জাতিসংঘে রাশিয়া-বিরোধী প্রস্তাব, ভোট দিলো না চীন-ভারত
৩ মার্চ ২০২২
জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের বৈঠকে ইউক্রেনে লড়াই থামাবার কথা বলে রাশিয়ার বিরুদ্ধে প্রস্তাব নেয়া হলো।
বিজ্ঞাপন
জাতিসংঘের সদস্য দেশগুলির মধ্যে ১৪১টি দেশ প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেয়। বিপক্ষে মাত্র পাঁচটি ভোট পড়ে। ৩৫টি দেশ ভোটদানে বিরত থাকে। ভোট না দেয়া দেশগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো ভারত ও চীন।
যে দেশগুলি প্রস্তাবের বিরোধিতা করেছে তারা হলো, রাশিয়া. বেলারুশ, সিরিয়া, উত্তর কোরিয়া এবং এরিত্রিয়া।
এই প্রস্তাব নিয়ে ভোটাভুটি হওয়ার আগে প্রস্তাবক দেশগুলির পক্ষে আশা করা হয়েছিল, প্রস্তাবের পক্ষে একশটি ভোট পড়বে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ১৪১টি দেশ প্রস্তাব সমর্থন করায় তারাও কিছুটা অবাক হয়েছে।
জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী বেয়ারবক বলেছেন, ''এটি ঐতিহাসিক ফলাফল। এই ফল থেকে স্পষ্ট, যখন শান্তির উপর আঘাত আসে, তখন সকলে একসঙ্গে দাঁড়ায়।''
প্রস্তাব খারিজ রাশিয়ার
জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে নেয়া প্রস্তাবে বলা হয়েছে, রাশিয়া যেন অবিলম্বে ইউক্রেনে হামলা বন্ধ করে এবং সেনা ফিরিয়ে নেয়। তারা বেআইনিভাবে হুমকি দিচ্ছে এবং ইউক্রেনের বিরুদ্ধে শক্তিপ্রয়োগ করছে।
লড়াই আরো তীব্র হচ্ছে
রাশিয়া-ইউক্রেন লড়াই ষষ্ঠ দিনে। শয়ে শয়ে মানুষের মৃত্যু হচ্ছে। কিয়েভের আরো কাছে রাশিয়া।
ছবি: Aris Messinis/AFP/Getty Images
স্পোর্টস কমপ্লেক্সে আশ্রয়
ইউক্রেনের শহর মারিউপলে একটি স্পোর্টস কমপ্লেক্সে আশ্রয় নিয়েছেন সাধারণ মানুষ। রাশিয়ার সেনার বোমার হাত থেকে বাঁচতে এই কমপ্লেক্সটিকেই সাময়িক বাঙ্কারে পরিণত করা হয়েছে।
ছবি: Evgeniy Maloletka/AP/picture alliance
কিয়েভের বাড়ি
রাজধানী কিয়েভের একটি বাড়ি। মিসাইল হামলায় সম্পূর্ণ ধসে গেছে বাড়ির দেওয়াল। আগুন জ্বলছে দাউ দাউ করে। দমকল বাহিনী আগুন নেভানোর চেষ্টা করছে। ইউক্রেন পুলিশ এই ছবিটি প্রকাশ করেছে।
ছবি: Ukrainian Police Department Press Service/AP/picture alliance
সরকারি ভবনের পাহারায়
রাজধানী কিয়েভে সরকারি ভবন পাহারা দিচ্ছে ইউক্রেনের বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত সেনা। কিয়েভে কারফিউ আরো কড়া করা হয়েছে।
ছবি: Andr Luis Alves/GlobalImagens/imago images
ক্ষেপণাস্ত্র হামলার ফলে
