২০২৫ সালে প্রথম একমাসের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ও মৃত্যু দেখে বিশেষজ্ঞ থেকে সাধারণ মানুষ শঙ্কিত। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের হিসাব, ২০২৪ সালে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে হিমাচলে ৪০৮ জন মারা গেছিলেন, এক হাজার বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়, সাত হাজার গবাদি পশু মারা যায়। ।
বিপর্যয়ের খতিয়ান
২০২৩ সালে হিমাচলে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে মারা গেছিলেন ৪২৮ জন। নিখোঁজ ৩৯ জন। আট হাজার ৬৭৯ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছিল। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় কুলু, মানালি, সিমলা। সিমলায় ধসের ফলে পুরো বাড়ি ভেঙে পড়ার ভিডিও আলোড়ন ফেলে দেয়। কালকা-সিমলার রাস্তায় বহু জায়গায় ধস নামে, অনেক জায়গায় অর্ধের রাস্তা ধসের ফলে তলিয়ে যায়।
২০২২ সালে বৃষ্টি, বন্যা ও ধসে ১২৫ জন মারা যান, সাতটি মেঘফাটা বৃষ্টি এবং ৩০টিরও বেশি চকিত বন্যা হয়। রোহরুতেই প্রায় পাঁচশ ছাগল ও ভেড়া মারা যায়।
২০২১ সালে ৪৭৬ জন মারা যান। প্রচুর সরকারি সম্পত্তি নষ্ট হয়। অনেক বাড়ির ক্ষতি হয়।
রাজধানী সিমলায় ২০১৬ থেকে ২০২৪ পর্যন্ত বৃষ্টি, বন্যা, ধসে ৯১ জন মারা গেছেন। তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি মানুষ মারা গেছেন ২০২৪ সালে ৪০ জন। রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা কমিটির রিপোর্ট হলো রাজধানী সিমলায় মেঘফাটা বৃষ্টি হয়েছে, ধস নেমেছে, আগুন লেগেছে। প্রচুর বাড়ি, গোশালা ও সরকারি ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
হিমাচলের ৪৫ শতাংশ এলাকা ধসপ্রবণ
আইআইটি রোপারের সমীক্ষা বলছে, হিমাচল প্রদেশের ৪৫ শতাংশ এলাকা ধসপ্রবণ। সমীক্ষায় বলা হয়েছে, যে সব জায়গার ঢাল পাঁচ দশমিক আট ডিগ্রি থেকে ১৬ দশমিক চার ডিগ্রির মধ্যে তা ধসপ্রবণ ও বন্যাপ্রবাণ এলাকা। যে সব জায়গায় এক হাজার ছয়শ মিটার খাড়াই আছে, সেগুলিও ধসপ্রবণ।
ওয়ানাড়ে নিশ্চিহ্ন দুইটি গ্রাম, মৃত ৩০৯, এখনো নিখোঁজ শতাধিক
প্রচণ্ড বৃষ্টির পর প্রবল ধস। দুটো গ্রাম কার্যত নিশ্চিহ্ন হয়ে গেলো। রাস্তাঘাট, সেতু সব ভেসে গেছে। কেরালার ওয়ানাড়ে।
ছবি: NDRF/Xinhua/IMAGO
নিশ্চিহ্ন সবুজ, এখন শুধুই কাদামাটির স্রোত
এটাই এখন ওয়ানাড়ের ছবি। বৃষ্টি ও ধসের পর পুরো এলাকা বদলে গিয়েছে। একসময়ের চা-বাগান, গাছে ভরা সবুজ পাহাড়ি এলাকায় শুধু কাদামাটির স্রোত ও বৃষ্টির জলের তাণ্ডব। যে অপরূপ প্রাকৃতিক শোভা দেখতে পর্যটকরা ভিড় জমাতেন, সেখানে এখন শুধুই ধ্বংসের ছবি। ঝড়-বৃষ্টির তাণ্ডবের কাছে, প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কাছে এখনো অসহায় মানুষের ছবি ফুটে উঠেছে এখানে।
ছবি: NDRF/Xinhua/IMAGO
মৃতের সংখ্যা বেড়েই চলেছে
ওয়ানাড়ে প্রাকৃতিক তাণ্ডবে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩০৮। এখনো ভেঙে পড়া বাড়ি ও ধ্বংসস্তূপের তলায় অনেকে চাপা পড়ে আছেন। প্রচুর মানুষ এখনো নিখোঁজ। ফলে শেষপর্যন্ত মৃতের সংখ্যা কত দাঁড়াবে তা বোঝা যাচ্ছে না।
ছবি: IDREES MOHAMMED/AFP
