রাশিয়ার রকেটে কিয়েভের জল এবং বিদ্যুৎ ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছিল। মঙ্গলবার তা কিছুটা স্বাবাবিক হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
কিয়েভের মেয়র সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে জানিয়েছেন, পরিস্থিতি আগের চেয়ে ভালো। মানুষ জল পেয়েছেন। অধিকাংশ এলাকাতেই বিদ্যুৎ সংযোগ ফেরানো গেছে। তবে এখনো নিয়ম করে দিনের নির্দিষ্ট সময়ে লোডশেডিং করা হচ্ছে। বিদ্যুতের চাহিদার চেয়ে জোগান কম বলেই এই ব্যবস্থা করতে হয়েছে। রাশিয়া আক্রমণের পর থেকেই ক্রমশ বিদ্যুৎ সংকট তৈরি হয়েছে গোটা ইউক্রেনেই।
ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের ফ্রন্টলাইনে
ডনবাস অঞ্চলকে নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নেয়ার পর অন্য কয়েকটি ইউক্রেনীয় শহর দখলে রাশিয়া নতুন করে আক্রমণ শুরু করেছে৷ অন্যদিকে ইউক্রেনও ডনবাস পুনরুদ্ধারে নতুন কৌশল গ্রহণ করেছে৷ ছবিঘরে থাকছে যুদ্ধের ফ্রন্টলাইনের কিছু ছবি৷
ছবি: Vyacheslav Madiyevskyy/REUTERS
বিনা যুদ্ধে নাহি দিবো...
খারকিভকে লক্ষ্য করে আক্রমণ শুরু করেছে রাশিয়া৷ তবে অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ এ অঞ্চলটি নিজেদের দখলে রাখতে মরিয়া ইউক্রেনও৷ খারকিভের ফ্রন্টলাইনে রুশ সৈন্যদের লক্ষ্য করে মর্টার নিক্ষেপ করতে দেখা যাচ্ছে এক ইউক্রেনীয় সৈন্যকে৷
ছবি: Vyacheslav Madiyevskyy/REUTERS
পর্যাপ্ত সরবরাহ কি আছে?
দিনের পর দিন রাশিয়া আক্রমণ চালিয়ে যাচ্ছে ইউক্রেনের বিভিন্ন শহরে৷ অ্যামেরিকাসহ ন্যাটোর অন্তর্ভুক্ত বিভিন্ন রাষ্ট্র থেকে নিয়মিতই সরবরাহ হচ্ছে অস্ত্র ও গোলাবারুদ৷ তবে তা অব্যাহত না থাকলে রুশ সৈন্যদের ঠেকিয়ে রাখতে বেশ বেগ পেতে হবে ইউক্রেনকে৷ ছবিতে দেখা যাচ্ছে এক সৈন্য গাড়িতে রাখা মর্টার নিয়ে যাচ্ছেন রুশ সৈন্যদের ঠেকিয়ে রাখার অংশ হিসাবে৷
ছবি: Vyacheslav Madiyevskyy/REUTERS
বেসামরিক স্থাপনাও রক্ষা পাচ্ছে না
ছবিটি ইউক্রেনের মাইকোলাইভ শহরের৷ রাশিয়ার বোমা হামলায় একটি স্কুল ধ্বংস হয়েছে৷ তবে ইউক্রেনের সৈন্যরা এখনো শহরটি রাশিয়ার সৈন্যদের দখলে চলে যাওয়া থেকে ঠেকিয়ে রেখেছেন৷
ছবি: Valentyn Ogirenko/REUTERS
মেরামত চলছে...
