যুদ্ধ বিরতি চুক্তি কার্যকর করার সময় শুরু হলেও রুশপন্থি বিদ্রোহীরা যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে৷ ডেবাল্টসেভে শহরে ব্যাপক হামলা চালিয়েছে তারা৷ জাতিসংঘের সরাসরি তদারকি দাবি করেছে ইউক্রেন৷ রুশ বিদ্রোহীরা এর বিরুদ্ধে৷
বিজ্ঞাপন
গত ২৪ ঘণ্টায় কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ ডেবাল্টসেভে শহরে কমপক্ষে ১৪ জন ইউক্রেনীয় মারা গেছে৷ রুশপন্থি বিদ্রোহীদের প্রচণ্ড আক্রমণের মুখে সেখান থেকে সৈন্য প্রত্যাহার শুরু করেছে ইউক্রেন৷ ইউক্রেনের এক সামরিক কর্মকর্তা জানান, ইতিমধ্যে সেখান থেকে তাদের ৯০ ভাগ্য সৈন্যই প্রত্যাহার করে নেয়া হয়েছে৷ মিনস্কে সাক্ষরিত শান্তি চুক্তি অনুযায়ী পূর্ব ইউক্রেনে যুদ্ধরত দুই পক্ষ, অর্থাৎ ইউক্রেন এবং রুশপন্থি বিদ্রোহীদের ইতিমধ্যে যুদ্ধ থামানোর কথা৷ পাশাপাশি যুদ্ধাঞ্চল থেকে ভারি অস্ত্রও সরিয়ে নেয়ার কথা৷
যুদ্ধ অব্যাহত, স্বপ্ন ও দুঃস্বপ্নের মাঝে ইউক্রেনবাসী
রুশপন্থি বিচ্ছিন্নতাবাদীদের রকেট হামলা আর গোলাগুলিতে জর্জরিত ইউক্রেন৷ এর মধ্যে যুদ্ধবিধ্বস্ত পূর্বাঞ্চলের ‘ফ্রন্ট’ বরাবর কয়েক মাস কাটিয়েছেন ফিলিপ ভোরিক৷ পেশায় ফটো সাংবাদিক৷ সাধারণ মানুষের কষ্ট তাঁর ক্যামেরার চোখ এড়ায়নি৷
ছবি: DW/F. Warwick
অকথ্য যন্ত্রণা
ইনি মারিউপোলের বাসিন্দা৷ একটি রকেট হামলায় তাঁর নয় তলার ফ্ল্যাট বাড়িটি গুড়িয়ে গেছে৷ সব হারিয়ে আজ তিনি দিশেহারা৷
ছবি: DW/F. Warwick
হঠাৎ করেই নিঃস্ব
৮৩ বছরের এই বৃদ্ধা নিজের বাড়ির সামনেই দাঁড়িয়ে৷ তবে বাড়ি বললে বোধহয় ভুল বলা হবে এখন, কারণ, রকেট হামলা তাঁর শেষ সম্বল এই বাসস্থানও কেড়ে নিয়েছে৷
ছবি: DW/F. Warwick
জীবনের ঝুঁকি
ডেবাল্টসেভে শহরের একটা রাস্তা৷ মেয়েটি যে বাড়ির জানালা পরিষ্কার করছে ভোরের দিকে সেখানে একটি ‘মিসাইল’ আছড়ে পড়েছিল৷ আজকাল এখানে সারাদিনই গুলির আওয়াজ শোনা যায়৷
ছবি: DW/F. Warwick
যুদ্ধ নয়, শান্তি চাই
বোমা হামলা থেকে বাঁচতে আজ এখানে আশ্রয় নিয়েছে তাঁরা৷ সকাল সকাল বেসরকারি একটি সংস্থার কাছে থেকে জল, খাবার-দাবার আর রাতের জন্য কম্বলখানা জোগাড় করে আবার এখানেই ফিরতে হবে৷ মনে একটাই প্রশ্ন – এ যুদ্ধ শেষ হবে তো?
