গাঁজা নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিল জাতিসংঘ। এত দিন গাঁজাকে যে ধরনের মাদকের তালিকায় রাখা হতো, সেখান থেকে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। চিকিৎসা বিজ্ঞানের গবেষণায় গাঁজার প্রয়োজনীয়তার কথা মাথায় রেখেই এই সিদ্ধান্ত বলে জানানো হয়েছে। ২০১৯ সালে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডাব্লিউএইচও) এই বিষয়ে জাতিসংঘকে সিদ্ধান্ত নেয়ার আর্জি জানিয়েছিল বলে জানা গিয়েছে।
গাঁজাসহ বেশ কিছু মাদক পৃথিবীর অনেক দেশেই অবৈধ৷ কিন্তু কয়েকটি দেশে ইতিমধ্যেই বৈধ হয়েছে এসবের সীমিত সেবন ও বেচাকেনা৷ বিস্তারিত জানতে চোখ রাখুন এই ছবিঘরে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/empics/D. Dyckগাঁজা সেবন অনেক দেশেই আইনতভাবে অপরাধ নয়৷ এমনই একটি দেশ ল্যাটিন অ্যামেরিকার আর্জেন্টিনা৷ সেখানে চিকিৎসার জন্য গাঁজা আগে থেকেই বৈধ হলেও ব্যক্তিগত পছন্দে সেবনের জন্য গাঁজাকে ২০০৯ সাল থেকে বৈধতা দেওয়া হয়েছে৷
ছবি: Getty Images/AFP/E. Abramovich২০১৭ সালের ১০ মার্চ ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী রোগীদের গাঁজা সংগ্রহের অনুমতি দেয় জার্মান সরকার৷ অনুমোদনের পর দেশটিতে গাঁজার চাহিদা ব্যাপকহারে বেড়েছে৷
ছবি: Imago/C. Mangচিকিৎসার উদ্দেশ্যে গাঁজার সেবন ও চাষ অস্ট্রেলিয়ায় বৈধ৷ সেই দেশের আদিবাসীদের মধ্যে গাঁজা সেবনের মাত্রা শহরাঞ্চলে কিছুটা কম বলে জানা যায়৷
ছবি: Getty Images/P.Kaneপ্রাপ্তবয়স্করা সেবনের জন্য তিন গ্রাম ওজন পর্যন্ত গাঁজা সঙ্গে রাখতে পারবেন ইউরোপের দেশ বেলজিয়ামে৷ ২০০৩ সাল থেকে কার্যকরী এই আইনে মাথাপিছু একটি গাঁজা গাছ লাগানোকেও বৈধতা দেওয়া হয়েছে৷
ছবি: Reuters/P. Wojazerমাথাপিছু ৫০ গ্রাম গাঁজা কেনা বলিভিয়ায় বৈধ৷
ছবি: imago/CHROMORANGEসারা বিশ্বে আলোড়ন তুলে সব রকমের গাঁজা সেবন ও চাষের ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করেছে ক্যানাডা সরকার৷ ২০১৮ সালের অক্টোবর মাসে নতুন আইন এনে গাঁজা সার্বিকভাবে বৈধ ঘোষণা করা হয়৷
ছবি: picture-alliance/empics/The Canadian Press/J. Fransonল্যাটিন অ্যামেরিকার আরেক দেশ চিলিতেও ২০০৫ সাল থেকে বৈধ হয়েছে গাঁজা বা মারিহুয়ানার সেবন ও বিক্রি৷
ছবি: Nelson Vergara/Revista Mingaসেই ১৯৭৬ সাল থেকেই ইউরোপের নেদারল্যান্ডসে গাঁজা বৈধ৷ সেই দেশের বিখ্যাত ‘কফিশপ’-গুলিতে গাঁজা বিক্রি ও সেবন বৈধ হলেও পাঁচ গ্রামের বেশি গাঁজা রাখতে পারবেন না কেউ৷
