জাতিসংঘে ইউক্রেন ইস্যুতে ভোট দেয়নি বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান
৩ মার্চ ২০২২ইউক্রেনের আন্তর্জাতিক সীমান্ত থেকে হামলা বন্ধ করে রুশ সেনাদের সরিয়ে নিতে সাধারণ পরিষদের প্রস্তাবে ১৯৩ সদস্য দেশের মধ্যে প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেয় ১৪১টি দেশ৷ বাংলাদেশ, ভারত, চীন, পাকিস্তানসহ ৩৫টি দেশ ভোট দেওয়া থেকে বিরত ছিল৷ প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট দেয় রাশিয়াসহ পাঁচটি দেশ৷
প্রস্তাবের পক্ষে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে ভোট দিয়েছে নেপাল৷ রাশিয়ার পক্ষে অবস্থান নিয়ে সাধারণ পরিষদের প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট দিয়েছে মস্কোর মিত্র হিসেবে পরিচিত চার দেশ বেলারুশ, উত্তর কোরিয়া, ইরিত্রিয়া ও সিরিয়া৷ চীনের সঙ্গে ভোটদানে বিরত ছিল মস্কোর দীর্ঘদিনের মিত্র কিউবা ও নিকারাগুয়া৷ ভেনেজুয়েলা চাঁদার অর্থ না দেওয়ায় ভোট দিতে পারেনি৷ তবে দেশটির প্রেসিডেন্ট নিকোলো মাদুরো রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুটিনকে কয়েক দিন আগে ফোনে ইউক্রেন ইস্যুতে সব সময় রাশিয়ার পাশে থাকবে বলে জানিয়েছেন৷
জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘সাধারণ পরিষদের আজকের প্রস্তাবে একটি সত্যের প্রতিফলন ঘটেছে৷ সেটা হলো, বিশ্ব ইউক্রেনের ভয়ংকর মানবিক যন্ত্রণার অবসান চায়৷ অবিলম্বে শত্রুতা বন্ধ করতে এবং শান্তির জন্য জরুরি আলোচনায় অবদান রাখার জন্য আমি আমার ক্ষমতার সবকিছুই করে যাব৷'
গত সোমবার সাধারণ পরিষদের তিন দিনের বিশেষ জরুরি অধিবেশন শুরু হয়৷ ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক আগ্রাসন বন্ধের প্রস্তাবে গতকাল অবিলম্বে ও শর্তহীনভাবে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত ইউক্রেনের সীমানা থেকে রাশিয়ার সব ধরনের সেনা সদস্যদের সম্পূর্ণরূপে সরিয়ে নেওয়ার আহ্বান জানায় জাতিসংঘ৷ বৈঠক শুরুর পরদিন মঙ্গলবার বিতর্কে অংশগ্রহণ করে বাংলাদেশ জাতিসংঘ মহাসচিবের নেতৃত্বে সংলাপের মাধ্যমে সংকটের শান্তিপূর্ণ সমাধানের ওপর জোর দেয়৷ এবং জাতিসংঘ সনদে বর্ণিত সার্বভৌমত্ব ও জাতীয় অখণ্ডতার নীতির প্রতিও সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করে বাংলাদেশ৷
এর আগে ইউক্রেন প্রশ্নে নিরাপত্তা পরিষদের জরুরি বৈঠকে নিন্দা প্রস্তাবে রাশিয়ার ‘ভেটোর' কারণে তা বাতিল হলে বিষয়টি আলোচনার জন্য সাধারণ পরিষদে আসে৷বৈঠকের প্রথম দিনে আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, যথেষ্ট হয়েছে, ইউক্রেনে হামলা এখনই বন্ধ করতে হবে৷
বাংলাদেশ জাতিসংঘে বিতর্কে যা বলেছে
বিতর্কের দ্বিতীয় দিন জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী মিশনের উপপ্রধান মোহাম্মদ মনোয়ার হোসেন তাঁর বক্তব্যে কূটনৈতিক উদ্যোগ গ্রহণের জন্য জাতিসংঘ মহাসচিবকে আহ্বানের পাশাপাশি যুদ্ধপীড়িত অঞ্চল থেকে সরে যেতে আগ্রহীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার আহ্বান জানান৷
এ সময় বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন নিউইয়র্কে অবস্থান করলেও জাতিসংঘের এই বিতর্কে অংশ নেননি৷ তিনি একটি স্থানীয় বাংলা টিভিতে বাংলাদেশের অবস্থান ব্যাখ্যা করে বলেন, ‘আমরা সব রকম যুদ্ধের বিরুদ্ধে৷ জাতিসংঘ মহাসচিবের উদ্যোগে এ সমস্যার শান্তিপূর্ণ সমাধান হোক, আমরা সেটাই চাই৷' ক্ষুদ্র দেশ হিসেবে সব রকম যুদ্ধ ও আন্তর্জাতিক সংকটবাংলাদেশের জাতীয় স্বার্থের পরিপন্থী বলে জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবদুল মোমেন৷
এনএস/কেএম (প্রথম আলো)