1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বাংলার স্বীকৃতি আদায়ের চেষ্টা

হারুন উর রশীদ স্বপন, ঢাকা২ ফেব্রুয়ারি ২০১৪

জাতিসংঘের দাপ্তরিক ভাষা হিসেবে বাংলার স্বীকৃতি আদায়ের জোর চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা৷ শনিবার বিকেলে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে অমর একুশে গ্রন্থমেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি একথা জানান৷

ছবি: Reuters

প্রধানমন্ত্রী বলেন ঢাকায় একটি সাংস্কৃতিক বলয় গড়ে তোলা হবে৷ তিনি গ্রন্থমেলা সম্প্রসারিত হওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করে বলেছেন, বাংলার শ্রেষ্ঠ সাহিত্যকর্মগুলো অন্য ভাষায় অনুবাদ করে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে দিতে হবে৷

অমর একুশে গ্রন্থমেলা আর বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে সীমাবদ্ধ নেই৷ এবার তা ছড়িয়ে পড়েছে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানেও৷ এই বিস্তৃত পরিসরে অমর একুশে গ্রন্থমেলা-২০১৪'র উদ্বোধন হয়েছে৷ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী জানান, বাংলাকে জাতিসংঘের দাপ্তরিক ভাষা করার উদ্যোগ নিয়েছে তাঁর সরকার৷ কিছু সমস্যা আছে৷ তবে তিনি আশা করেন এই প্রচেষ্টা সফল হবে৷ উল্লেখ্য বর্তমানে ইংরেজি, চীনা, আরবি, স্প্যানিশ, ফ্রেঞ্চ ও রুশ – এই ৬টি ভাষা জাতিসংঘের দাপ্তরিক ভাষা হিসেবে স্বীকৃত৷

ফাইল ছবিছবি: DW

প্রধানমন্ত্রী বলেন ২১শে ফেব্রুয়ারি এখন আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস৷ মাতৃভাষা বাংলার জন্য বাঙালির ত্যাগের স্বীকৃতি দিয়েছে সারা বিশ্ব৷ যে ভাষার জন্য এই ত্যাগ সেই ভাষা জাতিসংঘের দাপ্তরিক ভাষা হিসেবেও স্বীকৃতি পাবে৷ তিনি বাংলার শ্রেষ্ঠ সাহিত্যকর্মগুলো অন্য ভাষায় অনুবাদ করে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে দেয়ার জন্য লেখক এবং সাহিত্যিকদের প্রতি আহ্বান জানান৷

প্রধানমন্ত্রী বলেন বাংলা একাডেমি, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান, রমনা বটমূল, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইন্সটিটিউট ও শিল্পকলা একাডেমী এলাকা নিয়ে রাজধানীতে একটি সাংস্কৃতিক বলয় গড়ে তোলার পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের৷ তিনি বইমেলা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সম্প্রসারিত করায় সন্তোষ প্রকাশ করেন৷ তিনি বলেন, এনিয়ে দ্বিমত থাকতে পারে কিন্তু এর ঐতিহাসিক গুরুত্ব আছে৷ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানেই জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ বাঙালির স্বাধীনতার ডাক দিয়েছিলেন৷ আর এখানেই ১৬ ডিসেম্বর পকিস্তানি সেনারা আত্মসমর্পণ করেছিল৷

উদ্বোধনের পর প্রধানমন্ত্রী বইমেলা ঘুরে দেখেন৷ কয়েকটি স্টলে যান এবং বই কেনেন৷ এরপরই বইমেলা সবার জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হয়৷ এবার মেলা সম্প্রসারিত হওয়ায় প্রথম দিনেই বইপ্রেমিসহ সব শ্রেণির মানুষ মেলায় আসেন মেলার নতুন রূপ দেখতে৷ মেলা সম্প্রসারিত হওয়ায় লেখক, প্রকাশক ও দর্শক সবাই খুশী৷ তবে তাঁদের একটিই কথা বইমেলার শৃঙ্খলা যেন বজায় থাকে, থাকে যেন পর্যাপ্ত নিরাপত্তা৷