ইউক্রেনের খারকিভ অঞ্চলের কুপিয়ানস্ক শহরে একটি ট্যাংকের ওপর এক ইউক্রেনীয় সৈন্যকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যাচ্ছে৷ বোমার আঘাতে নষ্ট হওয়া ট্যাংক মেরামত করছেন তার সহকর্মী৷ রুশ সৈন্যরা খারকিভ দখলে নিলেও পরবর্তীতে ইউক্রেনের পালটা আক্রমণে দখল হারায় রাশিয়া৷ তবে এখনো এর দখল নিয়ে দুই পক্ষে ব্যাপক লড়াই চলছে৷
ছবি: Clodagh Kilcoyne/REUTERS
মুখোমুখি লড়াই
কৃষ্ণসাগরের তীরবর্তী মাইকোলাইভ অঞ্চলে লড়াই তীব্র হয়েছে৷ ইউক্রেনের সৈন্য মাইকোলা সরাসরি যুদ্ধে অংশ নিচ্ছেন৷ অদূরে অবস্থান করছে রুশ সৈন্যরা৷ তাদের ঠেকিয়ে রাখতে একে-৪৭ হাতে পাহারা দিচ্ছেন মাইকোলা৷
ছবি: Valentyn Ogirenko/REUTERS
মাতৃভূমি রক্ষার লড়াই
আরেক ইউক্রেনীয় সৈন্য ভালেরি একে-৪৭ হাতে পরিখার মধ্যে বসে রয়েছেন৷ তবে সতর্ক প্রহরার পাশাপাশি মাঝেমধ্যে অন্যদিকেও নজর থাকছে তাদের৷ ফ্রন্টলাইনেই এক কুকুরকে দেখে ভালেরির হৃদয় আর্দ্র হয়ে উঠেছে৷
ছবি: Valentyn Ogirenko/REUTERS
পালটা আক্রমণ
ইউরোপের সবচেয়ে বড় পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র ঝাপোরিজঝিয়া রয়েছে রাশিয়ার দখলে৷ এর নিরাপত্তা নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন ইউরোপের বিভিন্ন দেশের সরকার৷ শহরটি পুনর্দখলের জন্য লড়াই করছে ইউক্রেনের সৈন্যরা৷ ছবিতে দেখা যাচ্ছে এক ইউক্রেনীয় সৈন্যকে গাড়িতে মোতায়েন করা হাওয়িৎজার এফএইচ-৭০ প্রস্তুত করতে৷
ছবি: REUTERS
7 ছবি1 | 7
সোমবার ইউক্রেনে ৫৫টি ব্যালেস্টিক মিসাইল ছুঁড়েছিল রাশিয়া। তার মধ্যে একাধিক কিয়েভে কিয়ে পড়ে। অভিযোগ, বেসামরিক কাঠামো লক্ষ্য করে ওই দিন আক্রমণ চালিয়েছিল রাশিয়া। যার জেরে একাধিক বাড়ি যেমন ধ্বংস হয়েছে, তেমনই ধ্বংস হয়েছে বিদ্যুৎ সরবরাহের কাঠামো, জলের লাইন ইত্যাদি। তবে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় ইউক্রেন তা সারানোর ব্যবস্থা করে। প্রতিটি এলাকায় জল পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়। মঙ্গলবার দেখা গেছে হাজার হাজার মানুষ হাতে বোতল নিয়ে জলের লাইনে দাঁড়িয়ে আছেন।
রাশিয়ার অভিযোগ
এদিকে মঙ্গলবার রাশিয়া অভিযোগ করেছে, নর্ড স্ট্রিম পাইপ লাইনে বিস্ফোরণ ঘটিয়েছিল যুক্তরাজ্যের সেনা এবং গোয়েন্দা। রাশিয়া দাবি করেছে, তাদের হাতে এ বিষয়ে তথ্যপ্রমাণ আছে।
শাহেদ-১৩৬ : ইউক্রেনে আতঙ্ক ছড়ানো ইরানের ড্রোন
ইরানের বিরুদ্ধে নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে চলেছে ইইউ৷ না, পারমাণবিক অস্ত্র বা মাহসা আমিনি হত্যাকাণ্ড নয়, নিষেধাজ্ঞার কারণ ইরানের এমন এক ড্রোন যা নিয়ে ইউক্রেনে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে রাশিয়া৷ বিস্তারিত ছবিঘরে...