৪০টি দল
ভারতীয় সেনা, এনডিআরএফ, এসডিআরএফ, কোস্ট গার্ড, নৌবাহিনীর সদস্যদের নিয়ে ৪০টি উদ্ধারকারী দল কাজ করে যাচ্ছে। প্রতিটি দলে আছে তিনজন করে স্থানীয় মানুষ এবং একজন বনদপ্তরের কর্মী। ছয়টি এলাকায় তারা উদ্ধারকাজ চালাচ্ছেন। তাদের সাহায্য করছে বিমানবাহিনীর হেলিকপ্টার।
ছবি: Rafiq Maqbool/AP/picture alliance
খুবই কঠিন পরিস্থিতি
পরিস্থিতি খুবই কঠিন। যে জায়গায় ধস নেমেছে, সেখানে কোনো রাস্তাঘাট আর নেই। নদীর সেতু ভেসে গেছে। এখনো মাঝেমধ্যে বৃষ্টি পড়ছে। তারমধ্যেই কোনোক্রমে দুর্গত জায়গায় গিয়ে পৌঁছাচ্ছেন উদ্ধারকারীরা। বের করে নিয়ে আসছেন জীবীতদের। উদ্ধার করছেন মৃতদেহ।
ছবি: PRO Defense Kochi/AP/picture alliance
চারপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে
কয়েকঘণ্টার মধ্যে ভেসে গেছে সবকিছু। বাড়ি নেই। বাড়ির জিনিসগুলি এদিকে ওদিকে কাদার মধ্যে পড়ে আছে। দেখে কে বলবে, এখানে আগে কোলাহলমুখর, সুন্দর গ্রাম ছিল। মানুষের কলকাকলিতে তা ভরে থাকতো। এখন শুধু ধ্বসের ছবি।
ছবি: IDREES MOHAMMED/AFP
দুমড়ে-মুচড়ে পড়ে আছে গাড়ি
কত গাড়ি যে ভেসে গেছে তার হিসাব নেই। নদীর ধারে বা কাদার মধ্যে দেখা যাচ্ছে দুমড়ানো গাড়ি। ধসের ভয়ংকর শক্তি সব ধ্বংস করে দিয়ে চলে গেছে।
ছবি: Rafiq Maqbool/AP/picture alliance
থেকে গেছে এই ছবি
বাড়ির অল্প কিছুটা দাঁড়িয়ে আছে। তার মধ্যে কাদার মধ্যে উঁকি দিচ্ছে এই ছবি। সুখী সময়ের ছবি। চারপাশে ধ্বংসের মধ্যে পড়ে আছে এই ছবিটি, অতীতের সাক্ষী হয়ে।
ছবি: AP Photo/picture alliance
যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে কাজ
এর মধ্যেই যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে উদ্ধার ও অন্য কাজ হচ্ছে। সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়াররা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে একটি সেতু তৈরি করে দিয়েছেন। প্রতিদিনই তারা আটকে থাকা মানুষের কাছে পৌঁছচ্ছেন। তাদের উদ্ধার করে হেলিকপ্টারে নিরাপদ জায়গায় পৌঁছে দিচ্ছেন। এক হাজারেরও বেশি মানুষকে উদ্ধার করেছেন তারা।
ছবি: CK Thanseer/REUTERS
হাসপাতালের ছবি
ধসের পর ২১৯জন মানুষকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সেখানেও দ্রুত তাদের সুস্থ করে তোলার কাজ চলছে। ঘটনাস্থলের কাছের সব হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যকেন্দ্র ভরে গেছে আহত মানুষে। প্রতিদিনই সেই সংখ্যা বাড়ছে।
ছবি: IDREES MOHAMMED/AFP
ভারতে ধসপ্রবণ এলাকা
আইআইটি মাদ্রাজ একটা সমীক্ষা করে দেখেছে, ভারতের ১৩ দশমিক ১৭ শতাংশ এলাকা ধসপ্রবণ। আর চার দশমিক ৭৫ শতাংশ এলাকা খুবই ধসপ্রবণ। হিমালয়ের মধ্যে সিকিম সবচেয়ে ধসপ্রবণ, আর হিমালয়ের বাইরে কেরালা সবচেয়ে ধসপ্রবণ রাজ্য। কেরালার ১৪ শতাংশ এলাকা ধসপ্রবণ।
ছবি: Rafiq Maqbool/AP/picture alliance
ইসরোর তথ্য
২০২৩ সালে ইসরো ভারতের ধসপ্রবণ এলাকাগুলি চিহ্নিত করে। তাতে দেখা যাচ্ছে, হিমালয় বাদ দিলে পশ্চিমঘাট পর্বতমালা সবচেয়ে ধসপ্রবণ। ভারতে ধসের অনেকগুলি কারণ আছে। পরিবেশগত কারণের পাশাপাশি মানুষের তৈরি কারণও আছে।
ছবি: AP Photo/picture alliance
কেরালায় কেন এই ধস?