ফাইল ছবিছবি: DW

বাংলা একাডেমি'র মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খান বলেন, মেলার পরিধি প্রতিবছরই নিজেকে অতিক্রম করছে৷ এ কারণে মেলার বিস্তৃতি শুধুমাত্র একাডেমী প্রাঙ্গণে সীমাবদ্ধ রাখা আর সম্ভব হচ্ছে না৷ তিনি বলেন, অমর একুশে গ্রন্থমেলার চরিত্র বজায় থাকবে৷ নিরাপত্তা এবং শৃঙ্খলা বজায় রাখার পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে৷ তিনি জানান, বিদেশি প্রকাশকরাও যাতে এই মেলায় অংশ নিতে পারেন তার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে৷

বাংলা একাডেমি জানায়, বইমেলায় মোট ২৯৯টি প্রতিষ্ঠানকে ৫৩৪টি ইউনিট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে৷ এর মধ্যে মেলার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের অংশেই রয়েছে আলোচিত প্রকাশনা সংস্থাগুলো৷ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ২৩২টি প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানের জন্য ৪৩২টি ইউনিট বরাদ্দ করা হয়েছে৷ বাংলা একাডেমী প্রাঙ্গণে ২৪টি শিশু-কিশোরদের বইয়ের প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানকে ৩৩টি ইউনিট এবং বিভিন্ন সরকারি সংস্থা, গণমাধ্যমসহ ৪৩টি প্রতিষ্ঠানের জন্য ৬৯টি ইউনিট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে৷ লিটল ম্যাগাজিন কর্নারে জায়গা পেয়েছে ৫৫টি লিটল ম্যাগাজিন৷ ছোট প্রকাশনা সংস্থা বা ব্যক্তিগত উদ্যোগে প্রকাশিত বই বিক্রি ও প্রদর্শনের জন্য জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্রের স্টলে রাখা যাবে৷ মেলায় বাংলা একাডেমীর প্রকাশনা ৩০ ভাগ এবং মেলায় অংশগ্রহণকারী অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের প্রকাশনা ২৫ ভাগ কমিশনে বিক্রি হবে৷

ফাইল ছবিছবি: DW

এবারের মেলা উৎসর্গ করা হচ্ছে ভাষাসৈনিক ও সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা বিচারপতি মুহাম্মদ হাবিবুর রহমানকে৷ মেলা চলবে ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত৷ প্রতিদিন বেলা তিনটা থেকে রাত নয়টা পর্যন্ত মেলা খোলা থাকবে৷ সরকারি ছুটির দিনগুলোতে বেলা ১১টা থেকে শুরু হবে মেলা৷ তবে ২১ ফেব্রুয়ারি মেলা শুরু হবে সকাল আটটা থেকে৷ সরকারি ছুটির দিনের প্রথমভাগ হবে শিশুপ্রহর৷

বাংলা একাডেমি পুরস্কার পেলেন যারা

বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদানের জন্য এবার বাংলা একাডেমি পুরস্কার পেয়েছেন ১১ জন৷ কবিতায় হেলাল হাফিজ, কথাসাহিত্যে পূরবী বসু, প্রবন্ধে মফিদুল হক, গবেষণায় যুগ্মভাবে জামিল চৌধুরী ও প্রভাংশু ত্রিপুরা, অনুবাদ সাহিত্যে কায়সার হক, মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক সাহিত্যে হারুন হাবীব, স্মৃতিকথা ও ভ্রমণকাহিনী বিভাগে মাহফুজুর রহমান, বিজ্ঞান-প্রযুক্তি ও পরিবেশ সাহিত্যে শহীদুল ইসলাম এবং শিশুসাহিত্যে যুগ্মভাবে কাইজার চৌধুরী ও আসলাম সানি৷ প্রখ্যাত মূকাভিনয় শিল্পী পার্থ প্রতিম মজুমদারকে এ বছর বাংলা একাডেমীর ফেলো হিসেবে বিশেষ সম্মাননা দেওয়া হয়৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