ছবি: Efrem Lukatsky/AP/picture alliance
ইউক্রেনের আকাশে পুলিশের মুহুর্মুহু গুলি
১৭ অক্টোবরের ছবি৷ আকাশের দিকে গুলি ছুঁড়ছেন ইউক্রেনের দুই পুলিশ সদস্য৷ দূরে রাশিয়ার ড্রোন ছুটে আসতে দেখেছেন, তাই এভাবে আকাশের দিকে গুলি ছোঁড়েন তারা৷ ইউক্রেনের অভিযোগ- রাশিয়াকে এমন এক ড্রোন সরবরাহ করেছে ইরান, যা এখন অনায়াসে উড়ে ঢুকে রাজধানী কিয়েভে, ঢুকে দমাদম বোমা ফেলছে যেখানে-সেখানে৷
ছবি: Vadim Sarakhan/REUTERS
একমাসে ২২০টি ড্রোন!
না, ২২০টি ড্রোন রাশিয়াকে দেয়নি ইরান, অভিযোগ সত্যি হলে তার চেয়ে অনেক বেশি ড্রোন ইরান থেকে পেয়েছেন পুটিন৷ ইউক্রেনের দাবি, গত এক মাসের চেয়ে একটু বেশি সময়ে ২২০টিরও বেশি ড্রোন গুলি করে ফেলেছে তাদের নিরাপত্তা বাহিনী৷ রাশিয়া অবশ্য ইরানের কাছ থেকে কোনো ধরনের ড্রোন নেয়ার কথা অস্বীকার করেছে৷ ইরানেরও একই সুর, অর্থাৎ তারা বলছে, রাশিয়াকে কোনো ড্রোনই দেয়া হয়নি৷ ছবিতে কিয়েভের আকাশে রাশিয়ার ড্রোন৷
ছবি: Roman Petushkov/REUTERS
কিয়েভে ভয়াবহ হামলা
সোমবার ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভের আবাসিক এলাকায় বোমা হামলা চালায় রাশিয়ার ড্রোন৷ হামলায় পাঁচ জন মারা যান৷ ছবিতে হামলায় বিধ্বস্ত এক ভবন থেকে আটকে পড়াদের বের করার চেষ্টা করছেন উদ্ধারকর্মীরা৷
ছবি: Oleksii Chumachenko/ZUMA/IMAGO
আতঙ্কের নাম শাহেদ-১৩৬
১৭ অক্টোবরের এই ছবিতেও ড্রোন থেকে ফেলা বোমায় বিধ্বস্ত কিয়েভের আবাসিক এলাকার এক অংশ দেখা যাচ্ছে৷ ইউক্রেনের দাবি- রাশিয়ার হয়ে এ হামলা চালিয়েছে ইরানের তৈরি শাহেদ-১৩৬ ড্রোন৷
ছবি: Oleksii Chumachenko/ZUMA Wire/IMAGO
শাহেদ-১৩৬-এর আরেক নাম
ইউক্রেনের কর্তৃপক্ষ রাশিয়ার ব্যবহার করা ড্রোনকে কামিকাজে ড্রোন নামেও বর্ণনা করছে৷ ওপরের ছবিতে সেই ড্রোনের হামলায় বিধ্বস্ত কিয়েভের আবাসিক এলাকার একাংশ৷
ছবি: NurPhoto/IMAGO
কামিকাজে কী?
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় জাপানের বিমান বাহিনী এই নামে মিত্রবাহিনীর নৌবহরের ওপর আত্মঘাতী হামলা চালিয়েছিল৷ জাপানি ভাষায় কামিকাজে অর্থ ‘স্বর্গীয় বায়ু’৷ বিস্ফোরক বোঝাই বিমান নিয়ে বৈমানিকরা মিত্রবাহিনীর যুদ্ধ জাহাজে আত্মঘাতী হামলা চালাতো বলে সেই হামলার নাম দেয়া হয়েছিল কামিকাজে৷ এমন হামলায় জাপানের প্রায় তিন হাজার ৮০০ বৈমানিক প্রাণ দিয়েছিলেন৷ বিপরীতে অন্তত সাত হাজার নৌ-সেনা হারিয়েছিল মিত্রবাহিনী৷
ছবি: Vadym Sarakhan/AP/picture alliance
ইউক্রেনের আকাশে ড্রোন মানেই এখন আতঙ্ক
কিয়েভের আকাশে উড়ে যাচ্ছে রাশিয়ার আরেকটি ড্রোন৷ এই ছবিটিও ১৭ অক্টোবরের৷
ছবি: SERGEY SHESTAK/EPA-EFE
ক্ষুব্ধ যুক্তরাষ্ট্র
কিয়েভসহ ইউক্রেনের কয়েকটি শহরে ড্রোন হামলা হওয়ার পর হোয়াইট হাউস জানায়, রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র শিগগিরই যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ তুলবে৷ এ বিষয়ে রাশিয়ার প্রতিক্রিয়া এখনো জানা যায়নি৷
