জি-সেভেন গোষ্ঠী, ও ইউরোপ তথা উপসাগরীয় অঞ্চলের একাধিক দেশ জাতিসংঘের ত্রাণ সংগঠনগুলিকে প্রায় দুই বিলিয়ন ডলার অর্থসাহায্য দেবার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে৷ যুগপৎ চলেছে সিরিয়া সংকট সমাধানের কূটনৈতিক প্রচেষ্টা৷
বিজ্ঞাপন
জি-সেভেন গোষ্ঠী – অর্থাৎ ব্রিটেন, ক্যানাডা, ফ্রান্স, জার্মানি, ইটালি, জাপান ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র – এবং সেই সঙ্গে অস্ট্রিয়া, নেদারল্যান্ডস, নরওয়ে, সুউডেন, সুইজারল্যান্ড, তুরস্ক, কুয়েত, কাতার, সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাত-এর পররাষ্ট্রমন্ত্রীবর্গ তাদের যৌথ বৈঠকে ইউএন এজেন্সিগুলিকে এক দশমিক ৮ বিলিয়ন অর্থসাহায্য দেবার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন৷ এর মধ্যে জার্মানি দেবে ১০০ মিলিয়ন ইউরো বা ১১৩ মিলিয়ন ডলার৷ জাতিসংঘ বর্তমানে বিশ্বব্যাপী প্রায় ছ'কোটি উদ্বাস্তুকে সাহায্য করার চেষ্টা করছে: এই উদ্বাস্তুরা বিভিন্ন সংঘাত থেকে পালাতে চায়; দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সমাপ্তি যাবৎ এত বেশি মানুষ বাস্তু ছেড়ে পলায়ন করেননি৷
হাঙ্গেরি সার্বিয়ার সঙ্গে তার সীমান্ত বন্ধ করে দেবার পর তথাকথিত বলকান রুটে উদ্বাস্তুর স্রোত ক্রোয়েশিয়ার দিকে যেতে শুরু করেছে৷ অস্ট্রিয়াও এবার হাঙ্গেরি সীমান্তে বাছাই নিয়ন্ত্রণ চালু করেছে৷
দীর্ঘ পথ
তুরস্কের এডির্নে শহরের কাছে সিরীয় উদ্বাস্তুরা ছোটদের কোলে করে পায়ে হেঁটে চলেছেন গ্রিক সীমান্তের দিকে৷
ছবি: Reuters/O. Orsal
সব বাধা পার হয়ে
গ্রিস আর ম্যাসিডোনিয়ার সীমান্তে গেভগেলিয়া শহরে তারের বেড়ার ধারে এক অভিবাসী শিশু৷ শুধুমাত্র ১৪ই সেপ্টেম্বরের রাত্রেই সাড়ে সাত হাজারের বেশি উদ্বাস্তু ম্যাসিডোনিয়ায় ঢোকেন৷
ছবি: Getty Images/AFP/R. Atanasovski
প্রবেশ নিষেধ
১৫ই সেপ্টেম্বর থেকে সার্বিয়ার সঙ্গে হাঙ্গেরির সীমান্ত চার মিটার উঁচু কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে ঢাকা৷ শত শত উদ্বাস্তু সীমান্ত কেন্দ্রে নাম লেখাতে পারেন বটে, আবার ক্ষেত্রবিশেষে বহিষ্কৃতও হতে পারেন৷ বেআইনিভাবে সীমান্ত পার হওয়ার সাজা তিন বছর অবধি কারাদণ্ড, কাঁটাতারের বেড়ার ক্ষতি করলে পাঁচ বছর৷
ছবি: DW/N. Rujević
সীমান্তে নিয়ন্ত্রণ জোরদার হচ্ছে
