সদস্য চাঁদা দেয়নি। তাই জাতিসংঘে ভোট দিতে পারবে না ইরান, সুদান, ভেনেজুয়েলা-সহ ১১ টি দেশ।
বিজ্ঞাপন
সব মিলিয়ে ১১টি দেশ চাঁদা না দিতে পারার জন্য ভোটাধিকার হারিয়েছে। যতক্ষণ পর্যন্ত তারা চাঁদা দিচ্ছে, ততক্ষণ পর্যন্ত জাতিসংঘের কোনো বিষয়েই তারা ভোট দিতে পারবে না। ইরান এই সমস্ত কিছুর জন্য অ্যামেরিকাকে দায়ী করেছে।
ইরান, সুদান, ভেনেজুয়েলা ছাড়াও এই তালিকায় আছে অ্যান্টিগা, কঙ্গো, গিনি, পাপুয়া নিউ গিনির মতো দেশ। বুধবার জাতিসংঘ জানিয়েছে, ভোটাধিকার ফেরত পেতে গেলে ইরানকে দিতে হবে ১৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। ভেনেজুয়েলার বাকি ৪০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। সুদানকে দিতে হবে তিন লাখ মার্কিন ডলার। বস্তুত, দুই বছরের বেশি সদস্যচাঁদা বাকি থাকলে ভোটাধিকার কেড়ে নেওয়া হয়। তবে বহুক্ষেত্রেই ছাড় দেওয়া হয়।
অ্যামেরিকার বড় শত্রু কারা?
ইরানের সঙ্গে অনেকটা যুদ্ধাবস্থা বিরাজ করছে অ্যামেরিকার৷ আর চীনের সঙ্গে চলছে বাণিজ্য যুদ্ধ৷ মার্কিনিদের বিবেচনায় তাঁদের শত্রুদের চিনে নিন ছবিঘরে৷
ছবি: Imago/UPI//Imago/Russian Look
উত্তর কোরিয়া
জরিপের মাধ্যমে অ্যামেরিকার শত্রুদের তালিকা প্রকাশ করে থাকে গ্যালাপ৷ প্রতিষ্ঠানের ২০১৮ সালের জরিপে দেখা যায়, গত কয়েক বছরের মতো এবারও অ্যামেরিকার শত্রু তালিকার শীর্ষ দেশ হিসেবে উত্তর কোরিয়ার নাম আছে৷ ২০১৬ সালে ১৬ ভাগ মানুষ উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক শক্তিকে হুমকি হিসাবে বিবেচনায় নিয়েছিলেন৷ ২০১৮ সালে এসে হুমকি বিশ্বাসকারীদের সংখ্যা ৫১ শতাংশে দাঁড়িয়েছে৷
ছবি: picture-alliance/dpa
রাশিয়া
অ্যামেরিকার সঙ্গে রাশিয়ার শত্রুতার সম্পর্ক দীর্ঘদিনের৷ এর মধ্যে উত্থান-পতনও দেখা গেছে বিভিন্ন সময়ে৷ ২০১৬ সালে ১৫ শতাংশ অ্যামেরিকান বলেছেন, রাশিয়া তাঁদের সবচেয়ে বড় শত্রু৷ ২০১৮ সালে গিয়ে এ সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৯ শতাংশে৷
চীনের সঙ্গে অ্যামেরিকার বাণিজ্য যুদ্ধ ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে বিশ্বের অন্যান্য দেশের অর্থনীতিকেও৷ যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে অর্থনৈতিক পরাশক্তি হওয়ার লক্ষ্যে কাজ করছে চীন৷ দুই দেশের সাম্প্রতিক কিছু সিদ্ধান্ত উভয়ের অর্থনীতিকে প্রভাবিত করছে৷ ২০১৬ সালে অ্যামেরিকার ১২ শতাংশ মানুষের বিবেচনায় চীন ছিল দেশটির সবচেয়ে বড় শত্রু৷ তবে, ২০১৮ সালে দেশটিকে বড় শত্রু হিসাবে চিহ্নিত করেছেন ১১ শতাংশ অ্যামেরিকান৷
ছবি: picture-alliance/dpa
ইরান
২০০৬ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত অ্যামেরিকানদের কাছে তাঁদের শত্রু তালিকায় শীর্ষে ছিল ইরান৷ পরের কয়েক বছর পরিস্থিতি ভালো হয় কিছুটা৷ তবে, ২০১৫ সালে ইরানকে নিজেদের সবচেয়ে বড় শত্রু হিসাবে চিহ্নিত করেছেন ৯ শতাংশ অ্যামেরিকান৷ ২০১৮ সালে এমন চিন্তার মানুষের সংখ্যা দাঁড়ায় ৭ শতাংশে৷
ছবি: Imago/UPI//Imago/Russian Look
সিরিয়া
গ্যালাপের পাশাপাশি অ্যামেরিকার শত্রুদের তালিকা প্রকাশ করে থাকে ক্যানাডাভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর রিসার্চ অন গ্লোবালাইজেশন বা সিআরজি৷ তাদের বিবেচনায় ইরান, রাশিয়া ও ফিলিস্তিনের সঙ্গে সিরিয়ায় ক্ষমতাসীনদের সখ্যের কারণে সিরিয়ার সঙ্গে অ্যামেরিকার বিরোধ হয়েছে৷ আবার অ্যামেরিকা-ইসরায়েল মৈত্রীর ক্ষেত্রে বিপরীত অবস্থানে আছে সিরিয়া৷ ভূ-রাজনৈতিক কারণে সিরিয়ার উপর আধিপত্য রাখতে চায় যুক্তরাষ্ট্র৷
ছবি: picture-alliance/dpa/K. Elfiqi
ভেনেজুয়েলা
সিআরজি বলছে, ভেনেজুয়েলার তেলের মজুদ ও সামাজিক-রাজনৈতিক কারণে অ্যামেরিকার সঙ্গে তাঁদের বিরোধ দীর্ঘদিনের৷ যদিও বর্তমানে মূল্যস্ফীতি ও অর্থনৈতিক সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে ভেনেজুয়েলা, তবুও সেই বিরোধ কমেনি মোটেও৷ দেশটির ক্ষমতাসীন মাদুরো সরকারকে হটাতে তৎপর অ্যামেরিকা৷ সম্প্রতি অ্যামেরিকার সঙ্গে সব ধরনের কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করেছে দক্ষিণ অ্যামেরিকার দেশটি৷
ছবি: picture-alliance/dpa/P. Miraflores
6 ছবি1 | 6
২০২১ সালের জানুয়ারি মাসে ইরানের ভোটাধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু জুন মাসে তা ফিরিয়ে দেওয়া হয়। ইরান জানিয়েছিল, সময়মতো তারা ধার শোধ করে দেবে।
ইরানের বক্তব্য
ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেন, জাতিসংঘের সদস্য চাঁদা তারা নিয়মিত দিতে চান। কখনোই বাকি রাখতে চান না। কিন্তু অ্যামেরিকা যেভাবে তাদের উপর নিষেধাজ্ঞা চাপিয়ে রেখেছে, তাতে তাদের পক্ষে ওই অর্থ জোগাড় করা সম্ভব হচ্ছে না। অ্যামেরিকা জানে নিষেধাজ্ঞার কারণে ইরান চাঁদা দিতে পারছে না। ইচ্ছে করেই তাদের উপর চাপ বাড়ানো হচ্ছে।
কিন্তু জাতিসংঘ জানিয়েছে, চাঁদা দিতে না পারলে এবার ইরানের ভোটাধিকার ফেরত দেওয়া হবে না।