ছবি: Vladyslav Musiienko/REUTERS
ইরানের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ
সোমবারের হামলার পর ইরানের দূতাবাসের সামনে ইউক্রেনীয়দের বিক্ষোভ৷ ইরানের প্রতি অবিলম্বে রাশিয়াকে ড্রোন দিয়ে সহায়তা বন্ধ করার আহ্বান জানান বিক্ষোভকারীরা৷
ছবি: SERGEY DOLZHENKO/EPA-EFE
পোল্যান্ডেও বিক্ষোভ
রাশিয়া ইউক্রেনে হামলা শুরু করার পর অনেক ইউক্রেনীয় পাশের দেশ পোল্যান্ডে আশ্রয় নেয়৷ সোমবার পোল্যান্ডের ওয়ারশ শহরের ইউক্রেনীয়রা কিয়েভে ড্রোন থেকে বোমা হামলার প্রতিবাদ জানান৷ ওয়ারশর ইরান দূতাবাসে গিয়ে বিক্ষোভ জানান তারা৷
ছবি: Aleksander Kalka/ZUMA//picture alliance
ইরানের ওপর আরো নিষেধাজ্ঞা
রাশিয়াকে ড্রোন সরবরাহ করায় বুধবার ইরানের ওপর নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আরোপের সিদ্ধান্ত নেয় ইইউ৷ বিষয়টি নিয়ে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদেও বৈঠক হয়৷ রুদ্ধদ্বার বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্র,ফ্রান্স এবং ব্রিটেন কিয়েভে ড্রোন হামলা চালানোয় নিরাপত্তা পরিষদকে রাশিয়ার বিরুদ্ধে নিন্দা প্রস্তাব আনান অনুরোধ জানায়৷
ছবি: Efrem Lukatsky/AP/picture alliance
11 ছবি1 | 11
গত সেপ্টেম্বর মাসে নর্ড স্ট্রিম এক এবং দুই দুইটি পাইপলাইনেই বিস্ফোরণ ঘটে। সুইডেন, ডেনমার্ক-সহ একাধিক দেশ এই ঘটনার তদন্ত করছিল। বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছে, একথা মানলেও কারা এই বিস্ফোরণের জন্য দায়ী, তা নিয়ে এতদিন ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং ন্যাটো কোনো মন্তব্য করেনি। মঙ্গলবার রাশিয়া প্রথম এবিষয়ে মুখ খুলল। তাদের বক্তব্য, তাদের কাছে যে গোয়েন্দা রিপোর্ট এসেছে, তাতে স্পষ্ট, যুক্তরাজ্য এই ঘটনা ঘটিয়েছে। ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেছেন, ''আমাদের হাতে তথ্যপ্রমাণ আছে যে যুক্তরাজ্য একাজ করেছে। সন্ত্রাসীরা গিয়ে বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে।''
পেসকভের অভিযোগ, পাইপলাইনে বিস্ফোরণ নিয়ে ইউরোপ আশ্চর্যজনকভাবে নীরব। তার আশা, এবার সেই নীরবতা ভঙ্গ হবে।
জাপানের প্রধানমন্ত্রীর আশঙ্কা
সম্প্রতি জার্মানির প্রেসিডেন্টকে জাপানের প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন, রাশিয়া যেভাবে চলছে, তাতে তার আশঙ্কা, যে কোনোদিন পরমাণু অস্ত্রের ব্যবহার হতে পারে। রাশিয়া পরমাণু অস্ত্র ব্যবহার করতে পারে তিনি ভয় পাচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, হিরোশিমা, নাগাসাকির স্মৃতি যেন আর ফিরে না আসে। এবং একাজ করলে তা একমাত্র রাশিয়াই করতে পারে বলে জানিয়েছেন তিনি। জার্মানির প্রেসিডেন্ট স্পষ্ট অবস্থান নেয়ার জন্য জাপানের প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন।