1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

জলবায়ু পরিবর্তন রোধে প্রয়োজন আরো কার্যকর চুক্তি

রিয়াজুল ইসলাম১৪ ডিসেম্বর ২০০৮

জলবায়ু পরিবর্তন গোটা বিশ্ব জুড়ে এখন একটি অত্যন্ত গুরুত্বপুর্ণ ইস্যু৷ পরিবেশ বিপর্যয় রোধে দেশগুলো যে কোনা উদ্যোগ নিচ্ছে না তা নয়৷ কিন্তু এ নিয়ে এখন পর্যন্ত আন্তর্জাতিক মহলের পক্ষ থেকে কি করা হয়েছে তা আমাদের জfনা দরকার৷

গ্রিন হাউস নির্গমন কমাতে চাই দেশগুলোর আন্তরিকতাছবি: AP

ক্লাইমেট চেঞ্জ বা জলবায়ু পরিবর্তন এ বিষয়টি নিয়ে মূলত কথাবার্তা শুরু হয় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে৷ বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক সম্মেলন ও চুক্তিও স্বাক্ষরিত হয় অনেক দেশের মধ্যে৷ কিন্তু ১৯৯২ সালের বিশ্ব ধরিত্রী সম্মেলনেই বলা যায় একটি সুসমন্বিত কাঠামোর মধ্যে জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়টি নিয়ে আসা হয়৷ ব্রাজিলের রিও ডি জেনিরোতে অনুষ্ঠিত এ সম্মেলনে প্রণিত হয় ইউনাইটেড ন্যাশনস ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশন অন ক্লাইমেট চেঞ্জ বা ইউএনএফসিসিসি৷ এতে সিদ্ধান্ত হয় যে জলবায়ুর পরিবর্তনের ফলে পরিবেশের যে বিপর্যয় ঘটতে চলেছে তা ঠেকাতে হলে গ্রিন হাউস গ্যাস নির্গমনের মাত্রা অবশ্যই একটি বিশেষ পর্যায়ে কমিয়ে আনতে হবে৷ তবে এ সম্মেলনে যে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয় তা কিন্তু সবদেশের ওপর বাধ্যতামূলক ছিলো না৷ অর্থাৎ সম্মেলনে অংশ নেয়া দেশগুলো কেবল গ্রিন হাউস গ্যাস কমানোর বিষয়ে একমত হয়েছিলো৷ কিন্তু কতটুকু কমানো হবে সে বিষয়ে কোন কিছু নির্দিষ্ট করা হয়নি বিশ্ব ধরিত্রী সম্মেলনে৷

অতিরিক্ত কার্বন নির্গমনের ফলে পৃথিবীর বায়ুমন্ডলে সৃষ্টি হয়েছে বিশাল ছিদ্রছবি: AP

তবে এ সম্মেলনের তৃতীয় বৈঠকে কিয়োটোতে যে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয় অর্থাত যাকে আমরা কিয়োটো প্রটোকল নামে জানি সেখানে দেশগুলোর জন্য একটি নতুন বাধ্যতামূলক হিসেব দাড় করানো হয়৷ কিয়োটো প্রটোকলে গ্রিন হাউস গ্যাস হিসেবে পরিচিত চার ধরনের গ্যাস নির্গমন একটি নির্দিষ্ট মাত্রায় নামিয়ে আনার সিদ্ধান্ত হয়৷ সেগুলো হচ্ছে কার্বন ডাই অক্সাইড, মিথেন, নাইট্রস অক্সাইড এবং সালফার হেক্সাফ্লোরাইড৷ এতে ১৯৯০ সালকে একটি একটি পরিমাপক হিসেবে ধরা হয়৷ অর্থাৎ দেশগুলোকে ১৯৯০ সালের তুলনায় গ্যাস নির্গমনের মাত্রা কমিয়ে আনার জন্য বলা হয়৷ শিল্পোন্নত দেশগুলো আগামী ২০১২ সালের মধ্যে গ্রিন হাউস গ্যাস নির্গমন ১৯৯০ সালের চেয়ে পাচ দশমিক দুই শতাংশ কমিয়ে আনতে রাজী হয়৷ এর মধ্যে ইউরোপীয় ইউনিয়ন আট শতাংশ, যুক্তরাষ্ট্র সাত শতাংশ, জাপান ছয় শতাংশ এবং রাশিয়া শুন্য শতাংশ অর্থাত ১৯৯০ সালের মাত্রায় গ্রিন হাউস গ্যাস নির্গমনের পরিমান নামিয়ে আনতে রাজি হয়। ১৯৯৭ সালের ১১ই ডিসেম্বর এ প্রটোকল গৃহীত হয়৷ তবে এ প্রটোকল বাধ্যতামূলক হিসেবে কার্যকর হয়েছে ২০০৫ সালের ১৬ই ফেব্রুয়ারি থেকে৷ এ পর্যন্ত মোট ১৮৩টি দেশ এ প্রটোকল অনুমোদন করেছে৷ যুক্তরাষ্ট্র এ প্রটোকলে প্রথমে স্বাক্ষর করলেও পরে তা অনুমোদন করতে অস্বীকার করে৷

পরিবেশ বিপর্যয় রোধে জাতিসংঘের ভূমিকা হতে হবে আরো সক্রিয়

এদিকে ২০১২ সালে কিয়োটো প্রটোকলের মেয়াদ শেষ হয়ে গেলে সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর ওপর কোন বাধ্যকর কিছু থাকছে না৷ তাই পরিবেশবাদীরা চাচ্ছেন নতুন একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হোক যাতে কার্বন নির্গমনের মাত্রা কমানোর বিষয়টি থাকবে৷ এ লক্ষ্যেই সম্প্রতি পোল্যান্ডের শহর পোজনানে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল পরিবেশ বিষয়ক আন্তর্জাতিক সম্মেলন৷

এতে বিভিন্ন দেশ ছাড়াও অংশ নিয়েছে অনেক বেসরকারী পর্যবেক্ষক সংগঠন এবং পরিবেশ গবেষণা সংস্থা৷ সম্মেলনে জাতিসংঘের শরনার্থী কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে জলবায়ু পরিবর্তন ঠেকাতে না পারলে প্রতি বছর ৬০ লাখের মত লোক আশ্রয়হীন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে৷ জলবায়ু পরিবের্তনের ফলে যে পরিবেশ বিপর্যয়ের সৃষ্টি হবে তার কারণে এ শতকের মাঝামাঝি পর্যন্ত ২০ থেকে ২৫ কোটি লোক আশ্রয়হীন হবে বলেও পোজনানের সম্মেলনে জানানো হয়েছে৷ তবে সম্মেলন শুরু হওয়ার আগেই জাতিসংঘের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে কার্বন নির্গমনের মাত্রা অত্যন্তু হতাশাজনক৷ ইউএনএফসিসিসি-র এনেক্স ১ ভুক্ত দেশগুলো ১৯৯০ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত কার্বন নির্গমন মাত্রা চার দশমিক সাত শতাংশ পর্যন্ত কমিয়েছে৷ ফলে পরিবেশ রক্ষায় কিয়োটো প্রটোকলের চেয়ে আরও কার্যকর একটি চুক্তির প্রয়োজনীয়তা অনুভব করছেন পরিবেশবিদরা৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