ছবি: Getty images/AFP/J. Juinenআফ্রিকার প্রথম দেশ হিসাবে দক্ষিণ আফ্রিকা ২০১৮ সালে গাঁজা সেবন ও গাঁজা চাষকে বৈধতা দেয়৷ প্রসঙ্গত, এই দেশের ডাক্তারেরা চিকিৎসার প্রয়োজনে গাঁজা সেবনের পরামর্শ দিতে পারেন ঠিকই, কিন্তু কোনো বিশেষ দোকান বা হাসপাতালে তা বিক্রির পরিষেবা এই মুহূর্তে নেই৷
ছবি: Getty Images/AFP/R. Bosch২০১৩ সাল থেকে উরুগুয়েতে সম্পূর্ণরূপে বৈধ হয়েছে গাঁজা সেবন ও বিক্রি৷ শুধু তাই নয়, নিষেধাজ্ঞা উঠেছে গাঁজা চাষের ওপর থেকেও৷
ছবি: Reuters/A. Stapffঅঞ্চল অনুসারে ভিন্ন আইন থাকায় গাঁজা বা অন্যান্য মাদক বিষয়ক আইনও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ভিন্ন৷ কিছু রাজ্যে ব্যক্তিগত সেবন বৈধ হলেও দেখা যায় যে, সেখানে গাঁজার চাষে রয়েছে নিষেধাজ্ঞা৷ কিন্তু ডাক্তারি পরামর্শে গাঁজা সেবন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অনেক অংশেই বৈধ বলে জানা যায়৷
ছবি: picture-alliance/dpa/AP/J. Locher জাতিসংঘের নারকোটিক ড্রাগ কমিশনে বুধবার ভোটাভুটি হয়। একটি দেশ সেখানে ভোট দেওয়া থেকে বিরত থাকে। বাকি দেশগুলির ভোটে ২৭-২৫ ফলাফল হয়। ২৭টি দেশ গাঁজাকে কঠিন ড্রাগ হিসেবে চিহ্নিত করার বিরোধী। ২৫টি দেশ পক্ষে। ফলে জয় হয় গাঁজার। এতদিন ড্রাগের চতুর্থ শিডিউলে ফেলা হতো গাঁজাকে। ওই একই শিডিউলে হেরোইন, বিভিন্ন ধরনের কেমিক্যাল ড্রাগও রয়েছে। এই ধরনের ড্রাগ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ বলে জানিয়ে দিয়েছে জাতিসংঘ। কিন্তু বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ২০১৯ সালে জাতিসংঘকে জানিয়েছিল গাঁজাও ওই একই তালিকায় থাকায় গাঁজা নিয়ে চিকিৎসা বিজ্ঞানের বিভিন্ন গবেষণায় সমস্যা হচ্ছে। গাঁজা থেকে বিভিন্ন ধরনের ওষুধ তৈরি সম্ভব। কিন্তু কঠিন ড্রাগের তালিকায় থাকায় তা করা যাচ্ছে না। তারপরেই এই ভোটাভুটির ব্যবস্থা হয় জাতি সংঘের নারকোটিক ড্রাগ কমিশনে।
তবে গাঁজার এই তালিকা পরিবর্তনে গাঁজাপ্রেমিদের খুশি হওয়ার কারণ নেই। এখনো মাদকের তালিকাতেই রাখা হয়েছে গাঁজাকে। এবং সাধারণের ব্যবহারের জন্য সমস্ত নিষেধাজ্ঞা তুলে দেয়া হয়নি। কেবলমাত্র ওষুধ তৈরির জন্য কিছু ছাড় দেওয়া হয়েছে মাত্র। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গাইডলাইনে স্পষ্টই বলা হয়েছে, সাধারণ মানুষ গাঁজা বা গাঁজা গাছের রস থেকে তৈরি চরস সেবন করলে শারীরিক সমস্যা হতে পারে। অতিরিক্ত নেশা স্বাস্থ্যের ক্ষতি করতে পারে।
এসজি/জিএইচ (রয়টার্স, এপি)