রাশিয়ার মিসাইল হামলায় ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে কিয়েভ থেকে সামান্য দূরের এই অঞ্চল। মিসাইল হামলায় ভেঙে গেছে বাড়ি। সব ছেড়ে প্রাণের দায়ে পালিয়েছেন সাধারণ মানুষ।
ছবি: Vasyl Molchan/Ukrinform/imago images
একটি বসার ঘর
কিয়েভ অঞ্চলের একটি বাড়ির বসার ঘর। গোলায় ধ্বংস হয়ে গেছে সব। পুড়ে গিয়েছে সমস্ত জিনিসপত্র।
ছবি: Alexander Ryumin/ITAR-TASS/imago images
রাশিয়ার কনভয়ের ধ্বংসাবশেষ
রাশিয়ার আক্রমণের পাল্টা জবাব দিয়েছে ইউক্রেন। কিয়েভের রাস্তায় পড়ে আছে রাশিয়ার সাঁজোয়া গাড়ির ধ্বংসাবশেষ। পড়ে রয়েছে একটি যুদ্ধের হেলমেটও।
ছবি: Alisa YakubovychEPA-EFE
বেসমেন্টে হাসপাতাল
কিয়েভের একটি হাসপাতালের দৃশ্য। বেসমেন্টে পাতা হয়েছে খাট। অস্থায়ী বাঙ্কার হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে এই হাসপাতালটিকেও।
ছবি: Aris Messinis/AFP/Getty Images
7 ছবি1 | 7
অনুমোদিত এই প্রস্তাবে আরো বলা হয়েছে, রাশিয়া বাড়ি, স্কুল, হাসপাতাল-সহ বিভিন্ন অসামরিক জায়গা আক্রমণ করছে। এর ফলে প্রচুর সাধারণ মানুষ মারা যাচ্ছেন। তার মধ্যে নারী, বয়স্ক মানুষ ও শিশুরাও আছেন।
জাতিসংঘে রাশিয়ার দূত ভ্যাসিলি নেবেনজিয়া বলেছেন, এই প্রস্তাব নেয়ার পরেও রাশিয়া সামরিক কার্যকলাপ থামাবে না। তার দাবি, কিয়েভে বিদ্রোহী বাহিনী ও জাতীয়তাবাদীদের তারা উৎসাহ দেবেন।
ইউক্রেনে গণতান্ত্রিক পথে নির্বাচিত সরকারকে রাশিয়া বারবার চরমপন্থি বলে অভিহিত করে জানিয়েছে, তাদের লক্ষ্য হলো, ইউক্রেনকে চরমপন্থার হাত থেকে বের করে আনা, সরকার বদল করা এবং জেলেনস্কিকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেয়া।
কিয়েভ-সহ অনেক শহরে আছড়ে পড়েছে রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র। রাশিয়ার যুদ্ধবিমান থেকে বোমা ফেলা হচ্ছে। রাশিয়ার হামলার পর ইউক্রেনের একটি শহরের ছবি। আগুন জ্বলছে।
ছবি: picture alliance/dpa/Mary Ostrovska/AP
গোলার তাণ্ডব
ইউক্রেনের শহর মারিয়াপোল। রাশিয়ার কামান থেকে ছোড়া গোলার আঘাতে বাড়ি ভেঙেছে। গাড়ি নষ্ট হয়েছে। ইউক্রেনের অনেক শহরের ছবি এরকমই।
ছবি: Sergei Grits/AP/picture alliance
বোমার আঘাতে
পূর্ব ইউক্রেনের চুগুয়েভ শহরের ছবি। বোমার আঘাতে বাড়ির একাংশ ভেঙে পড়েছে। তারপর সেখানে এসেছেন মানুষ। খুঁজছেন হারানো জিনিস। এবার কোথায় যাবেন, তা-ই ভাবছেন।
ছবি: Aris Messinis/AFP/Getty Images
বিপন্ন মানুষ
চুগুয়েভের আরেকটি দৃশ্য। বোমার আঘাতে বাড়ি ভেঙেছে। গাড়ি আর চলার অবস্থায় নেই। তার কাছেই মাথায় হাত দিয়ে বসে আছেন এক বিপন্ন ব্যক্তি।
