1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

জার্মানিতেও জলবায়ু পরিবর্তন!

৩১ জুলাই ২০১৭

জার্মানিতে বনজঙ্গলের পরিমাণ বিশ্বের অন্যান্য বহু দেশের চেয়ে বেশি৷ কিন্তু ভবিষ্যতে সেই জঙ্গল যখন খরার মুখে পড়বে, তখন কী ধরনের গাছপালা তার মোকাবিলা করতে পারবে?

Bildergalerie Sehenswürdigkeiten im Saarland |
ছবি: picture-alliance/blickwinkel/A. Krieger

জার্মানির বনজঙ্গল৷ যুগ যুগ ধরে এ নিয়ে গল্পগাথা চলে আসছে: ডাইনি, বামন, রূপকথার প্রাণী, সুঁচলো পাতা দেওয়া ফার বা ঝাউগাছের আলোআঁধারিতে কতো কল্পনাই তো জন্ম নিয়েছে৷ সেই আদিম অরণ্যের কিন্তু আর বেশি বাকি নেই৷ আজ তা একটা বড় আবাদ কিংবা বাগানে পরিণত হয়েছে৷ সব গাছই পরিকল্পিতভাবে পোঁতা ও পরে বহু দশক ধরে বড় করা হয়েছে৷

বিজ্ঞানীরা জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব থেকে বনজঙ্গলবকে সুরক্ষিত করার পন্থা খুঁজছেন৷ কেননা আজ যে সব গাছ লাগানো হচ্ছে, বিশ-ত্রিশ বছর পরে তাদের সম্পূর্ণ অন্য ধরনের আবহাওয়ার সঙ্গে মানিয়ে নিতে হবে৷

রাজধানী বার্লিনের আশপাশের হ্রদগুলোতে যে পানির গভীরতা কমছে, তা জলবায়ু পরিবর্তনের একটা লক্ষণ৷ গ্রীষ্মে আরো কম বৃষ্টি পড়ছে৷ অনেক গাছ পানি না পেয়ে মারা যাচ্ছে – সেগুলোকে কাটার সময় আসার আগেই৷ পাইন গাছগুলো বিশেষভাবে বিপন্ন৷ 

লাইবনিৎস সেন্টার ফর এগ্রিকালচারাল ল্যান্ডস্কেপ রিসার্চ-এর বনবিজ্ঞানী হান্স-পেটার এন্ডে বললেন, ‘‘আজ আমরা যা জানি, তা অনুযায়ী ভবিষ্যতে গ্রীষ্মে আরো কম বৃষ্টি পড়বে, অর্থাৎ সব মিলিয়ে বৃষ্টিপাত এমনিতেই কমে যাওয়ার পর গাছগুলোকে গ্রীষ্মেও খরার মুখোমুখি হতে হবে৷ বহু গাছপালা, যাদের অনেক পানি দরকার, তাদের অবস্থা সঙিন হয়ে উঠবে৷''

জঙ্গলের মধ্যে ল্যাবরেটরি

জঙ্গলের মধ্যে ল্যাবরেটরি খুলে গবেষকরা ভবিষ্যতের আবহাওয়ার ব্যাপারে গবেষণা চালাচ্ছেন৷ মাথার উপর ছাদ দিয়ে বৃষ্টি রুখে কৃত্রিম খরা সৃষ্টি করা হচ্ছে৷ তাতে কচি গাছের চারাগুলোর কী প্রতিক্রিয়া হবে, তা দেখতে চান বনবিজ্ঞানীরা৷

প্রত্যেকটি চারা সঠিকভাবে মাপা হবে৷ পরিবেশ যতো উষ্ণ আর শুষ্ক হবে, ততো ধীরে ধীরে বাড়বে এই গাছের চারাগুলি৷ যেন তারা তেষ্টায় কষ্ট পাচ্ছে! একটি কাচের বাক্সে জঙ্গলের হাওয়ার নমুনা নেওয়া হচ্ছে৷ পরে ল্যাবরেটরিতে বিশ্লেষণ করে দেখা হবে, ঐ হাওয়ায় কতোটা আর্দ্রতা আছে৷