অস্ট্রিয়া আর হাঙ্গেরির মধ্যে সীমান্তে অস্ট্রিয়ান তরফে হাইলিগেনক্রয়েৎস শহর৷ মঙ্গলবার রাত্রি থেকেই বাছাইভাবে সীমান্তে নিয়ন্ত্রণ চালু করার কথা ঘোষণা করে ভিয়েনা সরকার৷ স্লোভেনিয়া, ইটালি এবং স্লোভাকিয়ার সঙ্গে সীমান্তেও নাকি অনুরূপ নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা করা হতে পারে, বলে জানিয়েছে অস্ট্রিয়ার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়৷
ছবি: dpa
রেলস্টেশনে ভিড়
অস্ট্রিয়ার সালৎসবুর্গ শহরের মুখ্য রেলওয়ে স্টেশনে উদ্বাস্তুরা অপেক্ষা করছেন জার্মানিগামী ট্রেনের৷ রবিবার জার্মানি সাময়িকভাবে অস্ট্রিয়ার সঙ্গে ট্রেন চলাচল বন্ধ করে দেয় মিউনিখ রেলওয়ে স্টেশন – এবং শহরের উপর উদ্বাস্তু সমাগমের চাপ কমানোর আশায়৷ অবশ্য সোমবার সকালেই তা আবার তুলে নেওয়া হয়৷
ছবি: picture-alliance/dpa/B. Gindl
মিউনিখে আরেক যাত্রার শুরু
মিউনিখ শহরের প্রধান রেলওয়ে স্টেশনে পথের খোঁজ দিচ্ছেন পুলিশ কর্মকর্তা৷ ট্রেনের জানলার কাচে যে শিশুমুখ, সে-ই তো ভবিষ্যৎ...
ছবি: DW/M. Gopalakrishnan
বলকান রুট
উদ্বাস্তুর স্রোত এবার ক্রোয়েশিয়া হয়ে উত্তরে যাবার চেষ্টা করবে৷ তাদের গন্তব্য: জার্মানি, নেদারল্যান্ডস কিংবা সুইডেনের মতো কোনো সমৃদ্ধ, স্বাগতিক দেশ৷
7 ছবি1 | 7
জি সেভেন ও অন্যান্যদের প্রতিশ্রুতি মোটামুটি তাদের পূর্বপ্রদত্ত প্রতিশ্রুতির অনুরূপ৷ অপরদিকে জাপান যে পৃথকভাবে এক দশমিক পাঁচ বিলিয়ন সাহায্য দেবার অভিপ্রায় ঘোষণা করেছে, তা থেকে বোঝা যায়, মধ্যপ্রাচ্য তথা ইউরোপের উদ্বাস্তু সংকট এখন বৈশ্বিক মঞ্চে উন্নীত হয়েছে৷ জাপানের অর্থসাহায্যের অর্ধেকের কিছু বেশি ব্যয় হবে সিরিয়া ও ইরাকের অভ্যন্তরে এবং ঐ দু'টি দেশ থেকে পলায়নপর উদ্বাস্তুদের কল্যাণে; বাকি অর্ধেক যাবে মধ্যপ্রাচ্য ও আফ্রিকায় শান্তি আনয়নে৷
মনে রাখা দরকার, জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি-মুন নিউ ইয়র্কে সাধারণ সম্মেলনের বৈঠক শুরুই করেছিলেন এই বলে যে, জাতিসংঘের মানবিক সাহায্য সংস্থাগুলি বস্তুত ‘‘দেউলিয়া''৷ জাতিসংঘ এ বছর এ কাজের জন্য মোট ২০ বিলিয়ন ডলার চাইছে, যা কিনা একটা রেকর্ড এবং দশ বছর আগের তুলনায় ছ'গুণ বেশি৷
উদ্বাস্তু সংকটের মূল
ইউরোপের উদ্বাস্তু সংকটের মূল যে কোথায়, তা সকলেরই জানা৷ নতুন হলো, এবার আন্তর্জাতিক কূটনীতি সর্বোচ্চ পর্যায়ে সেই সত্যকে স্বীকৃতি দিয়েছে অথবা দিচ্ছে – নয়ত দু'বছর পরে আবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ও রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুটিনের মধ্যে সিরিয়া – ও সেই সঙ্গে ইউক্রেন – নিয়ে কথোপকথন সম্ভব হতো না – জাতিসংঘের সাধারণ সম্মেলনের অবকাশে৷ দু'পক্ষের মনোভাব ও অবস্থানে পার্থক্য থেকে গেলেও, সিরিয়ায় সংঘাতের অবসানের আর কোনো পন্থা দৃশ্যত এ যাবৎ কারো জানা নেই৷
সবচেয়ে কম শরণার্থী নেবে মাল্টা, সবচেয়ে বেশি জার্মানি
১ লাখ ২০ হাজার শরণার্থী নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নে অচলাবস্থা তৈরি হয়েছিল৷ তা কেটে গেছে৷ ভোটাভুটির মাধ্যমে ঠিক হয়েছে এই ১ লাখ ২০ হাজার শরণার্থীকে ভাগ করে নেবে ইইউ-র দেশগুলো৷ এ পর্যায়েও সবচেয়ে বেশি শরণার্থী নেবে জার্মানি৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/R. Zak
জার্মানির স্বস্তি
অনেক শরণার্থী এসেছে জার্মানিতে৷ অথচ ইউরোপীয় ইউনিয়নের বেশির ভাগ দেশ শরণার্থী নিতে নারাজ৷ এ অবস্থায় ইইউ-র সব সদস্য দেশকে কোটা অনুযায়ী শরণার্থী নিতে হবে – এমন দাবি জানিয়েছিল জার্মানি৷ মঙ্গলবারের বৈঠকে দাবি পূরণ হয়েছে৷ সংখ্যাগরিষ্ঠের ভোটে সিদ্ধান্ত হয়েছে ১ লাখ ২০ হাজার শরণার্থীকে ভাগ করে দেয়া হবে৷ জার্মানি নেবে ৩১ হাজার ৪৪৩ জন৷ বছর শেষে জার্মানিতে আগত মোট শরণার্থী ৮ লাখে হয়ে যেতে পারে৷
ছবি: Reuters/O. Orsal
জার্মানির পরই ফ্রান্স
কোটা অনুযায়ী শরণার্থী বণ্টনের দাবিতে ফ্রান্সও ছিল জার্মানির সঙ্গে৷ মঙ্গলবারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী শরণার্থীর চাপটা তাদের ওপরও খুব কম পড়বে না৷ এই দফায় ২৪ হাজার ৩১ জন শরণার্থী নেবে ফ্রান্স৷ছবিতে হাঙ্গেরি সীমান্তের এক শরণার্থী শিশু৷
ছবি: Getty Images/AFP/A. Nimani
চারটি দেশের ঘোর আপত্তি
পূর্ব ইউরোপের দেশগুলো শুরু থেকেই শরণার্থী নেয়ার বিপক্ষে৷ মঙ্গলবার হাঙ্গেরি, রোমানিয়া, চেক প্রজাতন্ত্র ও স্লোভাকিয়া শরণার্থী নেয়ার বিপক্ষে ভোট দেয়৷ ভোটের পর চেক প্রজাতন্ত্রের প্রধানমন্ত্রী বহুস্লাভ সবটকা বলেন, ‘‘এটা খুবই খারাপ সিদ্ধান্ত৷’’ সরাসরি আপত্তি জানালেও এখন রোমানিয়া ৪ হাজার ৬৪৬ জন, চেক প্রজাতন্ত্র ২ হাজার ৯৭৮ জন এবং স্লোভাকিয়া ১ হাজার ৫০২ জন শরণার্থী নেবে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/J. Dospiva
দায়িত্ব মনে করে শরণার্থী নেবে লুক্সেমবুর্গ