কোচিন বিশ্ববিদ্যালয়ের এসিএআরআরের ডিরেক্টর এস অভিলাস ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে বলেছেন, কেরলে এই ধসের কারণ গাছ কেটে চাষের জমি করা। কেরালায় যে জায়গায় ধস হচ্ছে, সবই প্ল্যানটেশন এলাকা। বড় গাছ মাটিকে ধরে রাখে। সেগুলি কেটে চা, কফির চাষ হচ্ছে। ফলে এরকম ধস নামছে।
ছবি: AP/dpa/picture alliance
প্রবল বৃষ্টি
এবার গত দুই সপ্তাহে ওয়ানাড়ে ৫০ থে্কে ৭০ শতাংশ বেশি বৃষ্টি হয়েছে। মাটির উপরিস্তর আলগা হয়ে গেছে। তারপর মিনি ক্লাউডবার্স্ট বা ছোট আকারে মেঘফাটা বৃষ্টি হলেই ধস নামছে।
ছবি: AP/dpa/picture alliance
ধসের রাজনীতি
ভারতে সব জিনিস নিয়েই রাজনীতি হয়। ধস নিয়েও হচ্ছে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ সংসদে জানিয়েছেন, কেরালাকে আগেই ধসের সতর্কবার্তা দেয়া হয়েছিল। এরপরই মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন জানিয়েছেন, কেন্দ্র থেকে সতর্কবার্তা এসেছিল, তবে সেটা ধসের দুইঘণ্টা পরে। ধসের দায় নিয়ে বিজেপি ও সিপিএম নেতাদের মধ্যে অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগ চলছে। বিরোধী নেতা রাহুল গান্ধী ওয়ানাড়ে গিয়ে দুর্গত মানুষের সঙ্গে দেখা করেছেন।
ছবি: AP Photo/picture alliance
14 ছবি1 | 14
হিমাচলে মোট ১৭ হাজার ১২০টি জায়গা ধসপ্রবণ। তার মধ্যে ৬৭৫টি গুরুত্বপূর্ণ পরিকাঠামো ও ঘনবসতি এলাকায়।
যেখানে সেখানে বাড়ি
তথাগত সেন গত পঞ্চাশ বছরেরও বেশি সময় ধরে হিমাচলে বিভিন্ন জায়গায় যাচ্ছেন। তিনি ডিডাব্লিউকে বলেছেন, ''গত ২০ বছরে পাহাড়ে যেখানে সেখানে বাড়ি তৈরি হচ্ছে। সে সব ছোট বাড়ি নয়। সাততলা, আটতলা বিশাল বাড়ি। আগে যেখান দিয়ে বৃষ্টির জল যেত, সে সব জায়গায় বাড়ি হতো না। নিয়মও সেরকম ছিল। কিন্তু এখন আর সেই নিয়ম না মেনে পঞ্চায়েতের অনুমতিতে সব জায়গায় বাড়ি তৈরি হচ্ছে। গাছ কাটা পড়ছে। রাস্তা তৈরি হচ্ছে, সুড়ঙ্গ তৈরি হচ্ছে। এর বিপুল প্রভাব গিয়ে পড়ছে পরিবেশের উপর।''
পরিবেশবিদ ও নাট্যকর্মী মল্লিকা জানাল ডিডাব্লিউকে বলেছেন, ''ভারতে পরিবেশগত বিষয়ে কেউ দায় নেয় না। জলবায়ু পরিবর্তন যা আমদের দৈনিক অভ্যাসের জন্য হচ্ছে। আমাদের বুঝতে হবে, আমাদের দোষে আমাদের দেশ ও বিশ্বের ক্ষতি হচ্ছে, আমাদের অভ্যাস পরিবর্তন করতে হবে, না হলে কিছুই হবে না।''
