের বহু জায়গায় সমুদ্রের জলস্তর বৃদ্ধি, ঝড়ঝঞ্ঝা, অতিবৃষ্টি বা অনাবৃষ্টির কারণে বিপর্যস্ত জনজীবন৷ জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত সব দেশের ওপর পড়লেও তার ক্ষয়ক্ষতি সবদেশে সমান নয়৷ বিকাশমুখী দেশগুলির ক্ষয়ক্ষতি হয় সবথেকে বেশি, মূলত তিনটি কারণে৷

ভূ-প্রাকৃতিক অবস্থান, কৃষি-নির্ভরতা, প্রাকৃতিক সম্পদের স্বল্পতা৷ যার ফলে সমুদ্রপৃষ্ঠের জলস্তর বৃদ্ধি পায়, দেখা দেয় বন্যা, খরা, চরম আবহাওয়া বিপর্যয়৷ হ্রাস পায় কৃষি উৎপাদন, হ্রাস পায় স্বচ্ছ পানীয় জলের সরবরাহ, বাড়ে বিভিন্ন রোগের প্রকোপ,ক্ষতি হয় জীব-বৈচিত্র্যের৷

জনজীবন বিপন্ন হয়ে পড়ছে, বিশেষ করে উপমহাদেশেছবি: DW

ভারতীয় উপমহাদেশে জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত সম্পর্কে বিশিষ্ট পরিবেশ বিজ্ঞানী অদ্যাপক সুগত হাজরা ডয়চে ভেলেকে বললেন, সমুদ্রের জলস্তর বাড়ছে, বাড়ছে সমুদ্রের উপরিভাগের জলের উষ্ণতা, সমুদ্র সম্পদের পরিবর্তন হচ্ছে, প্রবাল বৈচিত্র্য নষ্ট হচ্ছে৷ ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে নিউমুর দ্বীপের মতো কিছু দ্বীপ ডুবে গেছে৷ বর্ষাকালীন বৃষ্টিপাতের চরিত্র যাচ্ছে বদলে৷ এছাড়া সময়মত বৃষ্টি হচ্ছে না৷ ফলে ক্ষতি হচ্ছে চাষবাসের৷

জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য মানুষের তৈরি কার্বন এবং গ্রিন হাউস গ্যাসের অত্যধিক নির্গমনকে দায়ী করলেন বিশিষ্ট পরিবেশ বিজ্ঞানী অধ্যাপক সুগত হাজরা৷ ডয়চে ভেলেকে তিনি বললেন, চল্লিশ এবং ষাটের দশকের পর থেকে দ্রুত উষ্ণায়নের পেছনে মানুষের তৈরি কার্বন এমিশনের বড় ভূমিকা৷

জনজীবনের এই বিপন্নতার জন্য শুধুই কী জলবায়ু পরিবর্তন এবং বিশ্ব উষ্ণায়ন দায়ী? উন্নয়ন পরিকল্পনায় যদি প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ তথা পরিবেশকে অবহেলা করা হয়, তাহলে পরিস্থিতি হয়ে উঠবে আরো ভয়ঙ্কর৷ জনজীবন বিশেষ করে প্রান্তিক মানুষদের জীবন হয়ে উঠবে দুর্বিষহ৷

পরিবেশ বিজ্ঞানী অধ্যাপক হাজরা মনে করেন, উন্নয়নের সঙ্গে পরিবেশের একটা আপাত বিরোধ আছে৷ অন্তত যেমনভাবে আমরা উন্নয়ন চাইছি৷ বেশি কলকারখানা, জীবাশ্ম জ্বালানির যথেচ্ছ ব্যবহার৷ এই ধরণের উন্নয়ন পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট করে৷ অন্য পথেও উন্নয়ন সম্ভব৷ আর সেটা না হলে জিডিপি বাডা সত্ত্বেও ক্ষুধার্ত মানুষের সংখ্যা কমেনি, কমবে না৷

জনজীবনের এই বিপন্নতার জন্য শুধুই কী জলবায়ু পরিবর্তন এবং বিশ্ব উষ্ণায়ন দায়ী?ছবি: DW

জলবায়ু পরিবর্তনের ধারা রোধ করতে কেন বিশ্ব সমাজ বারংবার ব্যর্থ হচ্ছে? কেন কিয়োটো, দোহা, রিও'র শীর্ষ সম্মেলন কোনো সিদ্ধান্তে আসতে পারছে না? কেন উন্নত ও বিকাশমুখী দেশগুলির মধ্যে মেরুকরণের সংঘাত অব্যাহত? কেন একে অপরের ঘাড়ে দায় চাপাতে তৎপর?

পরিবেশ বিজ্ঞানী হাজরা মনে করেন, ‘‘এই সমস্যার রাজনীতিকরণ ভুল৷ রাজনৈতিক বিচারের দিকে না গিয়ে পৃথিবীর মানব সমাজের মধ্যে ঐক্য তৈরি করা দরকার৷ সেখানে বিকাশমুখী ও উন্নত দেশের মধ্যে বিভেদ না করে ভূ-কেন্দ্রিক বা আর্থ-সেন্ট্রিক পথ বেছে নিতে হবে৷ সমন্বয় গড়ে তুলতে হবে৷ কিন্তু দুঃখের বিষয়, আমরা একটা অ-রাজনৈতিক ইস্যুকে রাজনৈতিকভাবে মেটাতে চাইছি৷ তাই কিয়োটো থেকে রিও কোনোটাতেই সহমত হলো না৷ বিষয়টা আমরা ছেড়ে দিয়েছি রাজনীতিবিদদের হাতে৷''

তাহলে এর প্রতিকার কী? উপমহাদেশের ক্ষেত্রে এর মোটামুটি প্রতিকার হলো, পরিবেশ সংরক্ষণ, নদীতটের জীববৈচিত্র্য রক্ষা, বিকল্প জীবিকা, কৃষি ও প্রাকৃতিক সম্পদের যথাযথ ব্যবহারের মাধ্যমে আর্থ-সামাজিক দারিদ্র্য মোচন৷

প্রতিবেদন: অনিল চট্টোপাধ্যায়, নতুন দিল্লি

সম্পাদনা: দেবারতি গুহ

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