৫ লক্ষ ৬২ হাজার জনসংখ্যার দেশ লুক্সেমবুর্গও শরণার্থী নেবে৷ ছোট দেশ তাই মাত্র ৪৪০ জন নেবে তারা৷ তবে দেশটির সরকার মনে করে ইউরোপীয় ইউনিয়নের ঐক্য ধরে রাখতে সব সদস্য দেশের শরণার্থী নেয়াটা এখন কর্তব্যের পর্যায়ে পড়ে৷ এমনিতে ইউরোপীয় ইউনিয়নে ছোট দেশটির এখন বড় ভূমিকা পালন করাই স্বাভাবিক, কেননা, এ মুহূর্তে ইইউর সভাপতি দেশও লুক্সেমবুর্গ৷
ছবি: AP
সবচেয়ে কম শরণার্থী নেবে মাল্টা
ইইউ অঞ্চলের আরেক ছোট দেশ মাল্টা৷ আয়তন মাত্র ৩১৬ বর্গ কিলোমিটার আর জনসংখ্যা ৪৪ হাজারের একটু বেশি৷ এমন ছোট দেশটিও ১৩৩ জন শরণার্থী নেবে৷
ছবি: picture alliance /Robert Harding
আর যেসব দেশ শরণার্থী নেবে
ইইউ-র আরো কয়েকটি দেশও শরণার্থী নেবে৷ স্পেন নেবে ১৪ হাজার ৯৩১ জন, পোল্যান্ড ৯ হাজার ২৮৭ জন, নেদারল্যান্ডস ৭ হাজার ২১৪ জন, বেলজিয়াম ৪ হাজার ৫৬৪ জন, সুইডেন ৪ হাজার ৪৬৮ জন, অস্ট্রিয়া ৩ হাজার ৬৪০ জন, পর্তুগাল ৩ হাজার ৭৪ জন, ফিনল্যান্ড ২ হাজার ৩৮৮ জন, বুলগেরিয়া ১৬০০ জন, ক্রোয়েশিয়া ১ হাজার ৬৪ জন, লিথুয়ানিয়া ৭৮০ জন, স্লোভেনিয়া ৬৩১ জন, লাটভিয়া ৫২৬ জন, এস্তোনিয়া ৩৭৩ এবং সাইপ্রাস নেবে ২৭৪ জন শরণার্থী৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/R. Zak
6 ছবি1 | 6
রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ আজ বুধবার নিরাপত্তা পরিষদের যে বৈঠকটিতে সভাপতিত্ব করবেন, তার আলোচ্য বিষয় হবে, সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠীগুলি থেকে যে বিপদ সৃষ্টি হচ্ছে, তার মোকাবিলা করা৷ সিরিয়ায় ইসলামিক স্টেট গোষ্ঠীর মোকাবিলা করার জন্য আসাদকে রাখা প্রয়োজন, না বিদায় দেওয়া প্রয়োজন, সে'বিষয়ে ঐকমত্য অর্জন এখানেও সম্ভব হবে, বলে মনে হয় না৷
গ্লোবাল কোটা
হাঙ্গেরি ইতিমধ্যেই ‘ইউরোপের' উদ্বাস্তু সমস্যার একটি ‘বিশ্বায়িত' সমাধানের প্রস্তাব দিয়েছে৷ হাঙ্গেরির বক্তব্য হলো, ইউরোপের পক্ষে সিরিয়া থেকে পলাতক উদ্বাস্তুদের ভার একা বহন করা সম্ভব নয়; এ জন্য বিশ্বব্যাপী ‘কোটা' চালু করা উচিত৷ বিশ্বের সব ‘মেজর প্লেয়ারদের' কিছু ভার বহন করা উচিত, বলেছেন হাঙ্গেরির পররাষ্ট্রমন্ত্রী পেটার সিয়ার্তো৷ তিন লক্ষের বেশি উদ্বাস্তু এ বছর হাঙ্গেরি পৌঁছেছেন৷
কড়াকড়ি