তার মতে, ''আমরা যখন একজন রাজনীতিককে জেতাই, তখন তার উপর আমাদের বিশাল প্রত্যাশা থাকে। তবে সত্যিকারের পরিবর্তন আনতে গেলে রাজনীতিক ও জনগণের মধ্যে আলোচনা হতে হবে, পার্টনারশিপ গড়ে তুলতে হবে। এই পার্টনারশিপ এখন নেই। আমরা মনে করি, সবই রাজনীতিক করবে। এটা অসম্ভব। সবাইকে উদ্যোগ নিতে হবে। না হলে পরিস্থিতির উন্নতি হবে না। আরো খারাপ হবে।''
প্রবীণ সাংবাদিক শরদ গুপ্তা ডিডাব্লিউকে বলেছেন, ''পরিবেশ বাঁচানো দায়িত্ব সকলের, এটা একেবারে ঠিক কথা। কিন্তু আমাদের দেশের পরিস্থিতি ও মানুষের মনোভাব ও ভাবনা হলো, সরকারকে, রাজনীতিকদের উদ্যোগটা নিতে হবে, নজরদারি করতে হবে, আইন না মানলে কড়া শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। না হলে, আমাদের দেশে কিছু সাধারণ মানুষ উদ্যোগী হয়ে কিছু করতে চায় না।''
ভারতের সিকিমে বন্যায় বাড়ছে নিহতের সংখ্যা
ভারতের সিকিমে ভয়াবহ বন্যা দেখা দিয়েছে৷ বৃহস্পতিবার বিকেল পর্যন্ত অন্তত ১৪ জন মারা গেছেন৷ একশ’রও বেশি মানুষ নিখোঁজ৷
ছবি: Prakash Adhikari/AP Photo/picture alliance
ভারতের সিকিমে বন্যায় বাড়ছে নিহতের সংখ্যা
ভারতের সিকিমে ভয়াবহ বন্যা দেখা দিয়েছে৷ বৃহস্পতিবার বিকেল পর্যন্ত অন্তত ১৪ জন মারা গেছেন৷ একশ’রও বেশি মানুষ নিখোঁজ৷
ছবি: Prakash Adhikari/AP Photo/picture alliance
হিমবাহ বিস্ফোরণ
হিমালয়ের হিমবাহের লেক বিস্ফোরণের ফলে এমন বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে৷ পাথুরে বাঁধ ভেঙ্গে পানির ঢল নেমেছে৷
ছবি: Prakash Adhikari/AP Photo/picture alliance
প্রচুর বৃষ্টি
বুধবার থেকে ভারতের উত্তরপূর্ব রাজ্য সিকিমে প্রচুর বৃষ্টি শুরু হয়৷ বৃষ্টির ফলে হিমালয়ের পাদদেশের রাজ্যটিতে আকস্মিক বন্যার শঙ্কা দেখা দেয়৷
ছবি: Prakash Adhikari/AP Photo/picture alliance
হিমবাহ বিস্ফোরণ
হিমালয়ের হিমবাহের লেক বিস্ফোরণের ফলে এমন বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে৷ পাথুরে বাঁধ ভেঙ্গে পানির ঢল নেমেছে৷
ছবি: Prakash Adhikari/AP Photo/picture alliance
পানিবন্দী মানুষ
রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় অনেক মানুষ পানিবন্দী৷ কয়েকটি গ্রাম পুরোপুরি ভেসে গেছে৷ প্রায় তিন হাজার পর্যটক আটকে পড়েছেন বলে স্থানীয়ভাবে জানা গেছে৷
ছবি: Prakash Adhikari/AP Photo/picture alliance
সতর্কতা
কর্তৃপক্ষ রাজ্যের নদীগুলো থেকে জনগণকে নিরাপদ দূরত্বে সরে যেতে বলেছে৷
ছবি: Indian Ministry of Defence/AFP
মৃত্যু ও নিখোঁজ
কতজন মারা গেছেন তা নিয়ে একেক সংবাদমাধ্যম একেক রকম তথ্য দিচ্ছে৷ সংবাদ সংস্থা ডিপিএ বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যা পর্যন্ত ১৪ জনের মৃত্যুর খবর দিয়েছে৷ এছাড়া তখন পর্যন্ত ১০০ জনের বেশি মানুষের হদিস পাওয়া যাচ্ছে না৷
রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় সড়ক যোগাযোগ এবং মোবাইল নেটওয়ার্ক বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে৷
ছবি: Indian Ministry of Defence/AFP
উদ্ধার তৎপরতা
চলছে উদ্ধার তৎপরতা৷ সেনাবাহিনী বলছে, নিখোঁজদের অনেককে উদ্ধার করা গেছে৷ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত এমন ২৩ জনের উদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে তারা৷
ছবি: Indian Army/AP Photo/picture alliance
10 ছবি1 | 10
শরদ মনে করেন, ''সবচেয়ে বড় কথা সচেতনতা বাড়াতে হবে। আমাদের কোনো নির্বাচনে পরিবেশ নিয়ে আলোচনা হয় না। পরিবেশ বাঁচানো কখনো ইস্যু হয় না। এত বড় বড় দুর্ঘটনা ঘটে যাওয়ার পরেও নয়। কারণ মানুষ সচেতন নয়। আমাদের রাজনীতিকরাও সচেতন নয়। সরকারও নয়। দিল্লির উদাহরণ তো সামনে আসে। প্রতিবছর দেওয়ালির সময় দিল্লি দূষণে গ্যাস চেম্বারে পরিণত হয়। তারপরেও সমানে বাজি পোড়ানো হয়, চাষের মাঠে খড় পোড়ানো হয়। বছরের পর বছর একই দৃের পুনরাবৃত্তি হয়।''
তথাগত মনে করেন, ''জনসংখ্যার বিস্ফোরণের চাপ ভারতের সর্বত্র বিপুলভাবে পড়ছে। সব জায়গায় পরিকাঠামো বাড়াতে হচ্ছে। পাহাড়ে পর্যটকদের চাপ আছে। পাহাড়ের গায়ে সিমলা শহরের দৃশ্য একসময় ছিল নয়নমনোহর। এখন দেখলে ভয় হয়। সর্বত্র শুধু বাড়ি। তিলমাত্র ফাঁক নেই।''
'পর্যটন গুরুত্বপূর্ণ কিন্তু পরিবেশের কথাও ভাবতে হবে'
মল্লিকা জালান বলেছেন, ''পর্যটন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। পর্যটকরা বিভিন্ন জায়গা থেকে, দেশ থেকে আসেন। তাদের দৌলতে পর্যটকর-প্রধান এলাকায় অর্থ আসে। অর্থনীতি চাঙ্গা হয়। আমি ছোটবেলায় কেদারনাথ, বদ্রীনাথ গেছিলাম। এখন যদি কেউই সেখানে যেতে বলে, আমার যাওয়ার সাহস হবে না। কারণ, আমার মনে হবে, ধস, বন্যা, বৃষ্টিতে আমি যে কোনো সময় আটকে যাব।''
তিনি মনে করেন, ''শুধু হিমাচল নয়, শুধু পাহাড়ের রাজ্য নয়, সামগ্রিকভাবে ভারত নিয়ে আমাদের ভাবতে হবে, ব্যবস্থা নিতে হবে। হিমাচলের ক্ষেত্রে যা প্রযোজ্য, সেটা উত্তরাখণ্ড, পশ্চিমবঙ্গ, উত্তরপূর্বের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। আমরা প্রাকৃতিক বিপয়কে নিয়ে কিছুদিন হইচই করি, তারপর ভুলে যাই। আমাদের বৃহত্তর ছবিটা মনে রাখতে হবে। পুরো উপমহাদেশ ও পুরো বিশ্বকে মাথায় রাখতে হবে। এই বিপর্যয়ের পিছনে সকলের দায় আছে। এটা থামানোর দায়িত্বও সকলের।''