ছবি: Aris Messinis/AFP/Getty Images
আগুন জ্বলছে
কিয়েভের কাছে রাশিয়ার হামলায় গুঁড়িয়ে গেছে বেসরকারি বাড়ি। সেখানে তখনো আগুন জ্বলছে। কিয়েভে একের পর এক রুশ ক্ষেপণাস্ত্র আছড়ে পড়েছে।
ছবি: Efrem Lukatsky/AP/picture alliance
সামরিক ঘাঁটিতে আঘাত
ইউক্রেনের একটি সামরিক ঘাঁটিতে আঘাত হেনেছে রাশিয়া। তারপর সেখান থেকে বের হওয়া কালো ধোঁয়া চারপাশ ঢেকে দিয়েছে।
ছবি: Evgeniy Maloletka/AP/picture alliance
বিমানঘাঁটি দখলের লড়াই
কিয়েভের ঠিক বাইরে একটি বিমানঘাঁটি দখল করার চেষ্টা করছে রাশিয়া। তীব্র লড়াই চলছে। তার আশপাশের এলাকায় বোমা ফেলেছে রাশিয়া। তেমনই একটি এলাকার ছবি।
ছবি: DANIEL LEAL/AFP
ধ্বংসের চেহারা
কিয়েভের বাইরে রাশিয়ার আক্রমণের পরের ছবি। চারপাশে শুধু ছড়িয়ে থাকা ধ্বংসের ছবি।
ছবি: Efrem Lukatsky/AP/picture alliance
ট্রেন ধরার জন্য
কিয়েভের মানুষ ট্রেন ধরার জন্য একটি সাবওয়েতে ছুটছেন। তারা দ্রুত নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে চান। রাশিয়ার হামলার মুখে অসহায় বোধ করছেন তারা।
ছবি: Emilio Morenatti/AP/dpa/picture alliance
বাসে ওঠার ভিড়
বাসে করে কিয়েভ থেকে দূরে যাওয়ার জন্য মরিয়া মানুষের ভিড়।
ছবি: Emilio Morenatti/AP/dpa/picture alliance
হামলার হাত থেকে বাঁচতে
রাশিয়ার হামলার হাত থেকে বাঁচতে সাবওয়েকে নিরাপদ মনে করছেন অনেকে। সেখানেই থাকছেন তারা।
ছবি: Emilio Morenatti/AP/dpa/picture alliance
11 ছবি1 | 11
'রাশিয়ার লক্ষ্য গণহত্যা'
এই প্রস্তাব প্রথমে সোমবার সাধারণ পরিষদে পেশ করা হয়। জাতিসংঘের ৭৭ বছরের ইতিহাসে এই নিয়ে ১১ বার এই ধরনের প্রস্তাব পেশ করা হলো। এই প্রস্তাব পাস হওয়া মানে এই নয় যে, এর কোনো আইনগত বাধ্যবাধকতা আছে। কিন্তু এতগুলি দেশ যখন প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেয়, তার অর্থ, রাশিয়ার উপর তারা একটা চাপ সৃষ্টি করতে চাইছে এবং আন্তর্জাতিকক্ষেত্রে রাশিয়া কতটা একঘরে তা প্রমাণ করতে চাইছে। জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে এই প্রস্তাব পাস করানোর চেষ্টা হয়েছিল। কিন্তু রাশিয়া তখন ভেটো দেয়।
ইউক্রেনের দূত বলেছেন, ইউক্রেনের স্বাধীনভাবে বেঁচে থাকার অধিকার আছে। ইতিমধ্যে স্পষ্ট হয়ে গেছে, রাশিয়ার লক্ষ্য শুধু ইউক্রেন অধিকার নয়, গণহত্যাও। তিনি বলেছেন, রাশিয়া বর্বরোচিত কাজ করছে। তারা জেনিভা কনভেনশনে নেয়া প্রস্তাব ভঙ্গ করছে।
পুটিন যেভাবে পারমাণবিক বাহিনীকে সতর্ক করে দিয়েছেন, প্রস্তাবে তারও নিন্দা করা হয়েছে।