গাছের পাতার সবুজ – অর্থাৎ ক্লোরোফিল – আর উদ্ভিদের মেটাবলিজমের উপর জলবায়ু পরিবর্তনের কী প্রভাব পড়ে, তা পরীক্ষা করে দেখতে চান গবেষকরা৷ প্রাথমিক ফলাফল থেকে দেখা যাচ্ছে: সেক্ষেত্রে গাছপালা আরো কম পুষ্টি উৎপাদন করে৷ জীববিজ্ঞানী কাটিয়া ফেল্সমান বললেন, ‘‘ওরা যথেষ্ট পরিমাণে পানি পাচ্ছে না, যার ফলে পানি আর কার্বনের সামগ্রিক চক্র ব্যাহত হচ্ছে৷ যার ফলে গাছের অবস্থা ভালো নয়, সে ঠিকমতো বাড়তে পারছে না, সে আরো কম ফটোসিন্থেসিস করছে, কেননা সে অত্যন্ত চাপের মুখে রয়েছে৷''

‘ক্লাইমেট চেম্বার' বা জলবায়ু কক্ষে জঙ্গলের গাছপালা বসানো হয়েছে, যেন একটা মিনিয়েচার জঙ্গল৷ খুব সহজ কাজ নয়, কেননা বিচ গাছের একটা জঙ্গলেই থাকে ৪,০০০ ভিন্ন ভিন্ন প্রজাতির উদ্ভিদ৷

বনের প্রকৃতি বদলে যাচ্ছে

জঙ্গলের পরিবেশ প্রণালীতে জন্তুজানোয়ারদেরও একটা বড় ভূমিকা আছে৷ শুধু জন্তুজানোয়ার কেন, পোকামাকড়দেরও৷ যেমন বনবিজ্ঞানীরা জঙ্গলের ডাঁশ, মশা ইত্যাদি পোকামাকড় ধরার জন্য ব্যাগ ঝোলাচ্ছেন৷ এই ধরনের ছোট ছোট কীট নিয়ে জার্মানিতে এযাবৎ বিশেষ গবেষণা হয়নি৷ কিন্তু গরম বাড়লেই, এদের সংখ্যাও বাড়ে: বনে-জঙ্গলে নানা ধরনের নতুন ডাঁশ বাসা বাঁধে৷ এই সব ডাঁশের কামড় থেকে নানা ধরনের বিপজ্জনক অসুখবিসুখ ছড়াতে পারে৷

জঙ্গলে উদ্ভিদ আর প্রাণিজগতের মধ্যে ভারসাম্য এখনও বজায় আছে৷ কিন্তু তা বদলাতে চলেছে৷ কাঠ একটি গুরুত্বপূর্ণ কাঁচামাল, কিন্তু তা সঠিকভাবে ব্যবহার করতে গেলে টেকসইভাবে গাছ কাটতে ও লাগাতে হবে৷ হান্স-পেটার এন্ডে বললেন, ‘‘ভবিষ্যতে জঙ্গলে কোন কোন ধরনের গাছ থাকবে, সে সিদ্ধান্ত এখনই নিতে হবে৷ এবং সেই সিদ্ধান্তের ফলশ্রুতি চলবে ১২০ কি ১৪০ বছর ধরে – ওক গাছের ক্ষেত্রে যা ২০০ বছর হওয়াও অসম্ভব নয়৷''

জলবায়ু নিয়ে উদ্বেগের কারণে ইতিমধ্যেই জঙ্গল সংক্রান্ত কতোগুলো বিশেষ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে: বর্তমানেই জার্মানির বনেজঙ্গলে সুঁচলো পাতাওয়ালা কোনিফেরাস গাছের চেয়ে সাধারণ, চ্যাপটা পাতাওয়ালা গাছই বেশি লাগানো হচ্ছে৷ তার কারণ, পাতাওয়ালা গাছেদের খরা প্রতিরোধের ক্ষমতা দৃশ্যত পাইন, ফার ইত্যাদি সুঁচলো পাতাওয়ালা গাছেদের চেয়ে বেশি৷ অর্থাৎ ধীরে ধীরে বনের প্রকৃতিই বদলে যাচ্ছে৷

জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব কি আপনি দেখতে পাচ্ছেন? মন্তব্য করুন নিচের ঘরে৷ 

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