জার্মানিতে উদ্বাস্তুদের আগমনের হার বর্তমানে দিনে প্রায় আট থেকে দশ হাজার৷ কাজেই জার্মানিও এখন তথাকথিত ‘‘অর্থনৈতিক উদ্বাস্তুদের'' জার্মান আসা থেকে নিরস্ত করার চেষ্টা করছে৷ আলবানিয়া, কোসোভো এবং মন্টেনিগ্রোকে এবার ‘নিরাপদ' দেশগুলির পর্যায়ে ফেলা হয়েছে, অর্থাৎ এ সব দেশ থেকে আগত উদ্বাস্তুদের জার্মানিতে রাজনৈতিক আশ্রয় পাবার সম্ভাবনা প্রায় নেই বললেই চলে৷ সেই সঙ্গে বার্লিন সরকার উদ্বাস্তুদের যে নগদ অর্থ দেওয়া হয়, তা কমাতে চাইছেন, এছাড়া নগদের পরিবর্তে জামাকাপড়, খাবারদাবার ইত্যাদি দেওয়ার কথা ভাবছেন৷
সিরিয়া থেকে জার্মানি: শরণার্থীদের বিপৎসংকুল যাত্রা
যুদ্ধের ভয়াবহতা, মৃত্যু এড়াতে মৃত্যুর ঝুঁকি নিয়েই সিরিয়া ছাড়ছে অসংখ্য মানুষ৷ সব বাধা পেরিয়ে সবাই চাইছেন জার্মানি আসতে৷ জানেন কি, কত কঠিন তাঁদের জীবন? কতটা বন্ধুর মৃত্যুর বিভীষিকা ছেড়ে জীবনের পথ ধরা? দেখুন ছবিঘরে৷
ছবি: Getty Images/A. Beier
নিজের দেশ যখন ‘দোজখ’
২০১১ সাল থেকে যুদ্ধ চলছে সিরিয়ায়৷ এ পর্যন্ত কমপক্ষে ২ লক্ষ ৪০ হাজার মানুষ মারা গেছে৷ সিরিয়া না ছাড়লে মৃতদের কাতারে কখন যে নাম লেখাতে হবে কে জানে! দেশ ছেড়ে কোথায় যাওয়া যায়? কোন জায়গাটা জীবন-জীবিকার জন্য সবচেয়ে বেশি নিরাপদ? ইউরোপ৷ তাই অনেকেই আসছেন ইউরোপে৷ ছবিতে দামেস্কের এক আবাসিক এলাকায় প্রেসিডেন্ট বাশারের অনুগত বাহিনীর হামলার পর ধ্বংসস্তূপের মাঝে এখনো কেউ বেঁচে আছেন কিনা দেখছেন সিরীয়রা৷
ছবি: picture-alliance/A.A./M. Rashed
প্রথম গন্তব্য তুরস্ক
ইউরোপে যাওয়ার উদ্দেশ্যে প্রথমে তুরস্কে যায় সিরীয়রা৷ ইজমিরের কোনো হোটেলে উঠেই তাঁরা শুরু করেন মানবপাচারকারীদের মাধ্যমে সমুদ্রপথে ইউরোপে যাওয়ার চেষ্টা৷ যাঁদের হোটেলে ওঠার সাধ্য নেই তাঁরা রাস্তার পাশে কিংবা পার্কে তাঁবু তৈরি করে দু-এক রাত কাটিয়ে নেন৷ ছবির এই মেয়েটির মতো ইউরোপে আসার আগে অনেক সিরীয়কেই ঘুমাতে হয় তুরস্কের রাস্তায়৷
ছবি: picture-alliance/AA/E. Atalay
গ্রিসের দিকে যাত্রা
তুরস্ক থেকে প্রায় সবাই ছোটেন গ্রিসের দিকে৷ অর্থনৈতিকভাবে বিপর্যস্ত এই দেশটিতে শুধু ইউরোপে প্রবেশের জন্যই আসা৷ আসল লক্ষ্য পশ্চিম ইউরোপের উন্নত দেশগুলো৷ ছবিতে ডিঙ্গি নৌকায় তুরস্ক থেকে গ্রিসের কস দ্বীপের দিকে যাত্রা শুরু করা কয়েকজন সিরীয়৷
ছবি: Reuters/A. Konstantinidis
মানুষের নীচে মানুষ
কস দ্বীপ থেকে গ্রিসের মূল ভূখণ্ডের দিকে যাচ্ছে একটি ফেরি৷ ১০ ঘণ্টার যাত্রাপথ৷ কোনো জায়গা না পেয়ে যাত্রীদের আসনের নিচেই ঘুমিয়ে নিচ্ছে এক সিরীয় কিশোরী৷
ছবি: Getty Images//W. McNamee
রুদ্ধ সীমান্ত
