1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান
পরিবেশতুরস্ক

জলবায়ু পরিবর্তন ও দূষণের শিকার তুরস্কের মারমারা সাগর

১১ আগস্ট ২০২১

জলবায়ু পরিবর্তন ও লাগামহীন জঞ্জালের কারণে তুরস্কের মারমারা সাগরে মাছের পরিমাণ কমে চলেছে৷ পরিবেশ বিপর্যয়ের পরিণতির মাত্রা এখনো স্পষ্ট নয়৷ সরকার ও প্রশাসনের বিলম্বিত উদ্যোগেও তেমন ফলের আশা করা হচ্ছে না৷

ছবি: Yasin Akgul/AFP/Getty Images

মার-মারায় কমছে মাছ, বাড়ছে উদ্বেগ

04:40

This browser does not support the video element.

চারিদিকে কাদার মতো ভাসমান পদার্থ৷ এমনকি ইস্তানবুল শহরের বন্দরও রেহাই পায়নি৷ আলি কসকুন সেই দৃশ্য দেখে স্তব্ধ৷ বিশেষ করে জেলেদের জন্য এটা একটা বড় বিপর্যয়৷ আলি বলেন, ‘‘পানিতে মাছ কীভাবে বেঁচে থাকবে? কাদায় আটকা পড়লে দুই মিনিটের মধ্যেই মরে যাবে৷'' 

আলি কসকুমের মতো জেলেরা অতীতে শহরের মানুষদের সরাসরি তাজা মাছ সরবরাহ করতেন৷ কিন্তু কয়েক বছর ধরে মাছের পরিমাণ কমে চলেছে৷ দূষণের মাত্রা বেড়ে চলেছে৷ তবে এর আগে কখনো এত বড় পরিবেশ বিপর্যয় ঘটেনি৷ মারমারা সাগরের একটা বড় অংশ কাদার মতো পদার্থের গালিচায় ঢেকে গেছে৷ আলি কসকুন বলেন, ‘‘চলতি শতাব্দীর শুরুর দিকেও আমরা সমুদ্রে এমন দূষণের গালিচা দেখেছি৷ মাছের জাল থেকে কাদার মতো সেই পদার্থ ধুয়ে ফেলে বিষয়টি ভুলে গেছি৷ কারণ এর ফলে মাছের তো কোনো ক্ষতি হয়নি৷''

এবার আর সেটা সম্ভব হচ্ছে না৷ সামুদ্রিক জীবের শরীর থেকে বেরিয়ে আসা পুরু এই পদার্থ কয়েক কিলোমিটার জুড়ে পানির উপর ও নীচের অংশ ঢেকে দিচ্ছে৷ জলবায়ু পরিবর্তনের পরিণতি এবং ইস্তানবুল শহরের বর্জ্য পদার্থই এই বিপর্যয়ের জন্য দায়ী৷

কর্তৃপক্ষ তড়িঘড়ি করে বিশেষ জাহাজ নামিয়ে পাম্প চালিয়ে সেই কাদার মতো পদার্থ দূর করার চেষ্টা করছে৷ তবে সেই উদ্যোগে কাজ হবে কিনা, তা স্পষ্ট নয়৷ কারণ কিছু জায়গায় সেই গালিচা এমনকি ৩০ মিটার পর্যন্ত গভীর৷ পরিস্থিতি বদলাতে হলে মারমারা সাগরের তীরে অসংখ্য নিকাশী ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট আধুনিক করে তুলতে হবে৷ সরকার দ্রুত এক ‘মারমারা অ্যাকশন প্ল্যান' শুরু করেছে৷ তুরস্কের পরিবেশ মন্ত্রী মুরাত কারুম বলেন, ‘‘আমরা তুরস্কের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় সমুদ্র সংস্কার অভিযান চালাবো৷ দেশের সব মানুষকে এ কাজে সহায়তার ডাক দিচ্ছি৷''

মের্ট গ্যোকাল্পের মতো তুরস্কের সামুদ্রিক জীববিজ্ঞানীদের মতে, এই কাজে বড় দেরি হয়ে গেছে৷ সমুদ্রের ইকোসিস্টেম আগেই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে৷ মের্ট বলেন, ‘‘দুটি প্রণালীর মাধ্যমে মারমারা সাগর কৃষ্ণ সাগর ও ভূমধ্যসাগরের সঙ্গে যুক্ত৷ এই সাগর প্রায় হ্রদের মতো৷ প্রায় ৫০ বছর ধরে আড়াই কোটি মানুষের বর্জ্য সেখানে গিয়ে পড়ছে৷''

মারমারা সাগরের প্রাণী ও উদ্ভিদ জগতের উপর সেই আবর্জনার প্রভাব সত্যি মারাত্মক৷ সেইসঙ্গে শ্লেষ্মাও যোগ হয়েছে৷ এর ফলে প্রবালেরও অপূরণীয় ক্ষতি হচ্ছে৷ অথচ প্রবালই পানি ফিল্টার করে সমুদ্র পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে৷ মের্ট গ্যোকাল্প বলেন, ‘‘শ্লেষ্মার কারণে সূর্যের আলো পানিতে প্রবেশ করতে পারে না৷ ফলে সালোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়া ঘটতে পারে না এবং আর অক্সিজেন সৃষ্টি হয় না৷'' 

মার-মারায় কমছে মাছ, বাড়ছে উদ্বেগ

04:40

This browser does not support the video element.

আলি কসকুম শ্লেষ্মার কারণে সমুদ্রে আর জাল ফেলতে পারছেন না৷ জাল আর পানির নীচে নামছে না৷ নামলেও মাছ ছাড়া অন্যান্য পদার্থে ভরে যাচ্ছে৷ সে কারণে তিনি প্রায় ৪০ বছর পর জালের বদলে ছিপ দিয়ে মাছ ধরার চেষ্টা করছেন৷ কিন্তু আজ পর্যন্ত কোনো মাছ ধরা পড়ছে না৷ আলি কসকুনকেও সম্ভবত নিজের পেশা পাকাপাকিভাবে ছেড়ে দিতে হবে৷

সমুদ্রে সাঁতারের কথাও এখন ভাবা যাচ্ছে না৷ কারণ দূষিত গালিচার মধ্যে মানুষের জন্য বিপজ্জনক জীবাণু ও ভাইরাসের বাড়বাড়ন্ত দেখা যাচ্ছে৷ কয়েক জন বিশেষজ্ঞ এমনকি কলেরার বিপদ সম্পর্কে সতর্ক করে দিচ্ছেন৷ সে কারণে মারমারা সাগরের তীরে বেশ কয়েকটি সৈকত বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে৷

এককালে সমুদ্রে মাছের অভাব ছিল না৷ আজ দূষণের কারণে পরিস্থিতি বদলে গেছে৷

গুনার ক্যোনে/এসবি

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