ছবি: DW/F. Warwick
ভয়ের পরে ভয় জমেছে
ক’দিন আগে মারিউপোলের এই পরিবারটিকে বাড়ির ‘বেসমেন্ট’-এ আশ্রয় নিতে হয়েছিল৷ সারাদিন ধরে রকেট হামলা চলছিল – ভয় তো পাওয়ারই কথা৷ পরে একটি স্বেচ্ছাসেবক দল তাদের নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে নেয়৷ বাড়ি ফেরার কথা শুনলে আজও তাদের বুক কাঁপে৷
ছবি: DW/F. Warwick
বিপদ সংকেত
ধ্বংস হয়ে যাওয়া বাড়ি-ঘর, দোকান-পাট পাহারা দিচ্ছে পুলিশ৷ যে কোনো সময় আবারো রকেট আর বোমা হামলার আশঙ্কা যে এখনো আছে...!
ছবি: DW/F. Warwick
শুধু ধ্বংসস্তূপ
ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলের পোপাসনা অঞ্চল৷ সেখানকারই বাসিন্দা এই নারী৷ নিজের বসতবাড়িটি আজ ধ্বংসস্তূপ ছাড়া কিছুই নয়৷ অবশিষ্ট পাথর-নুড়ির মধ্যেই কী যে খুঁজছেন তিনি!
ছবি: DW/F. Warwick
কোনো রকমে বেঁচে থাকা
বোমা হামলায় জানলাটা গেছে৷ জানালা ভাঙা ঘরেই থাকতে হবে, কারণ যাওয়ার যে কোনো জায়গা নেই! কাঠ দিয়ে কোনো রকমে জানলাটা ঢাকার চেষ্টা চলছে৷ রাতে যে ভীষণ শীত পড়ে!
ছবি: DW/F. Warwick
খেটে খাওয়া প্রজন্ম
ছবির এই বাচ্চা থেলেটির নাম ডানিলো৷ বয়স ৯, বাড়ি পোপাসনায়৷ ওরও আজ মাথা গোঁজার ঠাঁই নেই৷ বাবা-মা ওকে এমনটাই বলেছে৷
ছবি: DW/F. Warwick
সমব্যথীর হাত...
ফেটে যাওয়া গ্যাস পাইপ মেরামতের চেষ্টা করছেন পোপাসনার এক বাসিন্দা৷ মর্টার এবং রকেট হামলায় বিদ্ধস্ত গোটা এলাকাটা৷ সরকারের জরুরি উদ্ধার ও ত্রাণ কর্তৃপক্ষের কাজ শুরু করাটা খুব দুষ্কর ও সময় সাপেক্ষ, তাই স্থানীয়রাই বাড়িয়েছে সাহায্যের হাত৷
ছবি: DW/F. Warwick
স্বস্তিতে নেই কেউ
পোপাসনার একটা মানসিক হাসপাতাল৷ সেখানে রোগীদের তালিকা দেখছেন এক ডাক্তার৷ অনেক রোগী সেখানে৷ সবার মনেই আতঙ্ক৷ কিছুক্ষণ পর পরই যে শোনা যাচ্ছে রকেট, মর্টার আর বোমা বিস্ফোরণের শব্দ!
ছবি: DW/F. Warwick
11 ছবি1 | 11
অথচ ডেবাল্টসেভে শহরে এখনো হামলা চালিয়ে যাচ্ছে বিদ্রোহীরা৷ তারা বলছে, মিনস্কে যে চুক্তি সাক্ষরিত হয়েছে তাতে ডেবাল্টসেভের উল্লেখ নেই, সুতরাং ওই এলাকায় যুদ্ধ চলতেই পারে৷
এদিকে শান্তি চুক্তি বাস্তবায়ন সরাসরি পর্যবেক্ষণের জন্য জাতিসংঘের তদারকির দাবি জানিয়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট পেট্রো পোরোশেঙ্কো৷ তবে রুশপন্থি বিদ্রোহীদের নেতা ডেনিস পুশলিন এ দাবি প্রত্যাখ্যান করে বলেছেন, ‘‘এমন কিছু করা হলে তা অবশ্যই মিনস্ক চুক্তি বাস্তবায়নের পথে অন্তরায় হবে৷''
রাশিয়াও জাতিসংঘের সরাসরি তদারকি সমর্থন করছে না৷ জাতিসংঘে রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত ভিতালি চুরকিন বলেছেন, ‘‘কেউ যদি যেসব বিষয়ে সায় দিয়ে স্বাক্ষর করেছেন, সেসব কাজ শুরু না করে নতুন কিছুর প্রস্তাব দেন, তাহলে আসলে তিনি মিনস্ক চুক্তি ধংস করে দিতে চান এমন সন্দেহই জাগে৷ ''