কস দ্বীপ থেকে মেসিডোনিয়া হয়ে ইডোমেনি শহরে যান অনেকে৷ ‘বলকান রুট’ ব্যবহার করে অনেকে বাধ্য হয়ে সার্বিয়ার দিকেও যান৷ গত মাসে ‘জরুরি অবস্থা’ জারি করে শরণার্থীদের ঠেকাতে সেনাবাহিনীকে কাজে লাগানোরও ঘোষণা দেয় মেসিডোনিয়া৷ সহজে সীমান্ত পার হওয়া যাবে ভেবে শুরু হয় সার্বিয়ার দিকে যাত্রা৷ ছবির এই ট্রেনের মতো অনেক ট্রেনই গিয়েছে এমন মানুষবোঝাই হয়ে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/G. Licovski
বেলগ্রেডে বিশ্রাম
ইউরোপে অভিবাসন প্রত্যাশীদের জন্য সার্বিয়ার রাজধানী বেলগ্রেড যেন শুধুই বিশ্রামাগার৷ এ শহরে বিশ্রাম নিয়েই সবাই পা বাড়ান প্রকৃত গন্তব্যের দিকে৷ আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা আইওএম-এর তথ্য অনুযায়ী, ২০১৫ সালের প্রথম ৬ মাসে সিরিয়া থেকে অন্তত ১ লাখ ৬০ হাজার মানুষ গিয়েছেন বেলগ্রেডে৷ এখানে বেলগ্রেডের এক পার্কে বিশ্রাম নিচ্ছেন কয়েকজন সিরীয় শরণার্থী৷
ছবি: picture alliance/dpa/T. Brey
হাঙ্গেরিতে মানুষের ঢল
সার্বিয়া থেকে শরণার্থীরা যাচ্ছেন হাঙ্গেরির রাজধানী বুদাপেস্টে৷ বুদাপেস্টও ‘বিশ্রামালয়’৷ তবে হাঙ্গেরি অবৈধভাবে সীমান্ত অতিক্রম রোধে কঠোর অবস্থান নিয়েছে৷হাঙ্গেরি সরকার চায় যাঁরা এসেছেন তাঁরা সেখানেই নাম নথিভূক্ত করাক৷ তা করলে হাঙ্গেরিতেই থাকতে হবে৷ কিন্তু অভিবাসন প্রত্যাশীরা চান জার্মানি যেতে৷ ছবিতে এক কিশোরীর হাতে জার্মানির চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেলের ছবি৷
ছবি: Reuters/B. Szabo
উষ্ণ অভ্যর্থনা
হাঙ্গেরি থেকে কয়েক হাজার অভিবাসন প্রত্যাশী চলে এসেছেন অস্ট্রিয়া এবং জার্মানিতে৷ নতুন ঠিকানায় এসে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছেন অনেকেই৷ অভিবাসনবিরোধী ডানপন্থি দলের শাসনাধীন দেশ হাঙ্গেরি থেকে বেরিয়ে আসতে পারাই তাঁদের জন্য সবচেয়ে বড় স্বস্তি৷ জার্মানিতে পরিস্থিতি সম্পূর্ণ অন্যরকম৷ মিউনিখে শরণার্থীদের উষ্ণ অভ্যর্থনা জানিয়ে বরণ করে নিয়েছেন জার্মানরা!
ছবি: picture-alliance/dpa/N. Armer
তারপর.....?
মিউনিখের কেন্দ্রীয় রেল স্টেশনে এক সিরীয় নারী অভিবাসনপ্রত্যাশীর কোলে সন্তানকে তুলে দিচ্ছেন এক জার্মান পুলিশ৷ সাধারণ জনগণ স্বতঃস্ফূর্তভাবেই অভিবাসনপ্রত্যাশীদের বরণ করে নিয়েছে৷ কিন্তু রাজনৈতিক অঙ্গনে শুরু হয়ে গেছে অভিবাসন ইস্যু নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা৷ এত বেশি অভিবাসনপ্রত্যাশীর আগমন অনেক ধরণের সমস্যা তৈরি করতে পারে বলে অনেকের আশঙ্কা৷